ইনসাইড বাংলাদেশ

জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে আমলারাই ক্ষমতাবান

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় সংসদের সদস্যরা সবসময় শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা পান। কিন্তু এবার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি দেওয়া হবে কি না এ নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের গাড়িতে অন্ততপক্ষে ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ শুল্কারোপের একটি প্রস্তাব এনবিআর বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে।

জনপ্রতিনিধিরা দেশে আইন প্রণয়ন করেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র। কাজেই সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদ সার্বভৌম। আর সার্বভৌম সংসদের প্রতিনিধিরা শুল্কমুক্ত গাড়ি পেলে রাষ্ট্রের কতটুকু ক্ষতি হবে, তার চেয়েও বড় কথা হল এই প্রণোদনা তাদের জনগণের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু সেই চেষ্টায় এবার বাগড়া দিয়েছেন আমলারা। তারা মনে করছেন কৃচ্ছ্রসাধনের এই সময়ে সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা দেওয়া উচিত না। কেউ কেউ এটাকে অনৈতিকও বলছেন। এটি নিয়ে যখন আলোচনা এবং বিতর্ক ঠিক সেই সময় চলমান অর্থ সংকটের মধ্যে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য ৩৮১ কোটি টাকা ৫৮ লাখ টাকার ২৬১ টি নতুন জীব গাড়ি কেনা হচ্ছে। অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এসব গাড়ি কেনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। 

তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে, আমলাদের জন্য কি দেশে অর্থ সংকট নেই? আমলাদের জন্য কি কৃচ্ছতার নীতি প্রযোজ্য নয়। আমলারা অবশ্য সব কিছুর ঊর্ধ্বে, ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের বিচার করা যায় না। কারণ আমলা অপরাধ করলে তার বিভাগীয় তদন্ত হয় বিভাগীয় তদন্তে। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হয় পদোন্নতি আটকে দেয়া অথবা একটি ইনক্রিমেন্ট কমিয়ে দেওয়া। তারপরও তারা সেটির বিরুদ্ধে আপিল করেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন এবং এসব আবেদন গৃহীত হওয়ার পর তাদের দণ্ড মওকুফ করা হয়। আর দুর্নীতি দমন কমিশনও সরকারের অনুমতি ছাড়া কোন আমলাকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। বিচারের আওতায় আনতে পারেন না।

আমলারা এখন জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে উঠে গেছেন। সরকার আমলাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার জন্য ১৯৭৯ সালের আইন কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু সেই উদ্যোগও সফল হয়নি। যখন সরকার কৃচ্ছতা সাধন বাস্তবায়নের জন্য বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করছেন, তখন আমলারা দিব্যি সরকারি খরচে বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর যে সময়ে জনপ্রতিনিধিদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা রহিত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত প্রায় ঠিক সেই সময় আমলাদের জন্য প্রায় চারশ কোটি টাকার জিপ গাড়ি তাও আবার মাঠ আমলাদের জন্য ক্রয় করা কতটুকু যৌক্তিক সেই প্রশ্ন উঠেছে। 

এর আগে আমলাদেরকে বিনা সুদে গাড়ির লোন সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। সেই গাড়ি গুলো আমলারা বেশির ভাগ উবারে ব্যবহার করছেন, ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। গাড়ির জন্য মাসে মাসে ৫০ হাজার করে টাকাও নিচ্ছেন। অথচ তাতে সরকারি গাড়ি বা সরকারি তেলের তোন সাশ্রয়ী হচ্ছে না। একেক আমলা সুদ মুক্ত গাড়ি কিনছে। আবার একাধিক সরকারি গাড়িও ব্যবহার করছেন। এ রকম অবস্থা যখন চলছে তখন আমলাদের রাজত্ব ভালো ভাবে অনুভব করছে গোঠা বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক এই সংকটের মুখে আমলাদের জন্য ২৬১ টি গাড়ি কেনা কতটুকু যৌক্তিক সেই প্রশ্ন যেমন উঠেছে তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে, আমলারা কি তাহলে জনপ্রতিনিধিদের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান? আমলারা কি তাহলে দেশ চালাচ্ছেন?

জনপ্রতিনিধি   আমলা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশি নৌযানে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির গুলি

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

নাফ নদ হয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে বর্তমানে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশি নৌযানে চার দফায় মিয়ানমার অংশ থেকে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ফলে বেশ কিছু দিন ধরে সেন্টমার্টিনে খাবার সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ১৩ জুন থেকে কক্সবাজার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে বড় ট্রলারে সেন্টমার্টিনে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখা হচ্ছে।

ঘটনা : গত জুন আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৪টার সময় নাইক্ষ্যংদিয়া খাল এলাকা অতিক্রমের সময় আরাকান আর্মি একটি মালবাহী ট্রলার লক্ষ্য করে - রাউন্ড গুলি ছুড়ে

ঘটনা : গত জুন বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটের দিকে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট শাফকাত আলির নেতৃত্বে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে নাফ নদে এবং বঙ্গোপসাগরের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়া চর এলাকা অতিক্রম করার সময় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের মেগিচং এলাকা থেকে আরাকান আর্মি গুলিবর্ষণ করে। এতে মেটাল শার্কে রাউন্ড এবং কাঠের বোর্ডে রাউন্ড গুলি লাগে। পরে ওই বোট এবং মেটাল শার্ক দুটি নিরাপদে টেকনাফ কোস্টগার্ডের বোটপুলে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।

ঘটনা : গত জুন আনুমানিক ১২টার দিকে নাইক্ষ্যংদিয়া খাল সীমান্তে নাফ নদের মোহনায় দুটি কাঠের ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাওয়ার পথে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের মেগিচং ক্যাম্পের ওয়াচ টাওয়ার থেকে আরাকান আর্মি আনুমানিক ১৫-২০ রাউন্ড গুলি চালায়। পরে ট্রলার দুটি ১২টা ২৫ মিনিটের দিকে শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে ফিরে আসে। এতে ১টি ট্রলারে রাউন্ড গুলি লাগে। ঘটনায়ও কেউ হতাহত হয়নি।

ঘটনা ৪ : ১১ জুন সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের গোলারচরের বিপরীতে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া খাল সীমান্তে নাফ নদের মোহনা হয়ে একটি স্পিডবোটযোগে সেন্টমার্টিনের জন স্থানীয় বাঙালি শাহপরীর দ্বীপ জেটি থেকে সেন্টমার্টিনে যাচ্ছিল। পথে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের মেগিচং বিজিপি ক্যাম্পের ওয়াচ টাওয়ার এলাকা থেকে আরাকান আর্মি স্পিডবোটকে লক্ষ্য আনুমানিক - রাউন্ড গুলি করে। যদিও কেউ হতাহত হয়নি। পরে ১১টার দিকে স্পিডবোটটি সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়।

এসব গুলিবর্ষণের ঘটনাসমূহের কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

নৌ পথে বালুচর: জানা গেছে, আনুমানিক প্রায় এক দশক পূর্বে সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন স্থানে বঙ্গোপসাগরের মাঝে দুটি স্থানে বালুচর জেগে ওঠে। এই দুটো বালুচরের কারণে ভাটার সময়ে সেন্টমার্টিনে চলাচল করা যাত্রী পণ্যবাহী নৌযানগুলো সাগরের ভেতর মিয়ানমারের একটি অংশ ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সঙ্গে বাংলাদেশের বিজিবির সমন্বয়ের কারণে এই চলাচলে ইতোপূর্বে কখনোই কোনো বাধার সৃষ্টি হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মি মিয়ানমারের এই অঞ্চল দখল করে নেওয়ার কারণে সৃষ্ট সমন্বয়হীনতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিনগামী ট্রলার নৌযানগুলোকে লক্ষ্য করে আরাকান আর্মি গুলি ছুড়ছে। ফলে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যিক ট্রলার স্পিডবোট চলাচল সাময়িক স্থগিত করার কারণে সেন্টমার্টিনে বসবাসকারীদের মধ্যে খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে।

এছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় নাফনদে এবং বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গোলারচর নামক এলাকায় আনুমানিক কিলোমিটারজুড়ে বড় একটি বালুর চর রয়েছে। সেই সঙ্গে গোলারচর থেকে আনুমানিক - কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের মধ্যবর্তী স্থানে নাইক্ষ্যংদিয়া নামক স্থানে কিলোমিটারের মধ্যে আরও একটি বালুর চর ভাটার সময় জেগে ওঠে।

ফলে টেকনাফ দমদমিয়া কেয়ারি জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করা যাত্রী পণ্যবাহী জাহাজ, মাছ ধরার ট্রলার, সার্ভিস বোট এবং স্পিডবোটসহ সব ধরনের নৌযানগুলোকে গমনাগমনের সময় জেগে ওঠা বালুর চরের কারণে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইনের (আইএমবিএল) মিয়ানমার অংশের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা ব্যবহার করতে হয়। বর্ণিত চর দুটি ড্রেজিং করা হলে মিয়ানমারের জলসীমা আর ব্যবহারের প্রয়োজন হবে না। সেন্টমার্টিনের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি কর্মকর্তাদের থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে বাংলাদেশ সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সেন্টমার্টিনে বিকল্প পথে কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। সে নৌপথে যাত্রী পারাপার ও খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।


আরাকান আর্মি   বিজিপি   বিজিবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সেন্টমার্টিন পরিদর্শন করলেন বিজিবি মহাপরিচালক

প্রকাশ: ১২:২৪ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন। শুক্রবার শনিবার তিনি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পরিদর্শন করে বিজিবি সদস্যদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।

রোববার (১৬ জুন) বিজিবির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিককালে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের সীমান্তবর্তী মংডু অঞ্চলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের দেখা গেছে। মিয়ানমারের মংডু সীমান্তের বিপরীতে বাংলাদেশের টেকনাফ সেন্টমার্টিন দ্বীপ সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় উদ্ভূত সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিজিবি মহাপরিচালক টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২বিজিবি) এর অধীন সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিওপি পরিদর্শন, বিওপির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপে নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদেরকে দেশের সার্বভৌমত্ব সীমান্ত সুরক্ষার জন্য অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। দুর্গম এই দ্বীপে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দক্ষতা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য বিজিবি মহাপরিচালক সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানান। একইসঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যদেরকে সদা তৎপর থাকার নির্দেশ দেন।

ব্রিফিং শেষে বিজিবি মহাপরিচালক বিজিবির রামু সেক্টর সদর দপ্তর, রামু ব্যাটালিয়ন (৩০ বিজিবি) এর ব্যাটালিয়ন সদর এবং অধীন মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন। সময় বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তের দায়িত্বরত সব পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাদেরকে অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক বিষয়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।


সেন্টমার্টিন   বিজিবি   মহাপরিচালক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদের পাহাড়

প্রকাশ: ১২:০৮ পিএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

কী নেই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান মিয়ার। রীতিমতো গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। শুধু নিজের নামেই নয় স্ত্রী, দুই ছেলে এক মেয়ের নামেও বিপুল সম্পত্তি গড়েছেন ডিএমপি সাবেক এই কমিশনার। অনুসন্ধানে আছাদুজ্জামান মিয়া তার পরিবারের সম্পদের পাহাড়ের সত্যতা মিলেছে।

পূর্বাচলের নিউ টাউনের নম্বর সেক্টরের ৪০৬/বি রোড। এখানে ১০ কাঠা জমি রয়েছে আছাদুজ্জামান মিয়ার নামে। পূর্বাচলের এই প্লটের প্রতি কাঠা জমির মূল্য এক কোটি টাকারও বেশি। পূর্বাচলের সেক্টর , রোড ১০৮- ৫৩ নম্বর প্লটটি আছাদুজ্জামানের স্ত্রীর নামে ছিল। কাঠার এই প্লটটি বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

আফতাবনগর নম্বর সেক্টরের, এইচ ব্লকের নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর প্লটে ২১ কাঠা জমি রয়েছে। এই প্লটটিও আছাদুজ্জামান মিয়ার। এই প্লটটি নম্বর রোডের সবচেয়ে বড় প্লট।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এল ব্লকের লেন- ১৬৬ এবং ১৬৭ নম্বরে ১০ কাঠার উপর তলাবিশিষ্ট আলিশান বাড়িটি আছাদুজ্জামানের স্ত্রীর নামে। স্কুলের কেয়ারটেকার জানান, বাড়িটি বর্তমানে ভাড়া দেয়া। যা স্কুল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাড়িটির বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

নিকুঞ্জ- এর / রোডের নম্বর বাড়িটি আছাদুজ্জামানের ছোট ছেলে আসিফ মাহাদীনের নামে। ভবনের পাশের একজন বাসিন্দা নাম-পরিচয় গোপন রেখে বলেন, সম্প্রতি তারা বাসার নেমপ্লেট খুলে রেখেছেন। কেন রেখেছেন জানি না। বাড়িটির মূল্য ১০ কোটি টাকার বেশি।

সিদ্ধেশ্বরী রূপায়ন স্বপ্ন নিলয় ৫৫/-এর বহুতল ভবনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নম্বর ভবনে হাজার ৮শথেকে হাজার স্কয়ার বর্গফিটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে আছাদুজ্জামানের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকার নামে। বাড়ির এক নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা বর্তমানে এই বাসায় নেই। ফ্ল্যাটটি তার নামে রয়েছে। ইস্কাটন গার্ডেন ১৩/ প্রিয়নীড়ে আছাদুজ্জামানের স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

এদিকে ধানমণ্ডির ১২/ সড়কের ৬৯ নম্বর বাড়ির বি// ভবনে যোগাযোগ করে জানা যায় ভবনটিতে এককাঠা জমিসহ আছাদুজ্জামান মিয়ার পরিবারের সদস্যদের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বিষয়ে ভবনের দায়িত্বে থাকা সাইদ বলেন, তলাবিশিষ্ট ভবনটিতে ২০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এখানে ফ্ল্যাটের মূল্য থেকে সাড়ে কোটি টাকা পর্যন্ত। এই ভবনটি আছাদুজ্জামান মিয়া স্যারের বলে আমরা জানি। ভবনটি খালি পড়ে আছে। বর্তমানে সংস্কার কাজ চলছে।

আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী আফরোজা জামানের নামে ঢাকা, ফরিদপুর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমির সন্ধান মিলেছে। ২০১৮ সালে তিনি রাজউক থেকে একটি প্লট বিশেষ কোটায় বরাদ্দ পান। অথচ রাজউকের নীতিমালা অনুযায়ী, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের প্লট বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ নেই।

ঢাকার গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁদখোলা মৌজায় আফরোজা জামানের নামে ৪১ শতাংশ জমি রয়েছে। যা কেনা হয়েছে ২০১৭ সালে। একই মৌজায় একই বছরের ১৬ই নভেম্বর তার নামে কেনা হয় আরও ২৬ শতাংশ জমি। একই মৌজায় তার নামে ২০১৯ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি কেনা হয় আরও ৩৯ শতাংশ জমি।

আছাদুজ্জামানের স্ত্রীর নামে ২০২০ সালে জোয়ার সাহারা মৌজায় কাঠা জমি কেনা হয়। একই বছরে একই মৌজায় কেনা হয় ১০ কাঠা জমি। একই বছরে গাজীপুরের চাঁদখোলা মৌজায় ৩১ শতক জমি ক্রয় করেন আফরোজা। ছাড়া আফরোজা ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কৈয়ামসাইল- কায়েতপাড়া মৌজায় দশমিক ২৮ একর জমি কেনেন। একই বছরে একই মৌজায় আরও ৩২ শতক জমি কেনেন তিনি।

ওই বছরই রূপগঞ্জের কৈয়ামসাইল-কায়েতপাড়া মৌজায় দশমিক ৬০ একর জমি তার নামে কেনা হয়। পরে তা বিক্রি করে দেয়া হয়। ছাড়াও ২০১৯ সালে কৈয়ামসাইল-কায়েতপাড়া মৌজায় দশমিক ৫৭ একর জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পান আছাদুজ্জামানের স্ত্রী। একই বছরে আবার সেই জমি বিক্রিও করেন।

অন্তত দুটি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে আছাদুজ্জামান তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানার। দুটি কোম্পানির অংশীদার হয়েছেন আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা। এর মধ্যে একটি মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান তিনি। আসাদুজ্জামান ডিএমপি কমিশনার থাকাকালীন রাজধানীর রুট পারমিট কমিটির প্রধান ছিলেন। সে সময় মৌমিতা পরিবহনকে রুট পারমিট দেয়া হয়।

এই মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান হারিসুর রহমান সোহান। তিনি আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা জামানের সৎ ভাই। এক সময় তিনি লেবার ভিসায় সৌদি যান। পরে দেশে এসে ব্যবসা শুরু করেন।

ছাড়া শেপিয়ার্ড কনসোর্টিয়াম লিমিটেড নামে আরেকটি কোম্পানির চেয়ারম্যান আফরোজা জামান। এই কোম্পানির পরিচালক আছাদুজ্জামানের বড় ছেলে আসিফ শাহাদাত।

আছাদুজ্জামানের এক শ্যালক নূর আলম ওরফে মিলন। তার নামে গাজীপুরের শ্রীপুরে দেড় একর জমি রয়েছে। ভাগ্নে কলমের নামেও গাজীপুরে জমি আছে দেড় একর। অথচ আজীবন গ্রামে থাকা মিলনের নির্দিষ্ট কোনো আয় নেই। অন্যদিকে ভাগ্নে কলমও গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বনে গেছেন কয়েক কোটি টাকা দামের জমির মালিক। এই কলম আবার আছাদুজ্জামানের গ্রামের বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক।

সিভিল সার্ভিস ক্যাডারের ৮৫ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান। পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২২ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর তার নিয়োগের বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৩তম কমিশনার ছিলেন।

সম্পদের বিষয়ে জানতে একাধিকবার আছাদুজ্জামান মিয়াকে ফোন দিলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন রিসিভ করে তিনি তা কেটে দেন। হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। ছাড়া তার স্ত্রী আফরোজা বড় ছেলে আসিফ শাহাদাতকে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকাকে একাধিকবার ফোন ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি রিসিভ করেননি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’ নির্বাহী পরিচালক . ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, রাজনৈতিক আশীর্বাদ ছাড়া ধরনের দুর্বৃত্তায়ন সম্ভব নয়। একদিকে প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ অবস্থান অপরদিকে রাজনৈতিক আশীর্বাদ একত্রিত হয়ে তাদের দুর্নীতি এবং অসামঞ্জস্য আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা আইনের সুরক্ষার পরিবর্তে ভক্ষক হয়ে গেছেন। তারা অপরাধ নিয়ন্ত্রক। তার মানে তারা জানেন কোন অপরাধ কীভাবে করতে হয়। এটা জেনে বুঝেই করেছেন। অবস্থায় সব অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্য কোনো ম্যাজিক বুলেট নেই।


ডিএমপি   কমিশনার   আছাদুজ্জামান   সম্পদ   পাহাড়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ঈদুল আজহার নামাজ পড়ার নিয়ম

প্রকাশ: ১০:৩৭ এএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

ত্যাগ ও উৎসর্গের ঈদ হলো ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ এই ঈদ পালিত হয়। পশু কোরবানির আগে ঈদের নামাজ পড়তে হয়। আল্লাহ মুসলমানদের জন্য দুটি দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারিত করেছেন। এই দিনগুলোতে ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। ঈদের নামাজ খোলা জায়গা, মসজিদ কিংবা যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাতের সঙ্গে পড়তে হবে। জামাত ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে না।

ঈদের নামাজ

ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমার নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। তবে ঈদের নামাজের পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির দিতে হবে।

প্রথম রাকাতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া।

দ্বিতীয় রাকাতে সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।

ঈদের নামাজের নিয়ত

ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ছয় তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি...আল্লাহু আকবার।

প্রথম রাকাত

১. তাকবিরে তাহরিমা

ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধা।

২. সানা পড়া

সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।

৩. অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া।

এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেওয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেঁধে নেওয়া।

৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া

৫. সুরা ফাতিহা পড়া

৬. সুরা মেলানো। অতঃপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সিজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ করা।

দ্বিতীয় রাকাত

১. বিসমিল্লাহ পড়া

২. সুরা ফাতিহা পড়া

৩. সুরা মেলানো।

৪. সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া। প্রথম রাকাতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেওয়া; অতঃপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।

৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।

৬. সিজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

তারপর খুতবা

ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবেন আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবেন।

দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ ছয়টি অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরসহ আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজের অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরে ভুল হলে অর্থাৎ তাকবির কম বা বেশি হলে অথবা বাদ পড়লে সাহু সিজদা প্রয়োজন নেই।



ঈদুল আজহা   নামাজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ কিমি যানজট

প্রকাশ: ১০:১৯ এএম, ১৬ জুন, ২০২৪


Thumbnail

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন সেতু কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও সেগুলো কোনো কাজে আসেনি। রাতভর মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে উত্তরের মানুষকে। বর্তমানে টাঙ্গাইল মহাসড়কের সল্লা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু টোলপ্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১০  কিলোমিটার অংশে যানজট রয়েছে।

রোববার (১৬ জুন) ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে কালিহাতীর পৌলি পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার অংশে উত্তরবঙ্গগামী লেনে যানজট ছিল। তবে সেটি এখন কমে প্রায় ১০ কিলোমিটারে গিয়ে ঠেকেছে।

ছাড়া ঢাকাগামী পরিবহনগুলো আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে চলাচল করায় ভুঞাপুর-টাঙ্গাইল সড়কে কোথাও কোথাও রিবহনের ধীরগতি রয়েছে।


টাঙ্গাইল   যানজট  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন