নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০৫ মার্চ, ২০২১
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠছে। এটা নিয়ে দেশে তোলপাড় চলছে। পি কে হালদারের ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি লোপাট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া, ফরিদপুরের মাঠ পর্যায়ের ২ জন আওয়ামী লীগ নেতার দুই হাজার ৫৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনায় সারাদেশে স্তম্ভিত। কিন্তু এই আলোচনার মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বড় যে আলোচনাটা আসছে তা হলো, এই টাকাগুলো কি আসলেই তাদের নাকি অন্য কারো প্রতিনিধি হিসেবে এই টাকাগুলো পাচারের দায় ভোগ করছেন তারা।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এই টাকা পাচার টাকা পাচারের নেপথ্যে কিছু রথী-মহারথী এবং গডফাদার রয়েছেন, যারা আলোচনার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। তাদের ইঙ্গিত, ইন্ধন এবং সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই টাকা পাচার করা সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। পি কে হালদার পিপলস লিজিং এর এমডি ছিলেন এবং আরো তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া বানিয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এখন তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। প্রশ্ন উঠেছে যে, পি কে হালদার কি ৩ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন নাকি তার পেছনে কোনো প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মহল আছে, যিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে। যার নাম উচ্চারিত হচ্ছে না এবং যার অভিপ্রায় অনুযায়ী এই টাকাগুলো পাচার হয়েছে। কারণ, পি কে হালদারের একার পক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা সম্ভব কিনা এ প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই হলো বরকত এবং রুবেল। তারা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের জমিজমা, ১৮৮ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ হয়েছে। সিআইডি তাদের বিরুদ্ধে দুই হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের বিষয়টি তদন্ত করছে। বরকত এবং রুবেল ফরিদপুরের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা এবং তারা আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন করতো। ফরিদপুরবাসীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, এই দুজনার পক্ষী দুই হাজার ৫৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা কিভাবে সম্ভব? এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো বড় রাজনৈতিক মদদ রয়েছে কিংবা তাদের গডফাদার রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, বরকত এবং রুবেলের টাকা আসলে তাদের টাকা না। তাদেরকে সামনে রেখে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি বা মহল এই টাকা বিদেশে পাচার করেছে। শেষ পর্যন্ত বরকত এবং রুবেল ফাঁসলেও নেপথ্যে যিনি মূল ব্যক্তি, তিনি থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বিভিন্ন সময় দেখা গেছে যে, দুর্নীতিবিরোধী অভিযানগুলোতে সামনের মানুষটি কে ধরা হয়। যারা পেছনে থেকে ঐ মানুষটিকে দুর্নীতিবাজ করে। তাকে বিপথগামী করতে আশ্রয়-প্রশ্রয়, সহযোগিতা করে তাদেরকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হয়। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি আটক হয় কিন্তু তার পেছনের গডফাদার বা শক্তি আলোচনার বাইরে চলে যায় খুব কৌশলে। এর আগে ক্যাসিনো বাণিজ্যের সময় যে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, কিন্তু পেছনের গডফাদারদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সেলিম প্রধান, জিকে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাদের পিছনে গডফাদারদের ব্যাপারে কোনো তদন্ত হয়নি, কোনো অগ্রগতিও হয়নি। বর্তমানে এই একই ধারায় যে হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তারাই কি আসলে পাচারকারী না বাহকমাত্র, সেই বিষয়টি অনুসন্ধান করা দরকার বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন। কারণ, সেটি যদি না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের অর্থ পাচার বন্ধ করা সম্ভব হবে না। একজন ফরিদপুরের স্থানীয় নেতার পক্ষে এই বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার যেমন সম্ভব নয় তেমনি এক পি কে হালদার তিনটি প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া বানিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারেন না, এমনটিই মনে করে সাধারণ মানুষ।
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দেশে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন
ও সেবা প্রদানের পাশাপাশি শিল্পায়ন ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ
গ্রহণ করেছে।
সোমবার (২০ মে) ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক
বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে
আজকের পরিমাপ’।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সেবার সব ক্ষেত্রে
ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে সরকার গতানুগতিক পদ্ধতির ডিজিটাল
রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ‘ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন, ২০১৮’ ও ‘পণ্য
মোড়কজাতকরণ বিধিমালা, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
পণ্য ও সেবার মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ক্ষেত্রে
সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে জাতীয় মান সংস্থা
হিসেবে বিএসটিআইকে আরও দক্ষ, জবাবদিহিমূলক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান
রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিমিতিবোধ ও পরিমাপ
বিজ্ঞানের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ব্যক্তি কিংবা জাতীয় জীবনে সঠিক পরিমাপ ব্যতীত
টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। পরিমিতি জ্ঞান ও পরিমাপ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ‘বিশ্ব মেট্রোলজি
দিবস’ পালন একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
রাষ্ট্রপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথ পরিক্রমায় দেশকে আগামী ২০৪১ সালের
মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত
থাকবে এমন প্রত্যাশা করেন।
বাণীতে মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং
ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেট্রোলজি
দিবস-২০২৪’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির
সাফল্য কামনা করেন।
তিনি বলেন, সঠিক পরিমাপের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প, কলকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণসহ আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি সহজতর হচ্ছে; যা দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করছে।
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সঠিক
ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে বিএসটিআই বাংলাদেশের জাতীয় মান সংস্থা হিসেবে নিরলস কাজ
করে যাচ্ছে।
সোমবার (২০ মে) ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪’
উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন
(বিএসটিআই) প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪’ উদযাপন করছে জেনে
আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আজকের পরিমাপ’
যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ
বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৪ সালে বিএসটিআই
আন্তর্জাতিক মান সংস্থা (আইএসও) এবং ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস
কমিশনের সদস্যপদ লাভ করে ন্যাশনাল কোডেক্স কন্টাক্ট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে চলেছে। পরে
প্রতিষ্ঠানটি ওজন ও পরিমাপের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের সংস্থার পূর্ণ সদস্য এবং আইন
বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগী সদস্যপদ লাভ করে।
তিনি বলেন, বিএসটিআই ২০১০ সালে ওজন
ও পরিমাপের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ব্যুরো অব ওয়েট অ্যান্ড মেজারের
অ্যাসোসিয়েট সদস্য এবং ২০২১ সালে ওজন পরিমাপ ও মান বিষয়ক ইসলামিক দেশগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক
সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে। সদস্যপদ অর্জন করার পর আন্তর্জাতিক মান ও পরিমাপে প্রণীতমান
অনুযায়ী বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য যেমন খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার
ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সামগ্রী ও যন্ত্রপাতির মান নির্ধারণ।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার ২০১০
সালে জাতীয় মেট্রোলজি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করে যা ওজন ও পরিমাপের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের
সর্বোচ্চ ল্যাবরেটরি হিসেবে কাজ করছে। এই ল্যাব সারা দেশের শিল্প ও বৈজ্ঞানিক কাজে
ব্যবহৃত ওজন ও পরিমাপক যন্ত্রপাতির সক্ষমতা নিশ্চিত করে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য
ও শিক্ষার টেকসই উন্নয়ন করছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, শিল্পোদোক্তা,
ব্যবসায়ী ও বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট সবাই ওজন ও পরিমাপের সঠিকতা নিশ্চিত করে দেশীয় শিল্পের
বিকাশ, দেশে মানসম্পন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের
অবস্থান সুসংহত করে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি টেকসই উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে
অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪’
উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন