নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০২০
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুটি পৃথক পৃথক অভিযোগে আগামী ১২ এবং ১৩ আগস্ট তাঁকে দুদকে হাজির হতে হবে। ১২ তারিখে তিনি যাবেন মাস্ক কেলেঙ্কারিতে তাঁর সম্পৃক্ততার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জবাব দিতে আর ১৩ তারিখে যাবেন রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারিতে তাঁর ভূমিকা পরিষ্কার করতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, দুদক রিজেন্ট হাসপাতালের অনুমোদন কিভাবে দেওয়া হলো সে ব্যাপারে তদন্ত করতে গিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকের সম্পৃক্ততার তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে। রিজেন্ট হাসপাতালের ঘটনা যখন ঘটলো তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছিল যে, উপরের মহলের নির্দেশে তাঁরা রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে। এরপর মন্ত্রণালয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এবং ডিজিকে এই ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ৩ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশে জানান যে, সাবেক স্বাস্থ্যসচিব আসাদুল ইসলামের টেলিফোনের নির্দেশে তিনি এইরকম চুক্তি করতে গিয়েছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশন রিজেন্ট হাসপাতাল মামলায় কার ভূমিকা কতটুকু তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে আরো একটি বিষয় নিয়ে দুদক তদন্ত করছে তা হলো রিজেন্ট হাসপাতাল যে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করছে সেই সম্পর্কে নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক ডা বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালককে লিখিতভাবে অবহিত করেছিলেন, এই অবহিত করার পরেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে সেই বিষয়টিকে অবহিত না করে তিনি বরং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) কে দিয়ে তাঁদের পরীক্ষা সীমিত করার একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কেন এবং কি পরিস্থিতিতে তিনি এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছিলেন সেই ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা চায়।
দুদকের একটি সূত্র বলছে যে, শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক নয়, সাবেক সচিব আসাদুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককেও দুদক ডাকা হবে। কারণ রিজেন্টের অনুমোদন এবং জেএমআই-এর মাস্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এই ব্যাপারে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করা দরকার। দুদকের কাছে সিএমএসডি’র সাবেক প্রয়াত পরিচালকের একটি চিঠিও রয়েছে, যে চিঠিটি তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে লিখেছিলেন। সেখানে তিনি স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন দুর্নীতির ব্যাপারে মন্ত্রী এবং তাঁর পুত্রের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। এই বাস্তবতায় জেএমআই-এর মাস্ক কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রী এবং সচিবের ভূমিকা কি এবং মন্ত্রী এবং সচিব আসলে কতটুকু সম্পৃক্ত ছিল সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।
উল্লেখ্য যে, দুদকের অন্যতম একজন কুশীল বলেছেন যে, দুদকের আইনে মন্ত্রী বা সচিবকে তলব করার ক্ষেত্রে আইনগত কোন বাধা নেই। তদন্তের স্বার্থে দুদক তা করতে পারে। এই জন্যেই মহাপরিচালকের জিজ্ঞাসাবাদের পর দুদক সাবেক স্বাস্থ্যসচিবকেও তলব করতে পারে। দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা আবুল কালাম আজাদের মুখ থেকে শুনতে চাই যে, তিনি কার নির্দেশে রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন এবং এটা জানার পরে তিনি যাদের নাম বলবেন তাঁদেরকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
অন্যদিকে জেএমআই মাস্ক কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রীর নাম যেহেতু এসেছে, সেহেতু মন্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে দুদক বলছে যে, এটা অতীতেও হয়েছে। এর আগে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অনুরোধে দুদক যখন তদন্ত করেছিল তখন সাবেক সেতুমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দুদকে তলব করা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানকেও দুদকে ডাকা হয়েছিল।
কাজেই সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে সাবেক সচিব এবং মন্ত্রীকেও দুদক ডাকবে বলে জানা গেছে। এসমস্ত জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের সম্পৃক্ততার প্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।