ইনসাইড বাংলাদেশ

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের চুরি: আটক হয়নি কেউ, জনমনে প্রশ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৪০ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৯


Thumbnail

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ভোল্ট ভেঙে ৮ কোটি টাকা মূল্যের ১৭ কেজি সোনা চুরি যাওয়ার ঘটনার ১১ দিনেও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এমন কি উদ্ধার করা যায়নি চুরি যাওয়া সোনা। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ডিবি ও পিবিআইকে দিয়ে চুরির ঘটনা তদন্ত করার অনুরোধ করেছেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী।

এই চিঠিতে বলা হয় গত ০৮.১১.১৯ তারিখে থেকে ১০.১১.১৯ পর্যন্ত পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, সরকারী ছুটি এবং ঘূর্ণিঝড় বুলবুল চলাকালে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের মূল্যবান শুল্ক গুদামের নিরাপদ ভোল্ট ভেঙে ১৭ কেজি সোনা চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃওরা। কিন্তু গত ১১ দিনেও সোনা উদ্ধার ও চোর সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় গত ১১ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। সর্বশেষ কাস্টমস, পুলিশ, ডিবি, পিবিআই ও র‌্যাবের ইনভেন্ট্রি অনুযায়ী শুল্ক গুদাম থেকে ১৬৫৮৮.৪৩ কেজি স্বর্ণ, ১৯ হাজার ২৩০ ভারতীয় রুপি এবং ৩৭ হাজার বাংলাদেশি টাকা চুরি যায়।

চুরির ঘটনা জানার পরপরই কমিশনার ভোল্টের গোডাউনের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জনাব শাহিবুল সর্দারকে দায়িত্ব অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যকে অবহিত করা হয়। বন্ধের সময় কর্মরত ৪ জন সিপাহিকেও দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশ, পিবিআই, গোয়েন্দা, ডিবি, সিআইডি, এনএসআই সহ সকল সংস্থাকে তাৎক্ষণিক সম্পৃক্ত করা হয়। তাদের তদন্ত অদ্যাবধি চলমান রয়েছে।

যুগ্ম কমিশনার শহীদুল ইসলামের নের্তৃত্বে ০৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদšত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাস্টমস হাউস ও চেকপোস্টের সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মূল্যবান গুদাম পাহারার জন্য পৃথক সিপাহি ও আনসার পদস্থ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, চুরি যাওয়া স্বর্ণের বেশির ভাগই ২০১৭ ও ২০১৮ সালে শুল্ক গুদামে জমা হয়। উক্ত সময়ে ৭ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) মূল্যবান গোডাউনের দায়িত্বে ছিলেন। দীর্ঘতম ১৪ মাস দায়িত্বে ছিলেন এআরও বিশ্বনাথ কুন্ডু। তাকে বদলি করে এআরও রিপন কান্তি ধর ও আবদুল আউয়াল মজুমদারকে মূল্যবান গুদামের দায়িত্ব প্রদান করা হলেও এই দুই কর্মকর্তা দীর্ঘ ৯ মাসেও বিশ্বনাথ কুন্ডুর কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে পাননি। পরবর্তীতে এআরও মো. অলি উল্লাহকে গত ২৭.০৯.১৮ তারিখে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। এআরও মো. অলি উল্লাহ ১৫.০১.১৯ তারিখ পর্যন্ত, এআরও মো. শহীদুল ইসলাম মৃধা ১২.০৪.১৯ তারিখ পর্যন্ত এবং এআরও আর্শাদ হোসাইন ১৭.০৯.১৯ পর্যন্ত মূল্যবান গুদামের দায়িত্বে থাকেন। ১৮.০৯.১৯ তারিখ হতে এআরও শাহিবুল সরদার দায়িত্বে আছেন।

চুরির ঘটনায় বন্দর থানা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায় বহিরাগত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আজিবর রহমান, মো: সুরত আলী, মহব্বত হোসেন, আসাদুজ্জামান, আলাউদ্দিন, সুলতান, আবুল হোসেন, টিপু সুলতান, ইমরান হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি পুলিশ। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন সময়ে গুদাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। শুল্কগুদামের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সিপাহি এবং আনসার সদস্যগণকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

যশোর জেলা পুলিশের নের্তৃত্বে স্থানীয় ডিবি, এসবি, সিআইডি ও পিবিআই গত ১১ নভেম্বর থেকে থেকে লাগাতার তদন্ত করছে। ইতোমধ্যে সন্দেহজনক কর্মচারী/ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা। প্রকৃত অপরাধী এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে চুরি যাওয়া স্বর্ণের পরিমাণ ১৯.৩১৮ কেজি বলা হয়। পরবর্তীতে ইনভেন্ট্রি করে দেখা যায়, শুল্ক গুদামে ১৯৭৩ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আটককৃত বিভিন্ন দেশের বিপুল পরিমাণ মুদ্রা, রূপা ও রৌপ্যসদৃশ বস্তু, স্বর্ণের গহনা ও স্বর্ণের বার, ঘড়ি ইমিটেশনসহ আরো অন্যান্য মূল্যবান জিনিস রক্ষিত থাকলেও পুরাতন জিআরের কোন স্বর্ণ চুরি হয়নি শুধুমাত্র ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আটককৃত স্বর্ণই চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া ১৬.৫৮৮ কেজি স্বর্ণ এআরও বিশ্বনাথ কুন্ডু দায়িত্বে থাকাকালীন গুদামে জমা হয়।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব নুরুজ্জামান জানান, রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির দুঃসাহসকারী দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে সনাক্ত ও গ্রেপ্তার না করলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে। প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ ও সক্ষম পুলিশ বাহিনী ১১ দিনেও কেন আসামি সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে পারেনি এ বিষয়ে বেনাপোলের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করেন। বিশেষ করে কাস্টমস এর অভ্যন্তরে যেসব এনজিওরা (বহিরাগত) বিভিন্ন শাখায় কর্তব্যরত আছে তারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কারণ ভোল্টের চাবি অনেক সময় তাদের কাছে দেওয়া হয় গুদাম পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার করার জন্য।

কাস্টমস এর মধ্যে ৪ স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে কীভাবে নিরাপত্তা ভোল্ট ভেঙে সোনা চুরি হলো তা নিয়ে রীতিমত হৈ চৈ পড়ে গেছে বেনাপোলে। তবে বেনাপোল কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, চুরির ঘটনা কাস্টমসের অভ্যন্তর থেকেই ঘটানো হয়েছে। দুর্বৃত্তরা আগে থেকেই দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে এ ধরনের চুরি করার সাহস পেয়েছে। কারণ চুরির সময় গোটা কাস্টমস হাউসের সিসি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। সিসি ক্যামেরার কন্ট্রোল রুম থেকে কীভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো আর ডুপ্লিকেট চাবি ব্যবহার করে সোনা লুট করা হলো কীভাবে, সেটাই এখন তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানান, সোনা চুরির পর পরই কাস্টমস থেকে ৭ জনকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তদন্ত অব্যহত আছে। এটি দ্রুত নিস্পত্তি করা সম্ভব।

 

বাংলা ইনসাইডার



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে একত্রে কাজ করতে চায় যুক্তরাজ্য: বিমান মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৬:৫২ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে একত্রে কাজ করতে চায় যুক্তরাজ্য।

মঙ্গলবার (৭ মে) সচিবালয়ে নিজ দফতরে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যানি ম্যারি ট্রেভেলেইনের সাথে বৈঠকের পর গণমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে প্রধানত কথা হয়েছে আমাদের এভিয়েশন সিকিউরিটি নিয়ে প্রশিক্ষণের বিষয়ে। এই প্রশিক্ষণের সাথে বিনিয়োগও হতে পারে, যুক্ত হতে পারে আধুনিক যন্ত্রপাতি। তবে ভবিষ্যতে এভিয়েশন খাতে কীভাবে বিনিয়োগ করবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বেসামরিক বিমান খাতে যৌথভাবে কী করা যায়, সেটাই ছিল আমাদের আলোচনার মূলকেন্দ্র। তারা আমাদের নতুন বিমানবন্দর দেখেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন যে এখানে অনেক কাজ হবে। ইউরোপে তারা এয়ারবাস বানায়, আমাদের বিমানের বহরে বোয়িং আছে। তারা আমাদের কাছে এয়ারবাস বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি, বেশ ভালো প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। এরইমধ্যে বোয়িংও আমাদের ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। এ বিষয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে একটি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য যেগুলো ভালো হবে; সেগুলো আমরা বিবেচনা করবো।

ফারুক খান বলেন, এয়ারবাস এরই মধ্যে অর্থনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এবারই তারা একটি সমঝোতা স্মারকে সই করার কথা বলেছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, আগে মূল্যায়ন শেষ হোক, তারপর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে।

এছাড়া সিকিউরিটি, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়েও কথা হয়েছে। এসব খাতে তাদের বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। তারা জানেন, ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও কক্সবাজারে আমাদের দুটো বিমানবন্দরে উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। তারা আরো জানতে পেরেছেন, সৈয়দপুরে একটা বিমান হাব তৈরির চেষ্টা করছি। এসব কারণে তারা বেসামরিক বিমান খাত নিয়ে অনেক আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ভালো প্রস্তাব বলতে তারা কী দিতে চেয়েছে বা বাংলাদেশ কতটি উড়োজাহাজ কিনতে চায় এবং উড়োজাহাজ কিনতে কত টাকা লাগবে সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হবে তার সুদ, সেই সঙ্গে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে বেশ ভালো প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ১০টির মতো এয়ারবাস কিনতে চায় বলেও জানান বিমানমন্ত্রী। তবে এ বিমান কিনতে কত টাকা লাগতে পারে, তা নির্ভর করবে কীভাবে প্রস্তাব আসে তার ওপর বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনের বিষয়ে পত্রিকায় বিভিন্ন কথা এসেছে। আমরা এই মুহূর্তে বিষয়টিকে এতো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি না। তবে বোয়িংয়ের সাথে কথা বলে কারিগরি বিষয়গুলো জানতে বলেছি। এই মুহূর্তে আমরা কোনো সমস্যা পাইনি। এই মুহূর্তে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। একজন কিংবা দুজনের কথার ওপর ভিত্তি করে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে এ বিষয়ে আমরা সতর্ক ও জানার চেষ্টা করছি।

এ সময় সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যানি ম্যারি ট্রেভেলেইন বলেন, যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের সম্পর্ক ও অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের নিরাপত্তা বিষয়ক অংশীদারিত্ব রয়েছে। আমরা এভিয়েশন খাতে দুই দেশের সম্পর্ক কিভাবে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা আলোচনা করেছি ।

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতিতে আনন্দ প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। সেক্ষেত্রে এভিয়েশন শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ তার বিমানবন্দর গুলোর উন্নয়ন করছে। নতুন টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে। এ কারণে আমরা বাংলাদেশের সাথে এভিয়েশন শিল্পের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দক্ষতা শেয়ার করতে চাই।

এভিয়েশন শিল্প   যুক্তরাজ্য   বিমান মন্ত্রী   মুহাম্মদ ফারুক খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সংসদে তোপের মুখে ব্যারিস্টার সুমন

প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

এবার জাতীয় সংসদে তোপের মুখে পড়লেন সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন। কারও নাম উল্লেখ্য না করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু অভিযোগ করেছেন একজন সদস্য সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে গিয়ে ৩৪৯ জন এমপির জন্য মর্যাদাহানিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ জন্য তিনি স্পিকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।  

মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই অভিযোগ তোলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সুমনের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এই হাউজের একজন সংসদ সদস্য। নামটা বলতে চাই না। তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।’ 

মুজিবুল হক বলেন, ‘তিনি বলেছেন- আপনারা জানেন এমপিরা কত টাকা বেতন পান? তারা তো বলে না, গোপন করে। তিনি বলেছেন- ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন। আমরা কত টাকা বেতন পাই তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেছেন- তিন মাসের মধ্যে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি।’

স্পিকারকে উদ্দেশে মুজিবুল হক বলেন, ‌‘এই ২৮ কোটি টাকা কী আমি পেয়েছি, আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? ইতিমধ্যে ফেসবুক দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন- ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই? তিনি বলেছেন- ২৫ কোটি টাকা পেয়েছি, কিন্তু আমরা তো পাইনি।’

স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ২০ কোটি টাকা এমপিদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, ‘পাঁচ বছরের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের নাম দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য কয়টা প্রকল্প করা হবে তার নাম দেওয়া হয়েছে। টাকার সঙ্গে তো তার কোনো সম্পর্ক নেই। সংসদ সদস্যরা না দিলে স্থানীয় সরকার বিভাগ জরিপ করে টেন্ডার করে, তারপর বাস্তবায়ন করে। কিন্তু এই সংসদ সদস্য বলছেন-আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। শুধু তাই না তিনি আরও বলেছেন- এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।’

চুন্নু বলেন, ‘আপনি (স্পিকার) হলেন এই সংসদের অভিভাবক। আমাদের কোনো সদস্য যদি এমন কোনো কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি (একজন ছাড়া) সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। তার সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টা আপনি দেখতে পারেন। আমরা এখানে অনেক কথা বলব, বিতর্ক করব। এমন কথা বলবার অধিকার নেই- যাতে ৩৪৯ এমপির ইজ্জত যাবে। তাদের সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই অভিভাবক হিসেবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে কী করবেন, এটা ব্যবস্থা নেবেন।

ব্যারিস্টার সুমন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফর কী বার্তা দেয়?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে। এই লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী ৪ জুন জানা যাবে নতুন সরকার কারা গঠন করছে। নির্বাচন নিয়ে চলছে অনিশ্চয়তা। বিজেপির কপালে ভাঁজ। কিন্তু এর মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা সফরে আসছেন। দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতেই বিনয় মোহন কোয়াত্রার এই বাংলাদেশ সফর বলে কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিনয় মোহন কোয়াত্রা তার বাংলাদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। এছাড়া পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। 

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী জুলাই মাসে ভারত সফরে যেতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে। আর এটি হলে নির্বাচনে টানা চতুর্থবার জয়ী হওয়ার পর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর হবে ভারতে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে এমন এক সময় যখন ভারতে নির্বাচন চলছে। নতুন সরকার কারা গঠন করবে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত অনিশ্চয়তা রয়েছে। সাধারণত নির্বাচনকালীন সময়ে ভারত এরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না। নির্বাচনের পর নতুন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কাকে তারা আমন্ত্রণ জানাবে এবং পররাষ্ট্র নীতির কলাকৌশল কী হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ ভারতে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হবে না। বিনয় মোহন কোয়াত্রার বাংলাদেশ সফর এই বার্তাটি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত করেছে। 

ভারতে ইন্ডিয়া জোট বা এনডিএ জোট যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে গত এক যুগে যে সম্পর্কের অগ্রযাত্রা সেটিকে দুই পক্ষই অব্যাহত রাখতে চায়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফরের মধ্য দিয়ে সেটি সুস্পষ্ট করা হল।

জুনের ৪ তারিখে নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবেন। 

ভারত কতগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক বিরোধের বাইরে অবস্থান গ্রহণ করে। বিশেষ করে ভারতের পররাষ্ট্র নীতি এমন একটি অবস্থানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন, পররাষ্ট্র নীতিতে মৌলিক পরিবর্তন তারা করে না। আর এ কারণেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে যাচ্ছেন। 

নানা কারণে বাংলাদেশের ওপর ভারত অনেকখানি নির্ভরশীল। সবচেয়ে বড় কারণ হল যে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় ভূমিকা। বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চল অতীতে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত। কিন্তু ২০০৯ সালে দায়িত্বগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনদিন কোন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে পরিণত হবে না এবং ঘাঁটি হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করতেও দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে তিনি শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেন। 

এছাড়াও অসাম্প্রদায়িক চেতনা জঙ্গিবাদ মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থান ভারতকে বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল করেছে। এ কারণেই বিগত নির্বাচন গুলোতে ভারত সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে। এ অঞ্চলের শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা যে গুরুত্বপূর্ণ এই বক্তব্যটি ভারত কোন রকম রাখঢাক ছাড়াই দিয়েছে। এটির পিছনে প্রধানত ভারতের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপদ্রব বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের কারণে অনেক খানি কমে গেছে। আর এ কারণেই ভারতের ক্ষমতায় যারাই আসুক না কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তারা সম্পর্কের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে। এই বার্তাটি দিতেই বিনয় মোহন কোয়াত্রা ঢাকায় আসছেন।


ভারত   পররাষ্ট্র সচিব   বিনয় মোহন কোয়াত্রা   লোকসভা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারি মালিকানাধীন ২৮ শিল্পপ্রতিষ্ঠান লোকসানে চলছে: মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮:৫০ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশে সরকারি মালিকানাধীন ২৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান লোকসানে চলছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনি জানান, লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) অধীন চারটি, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন ১৫টি এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীন নয়টি কোম্পানি রয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, লোকসানি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি ভর্তুকির আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। আর লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান কমাতে বা ভর্তুকি থেকে বের হতে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সংসদে উত্থাপিত শিল্পমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, বিএসইসি’র অধীন গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড ও ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড এবং ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড লোকসানে চলছে। বিএসএফআইসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বর্তমানে ১৫টিই লোকসানি হিসাবে পরিচালিত হচ্ছে।

অন্যদিকে, বিসিআইসির অধীন লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এসএফসিএল), আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (এএফসিসিএল), যমুনা ফার্টিলাজার কোম্পানি লিমিটেড (জেএফসিএল), চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল), ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার পিএলসি (জিপিএফপিএলসি), ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিএল), কর্ণফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএমএল), বাংলাদেশ ইদুলেটর অ্যান্ড স্যানিটারিওয়্যার ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিআইএসএফএল) এবং উসমানিয়া গ্লাসশীট ফ্যাক্টরি লিমিটেড (ইউজিএসএফএল)।

শিল্পমন্ত্রী জানান, ভর্তুকি থেকে বের হওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নতুন মেশিনারিজ সংস্থাপন, স্মার্ট প্রযুক্তি প্রয়োগে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, পণ্যের বহুমুখীকরণ, পণ্যের বিপণনে ই-সপ প্রস্তুতসহ বিভাগীয় শহরে শোরুম ও সার্ভিস সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা, ডিলার সংখ্যা বৃদ্ধি, ইনহাউজ প্রশিক্ষণ/কর্মশালার মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও ই-কমার্স সাইট তৈরির কার্যক্রম গ্রহণ, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, টিভি চ্যানেল ও সোশ্যাল মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্যের ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম ইত্যাদি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিএসএফআইসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তুকি থেকে বের হওয়াসহ লোকসান কমানোর লক্ষ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন আছে।

তিনি জানান, বিসিআইসির অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে টিএসপিসিএল ও ডিএপিএফসিএল ভর্তুকির আওতায় পরিচালিত। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে টিএসপিসিএল এবং ডিএপিএফসিএল মোট ১ হাজার ৭৭৭ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা ভর্তুকি পেয়েছে। ভর্তুকি থেকে বের হওয়ার জন্য সার কারখানাগুলোর প্রধান কাঁচামাল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সারের নির্ধারিত বিক্রয়মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান   শিল্পমন্ত্রী   নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচনে যে বিষয়গুলোর ওপর নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ না থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে এই নির্বাচন নিয়ে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিএনপিকে ছাড়াও বাংলাদেশের গণতন্ত্র যে অব্যাহত থাকতে পারে এবং নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ থাকতে পারে- সেটি প্রমাণের নির্বাচন উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারানোর কিছু নেই। অর্জন করবার আছে অনেক কিছুই। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের জন্য তিনটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। 

প্রথমত, ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয় সেজন্য তিনি নেতাকর্মীদেরকে প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি আওয়ামী লীগের প্রধান চাওয়া। 

দ্বিতীয়ত, উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। যে কোন মূল্যে যেন উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ সেটি তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেখাতে চান। 

তৃতীয়ত, নির্বাচন কমিশন যে স্বাধীন এবং সার্বভৌম একটি প্রতিষ্ঠান, সেটি প্রমাণের জন্য উপজেলা নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, উপজেলা নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি বাড়ে এবং উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব আবার প্রমাণিত হবে। বিএনপি ছাড়াও যে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা সুষ্ঠু হতে পারে সেটি প্রমাণিত হবে। এ কারণে উপজেলা নির্বাচনে বেশ কিছু বিষয় সরাসরি নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি দলের নেতাকর্মীদের জন্য একটি পরীক্ষা। কারা আওয়ামী লীগের আদর্শ নীতি অনুসরণ করে এবং কারা আদর্শ নীতির বিপক্ষে কাজ করে সেটি প্রমাণের জন্য এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনে পাঁচটি বিষয়ে নজর রাখছেন। প্রথমত, এই নির্বাচনে মন্ত্রী এবং এমপিদের আত্মীয় স্বজনদেরকে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। কিন্তু তারা নজরদারির মধ্যে আছেন এবং ভবিষ্যতে এই সমস্ত মন্ত্রী-এমপি যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে উপজেলায় আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করেছেন তারা ফল ভোগ করবেন। কাজেই মন্ত্রী-এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে কে কী ভূমিকা রাখছেন- এর ওপর নজরদারি রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বারবার দলের নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকে বরদাস্ত করা হবে না। উপজেলা নির্বাচনে যেন কোনরকম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা না হয় সেজন্য তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন। এই বিষয়টি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নজরদারির মধ্যে রেখেছেন, যে উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থী যেন প্রভাব বিস্তার করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট না করে সেটি খেয়াল রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। 

তৃতীয়ত, উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী বা প্রার্থীর সমর্থক কেউ যেন দলের স্বার্থ বিরোধী কোন তৎপরতায় যুক্ত না হয় সে বিষয়টিও নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চতুর্থত, উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে বলা হয়েছে। প্রশাসন যদি কোথাও পক্ষপাত করে, কোন বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে দায়িত্ব পালন করে সেক্ষেত্রে তাদেরও ভবিষ্যতে হিসেব করা হবে বলেই সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

পঞ্চমত, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও উপজেলা নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকতে বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যদি এই নির্বাচনে পক্ষপাত করে বা কাউকে সমর্থনের চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে সেটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসবে এবং ভবিষ্যতে সেটি তাদের জন্য নেতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হবে।

উপজেলা নির্বাচন   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন