প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসেছে বাহারি ইফতারের দোকান। যেখানে ছোট থেকে বড়, শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের ভিড় জমেছে।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে স্বীকৃতির পর এবার পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম ইফতার। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান।
এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ইফতার। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মুখে ইফতারের খাবার তুলে রোজা ভাঙেন মুসল্লিরা। ইফতার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের কাছে একটি ঐতিহ্যও।
রমজান মাসে সারাদিন না খেয়ে সংযম পালনের পর সন্ধ্যায় যে পানীয় ও খাবার খেয়ে মুসল্লিরা রোজা ভাঙেন, সেই ইফতারকে বিশ্বের অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিয়েছে জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা-ইউনেসকো।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর এ ইফতারকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।
বাংলাদেশের ইফতারে নিয়মিত আইটেম থাকে খেজুর, পিঁয়াজু, বেগুনি, হালিম, আলুর চপ, জিলাপি, মুড়ি ও ছোলা, শরবত। এর বাইরে সংযুক্ত হতে পারে হালিম, লাচ্ছি, বিরিয়ানি, কাচ্ছি, ফিশ কাবাব, মাংসের কিমা। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের ফল ফলাদি।
রমজানে বাংলাদেশের হোটেল-রেস্তোরাঁ গুলো সুন্দরভাবে সাজানো হয়। রেস্তোরাঁর বাইরে আলাদা প্যান্ডেল ও ব্যানার তৈরি করা হয়। এছাড়াও, রাস্তায় রাস্তায় বসে ইফতার বাজার। রোজাদারদের সুবিধার্থে এসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় রাখা হয় ইফতারের নানা প্যাকেজ।
রেস্তোরাঁয় ইফতার আয়োজনের উল্লেখযোগ্য আইটেম হলো শরবত, খেজুর, আপেল, জিলাপি (শাহি-রেশমি), পেঁয়াজু, আলুর টপ, বেগুনি, ছোলা, মুড়ি, লাচ্চি, চিকেন বিরিয়ানি, কাচ্চি বিরিয়ানি, বাসমতী কাচ্চি, চিকেন স্যাটে, চিকেন সাসলিক, চিকেন ফ্রাই, চিকেন কাঠি রোল, চিকেন মোসাল্লেম, চিকেন রেশমি রোল, চিকেন বটি, চিকেন টিক্কা, স্পাইসি চিকেন, ফ্রুট কাস্টার্ড, তেহারি, ফিন্নি, মাঠা, হালিম (গরু-খাসি), ফ্রাইড রাইস, থাই মিক্সড, ভেজিটেবল সালাদ, বিফ কালাভুনা, সুপ্রিম প্ল্যাটার, তেহারি প্ল্যাটার, টিরিয়াকি প্ল্যাটার, কাবাব প্ল্যাটার, শিক কাবাব, জালি কাবাব, টিকা কাবাব, শামি কাবাব, অ্যারাবিয়ান শর্মা, বোরহানি, পুডিং, দই, ফলের জুস, ফালুদা, মুরগির রোস্ট, স্পেশাল পরাটা-নান, স্পেশাল খাসির লেগ রোস্ট।
বাঙ্গালির ইফতারে বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়া
বাংলাদেশে ইফতারে যেসব খাবার খাওয়া হয়, তার একটি বড় অংশ এসেছে পার্সিয়ান বা মুঘল খাবারের তালিকা থেকে। মুঘলরা যখন ঢাকা শাসন করেছেন, তাদের সেই খাদ্য তালিকা তখনকার ঢাকার লোকজন গ্রহণ করেছেন। এরপর সেটা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
ইফতারে আমাদের প্রধান খাদ্য ছোলা-মুড়ি। এই ছোলা মূলত আফগানদের খাবার। কাবুলিওয়ালাদের হাত ধরেই এটি বাঙালি মুসলমানের ইফতারে জায়গা করে নিয়েছে। তবে, বাংলাদেশে ছোলা আরো মশলা, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে মুখরোচক করে রান্না করা হয়ে থাকে। ছোলার সঙ্গে মুড়ি খাওয়ার চলও এই অঞ্চলের মানুষের নিজস্ব উদ্ভাবন।
হজরত মোহাম্মদ (সা.) ইফতারের সময় খেজুর খেতেন। ইফতারের খেজুর খাওয়া সুন্নত মনে করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই রীতিটি সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়েছে। সেজন্যই বাংলাদেশের মানুষ মনে করেন ইফতারিতে খেজুর খাওয়া সুন্নত।
ইফতারে মুঘল ও বাংলার নবাবদের যেসব খানাপিনার কথা জানা যায়, তার মধ্যে অন্যতম ছিল শরবত, নান, কাবাব, বিরিয়ানি, কোফতা, কোরমা, হালিম, জিলাপি, নিমকপারা ও সমুচার মতো কিছু ভাজাপোড়া। এসব দেখে বাঙালি বনেদি মানুষজনও এগুলো খেতে শুরু করেন।
ইফতারে শরবত খাওয়ার রীতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতে রয়েছে। পানির পিপাসা থেকে স্বাদ, মিষ্টি ও সুগন্ধি শরবত খাওয়ার চল চালু হয়েছে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।