ইনসাইড বাংলাদেশ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সমাধি হল পাকিস্তানে

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশে বিতর্কিত হয়েছিল ২০০৭ সালে। যেখানে ৯০ দিনের জন্য গঠিত একটি সরকার দুই বছরের মতো সময় জগদ্দল পাথরের মতো চেপে ছিল জাতির ওপর। এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আনুষ্ঠানিক সমাধি ঘোষিত হল পাকিস্তানে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন ব্যবস্থা হতে পারে না, তা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হল পাকিস্তানে। 

বাংলাদেশেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদ্ভব হয়েছিল। ক্ষমতায় থাকা একটি দল নির্বাচনে কারচুপি করে, পক্ষপাতিত্ব করে এবং যে কোন প্রকারে কারসাজি করে নির্বাচনে জয়যুক্ত হতে চায়—এ রকম একটি ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল সামরিক স্বৈরশাসনের প্রেক্ষাপটে। সামরিক শাসকরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তাদের ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য যেনতেন প্রকারে একটি নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিত এবং সেই নির্বাচনে প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে জয়ী হওয়াটা ছিল তাদের বাধ্যতামূলক। কারণ এই জয়ের মাধ্যমে তারা জাতীয় সংসদে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড গুলোকে বৈধতা দিতে হবে। 

জিয়াউর রহমান তথাকথিত গণভোটের মাধ্যমে ভোট জালিয়াতির যে রেকর্ড করেছিল সেই রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেনি। একই ব্যবস্থা করেছিলেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনিও গণভোটের আয়োজন করেছিলেন। ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে জিয়াউর রহমান উর্দি পরে নির্বাচনী প্রচারণা করেছিলেন। নজিরবিহীন কায়দায় একজন সরকারি কর্মকর্তা একটি দলকে জিতিয়ে আনার জন্য সামরিক গোয়েন্দা সহ বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করেছিলেন। আর একই পথে এরশাদ ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। ’৮৮ সালের প্রহসনের নির্বাচনও করা হয়েছিল এক একই প্রক্রিয়ায়। এ কারণেই আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোদাবি করেছিল যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আর এই প্রেক্ষাপটে স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। আর সেই আন্দোলনের মুখে শেষপর্যন্ত পতন ঘটে এরশাদের এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার আসে।

গণতান্ত্রিক বিশ্বে নির্বাচন হয় দলীয় সরকারের অধীনে। নির্বাচনকালীন সময়ে দলীয় সরকারের ক্ষমতা শিথিল করা হয়। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আপনাআপনি বেড়ে যায় এবং রুটিন কাজের বাইরে ক্ষমতাসীন দল বা সরকার কোন কাজ করে না। ব্রিটেনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ভারতসহ অন্যান্য দেশেও এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বে এটি স্বীকৃত ব্যবস্থা। কিন্তু বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে নির্বাচনের পর জয়ী বিএনপি গুরুত্বহীন মাগুরা, মিরপুর উপনির্বাচনে কারচুপির আশ্রয়। ফলে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সামনে আসছে এবং ছিয়ানব্বই সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। এ ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশে একটি স্থায়ী রূপ পায়। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সবচেয়ে ত্রুটি ধরা পড়ে যখন দেখা যায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যে দল সদ্য ক্ষমতা ছিল, সেই দলের পরাজয় অবধারিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তথাকথিত নিরপেক্ষতার জন্য ক্ষমতাসীন দলটিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করে। ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালায়, ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ফলে জনগণের মধ্যে একটা বড় নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়ে যায়। এই কারণে দেখা যায় যে, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যতগুলো তত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশে নির্বাচন করেছে, সেখানে ক্ষমতার হাতবদল হচ্ছে। অর্থাৎ যে দলটি ক্ষমতায় ছিল তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে পরবর্তীতে পরাজিত হয়েছে। কিন্তু ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষতটি আরও উন্মুক্ত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ফাঁকফোকর দিয়ে একটি অনির্বাচিত সরকারের চিরকালীন ক্ষমতায় থাকার পথ উন্মুক্ত হয়ে যায়। যে কারণে এক-এগারোর সময় তত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয় গোটা বেশ এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো। বেগম খালেদা জিয়া সহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগ সকলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে একটা অবস্থান নেয় এবং এর মধ্য দিয়ে অনির্বাচিত শাসনব্যবস্থা কায়েমের যে সুযোগ তা বন্ধ করার দাবি জানান।

আশার কথা হলো এর মধ্যেই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায় দেয়। যে রায়ে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল ঘোষণা করে। এর ফলে বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে সেনা শাসনে জর্জরিত সেনা নিয়ন্ত্রিত পাকিস্তানি গণতন্ত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিকৃত ভাবে ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর ইচ্ছায় ক্ষমতার হাত বদলের একটি পাকাপোক্তা ব্যবস্থা কায়েম করার সুযোগ সৃষ্টি করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় যিনি প্রধান হবেন তিনি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রক হবেন এবং সেনাবাহিনী যাকে চাইবে তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আনার জন্য কাজ করবে। পাকিস্তানের সর্বশেষ নির্বাচন তা প্রমাণ করেছে। কিন্তু পিটিআই এর সভাপতি ক্রিকেটার ইমরান খান এতই জনপ্রিয় ছিলেন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কারচুপি করেও তাকে শেষ পর্যন্ত কোণঠাসা করতে পারেনি। তবে এর ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ক্ষত দগগদে ঘা ইত্যাদি তাকে মৃত্যু শয্যায় নিয়ে গেছে। পাকিস্তানের ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সারাবিশ্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কবর রচনা করেছে। বাংলাদেশে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল আইসিইউতে, আর পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলে এটি গেছে কবরে। এখন বাংলাদেশে যদি কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বলেন তাহলে বুঝতে হবে তিনি মতলববাজ, অগণতান্ত্রিক এবং অনির্বাচিত সরকারের একজন দালাল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা   পাকিস্তান   ইমরান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের দুই জেলায় ভূমিকম্প

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জানা গেছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে।

ভূমিকম্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস চলার সময় ছিঁড়ে পড়ল সিলিং ফ্যান, শিক্ষার্থী জখম

প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুর পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সিলিং ফ্যান পড়ে সুমাইয়া আক্তার মীম নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার মীমকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আহত মীম পৌরসভার বগাবাইদ গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। আহত সুমাইয়া আক্তার মীম সেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। দশম শ্রেণির ক্লাসরুমে তৃতীয় ঘণ্টার ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় তলার শ্রেণি কক্ষের একটি ফ্যান ভেঙে সুমাইয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুখের ওপরের ঠোঁট কেটে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছরও ওই বিদ্যালয়ে ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা হাসপাতালে গেলে ছবি ও ভিডিও নিতে বাধা প্রদান করে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। আর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও দিতে চাননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুজ্জামান। এ সময় তিনি শুধু বলেন, বক্তব্য কী দেব বলেন, ফ্যান পড়ে গেছে এই আর কি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত না। তবে খবর নিচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় সব স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সোমবার ৫ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলমান তাপদাহের কারণে দেশের পাঁচ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (সোমবার) বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ পাঁচ জেলায় কিংবা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, এমন অন্যান্য জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   তাপদাহ   শিক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুই দফায় ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে সরকারের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে আসতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এই মন্ত্রিসভা অপূর্ণ ছিল, সেটি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১ মার্চ মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হয়। তবে সে দফায় কোন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। বরং ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ২০১৮ সালেও মন্ত্রিসভা ছিল ৪৭ সদস্যের। এবারের মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগের গত তিন বারের মন্ত্রিসভায় চেয়ে আকারে সবচেয়ে ছোট। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।  

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা আরও বড় করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কয়েকটি দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে অন্য কোন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ-এর অনুরোধ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। সামনের দিনগুলোতে শ্রম আইন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হতে পারে এই বিবেচনা থেকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। যিনি আইনে দক্ষ বিশেষ করে শ্রম আইনে দক্ষ কাউকে যেন এই মন্ত্রণালেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইতোমধ্যে ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে গত ২১ এপ্রিল। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভালো-মন্দ নানান রকম হিসেব নিকেশ প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে এখনই বিচার করার সময় হয়নি বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন। তবে টানা দুই থেকে তিনবার যারা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে দু’একজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদের মধ্যে এক বা একাধিক জনকে পূণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, জুনাইদ আহমেদ পলক ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী লীগের 'গুড বুকে' চলে গেছেন। বিশেষ করে তার শ্যালককে তিনি প্রার্থী থেকে প্রত্যাহার করার ফলে তিনি সরকারের আরও বেশি আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজনে পরিণত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল কখন, কীভাবে হবে এবং কতজন নতুন মন্ত্রী হবেন এ বিষয় সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন বিবেচনা করবেন তখনই তিনি এই রদবদল করবেন।

মন্ত্রিসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতে মোদি হারলে বাংলাদেশে কী হবে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।

প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।

ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।

এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।

বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।

এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


ভারত   লোকসভা নির্বাচন   মল্লিকার্জুন খাড়গে   নরেন্দ্র মোদি   বাংলাদেশ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন