ইনসাইড বাংলাদেশ

আনন্দাশ্রু নিয়ে দেশে ফেরেন জাতীয় নেতারা

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

মানুষ ইতিহাস আশ্রিত। অতীত হাতড়েই মানুষ এগোয় ভবিষ্যৎ পানে। ইতিহাস আমাদের আধেয়। জীবনের পথপরিক্রমার অর্জন-বিসর্জন, জয়-পরাজয়, আবিষ্কার-উদ্ভাবন, রাজনীতি-অর্থনীতি-সমাজনীতি একসময় রূপ নেয় ইতিহাসে। আজ ২২ ডিসেম্বর। কিছুদিন আগেই ১৬ই ডিসেম্বর গেল আমাদের বিজয়ের দিন। কিন্তু ১৯৭১ সালের বিজয়ের ঠিক পরপরের সময়টা কেমন ছিল? সেই সময় এই ২২ ডিসেম্বর দিনটিতে কি ঘটেছিল? আজ কিছুটা জেনে আসি, ফিরে দেখে আসি সে সময়টা।

২২ ডিসেম্বর ১৯৭১: ঢাকায় ফিরে পুষ্পবৃষ্টি ও অশ্রুজলে সিক্ত জাতীয় নেতারা

ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজে ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কলকাতার দমদম বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছান বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান, অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী এম মনসুর আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাকসহ মন্ত্রীসভার ৭ সদস্য।

অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীদের পদার্পণের মধ্য দিয়ে ঢাকা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানীতে রূপান্তরিত হয়। এ সময়ে তেজগাঁও বিমানবন্দরে তাদের দেখতে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। উড়োজাহাজ থেকে নামার সময় লাখো জনতা জয় বাংলা স্লোগান দিতে থাকে। বিমানবন্দরে তাদের গণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিমানবন্দরে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার সদস্যদের গার্ড অব অনার প্রদান করে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ভারতীয় বাহিনীর সৈন্যরা।

এ দিন সকালে বাংলাদেশ বেতারে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আসার ঘোষণার পর থেকেই তেজগাঁও বিমানবন্দরে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে অগণিত মিছিল হাতে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে বিমানবন্দরের দিকে আসতে থাকে মানুষ।

বিমানবন্দরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, 'গত ৯ মাসে হাজারো বাঙালির রক্ত বাংলাদেশের মাটিতে ঝরেছে। তবুও এই নবজাত রাষ্ট্র গড়ার জন্য আমরা আরও রক্ত দিতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ আজ বাস্তব সত্য এবং পৃথিবীর কোনো শক্তিই এই বাস্তবকে অস্বীকার করতে পারে না। আজকের এই দিনেও সমস্ত জাতির বড় দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি শত্রুর কারাগারে বন্দি। তবে আমরা শীঘ্রই তাকে মুক্ত করে আনবো।'

তিনি আরও বলেন, 'এই মুহূর্তটি আমার কাছে জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। আমরা যে এভাবে ফিরে আসতে পারবো কখনো ভাবিনি।'

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেসব শক্তি ষড়যন্ত্র করছে তাদের সতর্ক করে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বলেন, 'কোনো জাতিরই বাংলাদেশের ক্ষতি করার সাহস থাকা উচিৎ নয়। ইয়াহিয়া যেমন আজ ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে ঠিক তেমনই শত্রুদের অবস্থাও এমন হবে।'

ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, 'ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব পরস্পরের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এই বন্ধুত্বের মধ্যে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকতে পারে না। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ভারতের জনগণ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি। ভারত এক মহান জাতি। তারা তাদের নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত থাকা সত্ত্বেও আমাদের মুক্তি সংগ্রামে সহায়তা করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পোল্যান্ড, ভুটানসহ যেসব বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো আমাদের সমর্থন এবং স্বীকৃতি দিয়েছে তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা থাকবে।'

তিনি আরও বলেন, 'সকল কৃতিত্বের অধিকারী বাংলার মানুষ। যেসব বাঙালি যুবক অস্ত্র ধারণ করেছে, প্রাণ দিয়েছে তারা প্রমাণ করেছে যে বাঙালি যুদ্ধ করতে জানে, অকাতরে প্রাণ দিতে জানে। সাড়া পৃথিবীর কাছে তারা বাঙালির মুখ উজ্জ্বল করেছে, ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।'

বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য সবাইকে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানান।

অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ তার বক্তব্যে  প্রথমে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, 'শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বংশধরদের কাছে তারা প্রেরণার হয়ে থাকবেন।'

তাজউদ্দীন আহমদ আরও বলেন, 'বাংলার সাড়ে ৭ কোটি মানুষ স্বাধীনতা লাভের জন্য যে গণবিপ্লবে মেতে উঠেছিলেন, সেই বিপ্লব থেমে গেলে চলবে না, বরং বিপ্লবকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে গঠনমূলক কাজে।'

তিনি বলেন, 'সাম্যবাদী অর্থনীতি, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ কায়েম করা যখন সম্ভব হবে, তখনই বিপ্লব সম্পূর্ণ হবে। শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েমে কাউকে বাধা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। আমরা বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে বিস্ময়ের সঙ্গে উপস্থাপন করবো। শহীদের রক্তে গড়া এই বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে সমুজ্জ্বল হয়ে টিকে থাকবে।'

এরপর একে একে মন্ত্রীসভার সদস্যরাও বিমানবন্দরে বক্তব্য দেন। বাংলাদেশ বেতার সরাসরি বিমানবন্দর থেকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার সদস্যদের ঢাকায় ফিরে আসা উপলক্ষে সরাসরি ধারা বর্ণনা দেয়।

বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীসভার সদস্যরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এর আগে তারা কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে এলে হাজারো মানুষ তাদের দেখতে আসেন। এ সময় তাদের বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাজউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, 'ঠিক এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে বঙ্গবন্ধুর কথা। জানি না তিনি কেমন আছেন, কি অবস্থার মধ্যে আছেন, তবে তার স্মৃতি কেমন করে ভুলি?'

অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে সাংবাদিকেরা বিদায় মুহূর্তে তার অনুভূতির কথা জানতে চাইলে তার চোখ পানিতে ভরে উঠে। তিনি ধীর গলায় বলেন, 'ভারতের ৬০ কোটি মানুষের জন্য রেখে যাচ্ছি বুক ভরা ভালোবাসা। আর যিনি ভারতের নেতৃত্বও দিচ্ছেন সেই শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি জানাচ্ছি সাড়ে ৭ কোটি বাঙালির কৃতজ্ঞতা।'

তাজউদ্দীন আহমদের কাছেও বিদায়ী অনুভূতির কথা জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে তাজউদ্দীন আহমদ বলেন, 'স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ হিসেবে আজ আমরা ফিরে যাচ্ছি। নিজেকে ভীষণ হালকা লাগছে। আমাদের এখন লক্ষ্য হবে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা। তাহলেই আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানো হবে।'

দেশব্যাপী এ দিন:

২২ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এক ঘোষণায় বলা হয়, আজ দেশের বিভিন্ন জেল থেকে প্রায় দেড় হাজার রাজবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০০ বন্দিই ঢাকা ও যশোর জেলে আটক ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক এক ঘোষণায় বলে, আগামী সোমবার থেকে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।

এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে এক সভায় বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যারা হত্যা করেছে তাদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে গণ্য করে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গণ্য করার জন্য দাবি জানানো হয়। এ সময় দাবিতে আরও বলা হয়, 'পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীর যে সব ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিচার করতে হবে।'

একই সঙ্গে সভায় বলা হয়, 'পাকিস্তান সরকারের এই পরিকল্পিত গণহত্যার জন্য শাস্তি প্রদান করতে জাতিসংঘকেও এগিয়ে আসতে হবে।' সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. এম এ লতিফ।

এ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রেসনোটে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম তালিকা প্রকাশ তবে। তবে এতে বলা হয় 'সমস্ত শিক্ষক এবং গবেষকদের এখনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আশঙ্কা করা হচ্ছে তারাও হানাদারদের শিকার হয়েছেন।'

 মুজিবনগর সরকার:

এ ছাড়াও মুজিবনগর সরকার, যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল জনগণের রায়ে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী সংগঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় এই সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ মুজিবনগর থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। 


১৯৭১   মুক্তিযুদ্ধ   বিজয়   জাতীয় নেতা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে বজ্রসহ শিলা-বৃষ্টি

প্রকাশ: ১০:৪১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীতে শুরু হয়েছে বজ্রসহ বৃষ্টি। সঙ্গে শিলা। আজ রোববার (৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় এ শিলা-বৃষ্টি। এর আগে রাত ৯টার দিকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া।

শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছয় দিন ধরে হতে পারে ঝড়বৃষ্টি। কয়েক দিনের বৃষ্টির পর কমে যেতে পারে তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের ওপর দিয়ে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া কাল সোমবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। এতে করে যেসব জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল সেগুলো ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে। 

রাজধানী   শিলা-বৃষ্টি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বন্ধ বিমানবন্দর চালুর পরিকল্পনা আপাতত নেই: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান জানিয়েছেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালুর পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

রোববার (৫ মে) বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য আলী আজমের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
 
ফারুক খান বলেন, বর্তমানে দেশে তিনটি আন্তর্জাতিক, সাতটি অভ্যন্তরীণ ও পাঁচটি স্টল বিমানবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর চালু রয়েছে। এসব বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালু করার পরিকল্পনা সরকার তথা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আপাতত নেই। তবে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন, যাত্রী চাহিদা এবং এয়ারলাইনসগুলোর আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বন্ধ বিমানবন্দরগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

বিমানবন্দর   বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী   জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং, বিদ্যুৎ গেল কোথায়: সংসদে চুন্নু

প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

লোডশেডিং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি রয়েছে। তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি এ প্রশ্ন করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই মুহূর্তে সারাদেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। তার মধ্যে দুটি সমস্যায় মানুষ খুব আক্রান্ত। একটি হলো বিদ্যুৎ। এই মৌসুমে সারাদেশে গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটির কথা, তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়? বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে আমার এলাকার মানুষ দাওয়াত দিয়েছে, লোডশেডিং হয় কিনা দেখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, যে সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ভাড়ায়, তাদের সক্ষমতার ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরেও বসে আছে এবং ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থেকে ভাড়া বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আগের পার্লামেন্টে আমি বলেছিলাম, আমার এলাকায় প্রায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজকে চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই সশরীরে উনি আমার এলাকায় একটু যাবেন, যে কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

চুন্নু বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

লোডশেডিং   মুজিবুল হক চুন্নু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘুর জমি দখল, ঘর নির্মাণ


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে একটি টিনসেট ঘর স্থাপন করেছে তাজল ইসলাম নামে এক ভূমি পরিমাপক। 

রোববার (৫ মে) ভোর রাতে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের করুনানগর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলেও যথা সময়ে পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। 

বিকেলে ভূক্তভোগী টিংকু রানী দাস, বিপন রানী দাস, শোভন দাস ও অনিক চন্দ্র দাসসহ কয়েকজন এ অভিযোগ করেন। তারা জানায়, লোক মারফত তারা জানতে পারেন তাজল ইসলাম বিরোধীয় জমিতে ঘর তুলবেন। এতে শনিবার (৪ মে) দিবাগত সারারাত তারা পাহারারত ছিলেন। কেউই ঘুমাননি। রোববার ফজরের আযান দিলে তারা ঘুমাতে যায়। ঠিক সেই মুহুর্তে তাজল ইসলাম প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষকে নিয়ে এসে বিরোধীয় জমিতে থাকা টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে। ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে সবাই এসে বাধা দিলে তাজল ইসলামসহ তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের (ভূক্তভোগী) ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে ভূক্তভোগীরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়। সেখান থেকে বিষয়টি কমলনগর থানাকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছতে ২ ঘণ্টা সময় লাগিয়েছে। এর মধ্যে অন্যত্র তৈরিকৃত একটি নতুন ঘর এনে তাজল ইসলামরা বিরোধীয় জমিতে স্থাপন করে। এসময় টিংকু, বিপন, শোভন ও অনিকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়। 

ভূক্তভোগীরা আরও জানায়, পুলিশ এসে ঘর দেখে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। যদি পুলিশ সময়মতো আসতো তাহলে তাজল ইসলামরা ঘর স্থাপন করার সুযোগ পেতো না। আদালতে মামলা চলমান থাকলেও হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপনের ঘটনায় তাজল ইসলামের বিচার চেয়েছেন ভূক্তভোগীরা।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিলন মন্ডল বলেন, ডালিম কুমার দাস নামে এক ব্যক্তি তাজল ইসলামের কাছে জমি বিক্রি করে। ডালিম ও তাজলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক রাম কৃষ্ণ দাসসহ ভূক্তভোগীরা অগ্রক্রয় অধিকার আইনে রামগতি সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলমান। এরমধ্যে তাজল ইসলাম হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপন করে আইন অমান্য করেছে। আমরা তার বিচার দাবি করছি। 

তবে অভিযুক্ত তাজল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তিনি রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রামের বাসিন্দা। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশও পাঠানো হয়েছে। হামলার ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। কেউ আটকও নেই। জায়গা জমি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ক্রেতা তার জমি দখল করতে এসেছে। এটি উভয়পক্ষ বসে মীমাংসা করতে পারতো।

লক্ষ্মীপুর   সংখ্যালঘু   জমি দখল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তাপপ্রবাহে কী করতে হবে, জানিয়ে জাতীয় নির্দেশিকা প্রকাশ

প্রকাশ: ০৮:২১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় গাইডলাইন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সরকার।

রোববার (৫ মে) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান করা হয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় গাইডলাইনের মোড়ক উন্মোচন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যাদের ডায়াবেটিস, হার্ট-ডিজিস বা বিভিন্ন অসুখ রয়েছে, তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সব সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অনেক বেশি। এর কারণ আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে শহরের গাছপালা সব কেটে সাবাড় করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারি না। কিন্তু নগর পরিকল্পনার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি, তাহলে অনেকাংশেই পরিত্রাণ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ।

তাপপ্রবাহ   জাতীয় নির্দেশিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন