নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩৯ এএম, ২২ জুলাই, ২০১৭
মাঠ প্রশাসনে একটি অনিবার্য বিদ্রোহ কোনোরকম ঠেকাল সরকার। এখনো বিরাজ করছে তীব্র অসন্তোষ। বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিক সালমানকে নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় এই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাডমিনস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক জরুরি সভায় এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনের মহাসচিব কবির বিন আনোয়ার বলেছেন ‘এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসন কাজ করতে পারবে না।
তারিক সালমান বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। প্রতিযোগিতায় ঘোষণা করা হয় যে, বিজয়ীদের ছবি দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কার্ড করা হবে। প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় শিশু আদ্রি। সে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি আঁকে। ২৬ মার্চ তার ছবি দিয়েই স্বাধীনতা দিবসের কার্ড হয়। এই কার্ডে বঙ্গবন্ধুর ছবিকে বিকৃত করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে বরিশাল আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু মানহানির মামলা করেন। এর মধ্যেই তারিক সালমানকে বরগুনা সদরে বদলি করা হয়। গত ১৭ জুলাই এই মামলায় হাজিরা দিতে এলে, তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এর দুই ঘণ্টা পর বিচারক আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে তাঁকে জামিন দেন। এই ঘটনা মাঠ প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এই ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তি না হলে, তাঁরা কাজ বন্ধ করে দেবেন বলে জানিয়ে দেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ. টি. ইমামের নজরে এল, তিনি স্বাধীনতা দিবসের কার্ডের কপিসহ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। বৃহস্পতিবারই অ্যাডমিনস্টেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, অবিলম্বে এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। সমিতির মহাসচিব কবির বিন আনোয়ার ঘটনা এবং তার প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
শুক্রবার গণভবনে ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কমিটির সভা। ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কোথায় তাঁকে পুরুস্কৃত করব, তা না করে তাকে শাস্তি দিল কে?
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সাজুর সাময়িক বহিষ্কার প্রশাসনের অস্থিরতা কিছুটা কমলেও এখন অসন্তোষ রয়েই গেছে। বিশেষ করে, তারিক সালমানের গ্রেপ্তাতারের ক্ষেত্রে কোনো রকম প্রশাসনিক অনুমোদন নেওয়া হয়নি। গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয় নেই। একজন আরেক জনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। তারিক সালমানের ঘটনা আরেকটি বিষয় উন্মোচন করেছে, তাহলো মাঠ প্রশাসনের ওপর দলীয় চাপ। এ ধরনের অনভিপ্রেত চাপ সৃষ্টির ফলে নির্বাচনের দেড় বছর আগে মাঠ প্রশাসন সম্পূর্ণ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে বলে অনেকের ধারণা।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।