ডিসেম্বর
মাস বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে
৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি
হয় বাংলাদেশ নামক একটি ভূখন্ড। বাংলাইনসাইডার এই বিজয়ের মাসে ধারাবাহিক ভাবে ‘একাদশ পর্বে’ ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
দলিলপত্র পঞ্চদশ খন্ড’ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুল হকের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে-
স্বাধীনতা যুদ্ধ আরম্ভ হবার
প্রাক্কালে আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ছিলাম। সত্তরের নির্বাচনের
ফলাফল অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে পাক সমারিক জান্তার ক্রিয়াকলাপ অনেকের মত
আমার মনেও গভীর সন্দেহ জাগিয়ে তোলে। জাতীয় পরিষদের প্রথম অধিবেশনের তারিখ পরিবর্তন
এবং ঢাকার বৈঠকে যোগদানের ব্যাপারে ভুট্টোর অনীহা প্রকাশের ফলে বৈঠক অনিশ্চিত হয়ে পড়লে
সারা দেশ ক্ষোভে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে। এই পটভূমিতে ১৬ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত ইয়াহিয়া-ভুট্টো
ও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে যে আলোচনা চলে স্বভাবতই তীক্ষ্ণ
দৃষ্টি নিয়ে তা আমরা অনুসরণ করছিলাম। আমার ধারণা ছিল এই চরম সংকট ও অচলাবস্থা নিরসনে
তারা হয়তো একটা সমঝোতায় উপনীত হবেন।
অন্যদিকে সারাদেশে প্রতিদিনই
জেনারেল ইয়াহিয়ার সামরিক তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা হচ্ছিল। ২৩ মার্চ বিকেলে চট্টগ্রাম
শহরে ছাত্র-শিক্ষক জনতার একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয় ও প্যারেড গ্রাউন্ডে গিয়ে মিলিত
হয়। এই জনসভায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র-শিক্ষক অনেকে গিয়েছিলাম। সভা চলাকালে
খবর পেলাম, চট্টগ্রাম বন্দরে বাঙ্গালী শ্রমিকরা জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে অস্বীকার
করায় পাক বাহিনীর জোয়ানরা গোলাবর্ষণ করেছে। এরপর সভা মুলতবী হয়ে যায়। চট্টগ্রাম শহর
থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময় এক অভূতপূর্ব স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ প্রত্যক্ষ
করি। তরুণ ও যুবকরা স্বেচ্ছাসেবকের প্রতীক নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছে।
দেখে মনে হলো তারা পাক সামরিক অভিযান বাধা দিতে অকুতোভয় প্রহরীর মত সদা সতর্ক।
২৬ মার্চ সকালে রেডিও খুলতেই
হঠাৎ অস্বাভাবিক অবস্থা মনে হলো। ভারী কণ্ঠ, যা কোন বাঙ্গালীর বলে মনে হয়নি, ঘোষণা
শুনতে পেলাম, ঢাকাতে কার্ফিউ জারি হয়েছে, পরবর্তী ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করুন। সেই মুহূর্তে
ঢাকায় কি ঘটেছে তা জানা যায়নি। তবে সাংঘাতিক কিছু একটা হয়েছে তা আঁচ করা যাচ্ছিল। দ্বিপ্রহরের
পর থেকে আকাশবাণীর খবরে ঢাকার কিছু কিছু সংবাদ পেলাম ইপিআর ও পুলিশ ক্যাম্প পাক সেনারা
আক্রমণ করেছে, নিরীহ জনসাধারণের ওপরও তারা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়েছে। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনেক পরিচিতজনের নিহত হওয়ার কথাও শুনলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে
চট্টগ্রামে আমরা কি করব তা স্থির করতে পারিনি।
২৬ মার্চ রাত বারটার দিকে উপাচার্য
ডঃ এ, আর, মল্লিক আমাকে ডেকে পাঠান এবং বলেন আরো যাকে পান সংগে নিয়ে আসবেন। গিয়ে দেখি
অনেক ইপিআর (তদানীন্তন ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেল)-এর লোকজন রামগড় ও সন্নিহিত সীমান্ত এলাকায়
তাদের স্থান ছেড়ে ক্যাম্পাসে এসে জড় হয়েছে। এদের খাওয়ার ব্যবস্থা করাই ছিল সেই মুহূর্তের
সবচেয়ে জরুরী কাজ। আমাকে সেই দায়িত্ব দেয়া হলো। অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামে
গেলাম। চাল, ডাল, তরকারী ইত্যাদি সংগ্রহ করে তাদের খাওয়ার আয়োজন করা হল।
ডঃ মল্লিক বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। অবস্থা মোকাবেলার জন্য তার গোপন নির্দেশে
আমরা মলোটভ ককটেল জাতীয় কিছু বোমা তৈরী করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে তিনি আমাকে
সাহায্য করার জন্য সিএসআইআর-এর ডঃ আবদুল হাই-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। রসায়ন বিভাগের
ডঃ মেসবাহউদ্দিন ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ডঃ এখলাস উদ্দীনের সহায়তায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ল্যাবরেটরিতে আমরা এ ধরনের কিছু হাতবোমা তাৎক্ষণিকভাবে বানাতে সক্ষম হই এবং সেগুলো
পরীক্ষামূলক ব্যবহার করি।
আগরতলায় শরণার্থীদের জন্য ক্যাম্প
খোলা হয়েছিল। এসব ক্যাম্পে বাংলাদেশ থেকে আগত যুবক ও ছেলেদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা
করা হয়েছিল। আমি এসব ক্যাম্পে যাতায়াত করেছি এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ
করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছি। এখানে মেজর জিয়া, ক্যাপ্টেন আকবর হোসেন, মেজর মীর শওকত
আলী প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সামরিক ব্যক্তিবর্গের সংগেও মাঝে মাঝে আমার দেখা-সাক্ষাৎ
হত। মেজর নূরুজ্জামান আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করেছিলেন।
ইতিপূর্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে
প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করা এবং শরণার্থী শিক্ষকদেরকে নানাভাবে সহায়তা করার উদ্দেশ্য
নিয়ে "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলদেশ সহায়ক সমিতি" নামে একটি প্রতিষ্ঠান সংগঠিত
হয়েছিল। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ থেকে আগত শিক্ষকদের ঠিকানা ও বিবরণ চেয়ে
পাঠানো হয়েছিল যাতে তারা ভারতে কোথাও কোনভাবে আশ্রয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করতে
পারেন। তাঁদের এই আহবান অনুযায়ী আমি আমার বায়োডাটা পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন পর কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর আগরতলা এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি ছিলেন
অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ। আমাকে বললেন, তুমি তো বোঝই আমাদের এখানে চাকরির অনেক অসুবিধা। তবে
তোমারে জন্য বোধ হয় একটা ব্যবস্থা করা যাবে। আমি কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজের প্রাক্তন
ছাত্র ছিলাম এবং সে সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর পদে উন্নীত হয়েছিলাম। তাই
তিনি বোধ হয় আমাকে এই আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে কলকাতা যেতে আহবান জানান এবং বিমানের
টিকেট পাঠিয়ে দেন।
কলকাতায় গিয়ে আমি মুজিব নগর
সরকারের অফিসে দেখা করি। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমার পূর্বপরিচয় ছিল। তিনিও আমাকে
আশ্বাস দিলেন। ইতিমধ্যে সৈয়দা আলী আহসান সাহেবও শরণার্থী শিক্ষক বুদ্ধিজীবীগণের জন্য
বিদেশের একটি সাহায্য সংস্থা হতে কিছু অর্থ সাহায্যের ব্যবস্থা করেছিলেন।
বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি আমার
বায়োডাটা পাঠিয়েছিল পাতিয়ালা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাতে আমার ঠিকানা ছিল আগরতলার। জুনের
শেষের দিকে আমি কলকাতায় আগরতলা থেকে পুনঃপ্রেরিত পাতিয়ালা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চিঠি
পাই। বিভাগীয় প্রধান ঐ চিঠিতে আমাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগ
দেবার আহবান জানান। তিনি আরো জানান যে, এজন্য তারা আমাকে এক হাজার রুপী মাসিক বেতন
দিতে পারবেন। এই প্রস্তাব আমি সানন্দে গ্রহণ করি এবং জুলাই মাসের ১ তারিখে পাতিয়ালা
রওয়ানা হই। এর পর থেকে আমি বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার দিন পর্যন্ত সেখানেই ছিলাম।
পাতিয়ালায় অবস্থানকালে আমি
রেডিও মারফত মুক্তিযুদ্ধের খবর ও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত থেকেছি। সেখানে বাংলাদেশের
মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দিয়ে জনমত সৃষ্টির চেষ্টা করেছি। দেশ
স্বাধীন হলে বর্তমান নেতৃত্ব সরকার পরিচালনায় সমর্থ হবেন কিনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক
এরূপ নানা সংশয় বিদ্যমান ছিল স্থানীয় লোকদের মধ্যে। পাক হানাদার বাহিনীর গণহত্যা একটা
ব্যাপক প্রোপাগান্ডা হিসেবে অনেকে মনে করতো। শরণার্থীদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ ধারণা ছিল।
আমি তাদের যথাসাধ্য বোঝাতে চেষ্টা করেছি। আমি এইভাবে তাদের ধারণা পরিবর্তনের প্রয়াস
পেয়েছি যে, আমরা শিক্ষকরা রাজনীতির সঙ্গে কখনো সরাসরি জড়িত ছিলাম না, তবে কেন আমাদেরকে
এভাবে খালি হাতে দেশত্যাগ করতে হলো?
পাতিয়ালায় থাকাকালে ভারতের
দূরবর্তী এলাকাসমূহে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে জনমত গঠনের আরো কয়েকটি প্রক্রিয়া আমি প্রত্যক্ষ
করি। যেমন-সিনেমা হলগুলোতে বাংলাদেশে পাক হানাদার বাহিনীর গণহত্যা, শরণার্থীদের অন্তহীন
দুর্ভোগ ও দুর্দশা সম্বলিত সংবাদচিত্র প্রদর্শনী, বাংলাদেশ সম্পর্কে নেয়া বিভিন্নজনের
সাক্ষাৎকারের ছবি ও ক্যাপশন প্রদর্শনী ইত্যাদি। এমনকি ইতিপূর্বে আগরতলা প্রবাসকালে
ভারতীয় সংবাদপত্র আমার যেসব বিবৃতি ও সাক্ষাৎকার নিয়েছিল তার কিছু কিছু পাতিয়ালায়তেও
প্রদর্শিত হয় বলে আমি জানতে পারি।
১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত
হবার পর আমি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করি এবং ২৫ ডিসেম্বর তারিখে চট্টগ্রামে এসে পৌছি।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ বিজয় মোহাম্মদ শামসুল হক
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ৫৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর স্থাপনের জন্য অর্থ বিতরণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে মুকসুদপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ ফারুক খান মিলনায়তনে এই সভা ও অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ৫৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর স্থাপনের জন্য ১০ হাজার টাক করে সর্বমোট ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা অর্থ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক
মশিউর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহাদৎ আলী মোল্যা, মুকসুদপুর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত শীতল চন্দ্র পাল, মুকসুদপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ ছিরু মিয়া, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ-সভাপতি সরদার মজিবুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মুকসুদপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হায়দার হোসেন।
হায়দার হোসেন জানান, উপজেলার ৫৭ টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা চর্চার জন্য সততা সংঘের পরিচালনায় সততা স্টোর স্থাপনের জন্য দুদক অর্থায়ন করেছে। এর আগে ৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর চালু আছে। এই স্টোরে কোন বিক্রেতা নেই, কোন ক্রেতা তার প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনে স্টোরে রক্ষিত বাক্সে টাকা জমা রাখবেন।
সততা চর্চার জন্য দুদকের এই প্রচেষ্টা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে
বলেও তিনি জানান।
মন্তব্য করুন
কমিউনিটি ক্লিনিক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী
মন্তব্য করুন
সৌদি সরকার হজের ভিসার আবেদনের শেষ সময়সীমা ৭ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। পূর্বে ভিসার আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৯ এপ্রিল। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সময় বাড়ানো হয়েছে। ফলে চলতি বছর হজে যেতে চূড়ান্ত নিবন্ধনকারী হজযাত্রীরা আগামী ৭ মে পর্যন্ত হজ ভিসার আবেদন করতে পারবেন।
হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ধর্মমন্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি হাজিদের জন্য হজের ভিসা আবেদনের সময় ২৯ এপ্রিল থেকে আগামী ৭ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এসময়ের মধ্যে সবাইকে ভিসা আবেদন করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে নানা জটিলতায় এখনো ৮০ শতাংশ হজযাত্রীই ভিসার জন্য আবেদন করেননি। এজন্য হজের ভিসা আবেদনের সময় আরও বাড়ানোর আবেদন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ভিসা আবেদনের সময় বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে ধর্মসচিব মু. আবদুল হামিদ জমাদ্দার বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া হজযাত্রীদের বেশিরভাগ এখনো ভিসার আবেদন করতে পারেননি। বাড়ি ভাড়া করতে না পারা অন্যতম কারণ। অল্প কয়েকদিনে এত সংখ্যক হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করাও সম্ভব নয়। পুরো বিষয়ে সংকটের কথা উল্লেখ করে সৌদি সরকার ও দূতাবাসকে হজের ভিসার আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছিল।
সময় বাড়ানোয় সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সচিব বলেন, হজ এজেন্সিগুলো এসময়ের মধ্যে ভিসা আবেদন করবে।
আগামী ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। ৮ মে চলতি বছরের হজে আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্তব্য করুন
“যতই থাকুক গরমের তেজ, রুহ আফজা রাখবে সুস্থ ও সতেজ” এমন স্লোগানে প্রায় দুই হাজার মানুষের মাঝে শরবত রূহ আফজা বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে ফিতা কেটে তিনি শরবত, রূহ আফজা আপ্যায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এসময় পথচারী ও শ্রমজীবীরা সংসদ সদস্যের কাছ থেকে এ শরবত পান করেন। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এড. নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের উদ্যোগে এ শরবত বিতরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব বেলাল হোসেন ক্বারী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইমতিয়াজ, হামদর্দ নোয়াখালী অঞ্চলের সিনিয়র জোনাল ম্যানেজার নুর আলম, লক্ষ্মীপুর জোনাল ম্যানেজার এমরান হোসেন, লক্ষ্মীপুর শাখা ব্যবস্থাপক শাহজাহান ও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব রেজাউল করিম রিয়ান।
তীব্র গরম শরবত রূহ আফজা পথচারী
মন্তব্য করুন
তীব্র তাপপ্রবাহে পুরছে দেশ। দাবদাহে হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে সারা দেশে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এর মধ্যে আট জন পুরুষ ও দুইজন নারী। এছাড়া নিহত ১০ জনের মধ্যে গতকাল সোমবার হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন তিন জন। হিটস্ট্রোকে আরও পাঁচজন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এসব তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, হিটস্ট্রোকে নতুন করে মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে মাদারীপুর জেলায়। আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম গত ২২ এপ্রিল থেকে সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে হিটস্ট্রোকের রোগীর তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যে হিটস্ট্রোকে দশজনের মৃত্যু ও পাঁচজনের হাসপাতালে ভর্তির তথ্য পাওয়া গেছে। কন্ট্রোল রুম জানায়, এ পর্যন্ত সারা দেশে হিটস্ট্রোকে মারা যাওয়া দশজনের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ২ জন নারী।
মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে দুজন মাদারীপুরের। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, হবিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলায় একজন করে মারা গেছেন। তাদের বয়স ৩২ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি গ্রামাঞ্চলে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি), বমি বমি ভাব থাকে, শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, ঘাম হতেও পারা আবার না–ও পারে, ত্বক গরম ও শুষ্ক অথবা স্যাঁতসেঁতে থাকতে পারে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি সামঞ্জস্যহীন আচরণ করে, তার কথা জড়িয়ে যায়, এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা ধারণা করছেন, হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রথমত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখন শুধু সরকারি হাসপাতালের হিসাব নিচ্ছে, দেশের বিপুলসংখ্যক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কোনো রোগী যাচ্ছে কি না, তা জানা যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, রোগীর কোন লক্ষণ দেখে হিটস্ট্রোক শনাক্ত হবে সেই ধারণাও চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে পরিষ্কার ছিল না। অতিসম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে এবং সেই নির্দেশিকা অনুসরণ করে সরকারি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৩ ও ২০০৭ সালের মধ্যে দেশে তাপপ্রবাহের দেশেগুলোয় মৃত্যু ২২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, হিটস্ট্রোক ছাড়াও গরমজনিত আরও কিছু সমস্যা হয়। এর মধ্যে আছে: তাপজনিত শ্রান্তি, তাপজনিত সংজ্ঞালোপ, তাপজনিত পেশিসংকোচন, তাপজনিত ফুসকুড়ি। আর হয় তাপজনিত পানিশূন্যতা। প্রচণ্ড তাপ বিশেষ প্রভাব ফেলে অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু ও প্রবীণদের ওপর। এ ছাড়া যেসব মানুষ দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তাঁদের ঝুঁকি বাড়ে গরমে।
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ৫৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সততা স্টোর স্থাপনের জন্য অর্থ বিতরণ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে মুকসুদপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ ফারুক খান মিলনায়তনে এই সভা ও অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
সৌদি সরকার হজের ভিসার আবেদনের শেষ সময়সীমা ৭ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। পূর্বে ভিসার আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৯ এপ্রিল। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সময় বাড়ানো হয়েছে। ফলে চলতি বছর হজে যেতে চূড়ান্ত নিবন্ধনকারী হজযাত্রীরা আগামী ৭ মে পর্যন্ত হজ ভিসার আবেদন করতে পারবেন। হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ধর্মমন্ত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি হাজিদের জন্য হজের ভিসা আবেদনের সময় ২৯ এপ্রিল থেকে আগামী ৭ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এসময়ের মধ্যে সবাইকে ভিসা আবেদন করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।