নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০২০
‘স্বাস্থ্য খাতকে আমরা কিছুতেই বাগে আনতে পারছি না। এই জায়গাটি থেকে সমস্ত অসহায়ত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তবে এটাকে গণমাধ্যম এতটা হাইলাইট করছে যাতে করে রাজনৈতিকভাবে একটি হতাশা তৈরি করছে। শুধু এটাই তো প্রধান দিক নয়, অনেক ভালো ভালো দিকও রয়েছে। অনেক ইতিবাচক ঘটনা ঘটছে, মানুষ একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াচ্ছে। সেই খবরগুলো আরো বেশি করে গণমাধ্যমে আসা উচিত ছিল। তবে তা না এসে শুধু স্বাস্থ্যখাত নিয়েই সবাই হামলে পড়েছে। এটা সত্যি যে, এখানে দুর্ঘটনাও অনেক বেশি ঘটেছে এবং সেক্ষেত্রে সরকার ব্যবস্থা নেবে। তবে অর্থনৈতিকভাবে সরকারের পলিসি ঠিকই আছে, শুধু ইমপ্লিমেন্টশনে যাওয়া উচিত।’
বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন যে, মাত্র ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এমন কিছু রিকভারি পরিকল্পনা করেছে যেগুলোর বাস্তবয়ায়নগুলো খুব দ্রুত হচ্ছে। যেমন সেইসব ফ্যাক্টরিগুলোতে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে যেগুলো কোন ছাঁটাই করছে না। তারপর যদি ২৫ বছরের নিচে কোন তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেয় কোন ফ্যাক্টরি তাঁর জন্যে ২ হাজার পাউন্ড ইনসেন্টিভ দিচ্ছে। এছাড়া দোকানে খেলে ১০ পাউন্ড পর্যন্ত ভ্যাট নেওয়া হচ্ছেনা। অর্থাৎ এরকমভাবে ইনোভেটিভ পদ্ধতিতে কিছু পরিকল্পনা তাঁরা দ্রুত বাস্তবায়ন করছে।’
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন,‘আমার মনে হয় যে আমাদের ওরকম আরো এগ্রেসিভ হওয়ার সুযোগ আছে। ব্যাংক যেসমস্ত পরিকল্পনা নিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়িত করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরো বেশি আগ্রাসী ভূমিকা পালন করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু কিছু পলিসি দিয়ে চুপচাপ বসে আছে। এটা বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছে না। যেমন ২০ হাজার কোটি টাকার স্টিমুলাইজ দেওয়া হয়েছে এসএমই এর জন্যে, যার মধ্যে ২০০ কোটি টাকাও খরচ হয়নি। কেন এটা হচ্ছেনা? সমস্যাটা কোথায়? ব্যাংকগুলোকে প্রত্যেকদিন নাম্বার দিতে হবে যে আজকে কয়জনকে দেওয়া হয়েছে, গতকাল কয়জনকে দেওয়া হয়েছে। আর যদি সত্যিই কোন সমস্যা থাকে তাহলে সেগুলো আলাপ করে মিটিয়ে দিতে হবে। আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এইভাবেই কাজ করতাম। তবে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা লোকজন কিভাবে কাজ করছেন সেটা আমার বোধগম্য নয়।’
সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষিকে প্রথম অগ্রাধিকার দেওয়াটাকে যুক্তিযুক্ত উল্লেখ করে সাবেক এই গভর্নর বলেন, আমাদের দেশে কৃষিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, যা সরকার করছে। এবং এরপরে এসএমই তে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ছোট ছোট উদ্যোক্তরা যারা গ্রামে ফিরে যাচ্ছে, যেসব প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছে তাঁদেরকেও সুযোগ করে দিতে হবে। একইসঙ্গে আমার মনে হয় যে, ত্রাণ চালিয়ে যেতে হবে। অনেকে হঠাৎ করে কাজ পাবে না তাঁদেরকে সহায়তা দিতে হবে।
উচ্চবিত্তরা ভালো আছে এবং নিম্নবিত্তরা নানান ধরণের সহায়তা পেলেও করোনায় সঙ্কটকাল পার করছে মধ্যবিত্তরা। মধ্যবিত্তদের নিয়ে ড. আতিউর রহমানের ভাবনার কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, মধ্যবিত্তদের সরকার কিভাবে সাহায্য করতে পারে সেটা আমি নিজেও বুঝে উঠতে পারছি না। কারণ তাঁদের সামনে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে বাড়ি ভাড়া। আবার যারা বাড়ি ভাড়া নিচ্ছে তারাও বিপদে। অনেকে হয়তো এই ভাড়া দিয়েই চলে। এদেরকে সরকার কিভাবে সাহায্য করবে সেক্ষেত্রে অন্য দেশগুলোকে অনুসরণ করা উচিত। আমার মনে হয় ব্রিটেনের অভিজ্ঞতা ভালো। তাঁরা ৩০ বিলিয়ন ডলারের স্টিমুলাইজ প্যাকেজ করেছে। এমনকি বাড়িওয়ালাদেরকেও একটা ভাড়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে সরকার। সেটা বাংলাদেশ সরকার পারবে কিনা সে বিষয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।’
করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির একের পর এক ভয়াবহ চিত্র বেড়িয়ে আসছে। এই খাতে কেন এত দুর্নীতি সেই প্রশ্নের উত্তরে সাবেক এই গভর্নর বলেন যে, স্বাস্থ্যখাতে আগে থেকেই দুর্নীতি ছিল। কিন্তু আমাদের নজরে আসেনি। দীর্ঘমেয়াদী এক সঙ্কট এখানে চলছিল। উদাহরণ দিয়ে বলেন যে, এই যে মিঠু সঙ্কট তা কিন্তু আজকের নয়, এটা সেই রুহুল হকের আমল থেকে চলছে। কিন্তু আমরা এটার কোন বিচার করিনি বরং সবাই নিজেদের মতো সুবিধা নিয়েছে। আরেকটি হলো সরকারি কেনাকাটা। দেশের এক শীর্ষ পত্রিকায় দেখা গেছে যে, ৪ লাখ টাকার মেশিন ৯ লাখ টাকা দিয়ে কিনছে সরকার। এই অব্যবস্থাপনাগুলোর তত্ত্বাবধান আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হল না। আমার মনে হয় যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি মনিটরিং টিম থাকা উচিত ছিল। আমি জানি না সেখান থেকে মনিটরিং হচ্ছে কিনা। আর একটা গ্রিভেন সেন্টার থাকা উচিত। যেখানে যেখানে এই ধরণের খবর, যেমন আজকের পত্রিকায় বা টেলিভিশনে যে খবরটি এসেছে সেটা কেটে নিয়ে সন্ধ্যেবেলায় একটি কমিটি বসবে যে আজকে যে সংবাদটি এসেছে সেটা সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করো এবং সে সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এরকম কি কোন পদ্ধতি চালু আছে? প্রতিদিনের খবর প্রতিদিন যাচাই করতে হবে। হাবিবুর রহমান যখন চিপ এডভাইজার ছিলেন তখন প্রত্যেকদিন সন্ধ্যেবেলা ওয়াহেদ উদ্দিন মামুন, প্রফেসর ইউনুস আর একজনকে নিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়ছিল এবং তাঁরা সন্ধ্যেবেলায় বসতেন। তাঁরা সারাদিনের সংবাদ নিয়ে বসে ইন্টিলিজেন্স বা অন্যদেরকে সেই সংবাদ যাচাই করতে বলতেন পরের দিন আবার বসে সেই সংবাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জিজ্ঞাসা করতেন।’
আমাদের ফাইনান্সিয়াল রিকভারি হচ্ছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য কোন কমিটি আছে? কেউ কি প্রধানমন্ত্রীর হয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন? তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো একা পারবেন না, তাঁর পক্ষ থেকে কাউকে মনিটরিং এর দায়িত্ব নেওয়া দরকার। ব্যাংকগুলো যে টাকা দিতে পারছে না, তা কেন পারছে না সেগুলো যাচাই করতে হবে। এই জায়গাগুলোতে এতটুকু পরিবর্তন আনলেই হবে। যা আমার কাছে কঠিন কিছু মনে হয়না।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি চালকলে ধান সিদ্ধ করার সময় বয়লার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই শ্রমিক। শুক্রবার (৩ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মেসার্স আজাহার চালকলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফজল আলী (২৬) উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার রবিয়াল হোসেনের ছেলে।
আহত শ্রমিকরা হলেন, উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মৃত পলান শেখের ছেলে জহুরুল শেখ (২৬) এবং কর্ণসূতি পশ্চিম পাড়ার মৃত সুরুত মন্ডলের ছেলে জিন্নাহ মন্ডল (৩০) ।
আহত শ্রমিক জহুরুল শেখ জানান, ‘ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে বিকট শব্দে বয়লার বিস্ফোরণ হয়। এতে আমি সহ ফজল ও জিন্নাহ আহত হই। আমি আর জিন্নাহ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে এসেছি আর ফজলের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’
জহুরুল আরও জানান, ‘আমি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে এই চালকলে কাজ করছি। এর মধ্যে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হলেও বয়লার পরিবর্তন করা হয়নি।'
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত ফজলের ভাই আসলাম হোসেন জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে বয়লার বিস্ফোরণে ফজল গুরুতর আহত হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'
মেসার্স আজাহার চালকলের স্বত্বাধিকারী আজাহার আলী রাজা দাবি করেন, ‘গত ছয় মাস আগে বয়লার ও কয়েক দিন আগে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হয়েছে। বয়লার কেন বিস্ফোরণ হলো বুঝতে পারছি না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক জানান, ‘বয়লার বিস্ফোরণে আহত তিন জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দুই জনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়ে। এদের মধ্যে ফজল নামে একজন শ্রমিকের মুখের অনেকাংশ থেঁতলে গেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে বয়লার বিস্ফোরণের খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।'
মন্তব্য করুন
গাজীপুরের জয়দেবপুরে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ট্রেনের
মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় স্টেশন মাস্টারসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (০৩ মে) গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত বহু
আরও পড়ুন: দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি
এদিকে ঘটনার পর থেকে জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম
রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে অন্তত ৬টি ট্রেন।
জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া বলেন, ‘আজ পৌনে ১১টার
দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও তেলবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের
কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি
বগি লাইনচ্যুত হয়। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। কমিউটার ট্রেনের
লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায়
৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ’।
তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম ও পয়েন্টসম্যান
সাদ্দাম হোসেনসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বগি উদ্ধারের জন্য ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন
ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এরই মধ্যে রেলের সব বগি তল্লাশি করা হয়েছে। তবে ভেতরে কেউ আটকা নেই। ট্রেনের চালক ও সহকারী চালকসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করে বলেন, জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে
প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তাদের
প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিগন্যাল ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা
ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন যাত্রা বিরতি করা হয়েছে। দ্রুত উদ্ধার
প্রক্রিয়া শুরু করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ
করা হয়েছে।
এরআগে, শুক্রবার (০৩ মে) বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার
সিগনালে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তিনি জানান, রেল দুর্ঘটনায় দুই ট্রেনের চালক ও সহকারীরা আহত হয়েছেন।
তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রেল দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের
রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে কমলাপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়েছেন ৪-৫টি ট্রেনের যাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি উত্তরবঙ্গ থেকে
ছেড়ে এসে গাজীপুর হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে
পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তবে টাঙ্গাইল
কমিউটারে খুব বেশি যাত্রী ছিল না।
একজন উদ্ধারকর্মী জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ থাকে। অন্যান্য দিন ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে থামে। আজ বন্ধ থাকায় এটির থ্রোপাস করার কথা। আর অপরদিকে ঢাকা থেকে আসা তেলবাহী ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল। এখানে আপলাইন ও ডাউনলাইন আছে, কিন্তু কী কারণে ট্রেন দুটি মুখোমুখি হল সে বিষয়ে তদন্তের পর জানা যাবে।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
এর আগে, গতকাল রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে
উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের
মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি সকালে ২ নম্বর
রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। তখন এ রুটে
সব রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত
ট্রেনটি উদ্ধার করে। বর্তমানে রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা
রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন
ডিপোতে ঢোকার সময় মালবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে মেইন লাইন ব্লক হয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর
সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে তিন ঘণ্টা পর ট্রেনটি উদ্ধার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ীর সঙ্গে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।
দুই ট্রেন সংঘর্ষ স্টেশন মাস্টার তদন্তে কমিটি
মন্তব্য করুন
গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ পরবর্তী উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে দুই
প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি
এলাকায় মালবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার কাজের
সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন।
তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টাঙ্গাইল
কমিউটার ট্রেনটি আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টায় জয়দেবপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার
উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে আউটার সিগন্যালে পৌঁছানোর পর লাইন
ক্রসিং করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া
এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ আহত ৪জনকে উদ্ধার করে গাজীপুর
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আরও আহত
থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
মন্তব্য করুন