কাতারে অনুষ্ঠিতব্য এই বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে অনেক তারকা ফুটবলারের শেষ বিশ্বকাপ। ২০২৬ বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না বর্তমান সময়ের মহাতারকাদের একটি বড় অংশকে। কেউ বয়সের ভারে, কেউ পারফরম্যান্সের পড়তির কারণে বিদায় জানাবেন ফুটবল বিশ্বকাপকে। তবে ক্লাব ফুটবলে এসব তারকারা হয়তো খেলা চালিয়ে যাবেন। খেলবেন আরো কিছুদিন। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলের জার্সি ও বুটজোড়া তুলে রাখার এই তালিকাটাও নেহায়েত ছোট নয়। এই তালিকায় থাকা ফুটবলারদের নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব।
লুইস সুয়ারেজ
বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ। উরুগুয়ে দলের সবচেয়ে বড় তারকাও তিনি। ফুটবল মাঠে বল পায় মুগ্ধতা ছড়ানোর পাশাপাশি দেখিয়েছেন বুদ্ধিমত্তাও। আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারও বলা হয় তাকে। সব মিলিয়ে যেন এক পরিপূর্ণ প্যাকেজের নাম লুইজ সুয়ারেজ। ২০০৭ সালে উরুগুয়ের জার্সিতে অভিষেক হয় কলম্বিয়ার বিপক্ষে। ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ২০১০ সালে। এরপর লা সিলেস্তেদের নীল জার্সিতে খেলেছেন ১৩৪ ম্যাচ। ৬৬ গোল করে দলটির ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা সুয়ারেজ। ক্যারিয়ারের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন ৩৫ বছর বয়সে। কাতার বিশ্বকাপেই হয়তো তাই শেষবারের মত ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে দেখা যাবে তাকে।
দানি আলভেজ
ফুটবলের সর্বকালের সেরা রাইটব্যাক বলা হয় তাকে। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে খেলায় সে কথার যথার্থতা প্রমাণ করেছেন দানি আলভেজ। শীর্ষ পর্যারের ফুটবলে জিতেছেন ৪৭টি ট্রফি। রক্ষণ থেকে আক্রমণভাগ সবখানেই সরব উপস্থিতি থাকে তার। ২০০৬ সালে অভিষেকের পর থেকে ব্রাজিল জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। সেলেকাওদের হয়ে খেলেছেন ২টি বিশ্বকাপ ও ৫টি কোপা আমেরিকা। কাতারে অনুষ্ঠিত আসরটি তাই হতে যাচ্ছে ক্যারিয়ারের তৃতীয় বিশ্বকাপ।
ব্রাজিলের হলুদ জার্সিতে বিশ্বকাপ অভিষেক ২০১০ সালে। পরের বিশ্বকাপে ব্রাজিল কোচ স্কলারির রক্ষণের অন্যতম ভরসা ছিলেন আলভেজ। তবে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে খেলতে পারেন নি ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ। বয়স হয়ে গেছে ৩৯। এই বয়সে এসেও মাঠে দারুণ তৎপর এই রাইটব্যাক। প্রতিপক্ষকে নাকানি চুবানি খাওয়ান আগের মতই। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপের আগেই হয়তো জাতীয় দলের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ইতি টানতে পারেন দানি আলভেজ।
আনহেল ডি মারিয়া
বৈচিত্রময় ফুটবলার তিনি। উইঙ্গার কিংবা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার দুই ভূমিকাতেই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আর্জেন্টিনার অন্যতম ভরসার প্রতীক। উইং ধরে দ্রুত আক্রমণে উঠায় তার জুড়ি মেলা ভার। তবে ক্যারিয়ারে প্রতিপক্ষের সাথে তো বটেই সমানতালে যুদ্ধ করতে হয়েছে ইনজুরির সাথেও। তাই অনেক ফুটবল বিশ্লেষকের মতে, নিজের সামর্থ্যকে পুরোপুরি মেলে ধরতে পারেন নি আনহেল ডি মারিয়া।
