বৈরি আবহাওয়ায় গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নওগাঁয় ফসলের ক্ষেত নষ্ট
হয়েছে। বিশেষ করে শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছের গোড়া পচে যাওয়ায় পঁচামিনা
রোগ হওয়ায় কীটনাশক দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যহৃত থাকলে ক্ষতির
পরিমাণ বাড়বে বলে জানিয়েছে চাষীরা।
প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় সবজির ক্ষেতে পানি না
জমলেও মাটিতে রস বেড়েছে। এতে গাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গোড়ায় পচন রোগ।
দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সবজি চাষিরা। বিশেষ করে আগাম জাতের ফুলকপি, বাঁধাকপি,
সিম, বেগুন, লালশাক, টমেটো ও পেঁপে সহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে
চাষীরা আর্থিক ভাবেও ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। বৃষ্টিতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মতো
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন চাষীরা। যদি সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায় উৎপাদনে পরিমাণ কম হবে। এতে
সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী হবে।
কৃষকরা বলছেন- অতিরিক্ত বৃষ্টিতে শাক-সবজির গোড়ায় পচন ধরেছে। গাছ
মরে যাওয়ার পাশাপাশি পঁচামিনা রোগ দেখা দিয়েছে। ফসল রক্ষায় কীটনাশক স্প্রে করছেন তারা।
তবে বৃষ্টি অব্যহৃত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। এনিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন
চাষীরা।
নওগাঁ সদর উপজেলার বাচারি গ্রামের চাষী মোরশেদ বলেন- আগাম সবজি হিসেবে ১৪ কাঠা
জমিতে ২ হাজার পিস ফুলকপির চারা রোপন করেছি। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জমিতে রস বেশি
হওয়ায় গাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি গোড়ায় পচন ধরেছে। এতে প্রায় ৫০০ পিস ফুলকপির গাছ
মরে যাওয়ায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। অবশিষ্ট গাছ বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে
করা হচ্ছে।
ধোপাইপুর গ্রামের চাষী মুসলিম উদ্দিন বলেন- এক কাঠা জমিতে পালংশাক রোপন করা
হয়েছিল। প্রচন্ড খরার পর পর দুইবার নষ্ট হয়ে যায়। তৃতীয় দফায় আবারো পালংশাক লাগানো
হলে চারা গজায়। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পচে একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। তিনদফায়
প্রায় ৫০০ টাকা নষ্ট হয়েছে। সেই সাথে পরিশ্রম তো আছেই।
চাকলা গ্রামের চাষী রিমন হোসেন বলেন- চার কাঠা জমিতে বেগুনের চাষ
করা হয়েছে। বৃষ্টি শুরু আগে মাত্র চারকেজি বেগুন ক্ষেত থেকে উঠানো হয়েছিল। বৃষ্টির
কারণে গাছের মাথায় পচন শুরু হয়ে পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। যদি বেগুন ক্ষেত নষ্ট
হয়ে যায় এতে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হবে। আবহাওয়া যদি ভাল হয় তাহলে ক্ষেত
রক্ষা পাবে।
নওগাঁ জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার এ.কে.এম মনজুরে মাওলা বলেন- গত
কয়েকদিনে জেলায় গড় ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে জেলায় প্রায় ১৪৬ হেক্টর
জমির শাক-সবজি আক্রান্ত হয়েছে। তবে বৃষ্টির অব্যহৃত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।
ফসল রক্ষায় কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। যেসব গাছ মরে গেছে সেখানে
পুনরায় চারা রোপনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- জেলায় এ বছর বিভিন্ন জাতের ১ হাজার ৪০০
হেক্টর জমিতে আগাম জাতের সবজির আবাদ হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান
মন্তব্য করুন
মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী অনুপ্রবেশ
মন্তব্য করুন
গত মাসে তীব্র তাপপ্রাহে পুড়েছে পুরো দেশ। দফায় দফায় হিট এ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমনকি গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কতা দেয় সংস্থাটি। এদিকে তীব্র দাবদাহ যখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে তখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হয়েছে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টিপাত। ইতোমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে মারা গেছেন নারী ও শিশুসহ অনেকেই।
আবহাওয়া অফিস সতর্কবার্তা দিয়ে বলছে- রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। একইসঙ্গে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিও অব্যাহত থাকতে পারে। আর চলতি মে মাসে তিন থেকে পাঁচদিন হালকা ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। আর দুই থেকে তিন দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ও তীব্র কালবৈশাখী হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।
এপ্রিলের পুরো মাসজুড়েই ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ, যা ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। গত মাসের এই তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে জনজীবন হয়েছে নাভিশ্বাস। তপ্ত গরম থেকে স্বস্তির দিতে সরকার যেমন নানান পদক্ষেপের মাধ্যমে মোকাবিলা করেছে তেমনি জনগণও তাদের স্বস্তির জন্য তপ্ত গরমেও সতর্ক ভাবেই করেছে মোকাবিলা। কিন্তু দেশেরে মানুষ তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করতে পারলেও পারছে না ঝড়-বৃষ্টির মোকাবিলা করতে!
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গতকাল শনিবার (৪ মে) কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরের নিচে চাপা পড়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মা ও তার ৫ বছর বয়সী ছেলের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (০৫ মে) খাগড়াছড়ির রামগড়ে বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টির সময় বাড়ির উঠানে দুটি গরুসহ গনজ মারমা (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শুধু চলতি মাসেই নয়, এপ্রিলের কিছু কিছু অঞ্চলেও কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত হয়। সেই ঝড়ে ছয় জেলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও দুজন নিখোঁজ হয়েছেন।
যেখানে গেল মাসের দাবদাহ মোকাবিলায় যেমন মানুষ নিজেদের সুরক্ষার্থে সর্তক হয়ে স্বস্তির খোঁজে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা কার্যকর করেছে ঠিক, সেখানে ঝড়ো বৃষ্টিতে কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সময় নিজেরা সচেতন হয়ে তা মোকবিলা করতে পারছে না। তবে কি সাধারণ মানুষ নিজেদেরে সুরক্ষার্থে সচেতন হতে পারে না। শুধু সাধারণ মানুষ নয় সরকারের উপরও কিছু দায়িত্ব থেকে যায়। যাতে করে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠেী থেকে সকলেই সতর্ক হয়ে তা মোকাবিলা করে নিজেদের এবং পরিবারের সুরক্ষা নিতে পারে।
বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের মোকবিলায় জনগণের প্রতি দিকনির্দেশনা
সাধারণত কালবৈশাখী ঝড়ের সময়ে দেশকে জনস্বার্থে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কালবৈশাখী ঝড়ের আগেই মেটারোলজি বিভাগ এবং অঞ্চলের নিকটস্থ সংস্থার পূর্বাভাস করে বিপদগ্রস্ত হলে পূর্বেই পর্যবেক্ষণ করা উচিত। সরকার সংগঠন বা প্রশাসনিক সংস্থাগুলো আগাম বিপদ জনস্বার্থে জনগণকে সাবধানতা প্রকাশ করতে পারে। প্রয়োজনে সরকারী অথবা অন্য সংস্থা গুলি মানুষদের নিরাপত্তার জন্য তথ্য দিতে পারে। এবংকি সকল প্রয়োজনীয় সাহায্য ও সহযোগিতার ব্যবস্থা করা উচিত যার মধ্যে খাবার, পানি, ও প্রাথমিক চিকিৎসা। বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারী অথবা অর্গানাইজেশ সংস্থা সহযোগিতা করে সাহায্যের অভিযান চালাতে পারে। সময়ে ও সঠিকভাবে বাস্তবায়নের পর্যায়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। শুধু তাই নয় বাস্তবায়নের পর্যায়ে মানুষদের সঠিক তথ্য প্রদান করলেও জনগণ কালবৈশাখী ঝড়ের বিপদ থেকে নিজেদের সুরক্ষা করার জন্য সহায়তা হবে।
মানুষকে সচেতন হওয়া উচিত
জলবায়ুর প্রভাবে দেশের ঝড়ো বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির একটি প্রবল আবহাওয়া ঘটনা যা ধারাবাহিকভাবে দেশের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলতে পারে। এই সময়ে মানুষকে সাবধান থাকা অতিব জরুরী। পূর্বানুমানিক নিরাপদ অঞ্চলে থাকা। আকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা ও আবহাওয়া অফিসের দিক নির্দেশনা মেনে মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালবৈশাখী ঝড়ের সময় নিজ কাজেস্থলে বা কর্মক্ষেত্রে বা প্রয়োজনে নিরাপ স্থান থেকে বের হওয়া যাবে না। আবার, কৃষি কাজের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক মানুষ বাসা থেকে বের হতে পারেন। সুতরাং, সাবধানে থাকা জরুরি। প্রয়োজনে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় আশ্রয় নিতে হবে। এটি আপনাকে সুরক্ষিত করতে সাহায্য করতে পারে। বিদ্যুৎ, পানি, ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবাগুলো বন্ধ না হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়েরি মধ্যে যত্ন নেওয়া উচিত। এবংকি আপনার পোষা প্রাণী থাকলে তার যত্ন নিন। প্রাণীর জন্য যত্ন নেওয়া উচিত, যেমন পাখি, বিড়াল, ও গরুর জন্য আবাস পরিষ্কার করা, অবশ্যই খাদ্য ও পানি খাওয়ানো ও সংরক্ষিত করা উচিত। কেননা, কালবৈশাখী ঝড়ের সময়টাতে নিজেদের সুরক্ষাটা যেমন জরুরী তেমনি বিপরীতে প্রাণীর সুরক্ষাটাও জরুরী।
এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। দেশের আবহাওয়ায় যখন এমন দূর্বিসহ যাচ্ছে তখন সরকার থেকে সাধারণ মানুষ সকলের পদক্ষেপেই মিলতে পারে স্বস্তি। দেশের জনগণকে নিজেদেরে সচেতন হয়ে তাপপ্রবাহ, বজ্র, বৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড় মোকাবিলা নিতে হবে। বিশেষ করে দেশপ্রেমের ভাবনা থেকেও সাধারন মানুষ সরকারের দিক নির্দেশনা মেনে সহযোগিতা করতে হবে। এতে করে কমবে কালবৈশাখী ও বজ্রে নিহতের সংখ্যা, মারা যাবে না আর হিট স্ট্রোকে মানুষ। বাড়বে জনসচেতনতা। স্বস্তিতে থাকবে পুরো দেশের জনগণ।
ঝড় বজ্রসহ বৃষ্টি আবহাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার ডিবি চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার
মন্তব্য করুন
জনপ্রশাসন মন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সরকারি চাকরি
মন্তব্য করুন
গত মাসে তীব্র তাপপ্রাহে পুড়েছে পুরো দেশ। দফায় দফায় হিট এ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমনকি গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কতা দেয় সংস্থাটি। এদিকে তীব্র দাবদাহ যখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে তখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হয়েছে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টিপাত। ইতোমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে মারা গেছেন নারী ও শিশুসহ অনেকেই।