নওগাঁয় বছর বছর পানির স্তর নিচে নামছে। ফলে ক্রমেই বাড়ছে পানি সংকট।
এতে প্রভাব পড়ছে কৃষি, অর্থনীতি ও জনজীবনে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে এখনই পানির
ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে নওগাঁয় ভূগর্ভস্থ পানির বর্তমান
অবস্থা ও করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ শহরের উকিল পাড়ায় বেসরকারি সংস্থা
(এনজিও) মৌসুমি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও একুশে পরিষদ নওগাঁ এর উদ্যোগে
অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে কম পানি ব্যবহার করে ফলনশীল
ফসল চাষাবাদ করা সহ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি
করা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে- ১ কেজি ধান উৎপাদন করতে বাংলাদেশে
৬৫০ লিটার পানির প্রয়োজন। ১ কেজি ধান থেকে মোটামুটি ৬৬০ গ্রাম চাল পাওয়া যায়। যেখানে
একজন বাঙালি ৪০০ গ্রামের মতো ভাত খায়। অর্থাৎ দেড় দিনের ভাতের চাল উৎপাদন করতে পানির
দরকার হয় ৬৫০ লিটার। এটি আবার স্বাদু বা মিঠা পানি।
মৌসুমি উপ-সহকারী কৃষি অফিসার লিয়াকত আলী বলেন- প্রতিদিন সাংসারিক
বিভিন্ন কাজে আমরা প্রায় ৫০ লিটার পানি ব্যবহার করে থাকি। পানির অপচয় রোধ করতে এবং
উঁচু ভবনের ছাদে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার করা যেতে
পারে। কিছু পদ্ধতি পরিবর্তন করে পানি সংরক্ষণ ও অপচয় রোধ করা সম্ভব।
বাপা সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন- বরেন্দ্র এলাকায় ধানের আবাদ করা হচ্ছে। আর ধান চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এটি পানি সংকটের একটি কারণ। তবে যে এলাকায় যেসব ফসল চাষে উপযোগী সেসব ফসল রোপণ করা দরকার। এতে করে পানি সাশ্রয় হবে।
নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর
রহমান বলেন- কৃষিকাজে ভূগর্ভস্থের ৯০ শতাংশ, শিল্প ও কলকারখানায় ৬ শতাংশ এবং প্রাত্যহিক
বা খাবার কাজে ৪ শতাংশ পানি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কৃষিতে অতিরিক্ত যে পানি ব্যবহার হচ্ছে
তা কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ব্যবহার করায় অভ্যস্ত
হতে হবে।
তিনি বলেন- ভূগর্ভের নিচে পাইরেক্স শিলা অবস্থিত। যেখানে ভূগর্ভস্থ
পানি বিদ্যমান। শুষ্ক মৌসুম এটি নিচের দিকে নেমে যায় এবং বর্ষা মৌসুমে উপরের দিকে আসে।
অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে এই শিলাটির পানি শুকিয়ে যাবে। এতে এক ধরণের
মৌলিক পদার্থ অর্থাৎ আর্সেনিক নির্গত হবে। এই পানি ব্যবহারের ফলে জনজীবনে ক্ষতি বয়ে
নিয়ে আসবে। তাই ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার কমাতে হবে।
সাপাহার উপজেলার বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সহকারী
প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন- এলাকা ভেদে পানির গভীরতা ১৯০ থেকে ২৫০ ফুট। বেশ কিছুদিন
থেকে পানির স্তুর নিচে নেমেছে। এতে করে পানি উত্তোলন করতে খরচ বেশি পড়ছে। প্রতি ঘণ্টায়
বলা যায় ১০-১২ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে একুশে পরিষদের সভাপতি এডভোকেট ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে
বক্তব্য রাখেন- নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর
রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, মৌসুমির নির্বাহী পরিচালক হোসেন শহীদ ইকবাল
রানা, উপ-নির্বাহী পরিচালক ইরফান আলী, ডাঃ ময়নুল হক দুলদুল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন
জেলা শাখার সহ-সভাপতি এডভোকেট মকুল চন্দ্র কবিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, একুশে
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এম.এম রাসেল সহ অন্যরা। এসময় জেলার সংবাদকর্মী, সরকারি দপ্তরে
কর্মকর্তা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।