ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে কবিতা লেখেন নি এমন লেখকের সংখ্যা খুব কম পাওয়া যাবে। ভাষা আন্দোলনের যৌথ চেতনা আমাদের লেখকদের সাহিত্যচর্চায় উদ্বুদ্ধ করেছে। আমাদের সাহিত্যে অন্যান্য শাখার থেকে কবিতাতেই ভাষা আন্দোলনের প্রতিফলন ঘটে সব থেকে বেশি। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত কবিতার সংখ্যা এখন হিসাবের বাইরে। ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের কবিতাকে যতটা প্রভাবিত করেছে মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া বাঙালির আর কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা এককভাবে এতো গভীর প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে রচিত কবিতা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেরণা জুগিয়েছে এবং আজও জুগিয়ে চলেছে।
ভাষা আন্দোলনের বৈপ্লবিক কবিতা নিয়েই আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন-
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম কবিতা রচনা করেন মাহবুবুল আলম চৌধুরী। তাঁর রচিত “কাঁদতে আসি নি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” মাহবুবুল আলম চৌধুরী এই কবিতায় তৎকালীন ভাষা আন্দোলনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলার মানুষের বিদ্রোহ, ক্ষোভ, গ্লানি, হাহাকার, যন্ত্রণা, প্রতিবাদ, দাবি আদায়ের এক শর্তবাণী তুলে ধরেছেন। ভাষা আন্দোলনে প্রাণ দিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে খুনিদের ফাঁসির দাবিতে রমনার কৃষ্ণচূড়ার তলায় এই কবিতা ধ্বনিত হয়েছে এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরে।
কবি আলাউদ্দিন আল আজাদ, ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির স্মৃতি এবং ২২শে ফেব্রুয়ারি শফিউরের হত্যাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য শফিউরের পিতা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে; কিন্তু অত্যাচারী পাকিস্তান-বাহিনী তা ধ্বংস করে দেয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে রচনা করেন স্মৃতিস্তম্ভ নামক এক কবিতা।
নিজ ভাষাকে পাওয়ার আকুলতায় মানুষ কীভাবে নিজের ভাইবোন, সন্তানকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছে যে কোনো দিন। কবি সুফিয়া কামাল এমনই একটি ভাষা আন্দোলনের ওপর কবিতা লেখেন যার নাম ‘এমন আশ্চর্য এই দিন’।
এছাড়াও একুশের কবিতা শিরোনামে সংকলিত হয়েছিল একগুচ্ছ কবিতা। তাতে শামসুর রাহমান, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, আবদুল গণি হাজারী, ফজলে লোহানী, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আনিস চৌধুরী, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, জামালুদ্দিন, আতাউর রহমান, সৈয়দ শামসুল হক, হাসান হাফিজুর রহমানের কবিতা সংকলিত হয়। সেসব কবিতায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল মাতৃভাষার জন্য আবেগময় আকুলতা, শহিদদের জন্য গভীর বেদনা ও শ্রদ্ধা আর হিংস্র শাসকদের বিরুদ্ধে দ্রোহ এবং ক্রোধের আগুন।
কবিতায় একুশে থাকবে। প্রজন্মের পর প্রজন্মের হাতে লিখিত হবে একুশের কবিতা। এই অর্জন আমাদের ভাষার, আমাদের বর্ণের, আমাদের অক্ষরের। কবিতা আমাদের দ্রোহী হতে শিখিয়েছে, এই একুশের চেতনায়ই।
বাঙালী জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয়ের সার-সত্য অনিবার্যভাবেই একুশে নিহিত। মায়ের মুখের ভাষা রক্ষা করতে জীবন বিসর্জনের ঘটনা ইতিহাসে বিরল, যার একমাত্র দাবিদার বাঙালী জাতি। বাংলাদেশ আমাদের জন্মের অহংকার। বাংলা ভাষা আমাদের বেঁচে থাকার অলঙ্কার। জাতির ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষায় রচিত কবিতাও গানে আত্ম-মুক্তির সে ঋদ্ধ উচ্চারণ ধ্বনিতে হয়েছিল, বুদ্ধিবৃত্তিক যে ধারা সম্প্রসারিত হয়েছিল কাব্য চেতনার, তা এখনো জাগরূক। বাঙালীর ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের নাম যেমন স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে তেমনি আমাদের মাতৃভাষা বাংলা ভাষাও অমর হয়ে থাকবে চিরকাল।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নেয়নি, তাই ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে। মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ভোটার উপস্থিতি কম হলেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংকট চলছে সেটা সমাধান হওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন সিইসি। এর আগে সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ভোটার উপস্থিতির হার ৩০ শতাংশের ওপর হতে পারে জানিয়ে সিইসি বলেন, আপনারা ভোটের নির্ভুল তথ্য আগামীকাল (বুধবার) পাবেন। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রশাসন খুব তৎপর ছিল। এবার প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য ছিল।
ভোটের অনিয়মের বিষয়ে সিইসি বলেন, কোথাও কোথাও মিডিয়ার কিছু কর্মী আহত হওয়ার খবর আমরা শুনেছি। বিভিন্ন অনিয়মে যখন তারা সাহস করে ছবি তুলতে গিয়েছেন তখন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। তবে সঠিক তথ্য এখনো পাইনি। আর বিচ্ছিন্ন হাতাহাতির কারণে ৩৩ জনের মতো আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সোমবার রাতে একটি ঘটনায় একজনের হাত কেটেছে। সেটা বেশ গুরুতর আঘাত। সেটা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। তবে আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুব তৎপর ছিল। যেখানে অনিয়ম বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে সেখানে তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট আটক করা হয়েছে ২৫ জনকে। অন্যায়ভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার কারণে ১০ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রে একজন সাধারণ ভোটার এবং একজন আনসার সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তাদের এই মৃত্যু ভোটকেন্দ্রের সহিংসতাকে কেন্দ্র করে নয়। আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সিইসি আরও বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে তিন পদে এক হাজার ৮২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৩ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৯৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ নির্বাচনে ১৫৬টি উপজেলায় ১৩ হাজার ১৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০ হাজার কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল
মন্তব্য করুন
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভা
মন্তব্য করুন
বিশ্বায়নের এ যুগে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। এক দেশ থেকে আরেক দেশে নানা প্রয়োজনে ছুঁটছে মানুষ। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের অনেক তরুণ তরুণী উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কেউ কেউ শিক্ষা জীবন শেষে দেশে ফিরলেও খাপ খাওয়াতে না পেরে ভুগছে হতাশায়। অনেকেই আবার উচ্চশিক্ষা থেকে থেকে যাচ্ছে বিদেশে। ফলে একদিকে যেমন মেধাবী শিক্ষার্থীদের হারাচ্ছি আমরা, অন্যদিকে তারাও দেশকে দিতে পারছেন না শিক্ষার ফসল।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, একটি বড় রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নেয়নি, তাই ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে। মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অনির্ধারিত দুটি বিষয় আলোচনায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বাজার মনিটরিং জোরদার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোন দ্রব্যের সরবরাহের ঘাটতি নেই, তারপরও বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কেন?