প্রতিবছর রমজান আসলেই যেন বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির হিড়িক পড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। রোজার শুরু থেকেই সব জিনিসের দামই ছিল বাড়তি। তবে এবার রোজার শুরুতে ব্যাপক চাহিদা থাকা শাকসবজি ও ইফতার সামগ্রীর দাম কমতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি নিত্যপণ্যের বাজার ও পাড়া-মহল্লার হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার শুরুতে ১২০ টাকার শসা এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকার লেবুর হালি দুদিনের ব্যবধানে এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকায় নেমে এসেছে। এছাড়া ৮০ টাকার টমেটো গতকাল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১২০ টাকার পেঁয়াজের কেজি মানভেদে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ১২০ টাকায় উঠে যাওয়া কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ১০০ টাকার বেগুনের কেজি এখন আকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শুধু সবজি নয়, কিছুটা কমেছে ফলের দামও। আপেল, কমলার কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪৫০ টাকার আঙুর এখন ৪০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার প্রথম কয়েকদিন নিত্যপণ্যসহ শাকসবজির বাজারে অস্থিরতা থাকে। পরবর্তী সময়ে ঈদের কয়েকদিন আগ পর্যন্ত দাম স্বাভাবিক থাকে। এ বছর বাজারে শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহ বেশি থাকায় রোজার মাসে দামে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার সুযোগ কম। ফলে কয়েকদিনের মধ্যে বেশিরভাগ সবজির দাম কমে যাবে। পাশাপাশি নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকবে।
তবে বাজারে এখনো বেশি দামে কয়েকটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোলা ১১৫ থেকে ১৩০ টাকা, সাধারণ মানের খেজুরের কেজি ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। চিনিতে শুল্ক কমলেও প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ১৬৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি পিস ফুল ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ৪০ টাকা কেজি মুলা, পেঁপে ও শালগম বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের দাম কমে ৫০ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে। নতুন সবজি পটোল, বরবটি ও ঢ্যাঁড়শের কেজি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গার কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিমের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলার কেজি ১২০ টাকা, লতির কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কচুরমুখি ১২০ টাকা ও কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
এদিকে রোজা উপলক্ষে রাজধানীর ২৫টি স্থানে ৬০০ টাকা কেজি দরে এবং আরও পাঁচটি স্থানে ৬৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে গরুর মাংসের দোকানে এর কোনো প্রভাব নেই। এসব দোকানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি বলছে, গরুর দাম বেশি হওয়ায় তারা কমদামে মাংস বিক্রি করতে পারছেন না।
জানা গেছে, বাজারে বিদ্যমান দামের তুলনায় কমদামের গরুর মাংস বিক্রির কার্যক্রমে সরকারকে সহায়তা করছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন। এ প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি মো. ইমরান হোসেন কালবেলাকে বলেন, খামারিরা তাদের লাভ রেখেই গরু বিক্রি করছে। সরকারের উদ্যোগ থাকলে একই দামে সারা বছর গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব।
অপরদিকে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। ব্রয়লারের দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের কাছে যৌক্তিক কোনো কারণ না থাকলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজারের ওপর দায় দিচ্ছেন। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহকারী বড় প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করছেন।
রমজান বাজার নিত্যপণ্যের দাম ফল-সবজি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জয়পুরহাটের
আক্কেলপুরে তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকে বাবলু খন্দকার (৪৫) নামে এক ভ্যানচালকের মৃত্যু
হয়েছে। আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার গোপীনাথপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত
ভ্যান চালক জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল সরকারপাড়া গ্রামের শুকুর মাহমুদ খন্দকারের
ছেলে বলে জানা গেছে।
পুলিশ
ও স্থানীয়রা জানান, বিক্রির জন্য বাবলু খন্দকার ভ্যান যোগে কয়েক বস্তা আলু নিয়ে গোপীনাথপুর
হাটে যান। সেখানে আলুর বস্তা নামিয়ে রেখে চা খেতে দোকানে বসেন তিনি। এসময় হঠাৎ করে
বুকে ব্যাথা উঠলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্তে কর্মকর্তা নয়ন হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য করুন
নওগাঁ সদর উপজেলায় কৃষি কাজে ব্যবহৃত একটি গভীর নলকূপ বন্ধ রাখা হয়েছে। পানির অভাবে এই সেচযন্ত্রের আশ পাশের প্রায় ১০০ বিঘা জমি অনাবাদি পড়ে আছে। সেচ সংকটের কারণে কিছু কৃষক ধানের আবাদ না করে জমিতে তিলের চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টির কারণে তিলের গাছও মরে যেতে বসেছে।
সেচ নিয়ে কৃষকদের এমন দুরাবস্থা নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, সরদার পাড়া, শেখপুরা ও মন্ডলপাড়া এলাকায়।
কৃষকদের দাবি, পৌরসভার হাজীপাড়া মহল্লা সংলগ্ন মাঠে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। গভীর নলকূপটি মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে নলকূপটির মালিক মকবুল হোসেন কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান আবাদের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সেচের জন্য ২ হাজার টাকা করে দাবি করেন। আশপাশের অন্যান্য নলকূপের সেচ খরচের তুলনায় বেশি টাকা দাবি করায় কৃষকেরা ওই পরিমান টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। চাহিদা অনুযায়ী সেচ খরচ দিতে রাজি না হওয়ায় সেচযন্ত্রটি বন্ধ রেখেছেন গভীর নলকূপের মালিক মকবুল হোসেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও কৃষকেরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
গত ১৯ মার্চ ৬০ জন কৃষক স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া, সরদারপাড়া ও মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার মধ্যবর্তী মাঠে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি আছে। এসব জমিতে প্রতি মৌসুমে কয়েক হাজার মণ ধান হয়। বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই মাঠে দুটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছে। ওই দুটি সেচ যন্ত্রের মধ্যে মকবুল হোসেন পরিচালিত গভীর নলকূপের অধীনে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত তিন বছর ধরে মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের জিম্মি করে সেচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করছে।
পার্শ্ববর্তী বোয়ালিয়া, শেখপুরা এলাকায় গভীর নলকূপ থেকে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ খরচ বাবদ যেখানে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে, সেখানে সবুজ তার সেচযন্ত্র থেকে সেচ খরচ দাবি করে ২ হাজার টাকা।
অধিকাংশ কৃষক এই পরিমাণ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ সেচ যন্ত্রটি থেকে পানি তোলা বন্ধ করে দেন। ধানের বীজ তলায় সেচ দিতে না পারায় কৃষকদের চারা নষ্ট হয়ে যায়। জমিতে ধান লাগাতে না পেরে অনেক কৃষক জমিতে তিলের চাষ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে এবং সেচ যন্ত্র বন্ধ থাকায় অধিকাংশ তিল গাছ মরে যেতে বসেছে। এই দূরাবস্থা নিরসনে জেলা ও উপজেলা সেচ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকেরা।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) পৌরসভার হাজীপাড়া সংলগ্ন ওই ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ওই মাঠে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। কিছু জমিতে তিলের চাষ করা হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে অনাবাদি জমি ও তিলের খেতের জমি শুকিয়ে আছে। পানির অভাবে শুকনো মাটিতে বপন করা তিল বীজ থেকে চারা গজায়নি। আবার কিছু কিছু জমিতে চারা গজালেও পানির অভাবে তিলের গাছগুলোর পাতা শুকিয়ে লালচে হয়ে মরতে বসেছে।
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেচ যন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো বলেন, ‘একটা মৌসুমে একটা ডিপ টিউবওয়েল চালালে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এছাড়া ট্রান্সফরমার বা সেচ যন্ত্রের অন্য কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও বাড়তি খরচ হয়ে যায়। মেশিন চালাতে যে খরচ হবে, সেটা তুলতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। তাই পানি তোলা বন্ধ রেখেছি।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি এস এম রবিন শীষ বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে এ ধরণের একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সম্ভবত এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছিলাম। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সেচ যন্ত্রটি চালু করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মারা যান ৩ বছর আগে। সেই মামলার রহস্যের জট খুলেছে ৩ বছর পর। আসামী আমির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর এসআই ফিরোজ আহমেদ জানান, বিগত ২০২১ সালের ৯ মার্চ ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে করে তার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তপারকান্দি গ্রামে আসছিলেন। পথিমধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্য আমির হোসেন ও তার দলবল কায়দা করে ভিকটিমের সাথে ভাব জমিয়ে তাকে বিস্কুটের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খ্ইায়ে দেয় এবং তার কাছে থাকা মালামাল নিয়ে যায়। এতে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে বাসের হেলপার তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ছাগলছিড়া এলাকায় তাকে বুঝে দিয়ে বরিশালের দিকে বাস চলে যায়।
পরে
মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চু শেখকে প্রথমে মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মৃত বাচ্চু শেখের স্ত্রী মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোপালগঞ্জ পিবিআই মূল অভিযুক্ত আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে এবং সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে গোপালগঞ্জের পিবিআই-এর পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন