নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৪ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
রোহিঙ্গা ইস্যু বুমেরাং হলো বিএনপির জন্য। সরকারকে বিপদে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই বেকায়দায় পড়েছে। আবার কৌশলের কাছে হেরে গেল বিএনপি। মিয়ানমারে রাখাইন গণহত্যার পরপরই বিএনপি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানায়। বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০১২ সালের অভিজ্ঞতা থেকেই বিএনপি দ্রুত ইস্যুটি লুফে নেয়।
২০১২ সালে যখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন শুরু হয়েছিল, তখন বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘ইতিমধ্যেই কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে, নতুন করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে নেওয়ার সুযোগ নেই। বর্ডার গার্ড রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় কঠোর অবস্থান নেয় সেই সময়। সেই বিবেচনা থেকে বিএনপি ধারণা করেছিল এবারও হয়তো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থান নেবে। সেই বিবেচনা থেকেই বিএনপি রাখাইন নিপীড়ন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নামে। মাঠে নেমেই তারা আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করে। রিজভী আহমেদ তো সব সময় একধাপ এগিয়ে থাকেন। ৭ সেপ্টেম্বর তিনি এক মানববন্ধনে মিয়ানমারে গণহত্যার জন্য বাংলাদেশ সরকারকেই দায়ী করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখাইন সম্প্রদায়ের উপর গণহত্যার প্রচণ্ডতা উপলব্ধি করে দ্রুত সীমান্ত প্রহরা শিথিল করে দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, ‘২০১২ র প্রেক্ষাপট আর এবারের প্রেক্ষাপট ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০১২ তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ছিল অন্যরকম। আর এবারের বিষয়টা সম্পূর্ণ মানবিক। এবার প্রাণে বাঁচতেই তাঁরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি মাতৃত্বের মানবিকতায় নিয়েছেন।’
গত ৭ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠি দেওয়া হয় আটটি মুসলিম প্রধান দেশে। দেশগুলো হলো, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও কুয়েত। এই চিঠিতে ফখরুল সরকারের সমালোচনা করে লিখেন, ‘মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও সরকার (বাংলাদেশ) তাদের প্রতি (রোহিঙ্গাদের) নূন্যতম সহানুভূতি দেখাচ্ছে না। অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে ওই দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাবও করা হয় ওই চিঠিতে। চিঠিতে বলা হয়, ‘সরকারের উদাসীনতায় ফলে লাখ লাখ নিপীড়িত মুসলিমের জীবন আজ বিপন্ন।’ কিন্তু সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ, মানবিকতায় মুগ্ধ হয় মুসলিম দেশগুলো। বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বিএনপিকে জানায় যে তাঁদের ফাস্টলেডি বাংলাদেশে এসেছিলেন। ‘সরকার যে কার্যকর আশ্রয় ও মানবিক সাহায্যের ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে তুরস্ক মুগ্ধ।’ রাষ্ট্রদূত সরকারের সঙ্গেই এই ইস্যু নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে জানায়, ‘এখন এনিয়ে বিএনপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের ইচ্ছা তুরস্ক সরকারের নেই।’ মালয়েশিয়াও সরকারের বিশেষ করেপ্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশাংসা করে, সরকারের সঙ্গেই এই ইস্যু নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করে।
এদিকে, এই ইস্যু নিয়ে দুদিন বক্তৃতা করেই বিএনপি চুপ হয়ে যাওয়ায়, কূটনৈতিক মহল মনে করছে, বিএনপি রোহিঙ্গাদের জন্য মমতায় নয় বরং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই এসব অভিযোগ করেছিল। এই ঘটনায় বিএনপির বিশ্বাসযোগ্যতা ওই আটটি দেশের কাছে নষ্ট হয়েছে। জাতীয়ভাবেও বিএনপি নিজেদের আরেকবার খেলো রাজনৈতিক দল হিসেবে উপস্থাপন করল। আর দশটা ইস্যুর মতো এটাও বিএনপির জন্য বুমেরাং হয়ে গেল।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।