ইনসাইড বাংলাদেশ

নীলফামারী-২: ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থানে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী

প্রকাশ: ০১:২১ পিএম, ০৪ জানুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী- ২(সদর) আসনে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। আসনটিতে এবার তিন দলের চারজন প্রার্থী থাকলেও ভোটের লড়াই হবে দ্বিমুখী। ভোটের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিচ্ছেন হেভিওয়েট প্রার্থী চার বারের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর এবং জেলা আওয়ামী লীগের এক সময়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। আসনটিতে জাতীয় পার্টির হয়ে শাহজাহান আলী চৌধুরী প্রার্থী হলেও ভোটের মাঠে নেই তার শক্ত অবস্থান। এছাড়াও আসনটিতে বাংলাদেশ কংগ্রেসের হয়ে মোরছালিন ইসলাম নামের এক যুবক প্রার্থী হলেও ভোটের মাঠে নেই সে।

নীলফামারী সদরের ১৫টি ইউনিয়ন আর একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন নীলফামারী-০২ (সদর)। ১৯৭৩ প্রথম এবং ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। আসনটি আওয়ামী লীগের হলেও ১৯৮৬ তৃতীয় এবং ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে এটি দখল করে নেয় জাতীয় পার্টি। এরপর ১৯৯১ সালে সিপিবির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীক দিয়ে আওয়ামী লীগ আসনটি উদ্ধার করলেও ১৯৯৬ সালে ১৫ ফ্রেবুয়ারী ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে এটি দখল করে বিএনপি এবং ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে এটি চলে যায় জাতীয় পার্টির দখলে।

২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বাকের ভাই খ্যাত দেশ বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরকে প্রার্থীতা দিয়ে আসনটি উদ্ধার করে আওয়ামী লীগ। সেই বার প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। ২০১৪ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হতে হয়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূরকে। এবারও তার ওপরেই আস্থা রেখেছে আওয়ামী লীগ।

এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও প্রার্থীতা দিয়েছে জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ কংগ্রেস। তবে ভোটের মাঠে এই দুই প্রার্থীর শক্ত অবস্থান না থাকলেও আসাদুজ্জামান নূরের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। জয়নাল আবেদীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সামান্য ভোটে পরাজীত হয় জাতীয় পার্টির প্রার্থী আহসান আহমেদের কাছে। এরপর ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে। এবার জয়নাল আবেদীন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নৌকা প্রতীকের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করছেন। তাই এবার ভোটের মাঠে আসাদুজ্জামান নূরের বিপরীতে তিনিই একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী।

ভোটাররা বলছেন, এবার নির্বাচনের ভোটের তিব্র লড়াই হবে আসাদুজ্জামান নূরের নৌকা প্রতীকের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের ট্রাক প্রতীকের। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে কে জয়ী হবেন তা এখনই নিশ্চিত করে বলার কোন সুযোগ নেই। তবেই যেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোক না কেন শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এক জেলার সাথে আরেক জেলার যোগাযোগ নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করণে জোর দেওয়ার দাবি জানান সাধারণ ভোটারা।

ভোটারদের মন জয় করতে ভোটাদের দ্বারে গিয়ে তুলে ধরছেন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আর বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাইছেন নিজের ট্রাক প্রতীকে ভোট। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হলে ভোটারদের রায় তার পক্ষে যাবে বলে দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন। 

তিনি বলেন,‘আমরা শুধু একটি জিনিসে মনে করি। নীলফামারীর সর্বস্তরের মানুষ আজকে জেগেছে। পরিবর্তন চায়। আগামী ৭ তারিখের নির্বাচন দিয়ে এদেরকে পরাজিত করবে। অশুভ শক্তি পরাজিত হবে। ভালো মানুষের হাতে ক্ষমতা আসবে এবং নীলফামারীতে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি নীলফামারীকে একটি সুন্দর মডেল নীলফামারী উপহার দিতে পারব।’

এদিকে আসাদুজ্জামান নূর পরিচ্ছন্ন ইমেজধারী। তার হাত ধরে ঘটেছে জেলার বেশ উন্নয়ন। নিজের ইমেজ ধরে রাখতে এবং নৌকা প্রতীকের জয় নিশ্চিত করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। অভিযোগের বিচারের ভার ছেড়ে দিয়েছেন সাধারণ ভোটাদের মাঝে। সেই সাথে ভোটারদের কাছে গিয়ে দিচ্ছেন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি। 

তিনি বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন করেছি কি করিনি, আমার সেখানে কোনো ভূমিকা ছিল কি ছিল না এটা বিচার করবে আমার এই নির্বাচনী এলাকার জনগণ। আমি বিচারের দায়ভার তাদের হাতেই দিতে চাই। আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে জনগণ তাদের রায় প্রদান করবে।’

নীলফামারী-২   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ

প্রকাশ: ০৪:০৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail নওগাঁয় কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ কর্মসূচী

নওগাঁয় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে খরিপ মৌসুমে উফশী আউশ, পাট ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।


সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টায় নওগাঁ সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন।

এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত মেহেদী সেতু’র সভাপতিত্বে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক কমল ও সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রণোদনার অংশ হিসেবে মোট ৭ হাজার ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতি বিঘা ফসলের জন্য উফশী আউশ ৬ হাজার ৬৭০ জনকে ৫ কেজি বীজ, ডিএপি ১০ কেজি ও এমওপি ১০ কেজি। এছাড়া ২৩০ জনের প্রত্যেককে এক কেজি করে পাট বীজ এবং গ্রীষ্মকালিন ২৫০ জন কৃষককে পেয়াঁজ চাষে এক কেজি বীজ, ডিএপি ২০ কেজি এবং এমওপি ২০ কেজি দেয়া হয়।


কৃষি প্রণোদনা   কৃষক   বীজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সংঘর্ষ, বিজয়ী ও পরাজিত উভয় প্রার্থী গ্রেপ্তার


Thumbnail লক্ষ্মীপুরের তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের আটককৃত বিজয়ী ও পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

 

জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরের পর দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে একাধিক বার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।

 

পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় বিজয়ী চেয়ারম্যান ওমর হোসাইন ভুলু ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরী সহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৪/৫শ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে পুলিশবাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছে।

 

এঘটনায় বিজয়ী ও পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফ উদ্দিন আনোয়ার।গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আঁধার মানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর আবারও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও ২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিজয়ী ও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান  এবং জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ওমর  ইবনে হোসাইন ভুলু এবং  পরাজিত প্রার্থী  তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরীকে আটক করেছে।


ইউপি নির্বাচন   সংষর্ঘ   চেয়ারম্যান প্রার্থী   গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রকল্প উদ্বোধনে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এমপি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর

প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সাধারণত কোন সংসদীয় এলাকায় কোন প্রকল্প উদ্বোধন করনে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য। প্রকল্প উদ্বোধনের ফলকে ওই সংসদের নামও উল্লেখ্য করা হয়। এমনটাই হয়ে আসছে। তবে এক্ষেত্রে এবার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।

তিনি বলেন, এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সেই সাথে উদ্বোধনী ফলকের ওপরেই থাকবে তাদের নাম।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে পরশুরাম উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

নির্দেশনায় বলা হয়, এলাকার বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন ও উদ্বোধনী ফলকে নামের প্রথম সারিতে থাকবে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম। সেই তালিকার নিচে থাকবে - উপস্থিত সংসদ সদস্যের নাম।

এর আগে ২৮ এপ্রিল তার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও মতবিনিময় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সেবক হয়ে শতভাগ সততার সহিত আপনাদের দেওয়া দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, ফেনী-১ আসনের জনগণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে জয় যুক্ত করেছেন, এজন্য আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আপনাদের সেবায় আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে যাব। রাস্তাঘাট, পুল, কালভার্ট কোথায় কি সমস্যা আছে সব আমি নিজ চোখে দেখবো এবং ক্রমান্বয়ে সবগুলোর কাজ করবো আপনারা শুধু আমাকে সহযোগিতা করবেন। ইতিমধ্যে আমি ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীর বিদ্যুতের লোডশেডিং মুক্ত করেছি। আগামীতে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে।

আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম   ফেনী-১  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে

প্রকাশ: ০১:৫৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ এখন কামরাঙ্গীরচর ও আদাবর এলাকা। এ ছাড়া ধানমন্ডি এলাকায়ও উষ্ণতার মাত্রা তীব্র হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের বিপদে রয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসকারীরা এই গ্রীষ্মে তুলনামূলক কম বিপদে আছেন। কারণ, ঢাকার মধ্যে এসব এলাকায় উষ্ণতার মাত্রা সবচেয়ে কম।

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ২৪ এপ্রিল প্রকাশ করা ‘তাপপ্রবাহ: বাংলাদেশ, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রচণ্ড দাবদাহের এ পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের বিপদগুলো চিহ্নিত করতে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে সংস্থাটি।

কোন এলাকায় তাপমাত্রা কেমন, তা চিহ্নিত করার পাশাপাশি মূলত চারটি সূচক আমলে নিয়ে একটি মানচিত্র তৈরি করেছে সংস্থাটি। উষ্ণতার মানচিত্রটি রোববার ( ২৮ এপ্রিল ) হালনাগাদ করা হয়েছে। তাপমাত্রা, জনসংখ্যার ঘনত্ব, দরিদ্র মানুষের উপস্থিতি এবং ঘনবসতির পরিমাণ ও বস্তির সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রাকৃতিক কারণেই বেশি গরম থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কয়েক বছর ধরে রাজধানীসহ সারা দেশে তীব্র উষ্ণতা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, কমছে কর্মক্ষমতা। তিনি বলেন, ‘সাধারণ নাগরিকেরা বিশেষ করে দরিদ্র মানুষ কী ধরনের গরমের ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তা চিহ্নিত করতে আমরা সমীক্ষাটি করেছি।’

নগরবিদ ও পরিবেশবিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা গ্রীষ্মকালের প্রায় পুরোটা সময় উষ্ণ বা তাপীয় দ্বীপে পরিণত হচ্ছে। ঢাকার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা উত্তরা, মিরপুর ও ধানমন্ডিতেও একই ধরনের উষ্ণতার বিপদ তৈরি হয়েছে। অল্প জায়গায় বিপুলসংখ্যক মানুষের বসতি, অতিমাত্রায় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার, গাছপালা ও জলাভূমি না থাকা এবং রাজধানী শহরের বেশির বাভ জায়গা কংক্রিটের স্থাপনা দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে যাওয়ার কারণে অতি উষ্ণতার ঝুঁকি বছর বছর বাড়ছে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কামরাঙ্গীরচর ও আদাবরের তাপমাত্রা এতটাই বেশি যে সেখানে ঘরের বাইরে বের হয়ে অল্প সময় অবস্থান করলেই নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এসব এলাকার রিকশাচালক, ভ্যানচালক, হকার, নির্মাণশ্রমিক ও নিম্নআয়ের মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। তাঁরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম কাজ করতে পারছেন। দাবদাহের কারণে রোগবালাই বেড়ে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকার মধ্যে মতিঝিল, ফার্মগেট, মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও গুলশান এলাকায় উষ্ণতা মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। কিন্তু এসব এলাকার বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে ভেতরে অবস্থান করা মানুষ কম ঝুঁকিতে আছেন। তবে ভবনগুলোর বাইরে বা সড়ক এবং উন্মুক্ত স্থানে উষ্ণতা আরও বেড়ে যাচ্ছে এসব ভবনের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কারণে।

যে সব এলাকায় বিপদ বেশি

গত বছরের অতি উষ্ণ পরিস্থিতির পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং ক্লাইমেট সেন্টার যৌথভাবে ঢাকা শহরের উষ্ণতার বিপদ নিয়ে এই সমীক্ষা করে।

সমীক্ষা অনুযায়ী, উষ্ণতার বিপদে থাকা এলাকাগুলো হচ্ছে কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, গাবতলী, গোড়ান, বাসাবো, টঙ্গী, শহীদনগর, বাবুবাজার, জুরাইন, হাজারীবাগ, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী, তেজকুনীপাড়া, নাখালপাড়া, সায়েদাবাদ, কুর্মিটোলা, আজমপুর, কামারপাড়া, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও মহাখালী। গ্রীষ্মের পুরো সময়জুড়ে এসব এলাকা তাপপ্রবাহের বিপদে থাকছে।

তবে শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় উষ্ণতার বিপদ কম। এমন কম ঝুঁকির অন্য এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, খিলক্ষেত ও ডেমরা। এসব এলাকার অনেক জায়গায় এখনো ঘনবসতি তৈরি হয়নি। এ ছাড়া এসব এলাকায় এখনো কিছু গাছপালা ও জলাভূমি রয়েছে।

সমীক্ষা দলের অন্যতম প্রধান ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সহকারী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে অন্যান্য দুর্যোগের মতো তাপপ্রবাহ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি তৈরি শুরু করেছে। এমনি মানুষের মৃত্যুও ঘটছে। ফলে এই বিপদকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উচিত গরমে কষ্টে ভোগা মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

উষ্ণতার বিপদে কারা

ঢাকার উষ্ণতা নিয়ে গত বছর একই গবেষক দল আরেকটি সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে বলা হয়েছে, শহরে জমে থাকা ২ দশমিক ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রাকৃতিক তাপমাত্রার সঙ্গে যোগ হয়। সবচেয়ে বেশি উষ্ণ সময় থাকছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। এই সময়টাতে শ্রমজীবী মানুষেরা কাজ কমিয়ে দিতে বাধ্য হন। বিশেষ করে ভ্যান ও রিকশাচালকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

সমীক্ষায় দেখা যায়, ওই সময়ে খাওয়ার স্যালাইনের বিক্রি সাধারণ সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গরমে মাথা ঘোরা, বমি ও ঠান্ডা-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। ডায়রিয়া ও কলেরার প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যায়। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে জুনের মধ্যে করা ওই জরিপে প্রায় ৮৭ শতাংশ উত্তরদাতা এর আগের বছরের চেয়ে বেশি গরম অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন। একজন রিকশাচালক স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই সময়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রিকশা কম চালান। এর ফলে তাঁর আয়ও কমে যায়।

এ পরিস্থিতিতে মানুষের কষ্ট লাঘবে করণীয় জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উষ্ণ এলাকাগুলোতে পানি ছিটিয়ে কিছুটা স্বস্তি আনার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষদের ছাতা ও পানির বোতল দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। আর দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে গাছ লাগানো শুরু করেছি।’

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সমীক্ষায় আরও বলা হয়, গ্রীষ্মকালে গরম ও অসুস্থতার কারণে রিকশাচালকেরা মাসে গড়ে ছয় দিনের বেশি সময় কাজে যেতে পারেন না। এ ছাড়া প্রতিদিন গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা কম কাজ করতে পারেন। ৮৩ শতাংশ রিকশাচালক জানিয়েছেন, গরমের সময়ে তাঁদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় অন্য সময়ের তুলনায় মাসে ৫৩৫ টাকা বেড়ে যায়। একইভাবে হকার, নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষেরা কম কাজ করতে পারছেন। এতে তাঁদের আয় কমে যাচ্ছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, ‘ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে গ্রামের তুলনায় গরম অনেক বেশি। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের স্কুল বন্ধ রাখা উচিত ছিল। ছোটবেলায় আমরা এই গরমে গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেতাম। আর এখন এই গরমের ঝুঁকির মধ্যে শিশুদের ঠেলে দেওয়া অন্যায় হচ্ছে।’

সিটি করপোরেশনের রাস্তায় পানি ছিটানো ও গাছ লাগানোর প্রসঙ্গে এই পরিবেশ ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞ বলেন, এগুলো না করে উচিত ছিল সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিটি রাস্তার মোড়ে খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করা, মানুষ যাতে টানা আধা ঘণ্টার বেশি তপ্ত রোদের নিচে না থাকেন, সেই পরামর্শ দেওয়া, রিকশাচালক বা শ্রমজীবী মানুষের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করা। তা না করে যেসব করা হচ্ছে, তা লোকদেখানো। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট কমছে না।


তীব্র তাপপ্রবাহ   ঝুঁকি   রাজধানী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তরুণীকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রলীগ নেতা

প্রকাশ: ০১:৪১ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফেনী সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে হাজির হয়েছেন ঢাকার এক তরুণী। ঘটনা জানাজানি হলে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় সেই তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একই দিন সন্ধ্যায় সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ।

জানা গেছে, রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরের দিকে এক তরুণী বান্ধবীসহ ঢাকা থেকে সোনাগাজী চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। ওই তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রামপুলিশ সদস্যের সঙ্গে ওই তরুণীকে ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠায়।

গ্রামপুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা বিজয়ের বাড়িতে পৌঁছালে সে আমাদের অপেক্ষা করতে বলে তরুণী ও সঙ্গে থাকা মেয়েকে ঘরে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও সাংবাদিকরা বিজয়ের বাড়িতে ভিড় করে। সে ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরে কথা বলবে বলে জানায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর জানতে পারি বিজয় ওই দুই তরুণীকে নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়েছে।

চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, দুপুরের দিকে এক তরুণীসহ দুজন ইউনিয়ন পরিষদে এসে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানায়। তখন তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান। আমি গ্রামপুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দিয়ে তাদেরকে বিজয়ের বাড়িতে পাঠাই। গ্রাম পুলিশ সদস্যরা বাইরে অপেক্ষা করার সময় বিজয় তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানতে পারি।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিষয়ে জানতে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বিজয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।


ছাত্রলীগ   তরুণী   বিয়ের দাবি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন