নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ এএম, ১২ জুলাই, ২০১৭
বাঙালি জাতির সবথেকে বড় শক্তি হলো, একাগ্রতা, সহমর্মিতা, সৌভ্রাতৃত্ব। বাঙালির এই গুণগুলো সবচেয়ে বেশি উদ্ভাসিত হয় সংকটে। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধে, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে, প্রাকৃতিক দূর্যোগে। বন্যায়, সাইক্লোনে, শীতে-এদেশের মানুষ কারো ডাকের অপেক্ষা করে না। নিজেরাই সংঘবদ্ধ হয়। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে দাঁড়ায় দূর্গত মানুষের পাশে। ৮৮’র বন্যায় দেখেছি, তরুণরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাহায্য নিয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, চিঁড়া শুকনো খাবার নিয়েছে। স্কুলের বাচ্চারা এক দিনের টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। একই দৃশ্য দেখেছি ৯৮ এর বন্যায়।
বাংলাদেশ যে দূর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বের অন্যান্য উদাহরণ, তার একটি কারণ বোধহয় এটিই। কে কি করলো তার অপেক্ষা না করে আমরা আমাদের সীমিত শক্তি উজাড় করে দিয়েছি। দূর্যোগে এমন একাত্মতা বিশ্বে বিরল।
কিন্তু ক্রমশ: আমরা কি আমাদের সেই গৌরব গাঁথাগুলোকে বিসর্জন দিচ্ছি? হাওরের আগাম বন্যার কথা বাদই দিলাম, দেশের এক-তৃতীয়াংশ জনপদে বন্যা শুরু হয়েছে। মানুষ অসহনীয় দূর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আমরা টেলিভিশনে, খবরের কাগজে, অনলাইনে এসব দেখে-আহ্ করছি। কিন্তু আগের মতো আমরা যেন এগিয়ে আসছি না। কেন?
আমাদের কি যান্ত্রিকতা খেয়ে ফেলেছে?
আমরা কি স্বার্থপরতার কাছে বশীভূত হয়েছি?
আমরা কি নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত?
গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে বেশ। কিছু কিছু মানুষ ভালোই নাদুস নুদুস হয়েছে। আয় বেড়েছে। বিত্ত বেড়েছে, লোভ বেড়েছে সঙ্গে বেড়েছে ভয়ও। আজকাল দেখি, রাস্তায় একটা লোক দূর্ঘটনায় পড়লে আমরা এগিয়ে আসি না। পাশের ফ্লাটে কান্নার আওয়াজ শুনলে আমরা ছুটে যাই না। অফিসে কোনো সহকর্মী না এলে আমরা উদ্বিগ্ন হই না। এটা কি আধুনিকতার মুখোশ, নাকি সব কিছু বাদ দিয়ে নিজে ভালো থাকার নোংরা কৌশল?
আমাদের সমাজের এই বিপরীত রীতি বাঙালির নয়। এই পরিবর্তন অনাকাঙ্ক্ষিত। এই বদলে যাওয়া দু:স্বপ্নের মতো।
আমরা বিশ্বাস করি, বাঙালির পরপোকারিতা বদলায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, বিপদে অন্যের পাশে দাড়াবার রীতি আমরা নষ্ট করিনি। আমরা বিশ্বাস করি, কারো কষ্টে কান্নার আবেগ আমরা হারাই নি। প্রয়োজন একটু টোকা। মনে করিয়ে দেওয়া, আপনি বাঙালি। আপনার আতিথ্য অসাধারণ, আপনার ভ্রাতৃত্ব অপরিমেয়।
তাই অনুরোধ একটু দাড়ান। হাতে পায়ে তো জাম ধরে গেছে। একটু ভাবুন দূর্গত মানুষ গুলোর কথা। সবার সীমিত সহায়তায় বদলে যেতে পারে এই মানুষ গুলোর দৃশ্যপট। আপনার একটু সাহায্য তাদের মুখে এনে দিতে পারে এক অনাবিল হাসি।
আমরা বাঙালি, সহমর্মিতাই আমাদের প্রাণ। মনুষ্যত্বই আমাদের গৌরব। আর দেরি কেন, চলুন হাত বাড়াই, বন্যার্তদের জন্য, দূর্গত মানুষের জন্য।
বাংলা ইনসাইডার/আরএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
মন্তব্য করুন
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রধানমন্ত্রী নসরুল হামিদ
মন্তব্য করুন
চাকরির বয়সসীমা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জনপ্রশাসন মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে দেওয়া এক ডিও লেটারে উল্লেখ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহারে ৩৩ নং পৃষ্ঠায় শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। আর এ রকম একটি ডিও লেটারে শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন দেশে চাকরির বয়সসীমা উল্লেখ করেছেন।