নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২০ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০১৭
বর্তমান সরকার টানা আট বছরের বেশি সময় ধরে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে। এর মধ্যে অনেক কাজ প্রশংসিত হয়েছে। আবার অনেক কাজ সমালোচিত হয়েছে। জনভাবনা নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের এই অয়োজন।
এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা মো. রফিক সরকারের ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে কিন্তু যুগ যুগ ধরে প্রচলিত দুর্নীতির কারণে ও মাঠপর্যায়ে যারা বাস্তবায়ন করবে এবং তদারকি করবে তাদের গাফিলতির কারণে সমস্যা হচ্ছে। সরকারের নিযুক্ত কাজের মানুষগুলো সৎ হলে এবং জবাবদিহিতা থাকলে এই সমস্যা কমে আসবে।
একই এলাকার পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, রাজধানীর জলাবদ্ধতাসহ নানা দুরবস্থার জন্য জন্য সরকার কোনো না কোনোভাবে দায়ী। অনেকদিন হয়ে গেছে। অপরিকল্পিত অনেক ভবন নির্মিত হয়েছে। সহজেই পানি নিষ্কাশন সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়।
নিউমার্কেট এলাকায় কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাঁধনের সঙ্গে। তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে যানজট,গ্যাস ,বিদ্যুৎ ইত্যাদি সব ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে জনগণের অসচেতনতার ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গ্যাস জ্বালিয়ে রাখার কারণে। আর বৃষ্টির পানির মাধ্যমে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন করার জন্য প্রয়োজন ভালো পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা।
নীলক্ষেত এলাকায় আরও কথা হয় মো. হাফিজুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি অবশ্য ভিন্ন প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, দেশের মানুষ ভালো না থাকার অন্যতম কারণ প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে কোনো মিল নেই। জনগণের মতামতের ওপর তারা আস্থা রাখতে পারছে না। এতে জঙ্গি সংগঠনগুলো সুযোগ বুঝে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দিচ্ছে। জনগণের মনে হতাশা দানা বেঁধে উঠেছে।
রমনা এলাকার বাসিন্দা হিরন সরকারের কিছু ভালো উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, গুলিস্তানে ফুটপাত উঠিয়ে দেওয়া সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ। সরকার বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিশনারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পারে। বিভিন্ন এলাকার সড়কে গাড়ি পার্ক করা যাবে না। আর যানজট নিরসনের জন্য প্রাইভেট গাড়ির লাইসেন্স না দিয়ে পাবলিক গাড়ির লাইসেন্স দিতে হবে। এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে।
নিউমার্কেট এলাকা থেকে শহীদুল ইসলাম নামে একজন ব্যবসায়ী বলেছেন, বাংলাদেশে অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। এছাড়া গুম,খুন ইত্যাদি চলতে থাকায় মানুষ ভালো নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউমার্কেটের এক ব্যবসায়ী দাবি কনে, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর যে ধরনের উন্নতি আশা মানুষ করেছিল তাঁর কিছুই পূরণ হয় নি। বাংলাদেশে যানজটসহ অন্যান্য সমস্যা আগে যেমন ছিল এখনো তাই আছে।
নিউমার্কেট এলাকায় কাজে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বদরুল বলেন, যানজট, গ্যাসের সমস্যা, জলাবদ্ধতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকার চাইলেই কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু সরকারের অনাগ্রহের কারণেই এটি সম্ভব হচ্ছে না।
একই এলাকায় কাজে আসা মিতালী নামে এক নারী বলেন, গ্যাস সঙ্কট কিন্তু বাংলাদেশে আগে এমন ছিল না। আমরা যদি ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছাতে চাই তাহলে কিন্তু এমন খারাপ অবস্থা থাকলে চলবে না। সবদিকে উন্নতি হলেই সম্ভব দেশের উন্নতি।
ধানমন্ডির বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র অনিক বলেছে, বাংলাদেশে বিদ্যুতের যে সমস্যা তাতে ভারত থেকে বিদ্যুৎ না এনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ প্লান্টের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে যেতে পারে। আর গ্যাস, পানির জলাবদ্ধতা ইত্যাদির সমস্যা সরকার উদ্যোগ নিলেই সমাধান করা সম্ভব।
মঞ্জুরুল ইসলাম নামে ধানমন্ডি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ঢাকা শহর অনেক ঝামেলার শহর। এই শহরে অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে। একদিনে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় এই সমস্যার সমাধান। সম্মিলিত উদ্যোগেই সমাধান সম্ভব।
ধানমন্ডি ২৭ এর জয়ন্ত বসাক নামে এক ব্যক্তি বলেন, গত কিছুদিন ধরেই প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টিতে ঢাকা শহরে খুবই ভয়াবহ অবস্থা ছিল। ঢাকা শহর অচল করে দেওয়ার মত অবস্থা নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর এমন হচ্ছে। কিন্তু এ সম্পর্কে সরকারের কোনো ভূমিকা আমার চোখে পড়েনি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএম
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা কার্যনির্বাহী সংসদ গণভবন
মন্তব্য করুন
দুদক দুদক মহাপরিচালক শিরীন পারভীন
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী
মন্তব্য করুন
করোনাকালে প্রায় দুই বছর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। শিক্ষার ক্ষতি নিয়ে সে সময় অনেকে কথা বলেছেন, অনেকেই আহাজারি করছেন। কিন্তু তৎকালীন সময়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তারা বলেছেন, জীবন সবচেয়ে মূল্যবান। জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। তাই তারা অনলাইন এ ক্লাস চালু রাখেন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও সেই সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরও বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে গড়িমসি করা হয়েছিল। এবং নজিরবিহীন ধীর নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এটি নিয়ে তৎকালীন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সমালোচিত হয়েছিল।
এবার আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মরিয়া দেখা যাচ্ছে। এখন আগের শিক্ষামন্ত্রী নেই। ডা. দীপু মনি এখন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু মহিবুল হাসান চৌধুরী, যিনি ডা. দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি এখন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য মরিয়া তৎপরতা চালাচ্ছেন।
কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে? কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কেন পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে হবে এনিয়ে বিশিষ্টজনদের মধ্যে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আবহাওয়া পরিস্থিতি যখন একের পর এক হিট অ্যালার্ট দিচ্ছে, তাপমাত্রার পারদ যখন দিনদিন চড়ছে। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একগুঁয়েমি করছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
সকলেই দাবি করেন যে এখন বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। সেখানে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সহজে যেতে পারে। এবং করোনার সময় শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তাছাড়া এবার যে গরম পড়েছে, যে কয়দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছিল তাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক স্বাস্থ্যহানির ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি রুটিনের দ্বারা পরিচালিত হয়। যেমনটি শিক্ষা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন। সেই রুটিনে অনেকগুলো বন্ধ থাকে। বিভিন্ন কারণে বন্ধ রাখতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেমন গ্রীষ্মের ছুটি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে, যেটি জুনে হওয়ার কথা। এছাড়াও ঈদুল আজহা উপলক্ষেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে গ্রীষ্মের ছুটি এবং অন্যান্য ছুটিগুলো কমিয়ে এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাই যৌক্তিক। কারণ শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং কোন দুর্ঘটনার মধ্যে পতিত হয়, তাহলে এটির দায় দায়িত্ব শুধু একা শিক্ষামন্ত্রীর ওপর বর্তাবে না, পুরো সরকারের ওপর বর্তাবে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তারা মনে করেন যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জোর করে এই তীব্র দাবদাহের মধ্যে নেয়ার ফলে একটি অবিশ্বাসের সম্পর্ক হচ্ছে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে একটি সুসম্পর্কের মেলবন্ধনই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্ঞান চর্চার জন্য জরুরী। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি কর্তৃপক্ষ জোর করে খোলা রাখে, তাহলে স্বাভাবিক পরিবেশটি নষ্ট হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট সকলেই মনে করে যে, অস্থিরতা না করে, একগুঁয়িমে না করে শিক্ষামন্ত্রী একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করেবেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার ব্যাপারে তার অবস্থান পুর্নবিবেচনা করবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয় তীব্র তাপদাহ মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল
মন্তব্য করুন
করোনাকালে প্রায় দুই বছর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। শিক্ষার ক্ষতি নিয়ে সে সময় অনেকে কথা বলেছেন, অনেকেই আহাজারি করছেন। কিন্তু তৎকালীন সময়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তারা বলেছেন, জীবন সবচেয়ে মূল্যবান। জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। তাই তারা অনলাইন এ ক্লাস চালু রাখেন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও সেই সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরও বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে গড়িমসি করা হয়েছিল। এবং নজিরবিহীন ধীর নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এটি নিয়ে তৎকালীন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সমালোচিত হয়েছিল।