ইনসাইড বাংলাদেশ

বছরের আলোচিত সেরা ১০ চরিত্র

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বিদায় লগ্নে ২০২৩। কিন্তু পুরো বছর জুড়ে ঘটেছে নানা ঘটনাবহুল ঘটনা। বিরোধী দলের আন্দোলন, মার্কিন ভিসা নীতি, ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের ঘোষণা, ২৮ অক্টোবর নানা ঘটনা-অঘটনায় খবরের পাতা ছিলো সরগরম। আর এ সমস্ত ঘটনাবলির সঙ্গে যুক্ত আছেন এ বছরের সেরা আলোচিত ১০ চরিত্র। আসুন দেখে নেয়া যাক কারা এই সেরা ১০ চরিত্র।

পিটার ডি হাস: এ বছরের সেরা আলোচিত চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম হলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনিই এ বছরের সেরা আলোচিত চরিত্র। অভিযোগ রয়েছে একটি নিদিষ্ট মিশন নিয়েই তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। আর সেই মিশন হল বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচূত্য করা। এই অভিযোগের কারণ অবশ্য তিনি নিজেই। কারণ বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিশেষ করে বিএনপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার দফা দফায় বৈঠক এই অভিযোগের অন্যতম কারণ। বিরোধী দলের কোনো কোনো নেতা তাকে অবতার বা ভগবান বলতেও এতটুকু কাপণ্যরোধ করেননি। শুধু তাই নয়, রাশিয়াও একাধিকবার অভিযোগ করেছে যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বাংলাদেশে বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার পতনের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত।

খালেদা জিয়া: বছরজুড়ে আলোচনায় ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সারা বছর জুড়েই ছিল তার এভারকেয়ার হাসপাতালে যাওয়া আসা। সবশেষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়া গত ৯ আগস্ট থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। গত ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে তার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন। প্রায় চার মাস ধরে এভারকেয়ারেই আছেন খালেদা জিয়া। নির্বাচনে যাওয়ার শর্তে খালেদা জিয়া হয়তো বিদেশে চিকিৎসা করতে যাওয়ার সুযোগ নিবেন- এমন গুঞ্জন উঠেছিল। বিভিন্ন মহলের দাবি এ ব্যাপারে আলোচনা গড়িয়েছিল অনেক দূর। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত আর সেটি সম্ভব হয়নি। এভারকেয়ার হাসপাতালে তার চিকিৎসা নিয়েও চলে নানা রকম নাটকীয়তা। বিএনপির দাবি ছিল দেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্ভব নয়। যেকোনো মূল্যে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হবে। যদিও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য ছিল ভিন্ন। তারা বলছিলেন, প্রয়োজনীয় সমস্ত ‍উন্নত চিকিৎসা খালেদা জিয়া দেশেই পাচ্ছেন। বরং তার চিকিৎসার ব্যাপারে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের অতি উৎসাহিত তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো কোনো প্রভাব ফেলেছি। 

ওবায়দুল কাদের: ‘খেলা হবে’ ও ‘তলে তলে’ বক্তব্যের জন্য বছরজুড়েই আলোচনায় ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আগামী জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে। গত ৩ অক্টোবর আমিনবাজারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা এখন পথ হারিয়ে দিশেহারা। দুই সেলফিতেই বাজিমাত। এক সেলফি দিল্লিতে, আরেক সেলফি নিউ ইয়র্কে। শেখ হাসিনা দিল্লিতে, তারপরে গিয়ে নিউ ইয়র্কে বাজিমাত।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘কোথায় স্যাংশনস, কোথায় ভিসানীতি! তলে তলে আপস হয়ে গেছে, আপস হয়ে গেছে। দিল্লি আছে, আমেরিকারও দিল্লিকে দরকার। আমরা আছি, দিল্লিও আছে। দিল্লি আছে, আমরাও আছি। শত্রুতা কারও সঙ্গে নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব।’ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ‘তলে তলে আপস’ হওয়ার বিষয়ে তোলপাড় করা বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে গত ৫ অক্টোবর সচিবালয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই বক্তব্যে তিনি ‘ভুল কিছু বলেননি’।

‘তলে তলে আপস মানে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন বা আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে, আমি সেটা বোঝাতে চেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তলে তলে’যে বলি, সেটা পাবলিক খায়। সেজন্যই তো বলি- ‘খেলা হবে’। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন যে, রাজনীতিবিদরা যা বলেন তা সবসময় যে সঠিক তা নয়। তারা কৌশলগত দিক থেকেই কিংবা বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে অথবা কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতেই অনেক কৌশল অবলম্বন করনে। সে জায়গায় ওবায়দুল কাদের সফল বলে মনে করছেন কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বছরের সেরা চরিত্রগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শারীরিক ভাবে অসুস্থতার মধ্যেও তিনি বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলনকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমকে সরকার পতনের আন্দোলন পরিচালনার জন্য তিনি বিএনপির বিভিন্ন মহলে সমালোচিত এমন কথাও শোনা গেছে। সরকার পতনের এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে তিনি সারা বছরজুড়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। বিএনপির আন্দোলনকে একটা পর্যায় পর্য়ন্ত নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু এক সময় গিয়ে তিনি সে অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অভিযোগ। তাছাড়া বিএনপির আন্দোলন নিয়েও মির্জা ফখরুলকে ভর্ৎসনার শিকার হতে হয়েছে। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন যে, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ এবং এই মহাসমাবেশ থেকেই আন্দোলনের মহাযাত্রা শুরু হবে। ঢাকা অচল করে দেওয়া হবে। ঢাকা দখল করা হবে। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই আবার তিনি বলেন যে, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় শুধু সমাবেশ হবে। সমাবেশ শেষে তারা বাসায় ফিরে যাবে। ঢাকায় অবস্থান করা, ঢাকা দখল করা কিংবা অচল করে দেওয়ার মতো কোন কর্মসূচি তাদের নেই। মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যে দলের কর্মীরা কিছুটা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল বলে জানা গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি তাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের চরিত্র ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি। ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে তাণ্ডব চালালে আইনশৃঙ্খলা সক্ষমতার সাথে পরিস্থিতির সামাল দেয়। আর বিএনপি তাদের নিজেদের চোরাগলিতে আটকে যায়।

ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন: বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপোড়েন বা বাংলাদেশ সম্পর্কে পশ্চিমাদের ক্রমাগত নেতিবাচক ধারণার পেছনে সবচেয়ে ব্যর্থ মনে করা হয় সংশ্লিষ্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। কিন্তু মন্ত্রণালয় সে রকম কোনো উদ্যোগ তো গ্রহণ করেনি। বরং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বিভিন্ন মুখরোচক কথাবার্তা বলে বিতর্কিত এবং সমালোচিত হয়েছেন। বিশেষ করে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণা এবং তা কার্যকরের খরবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানা রকম ভাবে সমালোচিত হয়েছেন।

টিপু মুনশি: এ বছরের সেরা চরিত্রগুলোর আরেক চরিত্র হলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। দ্রব্যমূল্য নিয়ে তার বক্তব্যগুলোতে সাধারণ মানুষ চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। বিষয়টি গড়িয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সন্মেলনে। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সংকট তৈরি হবে-জাতীয় সংসদে দেওয়া এমন বক্তব্যের বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ‘সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা না। আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব তো।’ এরপরও বাণিজ্যমন্ত্রীর মুখের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হয়নি। এর কিছু দিন পর তিনি জনতার সামনে হাজির করেন লিপস্টিক তত্ত্ব। সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্বস্তিতে আছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার এলাকার কেউ কষ্টে নেই। মহিলারা তিনবার করে লিপস্টিক লাগাচ্ছে দিনে। চারবার করে স্যান্ডেল বদলাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট মানুষ মন্ত্রীর এ বক্তব্য খুবই নেতিবাচকভাবে নেয়।

ড. আব্দুর রাজ্জাক: গত ১৭ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘(বিএনপির) ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার না করলে কি বাংলাদেশে আজ যে গাড়ি চলতেছে এই হরতালের দিন, আপনারা এই গাড়ি দেখতেন?... এছাড়া আমাদের জন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না। কোনো অল্টারনেটিভ ছিল না। যেটা করেছি আমরা চিন্তাভাবনা করে করেছি।’ কৃষিমন্ত্রীর এ বক্তব্যেও শোরগোল পড়ে যায়। বিব্রত হন খোদ আওয়ামী লীগের নেতারা। আব্দুর রাজ্জাকের এ বক্তব্য ‘সঠিক নয়’ দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বক্তব্য আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের নয়, এটি তার নিজস্ব বক্তব্য।’এরপর ‘বেকায়দায়’ পড়ে ১৮ ডিসেম্বর আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের কাছে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে লিখিত বিবৃতিতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ওই বেসরকারি চ্যানেল কৃষিমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি। মন্ত্রীর খোলামেলা বক্তব্যকে কোনো কোনো মহল বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কৃষিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং সত্য আপন জ্যোতিতেই উদ্ভাসিত থাকবে। বছরের শেষান্তে এসে এমন বিষ্ফোরক মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রীও বছরের সেরা চরিত্রে নিজের জায়গা পোক্ত করেছেন বেশ ভালো ভাবেই।

আলী রিয়াজ: আলী রিয়াজ ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সরকারের নানা সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সরব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ বিষয়ে অন্যতম পরামর্শক মনে করা হচ্ছে তাকে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যে সমস্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান তৎপর তাদের অন্যতম পরামর্শ হিসেবে কাজ করছেন মার্কিন প্রবাসী এই বাংলাদেশি। একদা বাম রাজনীতির সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এখন সরকারের কট্টর সমালোচনা। অনেক ক্ষেত্রেই তাকে বিএনপির পরামর্শ মনে করা হচ্ছে।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখন সবচেয়ে পছন্দের ব্যক্তিদের তালিকায় তিনি অন্যতম। 

জিল্লুর রহমান: জিল্লুর রহমান হলেন সেন্টার ফর গভর্নমেন্ট স্ট্যাডিজ–সিজিএস এর নির্বাহী পরিচালক। এছাড়া তার প্রধান পরিচয় হল বিএনপি-জামায়াতপন্থি হিসেবে। বিএনপির মিডিয়া সেলের নিয়ন্ত্রক জহিরুদ্দিন স্বপনের সঙ্গে রয়েছে জিল্লুরের বিশেষ সখ্যতা। তার মাধ্যমে লন্ডনে তারেকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বাড়িয়েছে তার শক্তি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কূটনীতিকদের সক্রিয় করতে জিল্লুর রহমানের অশুভ তৎপরতার অভিযোগ রয়েছে। মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশস্থ বিদেশি বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ডেকে উস্কানিমূলক প্রশ্ন করে বাংলাদেশ সম্পর্কে কূটনীতিকদের নেতিবাচক ধারণা তৈরি পেছনে জিল্লুর রহমানের তৎপরতা রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

শাহজাহান ওমর: জামিনে কারাগার থেকে বেরোনোর পরদিন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বছরের সেরা চরিত্রে তকমা পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ঝালকাঠি-১ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। অথচ তিনি আওয়ামী লীগের আদর্শের ধারে-কাছেও কখনো ছিলেন না, যিনি বিএনপি-জামায়াতের একজন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, সারা জীবন আওয়ামী লীগকে নোংরা-অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেছেন, কয়েকদিন আগেই যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করেছেন, পিটার ডি হাসকে যিনি অবতার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একেবারেই হঠাৎ করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে এবার নির্বাচন করছেন তিনি। পাশাপাশি বিএনপি থেকে এসে এখন আবার প্রায় প্রতিদিন বিএনপির সমালোচনা করে চলছেন।

২০২৩ সাল   আলোচিত চরিত্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বর্ধিত হচ্ছে মেট্রোরেলের লাইন

প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

বর্তমানে রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল। তবে এই লাইন বধিত হচ্ছে নতুন নকশায়। যা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের আশুলিয়া নয়, বর্ধিত হবে টঙ্গী পর্যন্ত।

এরই মধ্যে বর্ধিত এ পথের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। দ্রুতই নকশা চূড়ান্ত করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মেট্রোরেল এখন চলছে উত্তরা থেকে মতিঝিল। বর্ধিতাংশ আসছে বছর কমলাপুরে পর্যন্ত চালু হবে।

এদিকে এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের সময়ই দিয়াবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ তৈরি করে রাখা হয়েছে ভবিষ্যতের কথা ভেবে। পরিকল্পনা ছিল পথটি আশুলিয়া পর্যন্ত নেয়ার। তবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী পর্যন্ত নেয়া হবে এ রেলপথ; পরিকল্পনা টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত যুক্ত করার।

উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পথ তৈরি হয়েছে বিআরটি। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। ফলে এ পথে নতুন করে আরো একটি উড়াল রেলপথ বের করা অসম্ভব। যার জন্য রুট কোনটি হবে তা নিয়ে চলছে পরিকল্পনা।

মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, এখন টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত এ পথটি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মূলত টঙ্গী রেলস্টেশন এবং সড়ক জংশনকে যদি সংযুক্ত করতে পারি, তাহলে ঐ অঞ্চলের মানুষের সুবিধা বাড়বে।

তিনি বলেন, যদিও প্রাথমিক পরিকল্পনায় এখনই এ অংশের কাজে হাত দেওয়ার কথা ছিল না। তবে এবার দ্রুত এ পথে হাঁটতে চায় ডিএমটিসিএল। এরই মধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শুরু হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত নকশা হবে। এ পথটি যুক্ত হলে টঙ্গী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৪৮ মিনিট।


মেট্রোরেল   বাংলাদেশ   ঢাকা   রাজধানী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পাইলট অসিম জাওয়াদ

প্রকাশ: ০৩:৫৫ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট অসিম জাওয়াদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শুক্রবার (১০ মেবিকেল ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে নানা মরহুম মোহাম্মদ রউফ খানের কবরে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নিহত পাইলট অসিম জাওয়াদের মরদেহ বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণ পর হেলিকপ্টার থেকে তার কফিনবন্দি মরদেহ কাঁধে করে নামিয়ে আনেন বিমানবাহিনী সদস্যরা। পরে নিহত অসিমকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ছেলের কফিনবন্দি মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পরেন মা নিলুফা খানমসহ স্বজনরা।

পরে দুপুর ২টার দিকে শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে জুমার নামাজের পর পাইলট আসিম জাওয়াদের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এর পর লাশবাহী গাড়িতে করে মরদেহ সেওতা কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নানা মরহুম মোহাম্মদ রউফ খানের কবরে দাফন করা হয় এই পাইলটকে।

এদিকে পাইলট অসিম জাওয়াদের মরদেহ শেষবারের মতো এক নজর দেখতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামে ভিড় করতে থাকেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ তার স্বজনরা। অসিমের মরদেহ বহনকারী বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার করে তার বাবা আমানউল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার দুই সন্তানসহ স্বজনরা সেখানে নামেন। সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

নিহত অসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট অসিম মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।


মানিকগঞ্জ   চিরনিদ্রায়   পাইলট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পাইলট সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর চিকিৎসক বাবা

প্রকাশ: ০৩:৩৭ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

একমাত্র সন্তান বৈমানিক অসিম জাওয়াদকে হারিয়ে শোকে কাতর চিকিৎসক বাবা আমান উল্লাহ। সন্তানের লাশ সামনে রেখে তিনি জানান, জীবনের ঝুঁকি জেনেও একমাত্র সন্তানকে তারা বিমান বাহিনীতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের রেখে সন্তান এভাবে চলে যাবে- সেটা কখনো ভাবতে পারেননি। শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন ।

ড. আমান উল্লাহ বলেন, আমি তো ডাক্তার, আমি জানি কতটা জীবন ঝুঁকি আছে এ দায়িত্বে। ওর মাও নিষেধ করেছিল। কিন্তু আমি ওর পছন্দকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, ঝুঁকি জেনেও বিমান বাহিনীতে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমি ভাবিনি যে, আমার ছেলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। ও শুধু আমাদের ছেড়ে যায়নি। ওর ছোট্ট বাচ্চাগুলোকেও ছেড়ে গেল। আমি জানি না, ওর মতো করে বাচ্চাগুলোকে পালন করতে পারব কিনা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। 

কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়ার আগেই বিমানে থাকা বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ প্যারাসুট দিয়ে নদীতে নামলেও দুজন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা বিএনএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে বিমান বিধ্বস্তর ঘটনায় বৈমানিক অসীম জাওয়াদ বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  

শুক্রবার (১০ মে) বেলা আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলার হাজারও মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে পাইলট অসিম জাওয়াদ রিফাতের মরদেহ জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে দাফন করা হয়।




মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ডেটিং অ্যাপসে বান্ধবীকে বিক্রি

প্রকাশ: ০৩:২০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানী উত্তরার একটি বেসরকারি কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী মোছা. সামিয়া। তিনি ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানে তারই কাছের এক বান্ধবীকে বিক্রি করে ফায়দা তুলেছেন।

সেখানে মাহি নামের একটি অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করেছেন তার বান্ধবীর ছবি। আর সেই ডেটিং অ্যাপসের অ্যাকাউন্ট থেকে রুম ডেট করার নামে বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান, সামিয়া এসব অ্যাপসে নিজের ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। রুম ডেটের কথা বলে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার; এমনকি সুযোগ বুঝে লাখ টাকাও নিয়েছে কারও কারও কাছ থেকে। ভুয়া জন্মদিনের কথা বলে নিয়েছে দামি উপহার। এমনকি বাসার জন্য মাছ, মাংসসহ বাজারও নিয়েছে।

নিজের ছবিতে যখন আর কাজ হচ্ছিল না, তখন বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা শুরু করে সামিয়া। রুম ডেটের জন্য বিকাশে টাকা নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্লক করে দেন। অভিযুক্ত সামিয়ার এসব অপকর্মের এবং বিভিন্ন পুরুষের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের অডিও ও মেসেজের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে আসছে।

বান্ধবীর দ্বারা এমন হেনস্তার শিকার হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন সেই শিক্ষার্থী। বান্ধবীর নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কাছের বান্ধবীর এমন আচরণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, আমি রাস্তাঘাটে বের হতে পারছি না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। তার দ্বারা যেন অন্য কেউ আর প্রতারিত না হয়। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ করার পরই নিজের ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ করে দিয়েছে সামিয়া।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির নারী প্রতারক চক্র পুরুষদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী গণমাধ্যমকে জানান, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।


ডেটিং   অ্যাপস   বিক্রি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যমুনার বুকে দৃশ্যমান হল বঙ্গবন্ধু রেল সেতু

প্রকাশ: ০২:২৮ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

যমুনা নদীর বুকে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। সেতুটির সব কটি স্প্যান বসানো হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুটির গত এপ্রিল থেকেই ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের পুরোটাই দৃশ্যমান। তবে এখনো শেষ হয়নি নির্মাণকাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন হতে পারে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ১৬ শতাংশ কাজ দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে। বাকি কাজের মধ্যে এখন সেতুর ওপর ডুয়েল গেজ রেললাইন বসানোর কাজ চলছে’।

আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ রেললাইন বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু অ্যাডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। অ্যালাইনমেন্ট ও লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেনের কাজ ও কালভার্টগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। আশা করছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ডিসেম্বরের শেষ দিকে সেতুটি উদ্বোধন করা সম্ভব হবে’।

সেতুটির ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার এখন পুরোটাই দৃশ্যমান। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।

সেতুটির প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এই রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেঞ্চার।

ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার। এ ছাড়া সেতুর উভয় প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের কর্মীরা নিয়োজিত আছেন। ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, সেতুটির ওপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে এই সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে।

রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে, সেটা আর থাকবে না। নির্মাণ শেষে সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহনের খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে’।


যমুনা নদী   দৃশ্যমান সেতু   বঙ্গবন্ধু রেলসেতু  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন