উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এডিবির অর্থায়নে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে বর্জ্য থেকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এর মধ্যদিয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। উৎপাদনে আসার ফলে বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, প্রকল্পে প্রতিদিন সাড়ে ১১ টন বর্জ্য ব্যবহার হচ্ছে। বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ৪০-৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ, ১২’শ লিটার ডিস্ট্রিল্ড ওয়াটার এবং ১৫০০ কেজি অ্যাস (ছাই)।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ধরনের প্রকল্প চালু থাকলে পরিবেশ দূষণ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।
প্রকল্পটি একটি পাইলট প্রকল্প জানিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো প্রকল্পটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাস্তাবয়ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এর সুফলতা পেয়েছি। দাতা সংস্থা এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্তে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয়ে আছে প্রায় সাড়ে তেরো লাখ রোহিঙ্গা। তাদের জন্য ধ্বংস করা হয় প্রায় ১২ হাজার একর বনভূমি। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর পয়ঃজৈব এবং রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশের। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা করতে জরুরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (ওমনি প্রসেসর) বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার।
এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহায়তায় ২০২১ সালে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অতিরিক্ত বর্জ্যের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় আমি ‘ওমনি প্রসেসর’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছি। এ প্রকল্পটি ছিল আমার স্বপ্নের প্রকল্প। এখানে ক্যালোরোফিক ভ্যালু ও আর্দ্রতার বিষয়টিও জড়িত থাকায় শুরুতে প্লান্টটির ইনপুট ম্যাটেরিয়াল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয়।
তিনি বলেন, এই প্লান্টটি সম্পূর্ণরূপে চালু রাখতে হলে প্রতিদিন ৬ টন ফেকাল স্লাজ, ৫ টন জৈব বর্জ্য ও ৫০০ কেজি সিঙ্গেল লেয়ার প্লাস্টিক প্রয়োজন। যেহেতু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে সেহেতু প্রকল্পটিতে মাত্র ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করা সম্ভব হয়। ৬০-৭০ কিলোওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও এখন প্রতিদিন ৪০-৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ, এক হাজার থেকে ১২শ লিটার পানি এবং ১২শ থেকে ১৫শ কেজি অ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। যদি পুরোপুরি প্রকল্পটি চালু করা যায় তবে এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাইরে সরবরাহ করার পাশাপাশি উৎপাদিত পানি বিক্রি করেই মাসিক ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। একই সাথে পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। বর্তমানে এখানে প্রায় এক লাখ মানুষ সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে উপকার পাবেন বলে জানান এ প্রকৌশলী।
ওমনি প্রসেসর প্রকল্পের প্লান্ট ইনচার্জ মোহাম্মদ আলীউল হক বলেন, এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে মানুষের পয়ঃবর্জ্য এবং পচনশীল ও অপচনশীন ময়লা আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ, ডিসট্রিল্ড ওয়াটার এবং অ্যাশ উৎপাদন করা হয়। প্লাস্টিকের ক্ষতিকারক কার্বন ও গ্যাস পরিবেশসহ আমাদের সবার জন্য হুমকি। কিন্তু ওমনি প্রসেসরের মাধ্যমে প্লাস্টিক থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়ায়।
তিনি বলেন, সেনেগাল এবং ভারতের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে স্থাপন করা হয় এ প্রকল্প। এই প্লান্টটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক হওয়ায় ম্যান পাওয়ার খুবই কম লাগে। এছাড়া এই প্লান্টটি চালাতে বাইরের কোনো বিদ্যুৎ লাগে না। উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকেই এটি চালানো হয়। এটিকে বাণিজ্যিকভাবেও ব্যবহার করা গেলে এ খাত থেকে আয় করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন তিনি।
পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কক্সবাজারের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয়দের ব্যবহৃত প্লাস্টিক থেকে শুরু করে জৈব, অজৈব, পয়ঃবর্জ্য পরিবেশ ও প্রতিবেশে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ প্রকল্পে প্রতিদিন যে পরিমাণ বর্জ্য ব্যবহার হচ্ছে তাতে পরিবেশের ক্ষতি কিছুটা হ্রাস পাবে। এ ধরনের একাধিক প্রকল্প আরো নেয়া যেতে পারে।
প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম মুক্তাদির বলেন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবির সহযোগিতায় জরুরি সহযোগিতা প্রকল্পের আওতায় ‘ওমনি প্রসেসর’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এটি সরাসরি পরিবেশবান্ধব প্রকল্প। অন্য প্রকল্পে যে পরিমাণ জমির প্রয়োজন হয় ‘ওমনি প্রসেসর’ প্রয়োজনের চেয়ে ৭৫-৮০ শতাংশ কম জমিতে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এখান থেকে যা নির্গত হবে তার প্রতিটি জিনিসই পরিবেশবান্ধব। সমসাময়িক যত পদ্ধতি রয়েছে এটি সর্বাধুনিক পদ্ধতি। তবে চ্যালেঞ্জ হবে প্রকল্পটি অপারেশনের জন্য দক্ষ লোকবলের। তারপরও আমরা এর ফল দেখতেছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে পরবর্তী প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করা হবে।
স্থানীয় একাধিক পরিবেশবাদী সংগঠন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বর্জ্য বিদ্যুৎ রোহিঙ্গা ক্যাম্প বিদ্যুৎ উৎপাদন
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার
(২ মে) বিকেল ৫টায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে গত ১৫ এপ্রিল
এই অধিবেশন আহ্বান করেছেন।
অধিবেশন শুরুর আগে সংসদ ভবনে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক
হবে। বর্তমান সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির এটিই হবে প্রথম বৈঠক। বৈঠকে আসন্ন অধিবেশনের
মেয়াদ নির্ধারণ ছাড়াও আলোচ্যসূচি ও কার্যবিবরণী নিয়ে আলোচনা হবে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেবেন। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপিত হবে। ঝিনাইদহ-১ আসনের আওয়ামী
লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুল হাই মৃত্যুবরণ করায় রেওয়াজ অনুযায়ী তার ওপর আনা শোক প্রস্তাবের
ওপর আলোচনা হবে। শোক প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর অধিবেশন মুলতবি করা হবে। চলমান সংসদের
কোনো সদস্যের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে তার সম্মানে অধিবেশন মুলতবি
করার রেওয়াজ রয়েছে।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, জুনে বর্তমান সরকার ও দ্বাদশ সংসদের
প্রথম বাজেট অধিবেশনের আগে অনুষ্ঠেয় এই দ্বিতীয় অধিবেশন তেমন দীর্ঘ হবে না। অধিবেশন
চলবে মাত্র ছয় কার্যদিবস। এর মধ্যেই পাস হতে পারে একটি বিল।
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে অটোভ্যান চালক শাকিল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। অটোরিকশা ছিনতাই এবং হত্যার সাথে জড়িত ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিনয় কুমার।
অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার
জানান,
২০২৩
সালের
২১
অক্টোবর রাত
৯
টার
দিকে
অটোভ্যান সহ
বাড়ি
থেকে
বের
হয়
শাকিল।
এসময়
শেরপুর
থানাধীন সীমাবাড়ী ইউনিয়নের চান্দাইকোনা বগুড়া
বাজার
এলাকা
হতে
অজ্ঞাত
নামা
৩-৪ জন তাকে
টার্গেট করে
তার
অটো
ভ্যানটি দূর্গা
পূজার
মন্ডপ
ঘুরে
দেখার
কথা
বলে
ভাড়া
করে।
অটো
চালক
শাকিলকে নিয়ে
আসামিরা মথুরাপুর বাজারে
যায়।
সেখান
থেকে
ক্লোন্ড ড্রিংকসের সাথে
চেতনানাশক ঔষধ
মিশিয়ে
শাকিলকে খাওয়ানো হয়।
এতে
শাকিল
অচেতন
হয়ে
পড়ে।
এরপর শাকিলকে হাত,
পা
ও
মুখ
বেধে
শ্বাসরোধ করে করে ফুলজোর
নদীতে
ফেলে
তার
মৃত্যু
নিশ্চিত করে
লাশ
গুম
করার
উদ্দেশ্যে ভাসিয়ে
দিয়ে
অটোভ্যান নিয়ে
পালিয়ে
যায় আসামীরা। ২৩
সালের
২৩
অক্টোবর ফুলজোর
নদী
থেকে
শাকিলের মরদেহ
উদ্ধার
করে
রায়গঞ্জ থানা
পুলিশ।
এ
বিষয়ে
রায়গঞ্জ থানায়
একটি
হত্যা
মামলা
দায়ের
করে
শাকিলের পরিবার।
মামলার
সূত্র ধরে অনুসন্ধানে মাঠে
নামে
পুলিশ।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ
সুপার
আরিফুর
রহমান
মন্ডলের দিক
নির্দেশনায়, রায়গঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার
বিনয়
কুমারের তত্বাবধানে, অফিসার
ইনচার্জ হারুনর
অর
রশিদ
এর
নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল
মজিদ
সহ
সঙ্গীয়
অফিসার
ফোর্স
নিয়ে
তথ্য
প্রযুক্তি ব্যবহার করে
২৮
এপ্রিল
ঢাকা
থেকে
আসামি
আশিক
(১৯)
কে
গ্রেপ্তার করে থানায়
নিয়ে
জিজ্ঞাসাবাদ করা
হয়।
এসময়
হত্যাকান্ডের সকল
তথ্য
বেরিয়ে
আসে।
গ্রেপ্তারকৃত আশিক
বগুড়া
জেলার
শেরপুর
উপজেলার নাকুয়া
গ্রামের বাদশার
পুত্র।
অন্য
দিকে
একই
এলাকার
মোমিন,
ফিরোজ
আহম্মেদ এ
হত্যাকান্ডে জড়িত
ছিল,
তবে
ফিরোজকে আগেই
গ্রেপ্তার করা হয়।
বাকী
আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা
চলছে
বলে
জানান
রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার
বিনয়
কুমার।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, রায়গঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন-অর-রশিদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ সহ স্থানীয় সংবাদকর্মী বৃন্দ।'
মন্তব্য করুন
নাটোরের লালপুর উপজেলার আজিম নগর রেলওয়ে
স্টেশনে মঞ্জুর রহমান মঞ্জু (৪০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে
দুর্বৃত্তরা।
নিহত মঞ্জুর রহমান উপজেলার গোপালপুর
পৌরসভার বাহাদিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ও গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের
সহসভাপতি।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল ২০২৪) রাত ১১টার
দিকে গোপালপুর পৌরসভার আজিমপুর রেলস্টেশনে রবিউল ইসলামের কনফেকশনারী দোকানের সামনে
এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত
১১টার দিকে গোপালপুর আজিম নগর রেল স্টেশনে মনজুর রহমান মঞ্জুকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলে
করে এসে মাথায় এবং পেটে গুলি করে হত্যা করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এতে ঘটনাস্থলেই
তার মৃত্যু হয়।
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
নাছিম আহমেদ জানান, সংবাদ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত রয়েছে। কে বা কারা এই
হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা উদঘাটনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন
মহান মে দিবস
উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক
বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল
ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি
মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক
গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো
শহরে রক্তাক্ত আন্দোলনে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মাহুতি দেওয়া বীর
শ্রমিকদের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির
পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার
প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে
তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় শ্রম নীতি প্রণয়ন করেন এবং প্রথম মহান মে দিবসকে শ্রমিক সংহতি
দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি
ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন
এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন।
১৯৭২ সালে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। সেই ভাষণে তিনি শ্রমিকদের মজুরির হার বৃদ্ধি এবং
যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত শ্রমিকদের এডহক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি
পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য
অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক
শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে।
আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক
অনুসরণ করে দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন
করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক
বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত
করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮’
প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ
শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এই তহবিল থেকে যে কোন শ্রমিক কর্মরত অবস্থায়
দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয়
নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার জন্যেও
আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন।
আমরা রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে
কর্মরত শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন
করেছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। এ শিল্পের কর্মহীন এবং দুস্থ শ্রমিকদের সর্বোচ্চ
তিন মাসের নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে চলমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ
করা হয়েছে। সকল সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে।
শ্রমিকদের সামাজিক মর্যাদা, স্বাস্থ্য
ও সেইফটি নিশ্চিতকল্পে জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২, জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, জাতীয়
পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এবং গৃহকর্মী
সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমাদের সরকারের আন্তরিক
প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরো
সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন
পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার
সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদপ্তরকে সম্প্রতি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত করেছি।
শ্রমিক ভাই-বোনদের যেকোন সমস্যা সংক্রান্ত
অভিযোগ গ্রহণ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া জন্য সার্বক্ষণিক টোল ফ্রি
হেল্প লাইন (১৬৩৫৭) চালু করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিশেষ করে গার্মেন্টস শিল্পে নিরাপত্তা
নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ পরিদর্শন ও মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বাস করি,
মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক-মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয়
উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন। মে দিবসের চেতনায় দেশের শ্রমিক-মালিক ঐক্য জোরদার করে
শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের
সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো; এটাই হোক আমাদের মে দিবসের
অঙ্গীকার।”
তিনি ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে
গৃহীত সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।
মন্তব্য করুন
ভারতে বিভিন্ন সময় পাচারের শিকার ২০ জন বাংলাদেশি নারী ও শিশুকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে ফিরে আসে। ফেরত আসাদের মধ্যে ৬ জন নারী ও ১৪ জন শিশু রয়েছে।
তারা হলেন, অনন্য রায় (১৬), কামনা বিশ্বাস (১৭), উর্মি আক্তার (২১), নাদিরা শেখ (২৩), বৃষ্টি (৮), আবৃতি শীল (৮), রাবেয়া আক্তার (১৫), হোসনা আক্তার (১৪), জান্নাত শেখ (১৭), পূঁজা রায় (১৫), আছিয়া খানম (৫), নাহিদ হাসান (১৩), তৃষা (১৭), ওলিদ খান (১৬), কথা মন্ডল (৮), ফারজানা আক্তার (২২), প্রান্তী বিশ্বাস (১৮), তমারানি (১৯), জোগুনা বিবি (৬৫) ও রাকিব হোসেন (১৬) । এরা দেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, ঢাকা, পিরোজপুর, কেরানিগঞ্জ, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, বাগেরহাট ও চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পশ্চিমবঙ্গের নারী শিশু পাচার রোধ বিষয়ক টাস্কফোর্সের সমন্বিত প্রচেষ্টায় তাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
ফেরত আসারা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। এরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সেইফ হোমের হেফাজতে ছিল। পরবর্তীতে এদের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাইপূর্বক ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে ফিরিয়ে আনা হলো।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাই কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল বেনাপোল-পেট্রোপোল নোম্যান্সল্যান্ডে স্থানীয় এসি ল্যান্ড, উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা, বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনের নিকট উদ্ধারকৃত এসব নারী- শিশুদের হস্তান্তর করেন।
এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সময় বেনাপোল সীমান্তে বিজিবি, স্থানীয় এনজিও কর্তৃপক্ষ এবং ভারতের বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও বিএসএফ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বেনাপোল ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফেরত আসাদের পোর্ট থানার সোপর্দ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক বিদোষ চন্দ্র বর্মন জানান, দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের মাধ্যমে এসব নারী-শিশুদের আনা হয়েছে। ফিরে আসা নারী ও শিশুদেরকে ৩টি মানবাধিকার সংগঠনের হাতে তুলে দেয়া হবে। এসব মানবাধিকার সংগঠন তাদেরকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেবে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেল ৫টায়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে গত ১৫ এপ্রিল এই অধিবেশন আহ্বান করেছেন। অধিবেশন শুরুর আগে সংসদ ভবনে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হবে। বর্তমান সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির এটিই হবে প্রথম বৈঠক। বৈঠকে আসন্ন অধিবেশনের মেয়াদ নির্ধারণ ছাড়াও আলোচ্যসূচি ও কার্যবিবরণী নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ‘মহান মে দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ‘মহান মে দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব মেহনতি মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।”