ইনসাইড বাংলাদেশ

‘গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হওয়া উচিত সেভাবেই হয়েছে’


Thumbnail

গতকাল এ দেশে সাধারণ নির্বাচন হয়েছে এবং অত্যন্ত সুস্থ নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, সম্পূর্ণ স্বচ্ছ নির্বাচন বলতে যা বোঝায়, সেটিই হয়েছে। মানুষ, বিশেষ করে প্রমাণ ছাড়া হলেও লোকের ভিতরে একটা পার্সেপশন কিন্তু গ্রো করেছিল, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই ২০১৪ এবং ১৮ সালের নির্বাচন সম্পর্কে যে, এই নির্বাচন সঠিকভাবে হয়নি। এখন আমি এটা নিয়ে এনালাইসিস করতে চাই না, এটা লোকের পারসেপশন। আর এবারের পারসেপশন হচ্ছে দেশ এবং বিদেশে যে, সবচেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হওয়া উচিত সেভাবেই হয়েছে। 

নির্বাচনে বিএনপি একটি শক্তিশালী বিরোধী দল এটা সত্য। তাদের নেতৃত্ব নাই কিন্তু বগি আছে। মানে ইঞ্জিনের অভাব আর কি, সেটা আলাদা বিষয়। কিন্তু অনেক সময় দুর্বল ইঞ্জিন নিয়েও কিন্তু গাড়ি চলতে পারে। যাই হোক দুর্ভাগ্যবশত তাদের রাজনৈতিক দর্শনের অভাব আছে। এইখানেই হল দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সাথে মূল পার্থক্য দেশের এবং বিদেশের বহু রাজনীতিবিদদের। 

তিনি একজন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক। তার প্রত্যেকটি কাজে একটি দর্শন থাকে যে, আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন নির্বাচনের আগে পরের সব সময় তাদের মিডিয়ায় দেখেছেন। মনে হয় যেন, তার ভিতরের সামান্য কোনও চিন্তা নেই। সবকিছু যদি সত্যিই চলতে কারণ কি? কারণ হচ্ছে, তিনি দার্শনিক একটি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে করেন। তাতে কী রেজাল্ট হবে, সেটি নিয়ে তার কোনও কনসার্নই না। জনগণ চাইলে তিনি নিজে ক্ষমতায় আসবে, না হলে চলে যাবেন এবং টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন জায়গাও ঠিক করেছেন। সুতরাং, তার চিন্তার কোনও কারণই নেই। এইভাবেই তিনি করেন এবং আগামী নির্বাচন আল্লাহর রহমতে তিনিই করবেন এবং একইভাবে করবেন। এটা বলা যায়, পার্থক্য এই যে আগামীবার যাদেরকে তিনি লায়াবিলিটি হিসেবে টেনে নিয়ে বেড়ান, এবারও কিছু কিছু টানতে হয়েছে, এগুলো থাকবে না, ঝেরে ফেলে দেবেন। 

আমি ছয় মাসেরও আগে বাংলা ইনসাইডারে একটা আর্টিকেলে লিখেছিলাম যে, এবার জাতীয় পার্টির তৃতীয় হবে। তখন অনেকে পরে হাসাহাসি করেছিল। কিন্তু, প্রমাণ হয়ে গেল জাতীয় পার্টি নিয়ে আমি যেটা বলেছিলাম সেটিই। এবং, কয়েকদিন আগে গল্পে গল্পে আমি বলছিলাম যে, ৬ থেকে ৮টি আসন বোধ হয় জাতীয় পার্টি পাবে। তো দেখা গেল ১১ টি সিট পেয়েছে। এটা হচ্ছে, লোকে বলে ইনটিউশন। একটা জিনিস বুঝতে হবে যে, ইনটিনশনটা কিন্তু শূন্যের উপরে হয় না। এক্সপিরিয়েন্স লাগে এবং বিভিন্ন জিনিস অ্যানালাইসিসের উপরে। সুতরাং, একটা জিনিস বললাম এটা হয়ে যাবে, এটা হয় না। যেমন অনেক আওয়ামী লীগের দুর্বল ক্যান্ডিডেটদের জায়গায় দার্শনিক শেখ হাসিনার মিটিং করতে গেলেন। আমি শুধু বললাম যে, পপুলারিটি তো যেহেতু ট্রান্সফারেবল না সুতরাং মুশকিল হচ্ছে যে, দেশের অধিকাংশ লোকজন চায় যে, জননেত্রী শেখ হাসিনাই আবার দেশ চালাক। কিন্তু কাদের দিয়ে দেশ চালাবেন সেটা ওনার বিষয়। আর যেহেতু এবার যারা ইন্ডিপেন্ডেন্ট দাঁড়াচ্ছেন তারা এবং আওয়ামী লীগের নৌকা সব যেহেতু তাদের আদর্শের দিকে এক। সুতরাং, জনগণের কাছে এইখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলবেন আমার এই ক্যান্ডিডেটকে আপনারা সমর্থন করলে আমি হব, তাতে কিন্তু সেই ক্যান্ডিডেটকেই তারা সমর্থন করবে এটার নিশ্চয়তা নেই৷ কেননা তার বিরুদ্ধে যে সেও তো নেত্রীর আদর্শে বিশ্বাস করে। সেও তো পারলে নেত্রীর ফোটো দেয়, সেও তো পারলে নৌকাটা দেয়। নৌকা না পারলে তো অন্য কিছু দিয়েছে। সুতরাং, আমি বললাম যে যেখানেই যাচ্ছেন আমার মনে হয় না তাতে তাদের পপুলারিটির পরিবর্তন হবে। তাই-ই হয়েছে। তারা অধিকাংশই নির্বাচনে জিততে পারেননি। এখন এটা কী বোঝায়? এটা বোঝায়, দার্শনিক নায়ক শেখ হাসিনা কারও ব্যক্তিগত দায় দায়িত্ব নিতে রাজি নয়। বারবার তিনি বলেছেন যে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসতে হবে। হ্যাঁ, তিনি দলীয় প্রধান হিসেবে অনেক দুর্বল প্রার্থী, যে রকম এক মায়ের ভিতরে বিশেষ করে থাকে, যে ছেলে-মেয়েটি দুর্বল হয় বা পঙ্গু বা কোনো কিছু, তার প্রতি মায়ের একটু মায়া বেশি থাকে। ওনার সেই মায়া ছিল। কিন্তু, তাতে তো নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন হয় না। 

নির্বাচনে এবার তিনি দেখিয়ে দিলেন যে, এই গণতন্ত্রের মানসকন্যা তাকে নাম দেওয়া হয়েছিল। তিনি এদেশে এসেছিলেন তার ভাই, ভাইয়ের বউ, মা-বাপ সব নিকট আত্মীয় হারিয়ে চাচা, মামাতো ভাই। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের সমস্ত জনগণই আমার পরিবার। তিনি সেটা অক্ষরে অক্ষরে প্রমান দিলেন। এজন্য প্রথমেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেন। তিনি দেশের আসার পরও তখন কারফিউ ছিল, সেটা তুলে দিলেন। তারপর দেখলেন, স্বৈরাচারী শাসককে এদেশ থেকে বিতারণ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যার ভোট সে দিবে যাকে খুশি তাকে দেবে। ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। থাকার জন্য একটু ঘর লাগবে, এবং বাড়ির কোন এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা থাকবে না, যেন কেউ খাবার কষ্ট না পায়। কমিউনিটি ক্লিনিক করলেন, তাতে যেন বাড়ির কাছে বসেই প্রাথমিক চিকিৎসা পায়। প্রত্যেকটাই জনগণের। তিনি জনগণের সাথে যেভাবে মিশে গেছেন এবং জনগণের ভাষা বোঝেন তাতে কত দল নির্বাচনে আসলো, কি হলো তাতে তো কিছু আসে যায় না। তারা এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকেই পছন্দ করবে, তাকেই নির্বাচিত করবে। 

অনেকে কত কিছু বলেছিল যে, ইলেকশনের পরে এটা দেবে, সেটা দেবে অন্য দেশে। কিছুই করবে না। আমি তখন বলেছিলাম এবং লিখেছিলামও। বিশ্ব চলে এখন যার যার স্বার্থের ওপর নির্ভর করে। আমেরিকার স্বার্থও এখানে আছে, এখানে ফ্রেন্সদের স্বার্থ আছে, ব্রিটেন-রাশিয়ারও আছে, চাইনিজদের আছে; সবারই স্বার্থ আছে। এই স্বার্থের ভেতরে যার যার স্বার্থ বাদ দিয়ে, আর ভারত তো আমাদের প্রমাণিত প্রতিবেশি এবং চিরকালই তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক থাকবে। না থাকা দুই দেশের জন্যই খারাপ এবং সেটা হবে না। সরকার কোন দেশে কে আসলো না আসলো তা আমাদের জন্য কিছু ম্যাটার করে না, ভারতের জন্যও না। তারা চায় সুসম্পর্ক থাকবে এবং এক দেশে অন্য দেশের সম্পূরক হিসেবে অনেক বিষয়ে কাজ করবে। আমরা সেই ভাবেই এগিয়েছি। 

সুতরাং, এখন বলতেই হয় যে, এখন নির্বাচন হয়েছে নতুন ক্যাবিনেট হবে, মন্ত্রীপরিষদ হবে, এটা দেখলেও আপনারা অবাক হবে না। কিছু কিছু লোক আগের কেবিনেটের থাকবে, কারণ তারা প্রমাণ করেছে এবং তারা নেত্রীর টিমমেট হিসেবে যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু, অনেক জায়গায় যারা নতুন তিনি তাদেরকে সুযোগ দেবেন যেন সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তোলা যায়। তিনি ট্রায়াল এন্ড এরর দেন, অর্থাৎ সবাইকে সুযোগ দেন। যদি সেই সুযোগ কেউ প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে কি করবেন? এবারও তো অনেককেই নমিনেশন দিয়েছিলেন। দেখা গেছে, তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থীরা জিতে গেছে। তাও আবার একজন দুইজন না, ৬০ জনের ওপরে সেই সংখ্যা। সুতরাং, এই জায়গায় যার জন্য আগেকার অনেক নেতারা যারা বয়স্ক এবং তাদেরও অনেক অবদান, তাদের সম্পর্কে বারবার বলা উচিৎ না, কিন্তু তারা অনেকেই বলতেন যে, আমাদের তো নেত্রী কোন দায়িত্ব দেন না। তো, যখন তারা এক এগারোতে দায়িত্ব পেল তারা প্রথম দায়িত্ব পালন করলো সংস্কারবাদী হয়ে। অর্থাৎ, কি করে নেত্রীকে বাদ দেওয়া যায়। 

আমি বিশ্বাস করি, এখানে নেত্রীর দুটি ভিত্তি রয়েছে। একটি হচ্ছে তিনি কিছু লোকজনকে বিশ্বাস করে, তারা তার বিশ্বাসযোগ্য। আর কিছু লোককে মনে করেন তারা কাজের লোক, তাদেরকে কাজের প্রয়োজন। সেইখানে কাজের জন্য যতটুকু বিশ্বাস সেটাই যথেষ্ট, এর বেশি-কম নয়। আর কিছু আছে বিশ্বস্ত, তাদের কোন দায়িত্ব দেন বা না দেন, কিন্তু, তার বিশ্বস্ততা নেত্রীর কাজে লাগে। সুতরাং, নেত্রী সমস্তই রিল্যাক্স ওয়েতে চলছেন এবং আজকে রাতের ভেতরে দেখবেন বহু দেশ ইনফরমালি তারা সব জানাচ্ছে। কারণ, তিনি প্ল্যান করে চলেন, তাতে হয়তো শুক্রবারের মধ্যে নতুন সরকারও গঠন হবে। এবং উনি যেসব কমিটমেন্ট করেছিলেন, সেই স্মার্ট বাংলাদেশকে রুপান্তরিত করে যাবেন এবং আমাদের জীবদ্দশায় আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে সক্ষম হবো।


নির্বাচন   গণতন্ত্র   রাষ্ট্রনায়ক   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রকল্প উদ্বোধনে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এমপি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর

প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সাধারণত কোন সংসদীয় এলাকায় কোন প্রকল্প উদ্বোধন করনে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য। প্রকল্প উদ্বোধনের ফলকে ওই সংসদের নামও উল্লেখ্য করা হয়। এমনটাই হয়ে আসছে। তবে এক্ষেত্রে এবার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।

তিনি বলেন, এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সেই সাথে উদ্বোধনী ফলকের ওপরেই থাকবে তাদের নাম।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে পরশুরাম উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

নির্দেশনায় বলা হয়, এলাকার বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন ও উদ্বোধনী ফলকে নামের প্রথম সারিতে থাকবে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম। সেই তালিকার নিচে থাকবে - উপস্থিত সংসদ সদস্যের নাম।

এর আগে ২৮ এপ্রিল তার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও মতবিনিময় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সেবক হয়ে শতভাগ সততার সহিত আপনাদের দেওয়া দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, ফেনী-১ আসনের জনগণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে জয় যুক্ত করেছেন, এজন্য আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আপনাদের সেবায় আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে যাব। রাস্তাঘাট, পুল, কালভার্ট কোথায় কি সমস্যা আছে সব আমি নিজ চোখে দেখবো এবং ক্রমান্বয়ে সবগুলোর কাজ করবো আপনারা শুধু আমাকে সহযোগিতা করবেন। ইতিমধ্যে আমি ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীর বিদ্যুতের লোডশেডিং মুক্ত করেছি। আগামীতে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে।

আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম   ফেনী-১  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে

প্রকাশ: ০১:৫৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ এখন কামরাঙ্গীরচর ও আদাবর এলাকা। এ ছাড়া ধানমন্ডি এলাকায়ও উষ্ণতার মাত্রা তীব্র হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯০ শতাংশ এলাকা তীব্র তাপপ্রবাহের বিপদে রয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসকারীরা এই গ্রীষ্মে তুলনামূলক কম বিপদে আছেন। কারণ, ঢাকার মধ্যে এসব এলাকায় উষ্ণতার মাত্রা সবচেয়ে কম।

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে ২৪ এপ্রিল প্রকাশ করা ‘তাপপ্রবাহ: বাংলাদেশ, আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রচণ্ড দাবদাহের এ পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের বিপদগুলো চিহ্নিত করতে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে সংস্থাটি।

কোন এলাকায় তাপমাত্রা কেমন, তা চিহ্নিত করার পাশাপাশি মূলত চারটি সূচক আমলে নিয়ে একটি মানচিত্র তৈরি করেছে সংস্থাটি। উষ্ণতার মানচিত্রটি রোববার ( ২৮ এপ্রিল ) হালনাগাদ করা হয়েছে। তাপমাত্রা, জনসংখ্যার ঘনত্ব, দরিদ্র মানুষের উপস্থিতি এবং ঘনবসতির পরিমাণ ও বস্তির সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রাকৃতিক কারণেই বেশি গরম থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কয়েক বছর ধরে রাজধানীসহ সারা দেশে তীব্র উষ্ণতা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বাধাগ্রস্ত করছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, কমছে কর্মক্ষমতা। তিনি বলেন, ‘সাধারণ নাগরিকেরা বিশেষ করে দরিদ্র মানুষ কী ধরনের গরমের ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তা চিহ্নিত করতে আমরা সমীক্ষাটি করেছি।’

নগরবিদ ও পরিবেশবিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ৯০ শতাংশ এলাকা গ্রীষ্মকালের প্রায় পুরোটা সময় উষ্ণ বা তাপীয় দ্বীপে পরিণত হচ্ছে। ঢাকার পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা উত্তরা, মিরপুর ও ধানমন্ডিতেও একই ধরনের উষ্ণতার বিপদ তৈরি হয়েছে। অল্প জায়গায় বিপুলসংখ্যক মানুষের বসতি, অতিমাত্রায় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার, গাছপালা ও জলাভূমি না থাকা এবং রাজধানী শহরের বেশির বাভ জায়গা কংক্রিটের স্থাপনা দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে যাওয়ার কারণে অতি উষ্ণতার ঝুঁকি বছর বছর বাড়ছে।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কামরাঙ্গীরচর ও আদাবরের তাপমাত্রা এতটাই বেশি যে সেখানে ঘরের বাইরে বের হয়ে অল্প সময় অবস্থান করলেই নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এসব এলাকার রিকশাচালক, ভ্যানচালক, হকার, নির্মাণশ্রমিক ও নিম্নআয়ের মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। তাঁরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম কাজ করতে পারছেন। দাবদাহের কারণে রোগবালাই বেড়ে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকার মধ্যে মতিঝিল, ফার্মগেট, মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও গুলশান এলাকায় উষ্ণতা মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় পৌঁছেছে। কিন্তু এসব এলাকার বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে ভেতরে অবস্থান করা মানুষ কম ঝুঁকিতে আছেন। তবে ভবনগুলোর বাইরে বা সড়ক এবং উন্মুক্ত স্থানে উষ্ণতা আরও বেড়ে যাচ্ছে এসব ভবনের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কারণে।

যে সব এলাকায় বিপদ বেশি

গত বছরের অতি উষ্ণ পরিস্থিতির পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং ক্লাইমেট সেন্টার যৌথভাবে ঢাকা শহরের উষ্ণতার বিপদ নিয়ে এই সমীক্ষা করে।

সমীক্ষা অনুযায়ী, উষ্ণতার বিপদে থাকা এলাকাগুলো হচ্ছে কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, গাবতলী, গোড়ান, বাসাবো, টঙ্গী, শহীদনগর, বাবুবাজার, জুরাইন, হাজারীবাগ, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী, তেজকুনীপাড়া, নাখালপাড়া, সায়েদাবাদ, কুর্মিটোলা, আজমপুর, কামারপাড়া, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও মহাখালী। গ্রীষ্মের পুরো সময়জুড়ে এসব এলাকা তাপপ্রবাহের বিপদে থাকছে।

তবে শাহবাগ, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় উষ্ণতার বিপদ কম। এমন কম ঝুঁকির অন্য এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরখান, খিলক্ষেত ও ডেমরা। এসব এলাকার অনেক জায়গায় এখনো ঘনবসতি তৈরি হয়নি। এ ছাড়া এসব এলাকায় এখনো কিছু গাছপালা ও জলাভূমি রয়েছে।

সমীক্ষা দলের অন্যতম প্রধান ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সহকারী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশে অন্যান্য দুর্যোগের মতো তাপপ্রবাহ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি তৈরি শুরু করেছে। এমনি মানুষের মৃত্যুও ঘটছে। ফলে এই বিপদকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উচিত গরমে কষ্টে ভোগা মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

উষ্ণতার বিপদে কারা

ঢাকার উষ্ণতা নিয়ে গত বছর একই গবেষক দল আরেকটি সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে বলা হয়েছে, শহরে জমে থাকা ২ দশমিক ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রাকৃতিক তাপমাত্রার সঙ্গে যোগ হয়। সবচেয়ে বেশি উষ্ণ সময় থাকছে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত। এই সময়টাতে শ্রমজীবী মানুষেরা কাজ কমিয়ে দিতে বাধ্য হন। বিশেষ করে ভ্যান ও রিকশাচালকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।

সমীক্ষায় দেখা যায়, ওই সময়ে খাওয়ার স্যালাইনের বিক্রি সাধারণ সময়ের চেয়ে তিন গুণ বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গরমে মাথা ঘোরা, বমি ও ঠান্ডা-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। ডায়রিয়া ও কলেরার প্রাদুর্ভাবও বেড়ে যায়। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে জুনের মধ্যে করা ওই জরিপে প্রায় ৮৭ শতাংশ উত্তরদাতা এর আগের বছরের চেয়ে বেশি গরম অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন। একজন রিকশাচালক স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই সময়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রিকশা কম চালান। এর ফলে তাঁর আয়ও কমে যায়।

এ পরিস্থিতিতে মানুষের কষ্ট লাঘবে করণীয় জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উষ্ণ এলাকাগুলোতে পানি ছিটিয়ে কিছুটা স্বস্তি আনার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে দরিদ্র মানুষদের ছাতা ও পানির বোতল দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। আর দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে গাছ লাগানো শুরু করেছি।’

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সমীক্ষায় আরও বলা হয়, গ্রীষ্মকালে গরম ও অসুস্থতার কারণে রিকশাচালকেরা মাসে গড়ে ছয় দিনের বেশি সময় কাজে যেতে পারেন না। এ ছাড়া প্রতিদিন গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা কম কাজ করতে পারেন। ৮৩ শতাংশ রিকশাচালক জানিয়েছেন, গরমের সময়ে তাঁদের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় অন্য সময়ের তুলনায় মাসে ৫৩৫ টাকা বেড়ে যায়। একইভাবে হকার, নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষেরা কম কাজ করতে পারছেন। এতে তাঁদের আয় কমে যাচ্ছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, ‘ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে গ্রামের তুলনায় গরম অনেক বেশি। এ পরিস্থিতিতে শিশুদের স্কুল বন্ধ রাখা উচিত ছিল। ছোটবেলায় আমরা এই গরমে গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেতাম। আর এখন এই গরমের ঝুঁকির মধ্যে শিশুদের ঠেলে দেওয়া অন্যায় হচ্ছে।’

সিটি করপোরেশনের রাস্তায় পানি ছিটানো ও গাছ লাগানোর প্রসঙ্গে এই পরিবেশ ও জলবায়ুবিশেষজ্ঞ বলেন, এগুলো না করে উচিত ছিল সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিটি রাস্তার মোড়ে খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করা, মানুষ যাতে টানা আধা ঘণ্টার বেশি তপ্ত রোদের নিচে না থাকেন, সেই পরামর্শ দেওয়া, রিকশাচালক বা শ্রমজীবী মানুষের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করা। তা না করে যেসব করা হচ্ছে, তা লোকদেখানো। এতে সাধারণ মানুষের কষ্ট কমছে না।


তীব্র তাপপ্রবাহ   ঝুঁকি   রাজধানী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তরুণীকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রলীগ নেতা

প্রকাশ: ০১:৪১ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফেনী সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে হাজির হয়েছেন ঢাকার এক তরুণী। ঘটনা জানাজানি হলে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় সেই তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একই দিন সন্ধ্যায় সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ।

জানা গেছে, রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরের দিকে এক তরুণী বান্ধবীসহ ঢাকা থেকে সোনাগাজী চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। ওই তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রামপুলিশ সদস্যের সঙ্গে ওই তরুণীকে ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠায়।

গ্রামপুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা বিজয়ের বাড়িতে পৌঁছালে সে আমাদের অপেক্ষা করতে বলে তরুণী ও সঙ্গে থাকা মেয়েকে ঘরে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও সাংবাদিকরা বিজয়ের বাড়িতে ভিড় করে। সে ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরে কথা বলবে বলে জানায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর জানতে পারি বিজয় ওই দুই তরুণীকে নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়েছে।

চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, দুপুরের দিকে এক তরুণীসহ দুজন ইউনিয়ন পরিষদে এসে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানায়। তখন তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান। আমি গ্রামপুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দিয়ে তাদেরকে বিজয়ের বাড়িতে পাঠাই। গ্রাম পুলিশ সদস্যরা বাইরে অপেক্ষা করার সময় বিজয় তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানতে পারি।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিষয়ে জানতে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বিজয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।


ছাত্রলীগ   তরুণী   বিয়ের দাবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বন্ধ ঘোষণার পরও ঢাকার কিছু স্কুলে চলছে ক্লাস

প্রকাশ: ০১:১৭ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ঢাকাসহ ৫ জেলায় সোমবার (২৯ এপ্রিল) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল রাতে জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে খোলা রাখা হয়েছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

জানা গেছে, রোববার রাত ৮ টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাথে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ চাইলে খোলা রাখতে পারবে। সোমবার এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সোমবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোথাও সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে, আবার কোথাও রয়েছে খোলা। এমনকি একই এলাকার অন্য সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও দু-একটি প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকেও দুই ধরনের মন্তব্য পাওয়া গেছে।

একপক্ষ বলছেন, গতকাল রাতে সরকারি সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর তারা স্কুল বন্ধ রেখেছেন। অন্য পক্ষ বলছেন, তারা সরকারি সিদ্ধান্ত পাননি। তাই স্কুল খোলা রাখা হয়েছে।

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানই বন্ধ রাখা হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠান গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পরপরই প্রতিষ্ঠানের প্যাডে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্কুল বন্ধ রাখার বিষয়টি শিক্ষক, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়।

কিন্তু সোমবার সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে রাজধানীর দনিয়া এলাকার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে দেখা গেছে। এ এলাকার ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজে সকালের শিফটের ক্লাস শুরু হয়েছে সাড়ে ৭টায়। এ শিফটে ছাত্রীদের ক্লাস চলে।

সকাল ৭টার সময় স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে স্কুলে আসছেন। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকই ঘেমে-নেয়ে একাকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মূল ভবন ও ভাড়া ভবনে প্রাথমিক থেকে কলেজ স্তর পর্যন্ত খোলা রাখা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুসন্ধান কেন্দ্রে বসা দায়িত্বরত নারীকে অনেক অভিভাবকই প্রশ্ন করছেন, আজ না স্কুল বন্ধ? তাহলে খোলা রাখা হয়েছে কেন? এর কোনো জবাব দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই নারী দিতে পারেননি।

এই প্রতিবেদকও তার কাছে স্কুল খোলা রাখার কারণ জানতে চান। তিনি আমতা আমতা করে বলেন, স্কুলের প্রাথমিক শাখা তো সরকার বন্ধ করেনি। মাধ্যমিক শাখা খোলা রাখা হয়েছে কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

সেখানে উপস্থিত সপ্তম শ্রেণির একজন ছাত্রীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাশের অনেক স্কুলই সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এই স্কুল সরকারি সিদ্ধান্তের ধার ধারে না। সে কারণে বাধ্য হয়েই বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে আসতে হলো। অন্য স্কুলের বাচ্চারা বাসায় থাকছে, আর আমার মতো এই স্কুলের অনেক অভিভাবকের বাচ্চাকেই গরমের মধ্যে কষ্ট করে ক্লাস করতে হচ্ছে। এমন দ্বিচারিতা কি মানা যায়?

আফিয়া ইসলাম নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের পরও এ স্কুল খোলা রাখা হয়েছে। অথচ পাশেই অনেক স্কুল বন্ধ রয়েছে। তাই সবার জন্য একই নির্দেশনা দিয়ে আরও কয়েকদিন স্কুল বন্ধ রাখা উচিত। গরম কিছুটা কমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যেতে পারে।

জানতে চাইলে ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মহিদুর রহমান জেম বলেন, প্রাথমিক শাখা তো সরকার বন্ধ করেনি। তাই খোলা রাখা হয়েছে।

মাধ্যমিক শাখা কেন খোলা রেখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাচ্চারা না জেনেই স্কুলে চলে এসেছে। সে কারণে তাদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে আমরা দ্রুতই ছুটি দিয়ে দেব।

অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, সকালের শিফটে ক্লাস নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল এ প্রতিষ্ঠানটি। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্কুল বন্ধ রাখার কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। শিক্ষকদেরও স্কুল বন্ধ রাখা হবে নাকি খোলা রাখা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। সে কারণে ক্লাসের প্রস্তুতি নিয়েই স্কুলে এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষকরা।

ব্রাইট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০০ মিটার সামনে একে স্কুল অ্যান্ড কলেজের (আসকর আলী ও কোব্বাত মিঞা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়) অবস্থান। এ স্কুলটি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু স্কুলের পক্ষ থেকে বন্ধ রাখার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না জানানোয় অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রতিষ্ঠানে এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির সামনে একজন কর্মচারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে, যিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আসলে তাদের ফেরত পাঠানোর দায়িত্ব পালন করছেন।

একই অবস্থা দেখা গেছে বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, দোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয় ও যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ক্ষেত্রেও। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও শিক্ষার্থীদের কাছে সেই তথ্য কর্তৃপক্ষ ঠিক সময়ে পৌছানো হয়নি।

এর ফলে অনেকে অভিভাবকই তার বাচ্চাকে নিয়ে এসব স্কুলে এসে জানছেন, আজ স্কুল বন্ধ। এরপর রাগ-ক্ষোভ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়ানো। তারা স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের বাসায় ফেরত পাঠাচ্ছেন।

জানতে চাইলে বর্ণমালা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিম জাহান বলেন, গতকাল রাতে বা আজ সকালেও স্কুল বন্ধ রাখার কোনো নোটিশ বা ঘোষণা স্কুল থেকে পাইনি। সে কারণে স্কুলে এসেছিলাম। এখন শুনছি স্কুল বন্ধ।

ধোলাইপাড় মোড়ে কথা হয় দোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী উম্মে হাফসার মা নুসরাত জাহানের সঙ্গে। তিনি কালবেলাকে বলেন, গতকাল কোনো শিক্ষকই স্কুল বন্ধ থাকবে- এটি আমাদের জানায় নি। সে কারণে সকালে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্কুলে গিয়ে শুনি আজ বন্ধ। পরে অগত্যা বাসায় ফেরত যেতে হচ্ছে।

একই এলাকার রিদধি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সাউথ সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজও খোলা রাখা হয়েছে। এ দুটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। স্কুল খোলা রাখার কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান, তাই খোলা রাখা হয়েছে। তারা স্কুল বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা পান নি।


তীব্র তাপপ্রবাহ   ঘোষণা   ক্লাস   শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশ: ১২:৩৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুর রহমান হাওলাদার (৬৮) ও তার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (৫৪) এর নামে পৃথক দুইটি মামলা করেছে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন।

রোববার (২৯ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দুইটি দায়ের করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারি পরিচালক বিজন কুমার রায়।

জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, কোটালীপাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩,৪৬,১৬,০২৩/- (তিন কোটি ছেচল্লিশ লক্ষ ষোল হাজার তেইশ) টাকার সম্পদ অর্জনপূর্বক নিজ মালিকানা ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করেছে। গোপালগঞ্জ এর মামলা নং-০২, তারিখ-২৮/০৪/২০২৪ খ্রি. ।

অন্যদিকে, মুজিবুর রহমান হাওলাদারের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অবৈধ সম্পদ গোপনপূর্বক ২,১৮,০৮০/- টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান এবং নিজস্ব কোন আয় না থাকার পরও স্বামী মুজিবর রহমান হাওলাদারের অবৈধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ গ্রহন করতঃ জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ১,৪৩,২৯,২৮৫/- (এক কোটি তেতাল্লিশ লক্ষ ঊনত্রিশ হাজার দুইশত পঁচাশি) টাকার সম্পদ অর্জন পূর্বক নিজ মালিকানা ও ভোগ দখলে রাখায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ এর মামলা নং-০৩, তারিখ-২৮/০৪/২০২৪ ।


দুদক   অবৈধ সম্পদ   মানিলন্ডারিং  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন