নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪২ এএম, ১৩ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলাদেশের সড়কগুলো প্রচণ্ড রক্তপিপাসু। প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় এদেশে শত শত লোকের মৃত্যু হয়। মৃত্যু হয় তাঁদের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার। তেমনি এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আজ থেকে ৭ বছর আগে নিহত হন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী ক্যামেরা ডিরেক্টর মিশুক মুনীর। বাংলাদেশকে আরও অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল তাঁদের। কিন্তু হঠাৎ করেই যবনিকাপাত ঘটে দুজনের কর্মময় জীবনের।
তারেক মাসুদ তাঁর নতুন ছবি ‘কাগজের ফুল’-এর জন্য লোকেশন দেখতে স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ নয় সদস্যের একটি দল নিয়ে মানিকগঞ্জ গিয়েছিলেন। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ইছামতি নদীর তীর ঘেঁষে শেখ একিম উদ্দিনের বাড়িটি নিজের ছবির জন্য পছন্দ হয় তারেকের। কিন্তু সেই ছবি আর করা হয়ে ওঠেনি। ঢাকা ফেরার পথে ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় তাঁদের বহনকারী মাইক্রো বাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের। তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর ছাড়াও চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করেন।
মৃত্যুর পরের বছর ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানকে সম্মান জানায়।
পরিচালক তারেক মাসুদ ছিলেন বিশ্ব দরবারে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম মুখপাত্র। তারেক মাসুদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ দেশে ও বিদেশে সমানভাবে সমাদৃত। এছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ এবং চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে নির্মিত ‘আদম সুরত’ এর কারণেও স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি।
শহীদ বুদ্ধিজীবি মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক মিশুক মুনীরও ক্যামেরা ডিরেক্টর হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান ছিলেন। মিশুক মুনীর নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিও গ্রাহক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করা মিশুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতাও করেছেন। তারেক মাসুদের ছবি ‘রানওয়ে’র প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন তিনি।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের এই দুই প্রতিভাবান ব্যক্তির মৃত্যুর সাড়ে পাঁচ বছর পর ঘাতক বাসটির চালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। এছাড়া গত ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এক রায়ে চালক, বাস মালিক ও বীমা কোম্পানিকে তিন মাসের মধ্যে তারেক মাসুদের পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে সংশ্নিষ্ট বাস মালিক, চালক ও বীমা কোম্পানী কর্তৃপক্ষ যার নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।