আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের পর এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ। এর আগে ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি জানায়। এর প্রেক্ষিত পশ্চিম বঙ্গের প্রভাবশালী পত্রিকা আনন্দ বাজার বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পরদিন (৭ ডিসেম্বর) ‘স্বাগত বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। বাংলা ইনসাইডার এর পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে আনন্দ বাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় হুবহু প্রকাশ করা হলো।
‘সোমবার, ৬ই ডিসেম্বর। ইতিহাসের এক যুগান্তকারী দিন। অধীর আগ্রহের বাঞ্ছিত অবসান। বাংলাদেশকে ঝুঁনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছেন নয়াদিল্লী। প্রায় আট মাস আগে সার্বভৌম রাষ্ট্ররূপে যার প্রথম আবির্ভাব, আজ তার পূর্ণ অভিষেক সমাপ্ত। নবজাতকের মাথায় কল্যাণ বারি বর্ষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। ভারতের পঞ্চান্ন কোটি নরনারীর অন্তরের শুভেচ্ছা মিশান রয়েছে তার সঙ্গে। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী যখন ঘোষণা করছিলেন ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত তখন আনন্দমুখর হয়ে উঠেছিল পরিষদ কক্ষ। দলমত নির্বিশেষে সবার কণ্ঠ গিয়েছিল মিশে। স্বাগত জানাচ্ছিলেন তাঁরা বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রটিকে। উচ্চল হৃদয়ের এই সাদর অভিবাদন গোটা ভারতের তৃপ্ত বাসনার প্রতিধ্বনি। হয়ত চমক লেগেছে ইসলামাবাদের জঙ্গীশাহীর। সাড়ে সাত কোটি বাঙালীকে ধ্বংস করার জন্য তাঁরা ছুড়েছিলেন কামানের গোলা। তাঁদের সেই নিক্ষিপ্ত গোলা থেকে জন্ম নিয়েছে নতুন রাষ্ট্র। ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির সম্ভাবনায় সে প্রাণবন্ত। তাকে দাবিয়ে রাখতে পারে না দুনিয়ার কোন স্বৈরাচারী শক্তি।
বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা আপোষে পায়নি, লড়াই করে ছিনিয়ে নিয়েছে। দিতে হয়েছে তাকে রক্ত মূল্য। যা সে পেয়েছে তা রাখার জন্য দরকার আরও রক্তের। পূবের বাঙালী তার জন্য তৈরী। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত। গত আট মাস ধরে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করেছে সে। সীমান্তের ওপার থেকে প্রতিদিন ভেসে আসত আর্তমানুষের বুক ফাটা কান্না, ধর্ষিতা নারীর রক্ষার মিনতি এবং মায়ের কোল জড়িয়ে ধরা অসহায় শিশুর ভয়ার্ত চীৎকার। আবার পরক্ষণেই পাক পশুদের উন্মত্ত উল্লাসের মধ্যে মিলিয়ে যেত সব। সীমান্তের বাঁধ ভেঙ্গে ঘাতকের খাঁড়া কেড়ে নিতে পারেনি ভারত। মানবতার চরম অপমান সে দেখেছে এবং ভিতরে ভিতরে জ্বলেছে। এক কোটি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে। তাঁদের চোখের জল মুছাতে ত্রুটি করেননি এদেশের পঞ্চাশ কোটি নরনারী। সাময়িক সান্ত্বনায় ভরেছে ওদের মন, কিন্তু প্রাণে আসেনি শান্তি। স্বদেশ যাদের শত্রু কবলিত তারা কি করে পাথর চাপা দিতে পারেন জীবনের সমস্ত অনুভূতি? আহত সিংহের মত গর্জে উঠেছিল বাঙালী। করেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা। মুক্তিবাহিনী ধরেছিল অস্ত্র। আঘাতে আঘাতে জর্জর করে তুলেছিল দখলদার পাক বাহিনীকে। ইয়াহিয়ার অত্যাচারে নিরস্ত্র জনতার রূপান্তর ঘটেছে জাতীয় সেনা বাহিনীতে। তাদের ভরসাস্থল ভারত, পঞ্চান্ন কোটি নরনারীর আশীর্বাদ তাদের পাথেয় এবং স্বাধীনতার উদগ্র আকাংক্ষা তাদের প্রেরণা। আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত একটি দস্যুদলের সঙ্গে ক্ষীণকায় বাঙালীর দীর্ঘস্থায়ী লড়াই সাম্প্রতিক ইতিহাসের এক অনন্য সাধারণ ঘটনা। ওরা গোটা দুনিয়ার বিস্ময় এবং ভবিষ্যৎ মুক্তিসেনানীদের সার্থক পথিকৃৎ। এঁদের ভাগ্যের সঙ্গে নিজের ভাগ্য মিশিয়ে দিয়েছে ভারত। ইয়াহিয়া দিয়েছেন তাঁর জঙ্গী উত্তর। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তিনি। জলে, স্থলে এবং অন্তরীক্ষে চলেছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। বাংলাদেশে পাকবাহিনী পর্যুদস্ত। এখন শুধু তাদের আত্মসমর্পণের অপেক্ষা। পশ্চিম রণাঙ্গন জ্বলছে। জঙ্গীশাহীর শোষণ দুর্গ পুড়ে একেবারে ছাই হবার আগে তা নিভবে না। কোনমতেই ভারত এ আগুন নিভাতে দেবে না। গত তেইশ বছরের পাক আবর্জনার কোন চিহ্নই সে রাখবে না। বর্তমান সংগ্রাম- সামন্ততন্ত্রী পাক দস্যুদের নিঃশেষ করার শেষ সংগ্রাম।
ইচ্ছা করে নয়াদিল্লী নেননি এই রক্ত পিছল বন্ধুর পথ। ইসলামাবাদের উন্মাদের দল তাদের ঠেলে দিয়েছে এ পথে। আজ ভারত এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সহযাত্রী। মুক্তিযোদ্ধাদের খুন মিশে যাচ্ছে ভারতীয় জওয়ানদেন রক্তের সঙ্গে। ওদের সম্মিলিত আঘাত পড়ছে নরপশুদের উপর। কিসের বন্ধনে বাধা পড়েছে অসমসাহসী ভারতীয় জওয়ান এবং দুর্বার মুক্তিসেনা। কোথায় পেয়েছে তারা উল্কার গতি? কেন একসঙ্গে মিশে যাচ্ছে তাদের প্রাণের স্পন্দন? ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতন্ত্রী ভারত আদর্শের মূল্য দিতে জানে। পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক বন্ধ জলার মধ্যে বাংলাদেশ ফুটন্ত পদ্ম। তার সারা অঙ্গে রয়েছে গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ছাপ। আদর্শের এই ঐক্য চেতনা ভারত এবং বাংলাদেশকে টেনে এনেছে কাছাকাছি। তাই নবীনের মাথায় প্রবীণ ঢেলেছে প্রথম অভিষেকের কল্যাণ বারি। তার হাতে পরিয়ে দিয়েছে সৌভ্রাতৃত্বের রাখী। আন্তর্জাতিক সমাজের পাদপ্রদীপের সামনে আসার আগেই নবজাতককে গলা টিপে মারতে চেয়েছিল কায়েমী স্বার্থবাদীর দল। দুহাতে তাকে আড়াল করে রেখেছে ভারত। ইয়াহিয়ার অস্ত্র পড়েছে তার পিঠে। ভ্রূক্ষেপ করেনি সে। জমির লোভ তার নেই। আদর্শের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে সে প্রস্তুত। বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দানের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে পশ্চিম পাকিস্তান। এটা অপ্রত্যাশিত নয়। একসঙ্গে থাকতে পারে না কল্যাণব্রতী এবং মানবদ্রোহী দু'টি রাষ্ট্র। বাংলাদেশে যারা গণহত্যার নায়ক, যারা লক্ষ লক্ষ নরনারীকে ভিটে ছাড়া করার নিপীড়ক যন্ত্র এবং যারা নারীর ইজ্জত অপহারক তারা নিঃসন্দেহে সভ্য সমাজের অপাঙক্তেয়। পূর্বের নবীন সূর্য্যকে অভিনন্দন জানাতে ভারত যখন ব্যস্ত তখন অন্ধকারের জীবগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছে বিবরাশ্রয়। রেহাই পাবে না ওরা। ভারতের সার্বভৌম মর্যাদার উপর আঘাত হেনেছে বর্বরের দল। চরম শাস্তি তাদের পাওনা। কোথায় আজ পাক দোস্তদের শয়তানি চক্র? একসঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে তারা করেছে উন্মত্ত নর্তন। ঠেকাতে পেরেছে কি স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রগতি? থামাতে পেরেছে কি তারা জওয়ানদের প্রচণ্ড প্রত্যাঘাত? নির্বোধ ইয়াহিয়া এবং নির্বোধ তাঁর পরিষদ দল। ওদের ধ্বংস অনিবার্য। বাংলাদেশ খুঁড়েছে অত্যাচারী স্বৈরতন্ত্রীর কবর। তাতে ইসলামাবাদের শব নামাবে ভারত। আর এই কবরে মাটি দেবে ভারত এবং বাংলাদেশের সাড়ে বাষট্টি কোটি নরনারী। এ দু'টি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বের বুনিয়াদ পরস্পরের বুকের পাঁজরে গড়া এবং শহীদের তাজা রক্তে সিঞ্চিত। এ বন্ধন অক্ষয় এবং ভবিষ্যতের অপরুপ আলোকে ভাস্বর। স্বাগত সার্বভৌম বাংলাদেশ, স্বাগত তার রাহুমুক্ত জনতা এবং স্বাগত তার সরকার। জয় বাংলা।’
মন্তব্য করুন
এবার
যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে এয়ার
এরাবিয়ার একটি ফ্লাইট। শুক্রবার (১০ মে) সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
জানা
গেছে, এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইট জি ৯৫২৬-এ ১৯১ জন যাত্রী ও সাতজন ক্রু ছিল। সংযুক্ত আরব
আমিরাতের শারজাহ থেকে ফ্লাইটটি চট্টগ্রামে আসছিল। এর মধ্যে সেখানে যান্ত্রিক ত্রুটি
দেখা দেয়। ফ্লাইটের ত্রুটির সংকেত পাঠানো হয় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল
রুমে। এরপর পাইলটের দক্ষতায় নিরাপদে অবতরণ করে ফ্লাইটটি।
বিষয়টি
নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন
তাসলিম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে ত্রুটি নিয়ে ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
যাত্রীরা সবাই নিরাপদে ছিল। সেখানে ১৯১ জন যাত্রীসহ সাতজন ক্রু ছিল।’
চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সারাদেশে সমবায় ছড়িয়ে দিতে হবে,
খাদ্যের নিশ্চয়তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। সরকারে আসার পর
থেকেই প্রচেষ্টা ছিল দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে।
শুক্রবার (১৯ মে) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় `আমার বাড়ি আমার খামার’
প্রকল্পের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, সকালে একদিনের সফরে গণভবন থেকে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ায় যান
প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। পাশাপাশি
ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা, চাচাতো ভাই শেখ হেলালসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী `আমার বাড়ি আমার খামার’
মন্তব্য করুন
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। এতে দেশের
বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পণ্যটির দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত।
প্রায় চার মাস পর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত। কিন্তু বাজারে
আরেক মসলাপণ্য এলাচ কেজিতে বেড়েছে এক হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। অস্থির এলাচের বাজার
নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপের কথা বলেছেন ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে
৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এটি এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। চোরাই পথে আসা ভারতীয় পেঁয়াজ
বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত। এটি গত সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা কেজি। আগে দেশের
বাজারে ভারত থেকে যেসব পেঁয়াজ আসত তার সবটাই চোরাই পথে। এখন বৈধপথে পণ্যটি আসবে। এ
জন্য দাম কমে গেছে। আমদানি শুরু হলে দাম আরো কমবে।
এদিকে প্রতিদিনই অস্থির হয়ে উঠছে মসলাপণ্য এলাচের বাজার। দেশে তিন
ধরনের এলাচ আমদানি হয়। এর মধ্যে বড় দানার সবচেয়ে উন্নত এলাচ আসে ভুটান থেকে। মাঝারি
সাইজের মোটামুটি ভালো মানের এলাচ আসে গুয়াতেমালা থেকে। এর বাইরে সংযুক্ত আরব আমিরাত,
ভারত, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও কিছু এলাচ আমদানি হয়।
বর্তমানে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ছোট দানার এলাচ বিক্রি হচ্ছে
তিন হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে। ১৫ দিন আগেও একই এলাচ বিক্রি হয়েছিল তিন হাজার ৫০০ টাকায়।
বড় দানার এলাচের বর্তমান মূল্য প্রতি কেজি তিন হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার ৯০০ টাকা।
এটি গত দেড় মাসে বেড়েছে কেজিতে এক হাজার ১০০ টাকা।
এলাচের আমদানিকারকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাচ আমদানিতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ককর দিতে হয়। এই এলাচ শুল্কায়ন করা হয় ২৫ ডলারে, অথচ এর আমদানি মূল্য সাত ডলার। শুল্কায়ন মূল্য বেশি ধরার কারণে কেজিতে শুল্ককর বেশি দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। যে কারণে দাম হু হু করে বাড়ছে।
দাম বাড়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
প্রতীক দত্ত বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা সঠিক রসিদ রাখেন না। এক মাস আগে
অভিযানে আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতি কেজি এলাচ ১৫ শতাংশ মুনাফাসহ বিক্রয়মূল্য
হওয়ার কথা সর্বোচ্চ এক হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়।
তখন একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছিলাম। এখনো আমাদের বাজার তদারকি চলমান। আমরা অসাধু
ব্যবসায়ীদের তালিকা করছি। তাদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।’
এলাচ ছাড়াও অন্যান্য মসলাপণ্যের দামও বাড়ছে। বর্তমানে শুকনা মরিচের
কেজি ৪৩০ থেকে ৪৪০ টাকা। এক মাস আগে এর দাম ছিল ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা। এখন দেশি রসুনের
কেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকা। আমদানি করা রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা।
দেশি আদা আগে ছিল ৩০০ টাকা কেজি, এখন ৪৫০ টাকা। আমদানি করা আদা সর্বোচ্চ ২৩০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
সড়ক
দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সড়কভেদে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও বাসের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ
করা হয়েছে। এজন্য মোটরযানের গতিসীমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪ জারি করেছে বাংলাদেশ
সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
দেশের
সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ
(বিআরটিএ)। বুধবার (০৮ মে) বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার স্বাক্ষরিত ‘মোটরযান
গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪’ জারি করা হয়। এতে এক্সপ্রেসওয়ে এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে
থ্রি-হুইলার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে
বিআরটিএর মুখপাত্র মাহবুব-ই-রব্বানী জানিয়েছেন, এটি ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নে সময় লাগবে।
নতুন নির্দেশিকা সম্পর্কে জনগণকে জানানোর জন্য প্রচারণা কর্মসূচি চালানো হবে। এই অন্তর্বর্তী
সময়কালে গতিসীমা লঙ্ঘন প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবহার করা হবে। এর উদ্দেশ্য চালকদেরকে
নতুন গতিসীমা সম্পর্কে জানানো।
নির্দেশিকায়
১০ ধরনের যানবাহনের জন্য সড়কের ৬টি ক্যাটাগরিতে গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়কভেদে
ব্যক্তিগত গাড়ি ও বাসের সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। আর
মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ৬০ কিলোমিটার। তবে শহরের রাস্তায় ৩০ কিলোমিটার গতিতে
চলবে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার।
তবে
সড়ক-মহাসড়কে লেন ঠিক না করে যানবাহনের গতিসীমা বেঁধে দেওয়াকে অপরিকল্পিত উদ্যোগ বলে
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তা ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের সড়কে ৩৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল
চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। বিআরটিএ যে গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে, তা ওই সিদ্ধান্তের সঙ্গে
সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাদের মতে, সর্বোচ্চ মানের সড়ক এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করে যানবাহন
চলাচলের কম গতিসীমা বেঁধে দেওয়া এ ধরনের স্থাপনার মানের সঙ্গে বেমানান। সাধারণত এক্সপ্রেসওয়েতে
১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলে। এক্সপ্রেসওয়েতে সাধারণ হাইওয়ের মতো গতিতে
যানবাহন চালাতে হলে এ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল বিনিয়োগের কোনো প্রয়োজন ছিল না।
বাংলাদেশ
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. হাদীউজ্জামান গণমাধ্যমকে
বলেন, এক মন্ত্রণালয় মোটরসাইকেলের সিসি বাড়াচ্ছে। অন্য মন্ত্রণালয় ৩০ কিলোমিটার গতিতে
চালাতে বলছে। এতে বোঝা যায়, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় নেই। তিনি বলেন, ‘একই লেনে যদি সব
ধরনের যানবাহন চলে, তা হলে কোনোভাবেই যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। গতিসীমা
ঠিক করার উদ্দেশ্য হলো সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো। কিন্তু যেভাবে গতি নির্ধারণ হয়েছে, তা
মোটেই বিজ্ঞানসম্মত নয়, তেমনি অবকাঠামোর সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটা মানানো যাবে
না। এতে সড়কে আরও বেশি বিশৃঙ্খলা বাড়বে। মামলা বাড়বে। কারণ একই লেনে সব ধরনের যানবাহন
চললে দুর্ঘটনাও বাড়বে।’
বিআরটিএ
বলছে, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে
কমিয়ে আনতে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া গতিসীমা অমান্য করা হলে সড়ক
পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের
মতো জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত মোটরযানের ক্ষেত্রে এই গতিসীমা শিথিলযোগ্য হবে।
মন্তব্য করুন
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোপন কক্ষে সিল মারা ব্যালটের সঙ্গে ছবি তুলেছেন আশরাফুল ইসলাম নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যক্তিগত আইডিতে পোস্ট করেছেন।
এছাড়াও বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর আইডির পোস্টসহ বিভিন্ন আইডিতে কমেন্ট করেছেন তিনি। তবে বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেন।
জানা গেছে, আশরাফুল ইসলাম তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, এছাড়াও তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। বুধবার (৮ মে) জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম আচরণবিধি অমান্য করে মোবাইল নিয়ে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। পরে ভোট দেওয়ার গোপন বুথে গিয়ে ব্যালটে সিল মেরে সেখানেই ব্যালটসহ ছবি (সেলফি) তুলেন তিনি। বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত আইডিতে পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায়, তিনি সিল মারা ব্যালট এক হাতে ধরে আরেক হাতে সেলফিটি তুলেছেন এবং সেই ছবি আপলোড দিয়ে লেখেন ‘ভালোবাসা নেতার পেছনে যায় না, যায় ভালোবাসার পেছনে।’
এর
আগেও এই জনপ্রতিনিধি গত ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ভোট
কেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করে সিল মারা ব্যালটের ছবি তুলে সামাজিকে যোগাযোগমাধ্যমে
পোস্ট করেন। এ বিষয়ে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ভোট কেন্দ্রে গোপন বুথে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার ছবি তোলা বেআইনি ও কোনো ভোটার মোবাইল ফোন নিয়ে ভোটকক্ষে প্রবেশ ও তা ব্যবহার করা যাবে না। তবে ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রিজাইটিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকা অবস্থায় একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে কীভাবে এমন আইন ভঙ্গ হলো এ বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে স্থানীয় মানুষেদের মাঝে। একজন ভোটার কর্তৃক এরূপ কর্মকাণ্ড উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এবং উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য একটি অপরাধ।
এদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি জানান, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বশীল পদে থাকা অবস্থায় তিনি যে কাজটি করেছেন সেটি ঠিক নয়। বিষয়টি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেখবেন। তবে, বিষয়টি আমাদের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি উপজেলা নির্বাচন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন।
সিল ব্যালট ইউপি চেয়ারম্যান ফেসবুক পোস্ট
মন্তব্য করুন
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। এতে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পণ্যটির দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। প্রায় চার মাস পর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত। কিন্তু বাজারে আরেক মসলাপণ্য এলাচ কেজিতে বেড়েছে এক হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। অস্থির এলাচের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপের কথা বলেছেন ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।