ইনসাইড বাংলাদেশ

অনেক হারানোর মধ্য দিয়ে এল স্বাধীনতা-মুক্তি-বিজয়: ডঃ অজয় রায়

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ নামক একটি ভূখন্ড। বাংলাইনসাইডার এই বিজয়ের মাসে ধারাবাহিক ভাবে ‘চতুর্দশপর্বে’ ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র পঞ্চদশ খন্ড’ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.অজয় রায়ের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে-

২৫শে মার্চের কাল রাত্রিতে ইয়াহিয়ার সামরিক চক্রের চাতুরিতে ঢাকায় শিল্পী কামরুল হাসান অঙ্কিত ইয়াহিয়ার জানোয়ার মুখ উন্মোচিত হল। শুরু হল অপারেশন সার্চলাইট, হল নয় মাসব্যাপী গণহত্যাযজ্ঞের উদ্বোধন-বাংলার রক্তে, বাঙালীর রক্তে।

কামান, মর্টার আর মেশিনগানের বিকট কানফাটা গর্জনে সে রাত্রে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল। প্রচণ্ড শব্দে ভেঙ্গে গিয়েছিল জানালার কাঁচ। আর্ত মানুষের অসহায় চীৎকারকে ছাপিয়ে সারারাত ধরে শুনেছিলাম আগ্নেয়াস্ত্রের শব্দ, ট্রাক ও ট্যাঙ্কের পদচারণ ধ্বনি। শঙ্কিত চিত্তে আমরা অপেক্ষা করছিলাম যে কোন মুহূর্তে পৈশাচিক বাহিনীর উপস্থিতি। বুঝতে কষ্ট হয়নি সারারাত ধরে কিসের হোলি উৎসব-কাদের রক্তে ঢাকার রাজপথ পরিণত হচ্ছে রক্ত-নদীতে।

যা আমরা আশঙ্কা করেছিলাম অবশেষে তাই ঘটল। সারাদেশের সাথে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজও অপেক্ষা করছিলাম উদ্বেগব্যাকুল চিত্তে ইয়াহিয়া-মুজিবের আলোচনার ফলাফল। অসহায়ভাবে লক্ষ্য করছিলাম ইয়াহিয়া সরকারের সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি। আমরা আশঙ্কা করছিলাম এ ধরনের এক ভয়ংকর পরিস্থিতির, অনুমান করেছিলাম আসন্ন গণহত্যার পূর্বাভাষ। তাই মার্চের ২২/২৩ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ ও দেশের বুদ্ধিজীবীদের পক্ষ থেকে গণহত্যার পূর্বাভাষ জানিয়ে আমরা প্রেরণ করেছিলাম জরুরী বার্তা-ইউ, এন, ও-র সেক্রেটারী জেনারেল ও বিশ্বের অন্যান্য নেতৃবর্গের কাছে। আমাদের আশঙ্কা অমূলক ছিল না।

সে রাত্রে পাকিস্তানের বীর জোয়ানেরা কত বাংগালীকে হত্যা করেছিল তার সংখ্যা হত্যাকারীরাও বলতে পারবে না। শুধু এটুকু জানি-রাজারবাগে শত শত পুলিশ প্রতিরোধ যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে, প্রাণ দিয়েছে নীলক্ষেত কমলাপুর এলাকার শত শত বস্তিবাসী, আত্মাহুতি দিয়েছে জগন্নাথ হল ও ইকবাল হলের অসহায় ছাত্ররা, রাস্তার অসহায় নিরস্ত্র মানুষ আর রাস্তায় রাস্তায় বেরিকেড তৈরীরত শত শত সাধারণ মানুষ ও অকুতোভয় শ্রমিকেরা।

সব রাতের শেষ আছে। ২৫শে মার্চের কালরাত্রিও এক সময় পোহাল। দূরাগত আজানের ধ্বনি ভেসে আসল। না-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ থেকে সেদিন আজানের ধ্বনি উচ্চারিত হয়নি-সাহস পাননি নামাজের আহবান জানাতে ধর্মপ্রাণ মুয়াজ্জিন। যেন মনে হল দূরাগত ঐ আজানের ধ্বনির মধ্যে সারা বাংলাদেশের কান্না ঝরে পড়ছে। এমন বিষাদ আর ক্রন্দনময় আজান ধ্বনি জীবনে শুনিনি।

রাত পোহাল, সকাল হল, ২৬শে মার্চের সকাল। সূর্যদেব কি সেদিন আমাদের সাথেও কেঁদেছিল, না, রোষে গর্জন করে ছড়িয়েছিল দাবাগ্নি! পর্দা সরিয়ে দেখলাম আমাদের এলাকায় বেশ কিছু সশস্ত্র বাহিনীর লোকদের উপস্থিতি। দেখলাম মাঠের এককোণে জড় করা কয়েকটি মৃতদেহ, চোখের সামনে টেনে নিতে দেখলাম পাশের ভবনে একতলার অধিবাসী মুকতাদিরের মৃতদেহ। 

দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডঃ মুর্তজাকে দিয়ে ও আরও কয়েকজনকে দিয়ে আমাদের ভবনের দিকে এল। আতঙ্কে অপেক্ষা করছিলাম যে কোন মুহূর্তে মৃত্যুদূতের আগমন। নীচের তলায় লোকজন ছিল না কিছুক্ষণ দরজায় লাথি মারল, সৌভাগ্য ওরা চারতলা পর্যন্ত উঠে এল না। একটু পরে লাশগুলি নিয়ে আমাদের উদ্দেশে পুনর্বার সাবধানবাণী উচ্চারণ করে ওরা স্থান ত্যাগ করল। আমরা বাঁচলাম।

রেডিওতে ঘোষিত হল, অবাঙালী কণ্ঠে, কর্কশ আর ভাংগা বাংলায়, সারাদেশে কঠোরভাবে সান্ধ্য আইন বলবৎ করা হয়েছে: রাস্তায় বা ঘরের বাইরে দেখা মাত্র গুলি করা হবে। পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী প্রতিরোধ আন্দোলনকে ভেংগে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। স্নান মুখে সহধর্মিণী পাশে এসে দাঁড়াল। উদ্বেগ ব্যাকুল স্বরে জিজ্ঞেস করল 'বঙ্গবন্ধুর' খবর কি? কি জবাব দেব! আমিও ভাবছিলাম তাঁর কথা। পেরেছেন কি নিজেকে বাঁচাতে? নিরাপদ স্থানে সরে গিয়েছেন কি! ভাবছিলাম অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কথা, ছাত্র নেতাদের কথা। পরে সন্ধ্যায় শুনলাম পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার রেডিও ভাষণ-সমগ্র পরিস্থিতির জন্য বাংগালী, আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকে দায়ী করে কুৎসিৎ ও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী, বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে স্বয়ংসিদ্ধ প্রেসিডেন্ট কর্কশ কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন- The man and his party are the enemies of Pakistan......He had attacked the solidarity and integrity of Pakistan-this crime will not go unpunished." সেই কণ্ঠ এতদিন পরে আজও আমার কর্ণে ধ্বনিত হয়।

এত নিরাশার মধ্যেও আশার আলোর ঝলকানি বয়ে আনল 'আকাশবাণী'-ভেসে এল রেডিও তরংগে মধুর আশ্বাসবাণী-"সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি'। আকাশবাণী জানাল পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। ঢাকার আশেপাশে, রংপুর, দিনাজপুরে, কুষ্টিয়া, যশোর, চট্টগ্রামে পাকিস্তানী সৈন্যদের সাথে বাঙালী মুক্তিফৌজের যুদ্ধ চলছে। রাত্রে বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকাও শোনাল একই বার্তা। এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেও আশ্বস্ত হলাম, না, বাঙালী রুখে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।

পথে পথে মিলিটারী-চোখে চোখে তাদের দানবীয় দৃষ্টি। দৃষ্টিতে ঝরে পড়ছে ঘৃণা। তার মধ্য দিয়ে ক্লান্ত- স্নান-বিষণ্ণ মুখে ফিরে এলাম বাসায়। এলাকা প্রায় জনশূন্য। সহকর্মীরা চলে গেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। উদ্বিগ্না মাতা, উৎকণ্ঠিতা স্ত্রী জানতে চাইলেন আমরা কোথায় যাব? বুঝতে পারছিলাম নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়া উচিত, কিন্তু কোথায় যাব? ঢাকার, বাংলাদেশের কোন স্থান আজ নিরাপদ? একবার ভাবলাম নদীর ওপারে জিঞ্জিরার দিকে যাওয়ার, যেদিকে সবাই যাচ্ছে। কিন্তু মিলিটারী চক্রব্যূহ ভেদ করে হাঁটা পথে সদরঘাট পর্যন্ত যাওয়ার ঝুঁকি অনেক, আর সেদিকেরও যে কি অবস্থা কে জানে। পরে শুনেছিলাম পলায়নপর নিরস্ত্র জনতার ওপর সদরঘাট এলাকায় নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে অসংখ্য নরনারী-এই পিশাচ বাহিনী।

২৭শে মার্চ থেকে শুরু হল আমার পলাতক জীবন, আত্মগোপনের পালা। ঢাকার নানা স্থানে-কখনও সপরিবারে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে বেড়িয়েছি। পরে জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয় আবাসে একাধিকবার মিলিটারী আমার সন্ধানে গিয়েছিল। বহুবার বিপদের মধ্যে পড়েছি। তবু সাহস করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি সে সময়, দেখেছি ওদের অত্যাচারের নানা রূপ অসহায়ভাবে। ওদের নারকীয় কাণ্ডকারখানা আর অত্যাচার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছি। সেই দুঃসময়ে ঢাকায় আত্মগোপনে যারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করেও আমাকে এবং আমার পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিল, নানাভাবে সাহায্য করেছিল তাদের কথা কোনদিন ভুলব না।

২৮শে মার্চ রাত্রে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে তোপ দেগে গুঁড়িয়ে দেয়া হল। আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতীক-আমাদের সংগ্রামের প্রতীক এখন মসজিদে রূপান্তরিত। রিক্সা করে একদিন ঐ পথ দিয়ে যাওয়ার কালে দেখলাম-কারা যেন সবুজ রঙে বাংলা ও উর্দু বড় বড় হরফে লিখে রেখেছে "মসজিদ-মসজিদ"। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক রাত্রে ডিনামাইট দিয়ে ঐতিহাসিক রমনা কালী মন্দির উড়িয়ে দেয়া হল-ধূলিস্যাৎ করা হল আনন্দময়ী আশ্রম। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে খবর পেলাম মোহাম্মদপুর এলাকার অনেক বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছে। 

বুঝতে পারছিলাম সপরিবারে ঢাকায় আর থাকা নিরাপদ নয়। শুভানুধ্যায়ীরা বিশেষ করে ডঃ আজাদ পরামর্শ দিলেন ঢাকা ছেড়ে মুক্তাঞ্চলে চলে যাওয়ার। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল অসুস্থ স্ত্রী আর বৃদ্ধা মাতাকে নিয়ে। ১১ই এপ্রিল আকাশাবণীর মারফৎ জানলাম মুজিবনগরে বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠার কথা। ইতিমধ্যে স্বাধীনতার কথা ঘোষিত হয়েছে-যা পূর্বেই উল্লেখ করেছি। পরে আগরতলায় আমার এক ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা- সঞ্জয়ের সাথে দেখা হওয়ায় তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তারা নোয়াখালী শহরে কিভাবে স্বাধীনতার কথা জানতে পারে। সে আমায় জানিয়েছিল যে, ২৭শে মার্চ সকাল থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এ সম্পর্কে মাইকযোগে প্রচার করতে থাকে এবং বঙ্গবন্ধুর বাণী সম্বলিত একটি হ্যান্ডবিল জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হয়। 

আত্মীয়রা গ্রামে আছেন-ওদিকে মিলিটারীর দৌরাত্ম্য নেই। মুক্তাঞ্চল বলা চলে। সে আমাদের ওখানে নিয়ে যেতে রাজী হল। ওর নাম নুরুল ইসলাম। স্থির হল নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চ বা নৌকায় আমরা ঐ গ্রামের দিকে যাব। ডঃ আজাদ পরামর্শ দিলেন হিন্দু পরিচয়ে কিছুতেই যাওয়া যাবে না। যেতে হলে মুসলমান পরিচয়ে। কিন্তু বিপত্তি হল মাকে নিয়ে। মা কিছুতেই প্রথম জিজ্ঞাসাতে মুসলমান নাম বলতে পারেন না, মুখ দিয়ে আসল নাম বেরিয়ে আসে। অতএব স্থির হল আমরা রাস্তায় জিজ্ঞাসাবাদের পাল্লায় পড়লে নেটিভ ক্রিশ্চিয়ান পরিচয় দেব। নাম স্থির করার প্রয়োজন নেই। ক্রিশ্চিয়ানরা বাংলা নামেই পরিচয় দেয়। হলিক্রস কলেজের পরিচিত এক সিষ্টারের কাছ থেকে 'ক্রশ', কিছু বাংলা ও ইংরেজী বাইবেল ও অন্য পুস্তক যোগাড় হল। মা ও স্ত্রী 'ক্রশ' ঝুলালেন গলায়। স্থির হল ১৫ই মে আমরা ঢাকা ত্যাগ করব। ডঃ আজাদ ওর প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে পরিচয় পত্র জোগাড় করে দিলেন।

কয়েকদিন গ্রামে কাটালাম। একদিন রাতে দাউদকান্দি-কুমিল্লা মহাসড়কের দু'পাশের কয়েকটি গ্রামে মিলিটারী অপারেশন চালাল। এর ঢেউ আমাদের গ্রামেও এসে লাগল। গ্রামবাসীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ল। বিশেষ করে হিন্দু জনসাধারণ। আমার আত্মীয়রাও স্থির করল ওরা ভারতে চলে যাবে কিছু দিনের মধ্যেই। তাই স্থির করলাম ভারতে গিয়েই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করার। স্থির করলাম ২২শে মে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করব। স্থানীয় মুক্তিবাহিনীর একটি ছোট দলও আমাদের সাথে যাবে তবে ওরা ভিন্ন পথে, আমরা মিলিত হব সি এন্ড বি রোড পার হয়ে গোমতী নদীর ওপারে। গভীর রাত্রে একজন পথ প্রদর্শক সাথে নিয়ে আমরা আবার পথে নামলাম। দীর্ঘপথ কখনও হেঁটে, কখনও নৌকাযোগে পেরিয়ে আশ্রয় নিলাম চান্দিনার কাছে এক গরীব নাপিতের বাসায়। 

সেদিন বিকেলে ভারতীয় চলচ্চিত্র, ডকুমেনটেশন বিভাগ আমার একটি সাক্ষাৎকার চিত্রায়িত করল। ঢাকা ও বাংলাদেশে যে গণহত্যা চলছে তার একটি বিশদ বিবরণ দিলাম। এই চিত্রায়ন পরে ভারতের নানা স্থানে প্রদর্শিত হয়েছিল। পরদিন ছিল নজরুল জয়ন্তী, সত্যবাবুর উদ্যোগে উদ্বাস্তু ও যুবশিবিরের ছাত্ররা অনুষ্ঠান করল। আমরা অনেকেই বক্তৃতা করলাম। দেখা হল চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা এম আর সিদ্দিকীর সাথে। তাঁকে সব জানালাম। তিনি পরামর্শ দিলেন কোলকাতায় চলে যাওয়ার জন্য। সেখানে মুজিব নগরস্থ বাংলাদেশ সরকার ও ডঃ এ আর মল্লিকের সাথে দেখা করার জন্য। সেখানে আমাদের মত লোকের নাকি বিশেষ প্রয়োজন।

স্থির করলাম কোলকাতা চলে যাওয়ার। কয়েকদিন শরণার্থী শিবির ও যুবশিবিরে ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশ থেকে আগত বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজনদের কাছ থেকে পাক বাহিনীর অত্যাচার সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করলাম। দেখা হয়েছিল দেবদাস চক্রবর্তী ও ডঃ এস আর বোসের সাথে। সমস্যা দেখা দিল অসুস্থ স্ত্রী ও মাকে নিয়ে। ওঁদের চিকিৎসা ও বিশ্রামের প্রয়োজন। স্থির হল আসামে শিবসাগরে কর্মরত বড় ভাইয়ের কাছে মা ও স্ত্রীকে রেখে আমি কোলকাতা চলে যাব। 

কোলকাতা পৌঁছলাম জুন মাসের মাঝামাঝিতে। আশ্রয় পেলাম মাসীমার ভবানীপুরস্থ বাসায়। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের সাথে দেখা করলাম তিনি আমাকে বাংলাদেশ সরকারের প্ল্যানিং সেলের সাথে যুক্ত থেকে কাজ করার নির্দেশ দিলেন। যোগাযোগ হল ডঃ এ আর মল্লিক, ডঃ আনিসুজ্জামান, ডঃ খান সারওয়ার মুর্শিদ, অধ্যাপক আলী আহসান ও অন্যান্য অনেকের সাথে। মুক্তিযুদ্ধের কাজে সর্বাত্মকভাবে নেমে পড়লাম। ডঃ আনিসুজ্জামান সরকারের বিশেষ কাজে জড়িয়ে পড়ায় মে মাসে গঠিত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সম্পাদকের দায়িত্ব আমার উপর বর্তাল। অবরুদ্ধ ঢাকায় অবস্থানকালে ও বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে নারকীয় হত্যার একটি প্রতিবেদন আমরা তৈরী করেছিলাম সেসময়। 

জয়নুল আবেদীন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক, ঢাকা থেকে চলে এসেছেন। ওঁর কাছ থেকে ঢাকার বিস্তারিত খবর পাওয়া গেল। ঢাকায় গেরিলাদের কর্মতৎপরতার কথা জানা গেল। খবর পাওয়া গেল মুনীর চৌধুরীর, অধ্যাপক হাবিবুল্লাহর, কবি শামসুর রাহমানের, হাসান হাফিজুর রহমানের। তিনি আরও জানালেন-ঢাকার কয়েকজন বুদ্ধিজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিরোধ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সাহসিকতার সাথে।

অবশেষে এল সেই দিন ৩রা ডিসেম্বর। সন্ধ্যে সাতটায় এলগিন রোডে নেতাজীভবনে সম্বর্ধনা সভা-উত্তর ইউরোপীয় কয়েকটি দেশের ডেমোক্রেটিক সোস্যালিষ্টিদের একটি প্রতিনিধিদলের আগমন উপলক্ষে। বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অবহিত করান হচ্ছে তাদের। হঠাৎ শিক্ষক সমিতির জনৈক কর্মী সভা থেকে আমাকে ডেকে নিয়ে এল। জানাল, পাকিস্তানী বিমান ভারতের গভীরে নানাস্থানে হামলা চালিয়েছে। আনন্দে চিৎকার করে উঠেছিলাম সেদিন। আমাদের স্বাধীনতা আসন্ন। যুদ্ধ শুরু হল। ভারতীয় বাহিনী যোগ দিলেন আমাদের সাথে মিত্র বাহিনীরূপে।

কিন্তু এরই মধ্যে হৃদয়বিদারক খবর এল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৩ই ডিসেম্বর পাকসৈন্য ও তাদের অনুচরেরা হত্যা করেছে ৪০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে। বিচলিত হয়ে পড়লাম, আশঙ্কা করলাম হয়তো ঢাকাতেও অনুরূপ ঘটেছে বা ঘটতে চলছে। কোলকাতায় মিত্র বাহিনীর সদর দপ্তরের সাথে, বি এস এফ-এর সাথে যোগাযোগ করে আবেদন জানালাম, যে করেই হোক, ঢাকাস্থ বুদ্ধিজীবীদের, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জীবন রক্ষা করতে হবে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ঘন ঘন আবেদন জানান হল-নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার। কিন্তু আমাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হল। স্বাধীনতার প্রাকমুহূর্তে আমরা হারালাম শ্রেষ্ঠ সন্তানদের-চরম মূল্য দিতে হল স্বাধীনতার। তবু এর মধ্য দিয়ে এল স্বাধীনতা। মুক্তি। বিজয়। আত্মসমর্পণ করল পাকিস্তানী বাহিনী, বিনাশর্তে, যৌথ কম্যাণ্ডের কাছে। দিনটি ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১।


ডিসেম্বর   ১৯৭১   মুক্তিযুদ্ধ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড

প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিদ্যুৎ বিভাগের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপিততে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে আজ (মঙ্গলবার) রাত ৯টায়। এ সময় ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এর ফলে দেশের ইতিহাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে।

এর আগে, গত ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট।

এদিকে, অতিরিক্ত গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে গ্রাহকদের সহযোগিতা চেয়ে ৮ দফা করণীয় তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো-

১. রাত ৮টার পর শপিংমল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখুন।

২. নিম্নহারে বিদ্যুৎ বিল সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দোকান, শপিংমল, পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনে অতিরিক্ত বাতি ব্যবহারে বিরত থাকুন।

৩. সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী হলিডে স্ট্যাগারিং প্রতিপালন করুন।

৪. এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর উপরে রাখুন।

৫. দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে হুকিং বা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিরত থাকুন।

৬. বেআইনিভাবে ইজিবাইক ও মোটরচালিত রিকশার ব্যাটারি চার্জিং থেকে বিরত থাকুন।

৭. বিদ্যুৎ অপচয় রোধে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন।

৮. বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন।

বিদ্যুৎ উৎপাদন   বিদ্যুৎ বিভাগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ঢাকায় কবে বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস

প্রকাশ: ১০:১৩ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গরমে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী। সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজধানীতে কোনো বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে গরমে সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। সবাই এখন বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এ ছাড়া এ সময়ে দেশের পূর্বাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং অন্যত্র তা সামান্য হ্রাস পেতে। দেশের পূর্বাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়, সারাদেশে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বিস্তারলাভ করতে পারে।

বৃষ্টি   আবহাওয়া অফিস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম

প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম। প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে বেড়েছে এক টাকা। পেট্রল ও অকটেনের দাম বেড়েছে লিটারে দুই টাকা ৫০ পয়সা। 

জ্বালানি তেলের নতুন দাম মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা থেকে কার্যকর হচ্ছে। 

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের বিদ্যমান মূল্য লিটার প্রতি ১০৬ টাকা থেকে এক টাকা বৃদ্ধি করে ১০৭ টাকা, পেট্রোলের বিদ্যমান মূল্য লিটার প্রতি ১২২ টাকা থেকে ২.৫০ টাকা বেড়ে ১২৪.৫০ টাকা এবং অকটেনের বিদ্যমান মূল্য ১২৬.০০ টাকা থেকে ২.৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ১২৮.৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পুন:নির্ধারিত এ মূল্য আজ রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হযেছে।

পুন:নির্ধারিত এ মূল্য বুধবার (১ মে) থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

জ্বালানি তেল   বিশ্ববাজার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

অতি বাম-অতি ডানরা মিলে সরকার উৎখাতে কাজ করছে: শেখ হাসিনা

প্রকাশ: ০৮:২০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে যারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া তারা, আর কিছু বুদ্ধিজীবী অনবরত গিবত গাইছে। অতি বাম আর অতি ডান মিলে সরকার উৎখাতে কাজ করছে। তাদের মূল লক্ষ্য সরকার উৎখাত।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই পথ চলতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের ওপর আস্থা রেখেই দেশ চালায়৷ কিছু রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী অনবরত দেশবিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না৷ বাংলাদেশ তো পেছাচ্ছে না৷ এগিয়ে যাচ্ছে৷ তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে লুটপাট করতে পারছে না বলেই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় নেমেছে বিএনপি৷ বিএনপি এমন একটি দল, যাদের কোনো মাথামুণ্ডু নেই৷ তারা শুধু পারে অনলাইনে নির্দেশনা দিতে৷ ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে অপকর্ম করেছে, তা মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত না৷ 
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় না দেখে, মানবাধিকার নিয়ে বাংলাদেশকে সবক দেয়৷ মার্কিন কোনো পুলিশের গায়ে কোনো রাজনৈতিক দল হাত তুললে, কী করতো সেখানকার পুলিশ? কদিন আগে যুদ্ধের বিরোধীতা করায় সাধারণ মানুষের আন্দোলনে কি জুলুমটাই না করলো আমেরিকার পুলিশ। এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ এর জবাব কী? 
 
প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীকে সাবধানে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় গরম ছড়িয়ে পড়ছে৷ শিগগিরই বৃষ্টি হবে বলে আশা করছি৷ পহেলা আষাড় থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ চালিয়ে যেতে হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা৷ 

শেখ হাসিনা   কার্যনির্বাহী সংসদ   গণভবন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুদকে প্রথম নারী ডিজি শিরীন

প্রকাশ: ০৭:৫১ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পেয়েছেন শিরীন পারভীন। তিনি সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন। নিজস্ব জনবল কিংবা প্রেষণ- যেকোনো পর্যায় থেকে দুদকের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী ডিজি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ পদোন্নতির কথা জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর তৃতীয় গ্রেডে শিরীন পারভীনকে মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি দিয়ে এ আদেশ জারি করা হলো।

দুদক   দুদক মহাপরিচালক   শিরীন পারভীন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন