নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৪ পিএম, ৩০ অগাস্ট, ২০১৮
মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট, বিংশ শতাব্দীতে উদ্ভাবিত একটি আধুনিক কর ব্যবস্থা যা যেকোনো ব্যবসায়ের মাধ্যমে সৃষ্ট মূল্য সংযোজনের ওপর আরোপ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, দেশীয় পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয়, বিদেশী পণ্য আমদানী ও রপ্তানী, দেশাভ্যন্তরে সেবা বা পরিষেবার উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে মূল্য রপ্তানী কর আরোপযোগ্য। মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটই এখন সরকারের রাজস্বের মূল উৎস। ২০১৭-১৮ অর্থবছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মোট রাজস্বের ৩৭ শতাংশের বেশি এসেছে ভ্যাট থেকে। যার মধ্যে ভ্যাট বাবদ রাজস্বের প্রায় অর্ধেকই জোগান দিয়েছে বিভিন্ন খাতের ১০ প্রতিষ্ঠান।
সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারী ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিই তামাক খাতের। ঢাকা টোব্যাকো ও আবুল খায়ের টোব্যাকো হচ্ছে এ খাতের অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠান। শীর্ষ ১০ রাজস্ব প্রদানকারীর তালিকায় রয়েছে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক সেলফোন অপারেটর কোম্পানি। শীর্ষ ১০ এর তালিকায় অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- পেট্রোবাংলা, তিতাস গ্যাস, হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
২০১৭-১৮ সর্বশেষ অর্থবছরে ভ্যাট বাবদ এনবিআরের রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৭৭ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানই প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা জোগান দিয়েছে। সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারীর তালিকায় সবার উপরে রয়েছে বিএটি বাংলাদেশ লিমিটেড। বিএটি বাংলাদেশ লিমিটেড একাই দিয়েছে ১৬ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। মূলত সিগারেট উৎপাদনের পর স্ল্যাবভেদে টার্নওভারের সর্বোচ্চ ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ হারে মূসকসহ প্রায় ৭৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য হওয়ায় এ বিপুল কর দিয়েছে তারা।
সর্বশেষ অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন পেট্রোবাংলা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পেট্রোবাংলা ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি) থেকে কেনা পণ্যের বিপরীতেই এ ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত অর্থবছর তৃতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারীর তালিকায় রয়েছে সদ্য কোম্পানি স্বত্ব বিক্রি হওয়া ঢাকা টোব্যাকো লিমিটেড। ২০১৭-১৮ সর্বশেষ অর্থবছরে ৩ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে বর্তমানে ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো নামে ব্যবসা শুরু করা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি।
সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারীর তালিকায় চতুর্থ স্থানে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান টেলিযোগাযোগ খাতের গ্রামীণফোন লিমিটেড। সর্বশেষ অর্থবছরে গ্রামীণফোন ২ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ রাজস্ব প্রদান করেছে।
পেট্রোবাংলার অধীনস্থ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাস বিতরণের ওপর ভ্যাট প্রদান করে রাজস্ব প্রদানকারীর শীর্ষ দশের পঞ্চম স্থানটি দখল করে নিয়েছে। সর্বশেষ অর্থবছরে ২ হাজার ৯ কোটি টাকার ভ্যাট দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তামাক খাতের আরেক কোম্পানি আবুল খায়ের টোব্যাকো লিমিটেড ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা পরিশোধ করে শীর্ষ রাজস্ব প্রদানকারীর তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। যদিও গত অর্থবছরে শীর্ষ তালিকার পঞ্চম স্থানে ছিল কোম্পানিটি কিন্তু নিম্ন স্ল্যাবের সিগারেটের বিক্রি কমে যাওয়ায় আবুল খায়ের টোব্যাকোর ভ্যাট পরিশোধ কমেছে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারীর সপ্তম অবস্থানে রয়েছে রবি সেলফোন অপারেটর কোম্পানি। রবি সর্বশেষ অর্থবছরে ১ হাজার ২৩ কোটি টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। ৬৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করে সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারীর অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলালিংক। যদিও কোম্পানিগুলো দাবি করেছে এনবিআরকে দেয়া এ রাজস্বের বাইরে বিটিসিএল ও কর্পোরেট করসহ তাদের আরও রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়।
২০১৭-১৮ সর্বশেষ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারীর নবম স্থানে রয়েছে পেট্রোবাংলার অধীনস্থ হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড। সর্বশেষ অর্থবছরে ৬২৯ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে ১০ম স্থানে রয়েছে বিপিডিবি। গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিলের বিপরীতে সর্বশেষ অর্থবছরে ৪২০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
ডলার সংকট রপ্তানি আয় প্রবাসী আয়
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূত বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুস স্বর্ণ
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূত ন্যাশনাল ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক ইউসিবি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে। ডলার সংকটের কারণে অনেকগুলো বিষয় সংকট আসছে। ডলার যে বাড়বে সে দিকেও কোন আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরে এ কারণ ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। চাপ বাড়ছে আমদানি ব্যয় মেটানোর। আর অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা আসার পথগুলোতেও এখন স্বস্তির খবর দেখা যাচ্ছে না।
ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার শুরুতেই বড় ধাক্কার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় যে পাঁচটি ব্যাংকের নাম কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে এর মধ্যে দুটি ব্যাংক আপত্তি জানিয়েছে। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়া সিদ্ধান্ত হলেও একীভূত হতে নারাজ ন্যাশনাল ব্যাংক। এর পরিবর্তে খেলাপি ঋণ ও সাধারণ ঋণ আদায় জোরদারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে চায় ব্যাংকটি। গতকাল শনিবার ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।