ইনসাইড বাংলাদেশ

বনবিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জের ২০ হাজার একর ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট ধ্বংস


Thumbnail

কক্সবাজারের মহেশখালীতে প্যারাবন ও ঝাউবাগান কেটে অবৈধ  চিংড়ি ঘের নির্মাণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে প্রভাবশালী  রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা। এই দখল প্রতিযোগিতায় প্রভাবশালীদের দুই বিবদমান গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে গত ২ মার্চ সোনাদিয়াতে গুলিবিদ্ধ ২ জন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয় ১২ থেকে ১৫ জন। 

প্যারাবন ও ঝাউবাগান রক্ষার দাবিতে গত ৩ মার্চ রোববার  বিকাল তিনটায় সোনাদিয়ার নিকটবর্তী ঘটিভাঙগায় বিশাল মানববন্ধন করেছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) মহেশখালী উপজেলা শাখা। এতে সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছে পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন,ইপসা ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। 

ধরার মহেশখালী শাখার আহবায়ক জেএইচএম ইউনুসের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব এম আজিজ সিকদারের সঞ্চালনায়  অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি  ছিলেন জেলা ধরার আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা ধরার যুগ্ম আহবায়ক এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন, তৌহিদ বেলাল, সিনিয়র সাংবাদিক আবদুস সালাম কাকলী, জাহেদ সরওয়ার,  রতনদাশ, আমিন উল্লাহ, উপকূলীয় সাংবাদিক ফোরামের সাধারন সম্পাদক হোবাইব সজীব, আ ন ম হাসান, স্থানীয়দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মোস্তাক আহমদ,মোঃ রিদোয়ান মাহির,কামাল হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন, রাশেদ খান মেনন,আবদুল হক ও মোহাম্মদ হানিফ।

বক্তারা বলেন, যারা প্যারাবন ও ঝাউবাগান কেটে চিংড়ি ঘের করছে তারা গণ দুষমন। তাদের চিহ্নিত করুন। আর প্রাণ- প্রকৃতি যারা ধবংস করে  তাদের পতন অনিবার্য। তাদের চিহ্নিত করে আন্দোলনের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য গত ২ মার্চ শনিবার প্যারাবন ধ্বংস  করে চিংড়ি ঘের তৈরি করতে গিয়ে বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা   অর্থাৎ ৩ ঘন্টাব্যাপী বন্দুক যুদ্ধ চলে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই জন নিহত ও ১২/১৫ গুলিবিদ্ধ হয়।নিহত দু'জন হচ্ছেন বড় মহেশখালী মুন্সির ডেইলের মৃত গোলাম কুদ্দুসের ছেলে সাইফুল ইসলাম ( ৩০) ও সোনাদিয়ার পশ্চিম পাড়ার আনোয়ার পাশার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩৮)।

এ বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সুকান্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন,সোনাদিয়ায় প্যারাবন কেটে লবণ ও চিংড়ি ঘেরের দখল নিতে দু পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ওসি বলেন বড় মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরাঘোনা নিবাসী জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বাধীন অস্ত্র সন্ত্রাসী ও সোনাদিয়ার পশ্চিম পাড়ার আজিম মিয়া গ্রুপের সাথে এ ঘটনা ঘটে।নিহত হয় দু' পক্ষের দুই জন।কোন পক্ষই এ ঘটনায় থানায় কোন লিখিত এজাহার দেননি। তার পর ও পুলিশ ঘটনায় জড়িত চারজন ও অস্ত্রসহ রাকিব নামের এক যুবককে আটক করেছে। 

অনুসন্ধান ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালীর সোনাদিয়া, কুতুবজোম, ঘটিভাংগা, তাজিয়া কাটা,মাতারবাড়ি, ধলঘাটা,কালারমারছড়া, আমাবশ্যাখালী,হেতালিয়া বড়দিয়া ও শাপলাপুরের   প্রায় ১২ হাজার একর ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা প্যারাবন ও ঝাউবন কেটে  অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে চিংড়ি ঘের।

 শুধু তাই নয় ৪/৫ টি খালে ও দেয়া হয়েছে বাঁধ।ওইসবখালে যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ  করতো হতদরিদ্র জেলেরা তারা পড়েছেন মহা বিপাকে।প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসীচক্র রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয়ে  সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বনবিভাগের বাঁধা উপেক্ষা করে কেটে যাচ্ছে নির্বিচারে প্যারাবন ও ঝাউবাগান।প্যারাবন ও ঝাউবাগান কেটে যারা চিংড়ি ঘের করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় লোকজন জড়িত।  

স্থানীয়  কুতুবজোম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেছেন প্রভাবশালী অর্ধশতাধিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধি মিলেমিশে ঘটিভাঙগা, তাজিয়া কাটায় প্যারাবন ও বাউবাগান নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছেন। তাদের এই অপকর্মের প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।তাই স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।

এ দিকে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) র মহেশখালী উপজেলা  শাখার আহবায়ক মোঃ ইউনুচ এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ২/৩ বছর ধরে পুরো মহেশখালী উপকূল জুড়ে প্যারাবন ও ঝাউবাগান ধ্বংস করে হাজার হাজার একর চিংড়ি ঘের তৈরি করেছেন।বনবিভাগ তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক  মামলা করলে ও ঠেকানো যাচ্ছেনা বন নিধন। কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আরো দ্বিগুণ শক্তি বা উৎসাহ নিয়ে কাটছেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট।  

ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট নিয়ে গবেষণারত (অবসর প্রাপ্ত) শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা শ. ম আবদুল জব্বার বলেন, দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমে জেগে উঠা চরাঞ্চল ও ছোট ছোট ১৫/২০ টি দ্বীপে প্রাকৃতিকভাবে ও সৃজিত প্যারাবন গড়ে উঠায়  মহেশখালী দ্বীপকে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা করে আসছে।অথচ ভূমিগ্রাসীচক্রই মহামৃল্যবান প্যারাবন কেটে তৈরি করছে  চিংড়ি ঘের ও লবন মাঠ।এ অবস্থায়  প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস দেখা দিলে ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালীর ব্যাপক এলাকা সাগরগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে।ফলে জানমালের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।চট্টগ্রাম উপকৃলীয় 
বনবিভাগের নিয়ন্ত্রাধীন 

মহেশখালীতে প্যারাবন রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আয়ুব আলী জানান, ২০২৩ সালের জানুয়ারী থেকে ১৫ মার্চ  ২০২৪ পর্যন্ত ১৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত  তিন হাজার বন খেকোকে আসামী করে ৪৮ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুধু গত ফেব্রুয়ারী মাসে দায়ের করা হয়১২ টি মামলা। বিশেষ করে সোনাদিয়া - ঘটিভাঙগা এলাকায় ৮ হাজার একর জমি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে (বেজা) ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে রয়েছে নিছিদ্র ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ও ঝাউবাগান। একটি প্রভাবশালীচক্র মূলত সে সব প্যারাবন ও ঝাউবাগান কাটছে। এই ঘন জঙ্গলে ছিল নানা প্রাণ প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য এবং অতিথি পাখীর আবাসস্থল। এখন সেখানে ম্যানগ্রোভ ধ্বংসের ফলে নেই কোন পশুপাখি। তারপর ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় বনকর্মীরা স্পেশাল টহল জোরদার করেছি। এরপরও রক্ষা করা যাচ্ছে না বন।প্রভাবশালীরা এতই বেপরোয়া যে আইন কানুন কিছুই মানে না।

কথা প্রসঙ্গে রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, বেজা)র ৮ হাজার একর ছাড়া গোরকঘাটা রেঞ্জের আওতাধীন কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী, ঈদগাঁও এর পোকখালী চকরিয়ার রামপুর, বদরখালী, মহেশখালীর শাপলাপুর, মাতারবাড়ি, ধলঘাট, কালারমারছড়া, হোয়ানক,বড়মহেশখালী কুতুবজোমের প্রায় ১২ হাজার একর বনভূমি বা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বন বিভাগের হাত  ছাড়া হয়েছে। তবে প্রায় এক হাজার থেকে  দেড় হাজার একর বনভূমি পূনঃউদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। জনবল সংকট ও নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বনকর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিমি মারমা বলেন,বন বিভাগ যখনই সুবিধা চান তখনই আমরা এগিয়ে যাই।বর্তমানে বেজার যে জমিতে যারা প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের তৈরি করার পায়তারা করছেন শীঘ্রই আমরা তাদের সনাক্ত করে অভিযানে নামবো।যে যত বড় শক্তিশালী হোক কাউকে ছাড় দেবনা।

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, বেজাকে যে জমি সোনাদিয়া - ঘটিভাঙগা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সেখানে আমাদের কোন দায়দায়িত্ব নেই। তারপর ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন কমীরা বন রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর আমাদের প্যারাবন কেটে যারা চিংড়ি ঘের তৈরি করেছেন তাদের প্রত্যকের বিরুদ্ধে আমরা মামলা দিয়েছি।এসব ভূমি উদ্ধার করে আবার ও প্যারাবন সৃজন করা হবে।তবে এ জন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট  প্রশাসন ও পুলিশের উপস্থিতি। 

ঘটিভাঙ্গার আছদ আলী নামের একবৃদ্ধ এ প্রতিবেদককে জানান, মহেশখালীর সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতা ও জন প্রতিনিধিরা মিলেমিশে প্যারাবন ও ঝাউবাগান ধ্বংস করেছেন।আর মারা পড়ছে দিনমজুর এবং মামলায় আসামী হচ্ছে নিরীহ গরীব লোকজন। সব রতি মহারতি মিলে সাবাড় করছে বন।তারা রয়েছেন পর্দার অন্তরালে।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে বজ্রসহ শিলা-বৃষ্টি

প্রকাশ: ১০:৪১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীতে শুরু হয়েছে বজ্রসহ বৃষ্টি। সঙ্গে শিলা। আজ রোববার (৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় এ শিলা-বৃষ্টি। এর আগে রাত ৯টার দিকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া।

শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছয় দিন ধরে হতে পারে ঝড়বৃষ্টি। কয়েক দিনের বৃষ্টির পর কমে যেতে পারে তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের ওপর দিয়ে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া কাল সোমবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। এতে করে যেসব জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল সেগুলো ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে। 

রাজধানী   শিলা-বৃষ্টি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বন্ধ বিমানবন্দর চালুর পরিকল্পনা আপাতত নেই: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান জানিয়েছেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালুর পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

রোববার (৫ মে) বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য আলী আজমের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
 
ফারুক খান বলেন, বর্তমানে দেশে তিনটি আন্তর্জাতিক, সাতটি অভ্যন্তরীণ ও পাঁচটি স্টল বিমানবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর চালু রয়েছে। এসব বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালু করার পরিকল্পনা সরকার তথা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আপাতত নেই। তবে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন, যাত্রী চাহিদা এবং এয়ারলাইনসগুলোর আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বন্ধ বিমানবন্দরগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

বিমানবন্দর   বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী   জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং, বিদ্যুৎ গেল কোথায়: সংসদে চুন্নু

প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

লোডশেডিং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি রয়েছে। তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি এ প্রশ্ন করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই মুহূর্তে সারাদেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। তার মধ্যে দুটি সমস্যায় মানুষ খুব আক্রান্ত। একটি হলো বিদ্যুৎ। এই মৌসুমে সারাদেশে গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটির কথা, তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়? বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে আমার এলাকার মানুষ দাওয়াত দিয়েছে, লোডশেডিং হয় কিনা দেখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, যে সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ভাড়ায়, তাদের সক্ষমতার ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরেও বসে আছে এবং ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থেকে ভাড়া বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আগের পার্লামেন্টে আমি বলেছিলাম, আমার এলাকায় প্রায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজকে চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই সশরীরে উনি আমার এলাকায় একটু যাবেন, যে কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

চুন্নু বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

লোডশেডিং   মুজিবুল হক চুন্নু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘুর জমি দখল, ঘর নির্মাণ


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে একটি টিনসেট ঘর স্থাপন করেছে তাজল ইসলাম নামে এক ভূমি পরিমাপক। 

রোববার (৫ মে) ভোর রাতে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের করুনানগর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলেও যথা সময়ে পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। 

বিকেলে ভূক্তভোগী টিংকু রানী দাস, বিপন রানী দাস, শোভন দাস ও অনিক চন্দ্র দাসসহ কয়েকজন এ অভিযোগ করেন। তারা জানায়, লোক মারফত তারা জানতে পারেন তাজল ইসলাম বিরোধীয় জমিতে ঘর তুলবেন। এতে শনিবার (৪ মে) দিবাগত সারারাত তারা পাহারারত ছিলেন। কেউই ঘুমাননি। রোববার ফজরের আযান দিলে তারা ঘুমাতে যায়। ঠিক সেই মুহুর্তে তাজল ইসলাম প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষকে নিয়ে এসে বিরোধীয় জমিতে থাকা টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে। ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে সবাই এসে বাধা দিলে তাজল ইসলামসহ তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের (ভূক্তভোগী) ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে ভূক্তভোগীরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়। সেখান থেকে বিষয়টি কমলনগর থানাকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছতে ২ ঘণ্টা সময় লাগিয়েছে। এর মধ্যে অন্যত্র তৈরিকৃত একটি নতুন ঘর এনে তাজল ইসলামরা বিরোধীয় জমিতে স্থাপন করে। এসময় টিংকু, বিপন, শোভন ও অনিকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়। 

ভূক্তভোগীরা আরও জানায়, পুলিশ এসে ঘর দেখে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। যদি পুলিশ সময়মতো আসতো তাহলে তাজল ইসলামরা ঘর স্থাপন করার সুযোগ পেতো না। আদালতে মামলা চলমান থাকলেও হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপনের ঘটনায় তাজল ইসলামের বিচার চেয়েছেন ভূক্তভোগীরা।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিলন মন্ডল বলেন, ডালিম কুমার দাস নামে এক ব্যক্তি তাজল ইসলামের কাছে জমি বিক্রি করে। ডালিম ও তাজলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক রাম কৃষ্ণ দাসসহ ভূক্তভোগীরা অগ্রক্রয় অধিকার আইনে রামগতি সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলমান। এরমধ্যে তাজল ইসলাম হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপন করে আইন অমান্য করেছে। আমরা তার বিচার দাবি করছি। 

তবে অভিযুক্ত তাজল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তিনি রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রামের বাসিন্দা। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশও পাঠানো হয়েছে। হামলার ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। কেউ আটকও নেই। জায়গা জমি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ক্রেতা তার জমি দখল করতে এসেছে। এটি উভয়পক্ষ বসে মীমাংসা করতে পারতো।

লক্ষ্মীপুর   সংখ্যালঘু   জমি দখল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তাপপ্রবাহে কী করতে হবে, জানিয়ে জাতীয় নির্দেশিকা প্রকাশ

প্রকাশ: ০৮:২১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় গাইডলাইন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সরকার।

রোববার (৫ মে) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান করা হয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় গাইডলাইনের মোড়ক উন্মোচন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যাদের ডায়াবেটিস, হার্ট-ডিজিস বা বিভিন্ন অসুখ রয়েছে, তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সব সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অনেক বেশি। এর কারণ আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে শহরের গাছপালা সব কেটে সাবাড় করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারি না। কিন্তু নগর পরিকল্পনার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি, তাহলে অনেকাংশেই পরিত্রাণ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ।

তাপপ্রবাহ   জাতীয় নির্দেশিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন