নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৮ এপ্রিল, ২০২১
বাংলাদেশ গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ করোনায় মৃত্যুবরণ করেছে। ৭৪ জন মৃত্যুর মধ্য দিয়ে করোনা নতুন করে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর। প্রশ্ন উঠেছে যে এটি কি বিচ্ছিন্নভাবে একদিনে সর্বাধিকসংখ্যক মৃত্যু নাকি এই মৃত্যুহার বাড়তেই থাকবে। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগামী। ৫০ অতিক্রম করে ৬০ কোটায় মৃত্যু সংখ্যা ঘুরপাক খাচ্ছিল। গতকাল বুধবার মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬৩ জন। সেখান থেকে এক লাফে আজ ৭৪ জনে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বিভিন্ন মহল শঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, এভাবে কি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে মৃত্যু। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুর হার অনেক বাড়তে পারে এমনকি তা লাগামহীন হয়ে উঠতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন যে, একাধিক বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা রয়েছে মৃত্যুর হার বাড়ার। যে কারণগুলোতে এবার মৃত্যুর হার বাড়তে পারে তার মধ্যে রয়েছে:
১. হাসপাতালে জায়গার অভাব: ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সব হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে। কোন আইসিইউতে কোন বেড খালি নেই। যার ফলে করোনায় যে হারে রোগী বাড়ছে সেই হারে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না হাসপাতালগুলোতে। এর অনিবার্য ফলাফল হচ্ছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন বহু মানুষ। চিকিৎসা বঞ্চিত হওয়ার কারণে মৃত্যু হার বাড়বে এটি অবধারিত। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২. নতুন ধরনের সংক্রমণে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি: বাংলাদেশে এখন যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে তাকে বলা হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রমণ। এই সংক্রমণটি গতবছরের যে সংক্রমণ ছিল তারচেয়ে অত্যন্ত ভয়াবহ। এটি দ্রুত মানুষকে ঝুঁকিতে নিয়ে যায় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায়। আর এই সংক্রমণের যদি আরো বিস্তার ঘটতে থাকে তাহলে মৃত্যুর হার বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
৩. করোনার পরবর্তী স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে: এবারের করোনায় দেখা যাচ্ছে যে করোনায় একজন মানুষ সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তার বিভিন্ন উপসর্গ এবং শারীরিক জটিলতা দেখা দিচ্ছে এবং তিনি দ্রুত মৃত্যু বরণ করছেন। এই প্রবণতাটা গত দুই মাসে অত্যন্ত বেড়েছে বলে চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা বলছেন যে, গত বছরে যে প্রবণতাটা ছিল তা হলো একজন আক্রান্ত হওয়ার ৭ দিন পর্যন্ত তার অবস্থা কিছুটা খারাপ থাকে। ৭ দিন পর তিনি আস্তে আস্তে উন্নতি করতে থাকেন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ৭ দিন পর তার অবস্থার অবনতি ঘটছে। ১৪ দিন পর যখন দেখা যাচ্ছে তিনি করোনামুক্ত তখন তিনি অন্য উপসর্গে আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করছেন। এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর হারও বা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৪. করোনাকে উপেক্ষা: করোনার মৃত্যুর হার বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হচ্ছে করোনাকে উপেক্ষা করা। অনেকেই সাধারণ জ্বর, সর্দি হলে বা সামান্য শ্বাসকষ্ট হলে তারা চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছেন না, এমনকি করোনার পরীক্ষাও করাচ্ছেন না। তারা মনে করছেন এটি আপনা আপনি ঠিক হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকেই এ ধরনের প্রবণতা মানুষের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসাহীন থাকার ফলে আপনা আপনি ভাল হয়ে যাবে এরকম প্রবণতার কারণে হঠাৎ করেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
৫. শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি: এবার করোনায় উদ্বেগজনক দিকটি হলো শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। আক্রান্ত শিশুরা দ্রুত ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে এবং মৃত্যুবরণ করছে। এই পরিস্থিতিতে শিশুদের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। শিশুদের ঝুঁকি বাড়া মানে মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি, এরকম মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
মূলত এই পাঁচ কারণে এবার মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যদি সুষ্ঠু চিকিৎসা দেওয়া না যায় তাহলে এই মৃত্যুর হার লাগামহীন হয়ে উঠতেও পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান
মন্তব্য করুন
মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী অনুপ্রবেশ
মন্তব্য করুন
গত মাসে তীব্র তাপপ্রাহে পুড়েছে পুরো দেশ। দফায় দফায় হিট এ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমনকি গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কতা দেয় সংস্থাটি। এদিকে তীব্র দাবদাহ যখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে তখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হয়েছে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টিপাত। ইতোমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে মারা গেছেন নারী ও শিশুসহ অনেকেই।
আবহাওয়া অফিস সতর্কবার্তা দিয়ে বলছে- রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। একইসঙ্গে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিও অব্যাহত থাকতে পারে। আর চলতি মে মাসে তিন থেকে পাঁচদিন হালকা ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। আর দুই থেকে তিন দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ও তীব্র কালবৈশাখী হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।
এপ্রিলের পুরো মাসজুড়েই ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ, যা ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। গত মাসের এই তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে জনজীবন হয়েছে নাভিশ্বাস। তপ্ত গরম থেকে স্বস্তির দিতে সরকার যেমন নানান পদক্ষেপের মাধ্যমে মোকাবিলা করেছে তেমনি জনগণও তাদের স্বস্তির জন্য তপ্ত গরমেও সতর্ক ভাবেই করেছে মোকাবিলা। কিন্তু দেশেরে মানুষ তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করতে পারলেও পারছে না ঝড়-বৃষ্টির মোকাবিলা করতে!
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, গতকাল শনিবার (৪ মে) কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরের নিচে চাপা পড়ে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মা ও তার ৫ বছর বয়সী ছেলের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (০৫ মে) খাগড়াছড়ির রামগড়ে বজ্রসহ ঝড়বৃষ্টির সময় বাড়ির উঠানে দুটি গরুসহ গনজ মারমা (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শুধু চলতি মাসেই নয়, এপ্রিলের কিছু কিছু অঞ্চলেও কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত হয়। সেই ঝড়ে ছয় জেলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও দুজন নিখোঁজ হয়েছেন।
যেখানে গেল মাসের দাবদাহ মোকাবিলায় যেমন মানুষ নিজেদের সুরক্ষার্থে সর্তক হয়ে স্বস্তির খোঁজে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা কার্যকর করেছে ঠিক, সেখানে ঝড়ো বৃষ্টিতে কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সময় নিজেরা সচেতন হয়ে তা মোকবিলা করতে পারছে না। তবে কি সাধারণ মানুষ নিজেদেরে সুরক্ষার্থে সচেতন হতে পারে না। শুধু সাধারণ মানুষ নয় সরকারের উপরও কিছু দায়িত্ব থেকে যায়। যাতে করে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠেী থেকে সকলেই সতর্ক হয়ে তা মোকাবিলা করে নিজেদের এবং পরিবারের সুরক্ষা নিতে পারে।
বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের মোকবিলায় জনগণের প্রতি দিকনির্দেশনা
সাধারণত কালবৈশাখী ঝড়ের সময়ে দেশকে জনস্বার্থে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কালবৈশাখী ঝড়ের আগেই মেটারোলজি বিভাগ এবং অঞ্চলের নিকটস্থ সংস্থার পূর্বাভাস করে বিপদগ্রস্ত হলে পূর্বেই পর্যবেক্ষণ করা উচিত। সরকার সংগঠন বা প্রশাসনিক সংস্থাগুলো আগাম বিপদ জনস্বার্থে জনগণকে সাবধানতা প্রকাশ করতে পারে। প্রয়োজনে সরকারী অথবা অন্য সংস্থা গুলি মানুষদের নিরাপত্তার জন্য তথ্য দিতে পারে। এবংকি সকল প্রয়োজনীয় সাহায্য ও সহযোগিতার ব্যবস্থা করা উচিত যার মধ্যে খাবার, পানি, ও প্রাথমিক চিকিৎসা। বিশেষ করে বিভিন্ন সরকারী অথবা অর্গানাইজেশ সংস্থা সহযোগিতা করে সাহায্যের অভিযান চালাতে পারে। সময়ে ও সঠিকভাবে বাস্তবায়নের পর্যায়ে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। শুধু তাই নয় বাস্তবায়নের পর্যায়ে মানুষদের সঠিক তথ্য প্রদান করলেও জনগণ কালবৈশাখী ঝড়ের বিপদ থেকে নিজেদের সুরক্ষা করার জন্য সহায়তা হবে।
মানুষকে সচেতন হওয়া উচিত
জলবায়ুর প্রভাবে দেশের ঝড়ো বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির একটি প্রবল আবহাওয়া ঘটনা যা ধারাবাহিকভাবে দেশের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলতে পারে। এই সময়ে মানুষকে সাবধান থাকা অতিব জরুরী। পূর্বানুমানিক নিরাপদ অঞ্চলে থাকা। আকাশের দিকে লক্ষ্য রাখা ও আবহাওয়া অফিসের দিক নির্দেশনা মেনে মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালবৈশাখী ঝড়ের সময় নিজ কাজেস্থলে বা কর্মক্ষেত্রে বা প্রয়োজনে নিরাপ স্থান থেকে বের হওয়া যাবে না। আবার, কৃষি কাজের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক মানুষ বাসা থেকে বের হতে পারেন। সুতরাং, সাবধানে থাকা জরুরি। প্রয়োজনে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় আশ্রয় নিতে হবে। এটি আপনাকে সুরক্ষিত করতে সাহায্য করতে পারে। বিদ্যুৎ, পানি, ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবাগুলো বন্ধ না হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়েরি মধ্যে যত্ন নেওয়া উচিত। এবংকি আপনার পোষা প্রাণী থাকলে তার যত্ন নিন। প্রাণীর জন্য যত্ন নেওয়া উচিত, যেমন পাখি, বিড়াল, ও গরুর জন্য আবাস পরিষ্কার করা, অবশ্যই খাদ্য ও পানি খাওয়ানো ও সংরক্ষিত করা উচিত। কেননা, কালবৈশাখী ঝড়ের সময়টাতে নিজেদের সুরক্ষাটা যেমন জরুরী তেমনি বিপরীতে প্রাণীর সুরক্ষাটাও জরুরী।
এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। দেশের আবহাওয়ায় যখন এমন দূর্বিসহ যাচ্ছে তখন সরকার থেকে সাধারণ মানুষ সকলের পদক্ষেপেই মিলতে পারে স্বস্তি। দেশের জনগণকে নিজেদেরে সচেতন হয়ে তাপপ্রবাহ, বজ্র, বৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড় মোকাবিলা নিতে হবে। বিশেষ করে দেশপ্রেমের ভাবনা থেকেও সাধারন মানুষ সরকারের দিক নির্দেশনা মেনে সহযোগিতা করতে হবে। এতে করে কমবে কালবৈশাখী ও বজ্রে নিহতের সংখ্যা, মারা যাবে না আর হিট স্ট্রোকে মানুষ। বাড়বে জনসচেতনতা। স্বস্তিতে থাকবে পুরো দেশের জনগণ।
ঝড় বজ্রসহ বৃষ্টি আবহাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার ডিবি চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার
মন্তব্য করুন
জনপ্রশাসন মন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সরকারি চাকরি
মন্তব্য করুন
গত মাসে তীব্র তাপপ্রাহে পুড়েছে পুরো দেশ। দফায় দফায় হিট এ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমনকি গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কতা দেয় সংস্থাটি। এদিকে তীব্র দাবদাহ যখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে তখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হয়েছে বজ্রসহ ভারি বৃষ্টিপাত। ইতোমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়ে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে মারা গেছেন নারী ও শিশুসহ অনেকেই।