পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইট শুরু করার পর সেনাবাহিনীর একটি কমান্ডো দল ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে-২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার পর-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করে। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন মেজর (পরে ব্রিগেডিয়ার) জেড এ খান।
আটক হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে যান। যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির ২৬ মার্চের এক প্রতিবেদনে এ ঘোষণার উল্লেখ করা হয় এভাবে, 'পাকিস্তানে আজ গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান দেশের দুই অংশের পূর্বাঞ্চলকে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার সিদ্দিক সালিক তাঁর উইটনেস টু সারেন্ডার (ইউপিএল) বইয়ে ডেভিড লোসাকের 'পাকিস্তান ক্রাইসিস' থেকে উদ্ধৃত করে লিখেছেন, 'যখন প্রথম গুলি ছোড়া হয়, তখন রেডিও পাকিস্তানের একটি তরঙ্গে ক্ষীণভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠ শোনা যায়। মনে হলো আগে রেকর্ড করা বাণী, যেখানে শেখ পূর্ব পাকিস্তানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ঘোষণা করেছেন।
ওয়্যারলেসে প্রচারিত বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙর করা একটি বিদেশি জাহাজ থেকেও শোনা যায়। এই দিনটিতে পূর্ব বাংলার ইতিহাস নতুন দিগন্তের দিকে মোড় নেয়। সূচনা ঘটে মুক্তিযুদ্ধের।
চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা
২৬ মার্চ বেলা ২টা ১০ মিনিট এবং ২টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর 'স্বাধীনতার ঘোষণা' পাঠ করা হয়। আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম জেলা শাখার নেতা এম এ হান্নান 'বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র' পরিচয়ে নিজ নামে এ ঘোষণা পাঠ করেন।
এরপর সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম বেতারের কালুরঘাট ট্রান্সমিশন স্টেশন থেকে আবার বঙ্গবন্ধুর নামে প্রথমে বাংলায় এবং পরে ইংরেজিতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করা হয়। ঘোষণাটি পাঠ করা হয় 'স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র' পরিচয়ে।
রাত ১০টায় 'স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র' থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে ইংরেজিতে একটি আবেদনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্বের গণতান্ত্রিক সরকার এবং মুক্তিকামী জনগণকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয়।
পাকিস্তানি সেনাদের তাণ্ডব
২৬ মার্চ সারা দিন ও রাতে সান্ধ্য আইন জারি করে পাকিস্তানি সেনারা দলে দলে রাস্তায় নেমে ভবন বস্তি এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি আক্রমণ করে। গোলাগুলি করে এবং আগুন লাগিয়ে নিরস্ত মানুষকে হত্যা করা হয়। সকালে এলিফ্যান্ট রোডে আগরতলা মামলার ২ নম্বর অভিযুক্ত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যার পর তাঁর যান তাদের গাড়িতে করে নিয়ে যায়। তাঁর লাশ পরিবার পায়নি।
সেনারা দুপুরে পুরান ঢাকার হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকায় আক্রমণ করে। সেনাবাহিনী চারদিক থেকে ঘিরে বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গোলাগুলি করে মানুষ হত্যা করে। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে ধ্বংসযজ্ঞ চলে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ২৬ মার্চ দিনরাত ধরে হাজার হাজার লাশ মাটিচাপা দেওয় হয়। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একাধিক গণকবর খুঁড়িয়ে পাকিস্তানি সেনারা শত শত লাশ মাটিচাপা দেয়। পুরান ঢাকার লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয় বুড়িগঙ্গা নদীতে।
বিদেশি সাংবাদিকদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আটকে রাখা হয়। তাঁদের বাইরে আসভে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং কয়েকটি ভবন পাকিস্তানি সেনারা ট্যাংকের গোলায় ধ্বংস করে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে সাংবাদিকেরা এ দৃশ্য দেখেন।
অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহ
চট্টগ্রামে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মেজর জিয়াউর রহমান বীর উত্তম (পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) অষ্টম ইস্ট বেঙ্গলের বাঙালি সেনা কর্মকর্তা ও সেনাদের নিয়ে বিদ্রোহ করেন। রেজিমেন্টের পাকিস্তানি ও অবাঙালিদের বন্দী করা হয়। জিয়াউর রহমান রেজিমেন্টের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। চট্টগ্রামের ছাত্র-যুবক-শ্রমিক-পুলিশ- ইপিআর ও বাঙালি সৈনিকদের সমন্বয়ে গড়া মুক্তিবাহিনী নগরীর কয়েকটি এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করে। রাতে কুমিরায় কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। চুয়াডাঙ্গার ইপিআর উইংয়ের বাঙালি সেনারা মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
বগুড়ায় প্রতিরোধযুদ্ধ
সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ রংপুর থেকে এসে পাকিস্তানি সেনারা বগুড়া শহর আক্রমণ করে। কালীতলাহাট পার হওয়ার পর অকস্মাৎ কিছু প্রতিরোধযোদ্ধা এসে পাকিস্তানিদের আক্রমণ করেন। প্রতিরোধ দমন করে পাকিস্তানি সেনারা এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে চালাতে এগিয়ে চলে। বড়গোলায় তারা বড় প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ঝাউতলায় যুদ্ধে শহীদ হন আজাদ নামের এক প্রতিরোধযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে বগুড়ার মাটিতে আজাদই প্রথম শহীদ।
ইয়াহিয়ার বেতার ভাষণ
রাত আটটায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান করাচি থেকে বেতার ভাষণে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনীকে আবার সরকারের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে রাষ্ট্রদ্রোহ করেছেন। তিনি ও তাঁর দল আওয়ামী লীগ তিন সপ্তাহ ধরে আইনসংগত কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছে। তাঁরা সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছেন, পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা ও জাতির জনকের ছবির অবমাননা করেছেন এবং আইন অমান্য করে সমান্তরাল সরকার গঠনের প্রয়াস চালিয়েছেন। শেখ মুজিব দেশের সংহতি ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হেনেছেন। এর শাস্তি তাঁকে অবশ্যই পেতে হবে। ইয়াহিয়া খান আরও বলেন, সেনাবাহিনীকে তিনি তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সারা দেশে সমস্ত রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। নিষিদ্ধ করা হলো আওয়ামী লীগকে। প্রচারমাধ্যমের ওপরও সেন্সরশিপ বলবৎ করা হলো।
পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে: ভুট্টো
পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে তেজগাঁও বিমানবন্দরে রওনা হন। ঢাকা থেকে করাচি বিমানবন্দরে নেমে সমবেত জনতার উদ্দেশে ভুট্টো বলেন, আল্লাহর মেহেরবানিতে পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে। এর বেশি কিছু এখন তিনি বলবেন না। তিনি পিপিপির করাচির দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। পিপিপির অন্য সদস্যরাও ভুট্টোর সঙ্গে করাচি ফেরেন।
সূত্র: 'যে রাতে মুজিব বন্দী হলেন', জেড এ খান, ১৯৭১: শত্রু ও মিত্রের কলমে, সম্পাদনা: মতিউর রহমান, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা (২০২০) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, ভাস্কর প্রকাশনী, ঢাকা (২০১৭) বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ: সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস, সেক্টর-এক, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র, নরম খণ্ড, পাকিস্তান অবজারভার, ২৭ মার্চ ১৯৭১। দৈনিক পাকিস্তান, ৩১ মার্চ ১৯৭১।
২৬ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব
খান বলেছেন, স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী প্রভাব বিস্তার
করতে চাইলে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। আমাদের কাছে সব প্রার্থীই সমান। কাউকে ছোট-বড়
করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের
সম্মেলন কক্ষে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী, গোয়েন্দাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে
তিনি এসব কথা বলেন।
আহসান হাবিব খান বলেন, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রার্থীদের পোলিং
এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের না হওয়ার জন্য বলতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের শুকনো খাবার
নিয়ে যেতে হবে। ভোটকেন্দ্রে সব সময় পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কেউ পোলিং অফিসারকে অস্ত্র-প্রদর্শন বা শারীরিক
বল প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়, তাহলে তিনি
সাথে সাথে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেবেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদেরকে জানিয়ে উক্ত
ব্যক্তি বা ব্যক্তিদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্য সহযোগিতা চাইবেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার
সদস্যরা অনতিবিলম্বে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করবেন।
আহসান হাবিব খান বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এবারের উপজেলা
পরিষদ নির্বাচনে আরও কঠোর ও নিরপেক্ষ থাকবে প্রশাসন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কারো কোনো
ধরনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময়
সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.)
মো. আহসান হাবিব খান।
এছাড়াও পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. জামিল হাসান, পিরোজপুরের
পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম, র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী যুবায়ের
আলম, বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনসহ সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানী
উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা উপস্থিত
ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানী উপজেলায় ইভিএমের মাধ্যমে আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)
প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেছেন, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের
অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আজকের ছাত্রছাত্রীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, তারাই হবে জাতির কর্ণধার
ও দেশগড়ার কারিগর। সাইবার বুলিং, সাইবার হ্যারেজমেন্ট, আনইথিক্যাল কন্টেন্ট, হ্যাকিং,
ফিশিং, ম্যালওয়্যার, র্যানসমওয়্যার ইত্যাদি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই
আগামীতে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে কাজ করবে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মালিবাগে
সিআইডি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘স্টুডেন্টস এনগেজমেন্ট টু কমব্যাট সাইবারক্রাইম’ শীর্ষক
সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৯১
জন, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ৫৩ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ২০ জন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন, উত্তরা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জন, কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ জন ও গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের
১০ জনসহ মোট ২৪৭ জন ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন
সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপস বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (পদোন্নতিতে অ্যাডিশনাল
ডিআইজি) তৌহিদুল ইসলাম, ডিজিটাল ফরেনসিক বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিজিটাল ফরেনসিক
বিভাগের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শামসুল হক, প্রশ্নোত্তর পর্বে মডারেটরের দায়িত্ব পালন
করেন আইএনটিআই ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার সহযোগী অধ্যাপক ড. খান সরফরাজ
আলী। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন ও ফরেনসিক) তানভীর হায়দার চৌধুরী সভাপতি হিসেবে
সমাপনী বক্তব্য দেন।
তরুণ প্রজন্ম তথা শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল
সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে সাইবার অপরাধ নিবারণে সক্রিয় হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে
সিআইডির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।
সেমিনারের প্রশ্নোত্তর ও উন্মুক্ত আলোচনা
পর্বে তরুণ শিক্ষার্থীরা প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা
সাইবার অপরাধ সম্পর্কে নিজেদের সমৃদ্ধ করেন ও তাদের মতামত প্রকাশ করেন। সেমিনার শেষে
প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করেন এবং শিক্ষার্থীরা সিআইডির
ফরেনসিক ল্যাবগুলো পরিদর্শন করেন।
সেমিনারে সোশ্যাল মিডিয়াসহ ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে নানা ধরনের জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ, সাইবার অপরাধ, সাইবার চাঁদাবাজি, মাদক পাচার, অর্থ পাচার, নানা ধরনের প্রতারণার ফাঁদ ও হ্যাকিং নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। সিআইডির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, তথ্য শেয়ারিং ও নিজ নিজ জায়গা থেকে চেঞ্জ মেকার হিসেবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
সিআইডি অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া
মন্তব্য করুন
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর
এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকলে হাত-দাঁত ও চাপার হাড্ডি ভেঙে যমুনা নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি
দাতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান ও জেলা
নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত
করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও
মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ ও উপজেলা
আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার জানান,
চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে দুজন কর্মী যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি
উস্কানিমূলক ও হুমকিস্বরূপ। যা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চেয়ারম্যান
প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে হুমকিদাতা দুজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা
ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন সরিষাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। শনিবার
দুপুরে পুলিশ সাইদুল হাসান সাইদ ও খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়কে গ্রেফতার করে।
এজেন্ট হুমকি আওয়ামী লীগ গ্রেপ্তার
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশসহ মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার ছয়টি দেশে ৯৯ হাজার ১৫০ টন পেঁয়াজ
রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে ভারতের সরকার। যেসব দেশে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে,
সেসব দেশ হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভুটান, বাহরাইন, মরিশাস এবং শ্রীলঙ্কা। তবে কোন দেশে
কী পরিমাণ পেঁয়াজ রপ্তানি করা হবে, সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেশটির ভোক্তা, খাদ্য ও জন বিতরণ মন্ত্রণালয়ের
এক বিজ্ঞপ্তিতে এই পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
আগের বছর তুলনায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেশটিতে খরিপ ও রবিশস্যের উৎপাদন কম হতে পারে
বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটির সরকার বন্ধুত্বপূর্ণ
কিছু দেশে নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। দেশগুলোর অনুরোধের ভিত্তিতে
ভারতের সরকার নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ রপ্তানির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশটির এই সংবাদমাধ্যম বলছে, রপ্তানির জন্য দেশীয় উৎপাদকদের কাছ
থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা হবে। ভারতের বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদন ও রপ্তানির প্রধান সরবরাহকারী
মহারাষ্ট্র প্রদেশ। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ভারতেও পেঁয়াজের দাম উল্লেখযোগ্য হারে
বেড়েছে।
এর আগে, গত ১ মার্চ বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি
দেয় ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ
এক্সপোর্ট লিমিটেডের (এনসিইএল) মাধ্যমে এই পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানি করার কথা জানানো
হয়।
ওই সময় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের দপ্তরের (ডিজিএফটি)
(ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভোক্তা বিষয়কবিভাগের সাথে পরামর্শ করে পেঁয়াজ রপ্তানির
রূপরেখা তৈরি করবে এনসিইএল।
বিশ্ব বাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ রপ্তানিকারক ভারত। গত বছরের
ডিসেম্বরে স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির
সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের বাজারে ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত
সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় দফায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ
বাড়ায় দেশটি।
রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে দেশটির সরকার প্রথমে পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ
শুল্ক আরোপ করে। ওই সময় দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘দেশের বাজারে
সরবরাহ বৃৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।’’
তারপরও আশানুরূপ ফল না মেলায় পেঁয়াজের রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ
করে ভারত। সেসময় বলা হয়, পেঁয়াজ রপ্তানির এই নিষেধাজ্ঞা ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
দেশটির সরকার গত বছরের অক্টোবরে ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে খুচরা বাজারে ভর্তুকি দিয়ে
প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৫ রূপিতে বিক্রির লক্ষ্যে মজুত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভারতের সরকার বেশ কিছু
পদক্ষেপ নিয়েছে। গত বছরের ২৮ অক্টোবর দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি টন পে*য়াজের সর্বনিম্ন
মূল্য ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে দেয়। সেই সময় নতুন এই মূল্যসীমা ২০২৩ সালের ৩১
ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়।
গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৪ আগস্টের মাঝে দেশটি থেকে ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করা হয়। বিশ্বে ভারতের পেঁয়াজের শীর্ষ তিন রপ্তানি গন্তব্য বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রামের পটিয়ায় রাজু হোসেন নামে এক কিশোর গ্যাং নেতাকে ছুরিকাঘাতে
হত্যা করেছে আরেক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় উপজেলার সুচক্রদন্ডী পল্লী মঙ্গল
সমিতির কার্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোর গ্যাং নেতা রাজু হোসেন রাসেল পটিয়া পৌরসভার ২ নম্বর
ওয়ার্ডের বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দীন
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং
নেতা জুয়েল চৌধুরী জুলু ও তার সঙ্গীরা ডেকে নিয়ে অপর কিশোর গ্যাং নেতা রাজুকে ছুরিকাঘাত
করে হত্যা করেছে।
ওসি জসীম উদ্দীন বলেন, হত্যাকারী জুয়েল চৌধুরী জুলুর বিরুদ্ধে থানায়
একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। আর নিহত রাজু এর আগে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে পালিয়ে
যাওয়ার চেষ্টা করলে গুলিবিদ্ধ হয়। সেই থেকে তাকে গুলি রাজু বলেই সবাই চিনে।
পৌরসভার কাউন্সিলর প্রকৌশলী রূপক সেন বলেন, এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের
উৎপাতের বিষয়ে আমি স্থানীয় প্রশাসনকে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলাম।
কিন্তু দুয়েকটি অভিযান হলেও তাদের দাপট কমেনি। ফলে এলাকার মানুষ নিরাপত্তাহীন ছিল।
মন্তব্য করুন
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে তাকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। আমাদের কাছে সব প্রার্থীই সমান। কাউকে ছোট-বড় করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেছেন, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আজকের ছাত্রছাত্রীরাই আগামীর ভবিষ্যৎ, তারাই হবে জাতির কর্ণধার ও দেশগড়ার কারিগর। সাইবার বুলিং, সাইবার হ্যারেজমেন্ট, আনইথিক্যাল কন্টেন্ট, হ্যাকিং, ফিশিং, ম্যালওয়্যার, র্যানসমওয়্যার ইত্যাদি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামীতে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে কাজ করবে।