২০০৮ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে আকাশি-নীল জার্সিতে অভিষেক হয় রোজারিওর এই বিস্ময় বালকের। ইনজুরির কারণে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে তার দলে না থাকা, জার্মানির বিপক্ষে হারের বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ফুটবল পন্ডিতেরা। তবে ২০২১ কোপা আমেরিকায় তার একমাত্র গোলে ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটায় আর্জেন্টিনা। চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় থাকা ডি মারিয়ার বয়স ৩৪। ক্যারিয়ারও এসে পড়েছে গোধূলী লগ্নে। তাই এই বিশ্বকাপ দিয়েই হয়তো সমাপ্ত হবে জাতীয় দলের সাথে পথচলা।
রবার্ট লেভানডোফস্কি
হাল সময়ে মাঠ দাপয়ে বেড়ান যে কজন স্ট্রাইকার তাদের একজন পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানডোফস্কি। খাঁটি নাম্বার নাইন বলতে যা বোঝায় মাঠের খেলায় তিনি ঠিক তাই। নিখুঁত টেকনিক, পজিশন ও ফিনিশিং এর কারণে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে ভীতি ছড়ান নিয়মিত। জাতীয় দলে অভিষেক ২০০৮ সালে। জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে করেছেন ছয়শোর বেশি গোল। যা তাকে বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের খেতাব এনে দিয়েছে। পোল্যান্ড জাতীয় দলের অধিনায়কও তিনি।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে করেছেন ৭৬ গোল। ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। তার উপরে রয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাস ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে ২০০৮ সাল থেকে পোল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেললেও লেভানডোফস্কির বিশ্বকাপ অভিষেক হয় ২০১৮ সালে। কারণ ২০০৬ থেকে টানা ৩টি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি পোল্যান্ড। ফলে ফুটবল মহাযজ্ঞের ২২তম আসর হতে যাচ্ছে তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। লেভার বয়স এখন ৩৪। তবে মাঠে এখনো তিনি দুরন্ত আগের মতই। ফিটনেস ধরে রাখতে পারলে হয়তো খেলবেন আরো একটি বিশ্বকাপ। তার ব্যতয় হলে, বিশ্বকাপের পরের আসরে তাকে নাও দেখা যেতে পারে।
চলবে......
কাতার বিশ্বকাপ সুয়ারেজ ডি মারিয়া দানি আলভেজ লেভানডোফস্কি
মন্তব্য করুন
চ্যাম্পিয়নস
লীগে রিয়ালের ম্যাচ মানেই যেন নাটকীয়তা। আর এই নাটকীয়তার আরেকবার প্রমাণ দিল ‘দ্য গ্যালাক্টিকো’রা।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) চ্যাম্পিয়নস লীগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে জার্মান জায়ান্ট
বায়ার্ন মিউনিথকে শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় ২-১ গোলে হারিয়েছে কার্লো আনচেলোত্তির শিষ্যরা।
ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও শেষ ৩ মিনিটে হোসেলুর করা ২ গোলে শেষ পর্যন্ত ফাইনালের পথে পা
দেয় রিয়াল।
এতে
দুই লেগ মিলিয়ে বায়ার্নকে ৪:৩ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনাল নিশ্চিত করে
রিয়াল মাদ্রিদ। আগামী ১
জুন যুক্তরাজ্যের ওয়েম্বলি স্টোডিয়ামে ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।
তবে,
এ ম্যাচটা এগোচ্ছিল অনেকটা
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র বনাম মানুয়েল নয়্যার
লড়াইয়ের আবহে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল দুজনের
একজন হতে যাচ্ছেন ম্যাচের
নায়ক। তবে ভিনিসিয়ুস বা
নয়্যার নন, রিয়াল-বায়ার্ন
চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল দ্বিতীয়
লেগের নায়ক বদলি নামা
হোসেলু।
৩৪
বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারই
এক গোলে পিছিয়ে থাকা
রিয়াল মাদ্রিদকে ৩ মিনিটের মধ্যে
এনে দিয়েছেন দুই গোল। শেষ
দিকের মহামূল্যবান যে দুটি গোল
রিয়ালকে তুলে দিয়েছে চ্যাম্পিয়নস
লিগের ফাইনালে।
ম্যাচের
৬৮ তম মিনিটে আলফানসো ডেভিসের করা দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। এতে আশায় বুক
বাধে বায়ার্ন সমর্থকরা। কিন্তু তারও ছিল শঙ্কা। কেননা বরাবরই শেষ মুহুর্তে যে কোন কিছু
ঘটাকে অভ্যস্ত রিয়াল। এর আগেও ২০২১-২২ মৌসুমের সেমিফাইনালে শেষ ১০ মিনিটের করা ৩ গোলে
ম্যান সিটিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল দলটি। এবারও ঠিক হলো তাই।
ম্যাচের
৮১ মিনিটে ভালভার্দের বদলি হিসেবে নামেন হোসেলু। আর মাঠে নেমেই ৮৮ মিনিটে রিয়ালকে ঘুরে দাঁড়ানোর সেই
মুহূর্তই এনে দেন হোসেলু।
ভিনিসিয়ুসের শট সোজাসুজি হাতেই
পেয়েছিলেন বায়ার্ন গোলকিপার নয়্যার। কিন্তু এর আগ পর্যন্ত
চারটি গোলের সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দেওয়া নয়্যার
এ দফায় বল হাত
ফসকে ফেলেন। সুযোগসন্ধানী হোসেলু খুব কাছে থাকায়
বল জালে জড়াতে একদমই
ভুল করেননি।
পরের
গোলটি আসে ৯১তম মিনিটে।
তাও নাটকীয়ভাবে। নাচোর কাছ থেকে পাওয়া
বল আন্টনি রুডিগার বাড়ান হোসেলুর দিকে, যিনি বল জালে
জড়িয়ে উল্লাস শুরু করতে না
করতেই অফসাইডের পতাকা তোলেন রেফারি। তবে ভিএআর চেকে
দেখা যায় রুডিগার-হোসেলু
দুজনই অনসাইডে ছিলেন। পুরো রিয়াল মাদ্রিদ
ডাগআউট গোলের আনন্দে মাঠে ঢুকে পড়ে।
হোসেলু হয়ে ওঠেন উৎসবের
মধ্যমণি।
অথচ
ম্যাচের প্রথম ভাগ এবং দ্বিতীয়ার্ধের
বড় অংশজুড়ে একের পর এক
আক্রমণ করেও গোলের দেখা
মিলছিল না রিয়ালের। ঝাঁপিয়ে
পড়লেও কিছুই করার ছিল না
লুনিনের। তবে শেষ পর্যন্ত
রিয়ালকে ওই গোল হজমের
স্তব্ধতা নিয়ে মাঠ ছাড়তে
হয়নি। কারণ, শেষ দিকে একজন
হোসেলু ছিলেন মাঠে!
চ্যাম্পিয়নস লীগ সেমিফাইনাল রিয়াল বায়ার্ন
মন্তব্য করুন
বিশ্বজুড়ে ধুম পড়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। চলতি বছরের জুনেই
মাঠে গড়াবে খেলা। বাকি শুধুমাত্র এক মাস। যার জন্য ইতোমধ্যেই আয়োজক দেশগুলো শুরু করেছে
প্রস্তুতি। ব্যস্ত সময় পার করছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোরর ক্রিকেট বোর্ডগুলোও। সেই তালিকায়
রয়েছে বাংলাদেশও।
ক্রিকেটের এই বিশ্ব আসরে এবার অংশ নিচ্ছে ২০ দল। যার মধ্যে ইতোমধ্যেই
ভারত-ইংল্যান্ডসহ ১৩টি দেশ দল ঘোষণা করে ফেলেছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশ স্কোয়াড চূড়ান্ত
করেছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। তেমনই পরিস্থিতিতে রয়েছে বাংলাদেশও। ফলে স্কোয়াডে
কে আছেন আর কে বাদ পড়লেন, সেটা নিয়ে ধোয়াশা রয়েই গেছে।
অবশ্য নিয়ম অনুযায়ী আইসিসিকে এরই মধ্যে ক্রিকেটারদের তালিকা দেয়া
হয়েছে। ২৪ মে পর্যন্ত টি-২০ স্কোয়াড পরিবর্তনের সুযোগ থাকায় নীরব বিসিবি।
তবে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা বাংলাদেশের জন্য নতুন কিছু
নয়। অতীতের মত এবারও স্কোয়াড নিয়ে সবাইকে অপেক্ষায় রেখেছে দেশের ক্রিকেট বোর্ড।
মূলত দুর্বল পাইপলাইন ও ক্রিকেটারদের ইনজুরির কারণে যেকোন বৈশ্বিক
আসরের স্কোয়াড ঘোষণায় গড়িমসি হয় বাংলাদেশের। এমন দাবি করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচক
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। শুধু তাই নয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ বিশ্বকাপ প্রস্তুতির
জন্য আদর্শ নয় বলেও মনে করছেন সাবেক এ অধিনায়ক।
মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘সীমিত সংখ্যক খেলোয়াড়ের মধ্যে আমাদেরকে
দলটা ঘোষণা করতে হয়। এখানে যদি ইনজুরির কোন ব্যাপার থাকে এই জিনিসটা মাথায় কাজ করে।
এজন্য মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট থেকে সবার ফিটনেস যেন সেরা পর্যায়ে থাকে সেই অপেক্ষা করতে
হয়।’
আসন্ন এই টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়ে আগেভাগে বাড়তি প্রত্যাশা রাখার পক্ষে
নন মিনহাজুল আবেদীন। জিম্বাবুয়ে সিরিজকে বৈশ্বিক আসরের প্রস্তুতি মঞ্চ বলতে নারাজ এ
সাবেক অধিনায়ক। সাগরিকায় ব্যাটাররা খেলতে পারেনি টি-২০ সুলভ। তিন ম্যাচ পর্যবেক্ষণে
নিরাশ হচ্ছেন না প্রধান নির্বাচক।
তবে বিসিবি এখনও দল ঘোষণা না করলেও আসন্ন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে
কারা থাকছেন এ বিষয়ে কিছুটা ধারণা দিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে সিরিজ শুরুর পূর্বে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছিলেন, এই সিরিজ থেকেই নির্ধারণ
করা হচ্ছে দল।
তিনি বলেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজের পারফরম্যান্স বিশ্বকাপ দলে প্রভাব
রাখতেও পারে। “শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে সিরিজটা খেলেছি, আর এই সিরিজে যে দলটা আছে। বিশ্বকাপে
বেশির ভাগ খেলোয়াড় এখান থেকে যাবে। যদি সবাই সুস্থ থাকে। কিন্তু হ্যাঁ, দুই-একজন এদিক–ওদিক
হতে পারে। তবে বেশির ভাগই এখান থেকে যাবে।”
আর শান্তর কথা অনুযায়ী, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যে দল খেলছে সেই
দলের সদস্যদেরই সম্ভাবনা বেশি রয়েছে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার। তবে জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ৩ ম্যাচে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের যে দল, বিশ্রাম ও ছুটির কারণে
সেখানে ছিলেন না মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচের জন্য
যে দল ঘোষণা করেছে বিসিবি সেখানে তারা ফিরেছেন। সেখানে সাকিব ও মুস্তাফিজের সাথে দলে
ফিরেছেন সৌম্য সরকারও।
মন্তব্য করুন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখ। যেখানে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৮৮ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়েই ছিল স্বাগতিকরা। তাদের কাঁদিয়ে তখন ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখছিল সফরকারী বায়ার্ন।
কিন্তু তিন মিনিটের ঝড়ে পাল্টে গেল সব। বদলি হয়ে নামা এই ফরোয়ার্ড জোড়া গোল করে উল্লাসে ভাসিয়ে তোলেন পুরো সান্তিয়াগো বার্নাব্যুকে। তাতে ভর করেই দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ অগ্রগামিতায় বায়ার্নকে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখায় রিয়াল মাদ্রিদ। ১৫তম চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পথে লস ব্লাঙ্কোসদের একমাত্র বাধা এখন বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। আগামী ১ জুন লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দুদলের মধ্যেই হবে শিরোপা লড়াই।
চ্যাম্পিয়নস লিগে এমনটাই তো করে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ! যা প্রতিপক্ষের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়। ফিরে আসার দারুণ গল্প তাদের চেয়ে ভালো আর কেইবা লিখতে পারে। তাও আবার চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো মঞ্চে। প্রথম লেগ ২-২ গোলে ড্র হওয়ায় সব রোমাঞ্চ যেন অপেক্ষা করছিল দ্বিতীয় লেগের জন্য।
ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। যদিও প্রথমার্ধের অনেকটা জুড়ে দাপট দেখায় রিয়াল। ডেডলক ভাঙার খুব কাছ থেকেই বারববার ফিরতে হয় তাদের। ম্যাচের ১৩ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে রদ্রিগো শট নিলেও তা ঠেকিয়ে দেন ম্যানুয়েল নয়্যার।
বায়ার্ন গোলরক্ষক এরপর একের পর এক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। ৩৮ বছর বয়সেও যে তার ঝাঁজ কমেনি, সেটাই যেন দেখিয়েছেন এই ম্যাচে। ৪০ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নয়্যার। বিরতির আগপর্যন্ত গোলমুখে দুটি শট নেয় বায়ার্ন। কিন্তু জালের দেখা পায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধেও বলের দখল আগের মতোই ধরে রাখে রিয়াল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান সেই নয়্যার। ৫৯ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া রদ্রিগোর বুলেট গতির ফ্রি-কিক বেশ দক্ষতার সঙ্গে ঠেকিয়ে দেন এই গোলরক্ষক। পরের মিনিটেই ফের গোলবঞ্চিত রাখেন ভিনিসিয়ুসকে।
এরপর আক্রমণে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে বায়ার্ন। সেখান থেকে গোলের দেখা পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ৬৮ মিনিটে হ্যারি কেইনের অসাধারণ পাস খুঁজে নেয় ‘আনমার্ক’ থাকা আলফোনসো ডেভিসকে। সামনে আন্তোনিও রুডিগার ও দানি কারভাহাল থাকলেও তাদের দুজনের মাঝখানেই বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শট নেন এই লেফট ব্যাক। তা রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি।
পিছিয়ে পড়ে দ্রুতই সমতায় ফিরেছিল রিয়াল। লুকা মদ্রিচের কর্নার থেকে গোলমুখে শট নেন ফেদে ভালভার্দে। তা অধিনায়ক নাচোর ছোঁয়া লাগার পর এক বায়ার্ন ফুটবলারের গায়ে লেগে আশ্রয় নেয় জালে। কিন্তু সেই গোল বাতিল হয় ভিএআরের কারণে। কেননা গোলের আগে ইয়োশুয়া কিমিখকে গলাধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন নাচো। তাই গোল বাতিল করে ফাউলের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি।
বার্নাব্যুর গ্যালারিতে তা যেন একরাশ হতাশা বয়ে আনে তখন। নয়্যারের দেয়াল ভাঙবে কে? প্রতিটি সমর্থকের মনে এ প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছিল! কিন্তু এ তো রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগে যারা ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠতে পারে যেকোনো মুহূর্তে। এবার সেই জাগিয়ে তোলার দায়িত্বটা নিলেন হোসেলু। ফেদে ভালভার্দেকে উঠিয়ে এই ফরোয়ার্ডকে ৮১ মিনিটে মাঠে নামান কোচ কার্লো আনচেলত্তি। নামার সাত মিনিটের মাথায়ই দলকে সমতায় ফেরান তিনি।
বাঁ প্রান্ত দিয়ে দৌড়ে এসে ভেতরে ঢোকেন ভিনিসিয়ুস। গোলমুখে তার নেওয়া শট অবশ্য ঠেকিয়ে দেন নয়্যার। তবে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সুযোগ সন্ধানী হোসেলু কাছাকাছিই ছিলেন। নয়্যারের হাতে লেগে ফিরে আসা বলে টোকা মেরে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড। লস ব্লাঙ্কোসদের উল্লাস তখন ঠেকায়।
তিন মিনিট পরই খুশির মাত্রাটা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেন হোসেলু। বক্সের ভেতর থেকে বাঁ প্রান্তে রুডিগারের উদ্দেশে বল বাড়ান নাচো। তখন বক্সের মাঝখানে হোসেলুর সামনে নয়্যার ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। রুডিগার কোনো ভুল করেননি পাসটি দিতে। আর হোসেলুও ভুল করেননি রিয়ালকে এগিয়ে দিতে। তবে নাটকীয়তার শেষ হয়নি তখনো।
রেফারির চোখে অফসাইডে ছিলেন হোসেলু। তাই গোল দিতে অপরাগতা জানান তিনি। কিন্তু ভিএআর দেখার পর বদলে যায় সিদ্ধান্তে। অফসাইড নয়, বরং অনসাইডেই ছিলেন হোসেলু। তাই গোলটি বৈধ হওয়ার পরই খুলে গেল রিয়ালের ফাইনালের দুয়ার। যা পরে আর বন্ধ করতে পারেনি বায়ার্ন। এগিয়ে থেকেও তাদের ২-১ গোলে হার মানতে হলো রিয়ালের আরও একটি দারুণ প্রত্যাবর্তনের সামনে। হোসেলুর সামনে!
রিয়াল মাদ্রিদ বায়ার্ন মিউনিখ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
মন্তব্য করুন
ঘরের মাঠে দুর্দান্ত অ্যাটাকিং ফুটবল, বিপুল সমর্থনের পরও ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের আসর থেকে ছিটকে গেছে পিএসজি। তবুও দলের পারফরম্যান্স নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে। যদিও এই পরাজয়কে তিনি ‘অন্যায়’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন।
গতকাল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে পিএসজির বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে ডর্টমুন্ড। দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে দলটি। ২০১৫ সালে বার্সেলোনাকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ উপহার দেওয়া কোচ লুইস এনরিকে বলেছেন, ‘আমি খুবই হতাশ। এখন আমি আর কোথাও নেই। নিজেদের মূল লক্ষ্য পূরণে আমরা ব্যর্থ।’
কালকের ম্যাচে পিএসজির চারটি শট পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় স্বাগতিক সমর্থকদের। জার্মানিতে প্রথম লেগের ম্যাচে ১-০ গোলের পরাজয়ের ম্যাচটিতেও পরপর দুটি শট পোস্টে লেগেছিল পিএসজির।
এনরিকে বলেন, ‘আমি মনে করি না যে এই ম্যাচে আমরা বাজে খেলেছি। ছয়বার আমাদের শট বারে লেগেছে। ফুটবলে মাঝে মাঝে এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে যা খুবই অন্যায়। ৩১টি শট টার্গেটে করলেও এর থেকে একটি গোলও আদায় করতে পারিনি। এই লড়াইয়ে ফুটবল আমাদের সাথে অন্যায় করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের এটা মেনে নিতে হবে। ডর্টমুন্ডকে অভিনন্দন জানাচ্ছি ফাইনালে খেলার জন্য। দ্রুত আমাদের এই হতাশা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই দল নিয়ে আমি দারুন গর্বিত, এতে কোন সন্দেহ নেই। কোচ হিসেবে এই পরাজয়ের প্রথম দায়ভার আমার। কিন্তু তারপরও দলের মানসিকতায় আমি খুশি।’
ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার স্বপ্নে বিভোর ছিল পিএসজি। একইসাথে প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান ক্লাব ফুটবলের সেরা ট্রফিটিও হাতে তুলে নেবার আশা তাদের ছিল।
এই মৌসুমের শুরুতে পিএসজির দায়িত্ব নেয়া এনরিকে বলেন, ‘পিএসজিতে আসার আগে আমি একটি লক্ষ্য স্থির করেছিলাম। প্রতিটি শিরোপার জন্য আমরা যেভাবে ভালো খেলি অন্তত সেই ধারা বজায় রাখা। কাপ ফাইনালের পর মৌসুম যখন শেষ হবে তখন ভেবে দেখবো আমরা কি অর্জন করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে আমি কখনই খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোন কথা বলি না। আজ আমার একটি প্রত্যাশা ছিল। এই ধরনের পরাজয়ে কোন সান্ত্বনা নেই। কিন্তু এটাই জীবন, এটাই খেলা। কিভাবে জেতা যায় সেটা জানা খুবই জরুরি। একইসাথে পরাজয়ের কারণও খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের অবশ্যই ডর্টমুন্ডকে অভিনন্দন জানানো উচিৎ ও এই পরাজয়কে মেনে নেয়া উচিৎ।’
লুইস এনরিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড পিএসজি
মন্তব্য করুন
থিয়াগো সিলভা। ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের জুনিয়র একাদশের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তার ফুটবল ক্যারিয়ার। মাত্র ১৪ বছর বয়সে সেখান থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আজ সারা ফুটবল বিশ্বে সমাদৃত তিনি। পেয়েছেন অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারের তকমাও।
সিলভা ফুটবলে সিরিয়ার ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৪ সালে পর্তুগালের ক্লাব পোর্তোতে। সেখানে এক বছর থাকার পর চলে যান রাশিয়ান ক্লাব ডায়ানামো মস্কোতে। রাশিয়ায় থাকতে সিলভার জীবনে নেমে বড় এক ঝড়। জটিল রোগ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন তিনি। এরপর সুস্থ হয়ে ২০০৭ সালে ফের ফ্লুমিনেন্সে যোগ দেন সিলভা। ২ বছর ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির হয়ে খেলেন তিনি।
২০০৯ সালে ব্রাজিল ছেড়ে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে (২০০৯-১২) যোগ দেন সিলভা। এরপর খেলেছেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) হয়ে। ফরাসি ক্লাবটিকে প্রায় ৮ বছর থাকার পর চেলসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন সিলভা। চেলসিতে ৪ বছর মিলিয়ে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে প্রায় ১৫ বছর কাটিয়ে ফেলেন ব্রাজিলিয়ান এই সেন্টার-ব্যাক।
চলতি মৌসুম শেষে চেলসির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে সিলভার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির সঙ্গে থাকবেন না, তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দিয়ে ফেলেছেন তিনি। সে হিসেবে চেলসির জার্সিতে আর মাত্র কয়েকটি ম্যাচ খেলবেন সিলভা। প্রিমিয়ার লিগে বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যাচটিই হতে পারে চেলসির জার্সিতে সিলভার শেষবারের মতো মাঠে নামা।
চেলসির পর কোথায় যাবেন সিলভা, এমন প্রশ্ন গত কয়েক দিন ঘুরপাক খাচ্ছে ফুটবলভক্তদের মাথায়। অনেকে মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মেজর সকার লিগে (এমএলএস) খেলবেন এই ব্রাজিলিয়ান। আবার অনেকের ধারণা, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও নেইমারের মতো সৌদি প্রো লিগে যেতে পারেন তিনি।
এবার নিশ্চিত হওয়া গেছে, চেলসির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ করে কোথায় যাব্নে সিলভা। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা সৌদি নয়, সেই ছোটবেলার ক্লাব ফ্লুমিনেন্সে ফিরে যাবেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার এই ঘোষণা দিয়েছে চেলসি ও ফ্লুমিনেন্স। অর্থাৎ প্রায় ১৫ বছর ইউরোপে প্রবাস জীবন শেষ করে ঘরে ফিরছেন সিলভা।
২০২০ সালে চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছিলেন সিলভা। এটিই ইউরোপীয় ফুটবলে তার সবচেয়ে বড় সফলতা। এছাড়া জাতীয় ব্রাজিলের জার্সিতে ২০১৩ সালে কনফেডারেশন কাপ ও ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছেন এই সেন্টার-ব্যাক।
মন্তব্য করুন
চ্যাম্পিয়নস লীগে রিয়ালের ম্যাচ মানেই যেন নাটকীয়তা। আর এই নাটকীয়তার আরেকবার প্রমাণ দিল ‘দ্য গ্যালাক্টিকো’রা। বৃহস্পতিবার (৯ মে) চ্যাম্পিয়নস লীগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিথকে শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় ২-১ গোলে হারিয়েছে কার্লো আনচেলোত্তির শিষ্যরা। ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও শেষ ৩ মিনিটে হোসেলুর করা ২ গোলে শেষ পর্যন্ত ফাইনালের পথে পা দেয় রিয়াল।