নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ এপ্রিল, ২০১৮
কোটা সংস্কার আন্দোলনে হঠাৎ চাপে পড়েছে সরকার। আর চাপে পড়েই সরকার বুঝতে পারছে প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বাধীনতা বিরোধী এবং বিএনপির লোকজন ঘাপটি মেরে রয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে তারা রাজনৈতিক মদদ দিচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে এখন যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে গত তিনমাস ধরে তারা প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলায় জেলায় কমিটি করেছে। এরকম একটি আন্দোলনের যে প্রস্তুতি চলছে, এই তথ্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারকে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি যেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হলো সেদিনও গোয়েন্দারা এই আন্দোলনের গভীরতা এবং ব্যাপ্তি আঁচ করতে পারেনি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ব্যর্থ কিংবা অযোগ্য এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। তাহলে কি গোয়েন্দা সংস্থায় এমন লোকজন আছে যারা এটাকে ইচ্ছে করে গোপন করছে?
কোটা আন্দোলনের আরেকটি লক্ষণীয় দিক হলো সারা দেশে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকরা এই আন্দোলনের নেপথ্যে কাজ করেছে। আমাদের কাছে এরকম তথ্য এসেছে যে, আন্দোলন শুরুর আগের দিন রাজশাহী, খুলনা এবং চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিএনপি জামাতের শিক্ষকদের বৈঠক হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যাদের শতকরা ৩ ভাগও বিসিএস বা সরকারি চাকরীতে যোগ দেয় না। সোমবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকরা ‘কথিত ভ্যাট’ ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের উস্কে দেয়। সোমবার থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন মেসেজ বিনিময় করে। গোয়েন্দারা কি এই তথ্য জানতেন না? বহুদিন ধরেই বলা হচ্ছিল, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি বড় অংশের মালিকানা বিএনপি জামাতের হাতে। নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার পরও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বোর্ডের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখনো পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতির আওতায় আনতে পারেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে সহিংসতার তিনদিন পরও এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হলো না কেন? বলা হচ্ছে, ওই মামলার সময় সিসিটিভির ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ওই হামলার বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের কাছে আছে। সেগুলো কি সংগ্রহ করে নিরীক্ষা করা হয়েছে?
কোটা সংস্কার আন্দোলনের হোতা কারা? এত বড় আন্দোলন পরিচালনা করতে টাকা আসছে কোত্থেকে, এসব তদন্তে কেন উদাসীনতা!
শুরু থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ আন্দোলনকে উস্কে দিয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় হঠাৎ পুলিশ এভাবে মারমুখী হলো কেন, সে প্রশ্নও উঠেছে।
বর্তমান সরকারেরর দেওয়া গণমাধ্যম অতি উৎসাহী হয়েই হোক বা উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবেই হোক কোটা আন্দোলনের অতিরিক্ত প্রচার দিচ্ছে। যেমন ধরা যাক, আজ সকালেই দেশের বিভিন্ন স্থানে অবরোধের লাইভ প্রচার হতে থাকে। এটা দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত এনিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার খবর পাওয়া যায়নি।
কোটা আন্দোলনের ‘সাফল্য’ দেখে প্রশাসনে, শিক্ষা পেশাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিএনপি-জামাত জড়ো হচ্ছে। জনপ্রিয় ইস্যুকে নিয়ে আন্দোলনের শলাপরামর্শের কথাও কান পাতলেই শোনা যায়। সর্বব্যাপী, এরকম চাপ সরকার কীভাবে মোকাবেলা করবে সেটাই দেখার বিষয়।
Read in English- https://bit.ly/2v7ZqZU
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
বাল্যবিবাহ সামাজিক আন্দোলন ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।