স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকটি বিভাগে নিয়ম ভেঙে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলির অভিযোগ উঠেছে। পদয়নকৃত পদগুলোয় দায়িত্ব পালনের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করে এক গ্রেড নিচের কর্মকর্তাদের পদ-পদবি দেওয়া হয়েছে। প্রভাবশালীদের পছন্দ অনুযায়ী রীতিমতো প্রজ্ঞাপন দিয়ে তাদের নীতিনির্ধারণী চেয়ারে বসানো হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দুটি এবং পরিচালকের দুটি পদে রদবদল করে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. মঞ্জুরুল হাফিজ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে সই করেন। এতে বলা হয়, ‘পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার বা স্বাস্থ্য সার্ভিসের বদলি ও পদায়নপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ ও কর্মস্থলে বদলিপূর্বক পদায়ন করা হলো।’ এসব পদে বদলি বা পদায়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত পদায়ন ও পদোন্নতি নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। অতিরিক্ত মহাপরিচালকের পদমর্যাদা গ্রেড-২।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরে গ্রেড-২ (১৭তম বিসিএস ব্যাচ, স্বাস্থ্য ক্যাডার) মর্যাদার চিকিৎসক কর্মরত আছেন। এ দুটি পদে যোগ্য কর্মকর্তা থাকার পরও একজন গ্রেড-৩ ও একজন নন-ক্যাডার চিকিৎসক কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়েছে, যা প্রচলিত পদায়ন ও পদোন্নতি নীতিমালা-পরিপন্থি।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) পদে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরকে। তিনি ১৯৯৯ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের মাধ্যমে (১৮তম ব্যাচ) কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি বর্তমানে গ্রেড-৩-এর কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর গ্রেড-৩-এর কর্মকর্তা হয়েও এর আগে একবার অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ওই পদ থেকে তাকে বদলি করা হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
নতুন প্রজ্ঞাপনে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) হিসাবে পদায়ন করা হয়েছে। এর আগেও তিনি এ পদে কর্মরত ছিলেন।
জানা যায়, নিপসমের পরিচালক গ্রেড-২-এর পদ। ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা একজন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা। নন ক্যাডার গ্রেড-২ পদে পদোন্নতিলাভের যোগ্য হওয়ার নিয়ম নেই। একজন বিসিএস ক্যাডারকেও গ্রেড-২ অর্জনে বেশকিছু শর্তাবলি পূরণ করতে হয়। এরপরও তাকে গ্রেড-২ পদে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল
ইসলামকে নিপসমের পরিচালক করা হয়েছে। তিনিও
বর্তমানে গ্রেড-৩-এর কর্মকর্তা।
ডা. মো. শামিউল ইসলাম
পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞ নন,
তিনি একজন প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ।
অন্যদিকে নিপসম একটি ‘পাবলিক হেলথ’ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত
এ প্রতিষ্ঠান থেকে পাবলিক হেলথ
বিষয়ে এমপিএইচ এবং এমফিল ডিগ্রি
প্রদান করা হয়ে থাকে।
এখানকার পরিচালক থেকে শুরু করে
সব শিক্ষক পাবলিক হেলথ তথা জনস্বাস্থ্য
বিশেষজ্ঞ।
অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে শুধু মহাপরিচালক ছাড়া ঊর্ধ্বতন চিকিৎসক কর্মকর্তাদের সবাই গ্রেড-৩-এ কর্মরত আছেন। গ্রেড-২-এর জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে ফিডার পদে গ্রেড-২ যাওয়ার জন্য সবদিক থেকেই আমার যোগ্যতা আছে। আমি ২০১৪ সালে অধ্যাপক হয়েছি। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগে যারা কর্মরত, আমি তাদের মধ্যে সবার আগে গ্রেড-৩ পাওয়া কর্মকর্তা। তাছাড়া জনস্বাস্থ্যের একটি বড় অংশ ল্যাবরেটরি সার্ভিস। আমি ২০০৯ সাল থেকে প্রশাসনে কাজ করছি। অধিদপ্তরের আওতায় যারা কাজ করছেন, তাদের মধ্যেও সিনিয়র। আমার গ্রেড-২ পদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে সবকিছুই সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি নিজেও মহামারির সময় গ্রেড-৩-এ কর্মরত ছিলাম। দেশের ক্রান্তিকাল চলায় ওই সময় আমাকে গ্রেড-১-এ পদায়ন করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে গ্রেড-১ পেয়েছি। এ পদায়নগুলো মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত নিয়ে করা হয়। অধিদপ্তরের এ সুযোগ নেই। যেভাবে আদেশ হয়, সেভাবেই আমাদের গ্রহণ করতে হয়। তাছাড়া অধিদপ্তরে গ্রেড-২-এর মোট পদ চারটি। গ্রেড-২-এর জন্য আমাদের (চিকৎসক) নিয়মিত কর্মকর্তা নেই। এটি অর্জনও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। হয়তো এসব ভেবেই আপাতত মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডা. আহমেদুল কবীর ও সেব্রিনা ফ্লোরা দুজনই আগে ওই পদে ছিলেন। এখন শুধু ইন্টারচেঞ্জ হয়েছে। গ্রেড-২ যারা পাওয়ার, তারা সময়মতো পাবেন। আমরা এজন্য কাজ করছি। তাদের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকার কাউকে প্রয়োজন মনে করলে দিতে পারেন। সেখানে গ্রেড-২ জনবল নেই। এত বড় প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুটি পদ আছে। আমরা পদ তৈরির পরিকল্পনা করছি। অর্গানোগ্রাম সংগ্রহ করা হয়েছে। কাওকে পেলে সেখানে পদায়ন করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়োগ অনিয়ম
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।