দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একদিকে যেমন অস্থিরতায় ডুবে আছে পৃথিবী, আরেকদিকে চলছে সে ধাক্কা সামলে ঘুরে দাড়ানোর লড়াই। অক্ষ আর মিত্র শক্তির লড়াইয়ের ক্ষত চিহৃ বয়ে বেড়াচ্ছে দেশগুলো। ইউরোপসহ প্রায় পুরো পৃথিবীতেই প্রভাব পড়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের। আর এই অস্থির সময়ে খানিকটা স্বস্তির বাতাস এনে দেয়ার উপলক্ষ্যে পরিণত হয় ১৯৫০ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে এক যুগ পর আয়োজিত হয় ফুটবল ইতিহাসের চতুর্থ বিশ্বকাপ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে প্রায় প্রতিটি দেশেরই অর্থনীতি বেকায়দায় পড়ে। এই ভেঙে পড়া আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার পুর্নগঠনে ব্যস্ত তখন সবাই। ফলে বিশ্বকাপের মত বড় প্রতিযোগিতার আয়োজক হওয়ার মত সাহস দেখাতে পারেনি অনেক দেশ। তবে ১৯৪৬ সালে ফিফা কংগ্রেসে ব্রাজিল স্বাগতিক হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আবার দক্ষিণ আমেরিকায় বসে বিশ্বকাপের আসর। ১৯৫০ সালের ২৪ জুন থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত চলে মাঠের লড়াই।
তবে এ বিশ্বকাপে বদলে যায় আগের আসরগুলোর বেশকিছু ধারা। অনেকগুলো 'প্রথম' এর সাথে পরিচয় ঘটে বিশ্বকাপের। যুদ্ধের ধকল কাটিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের চ্যালঞ্জও কম ছিলো না। স্টেডিয়াম ও কাঠামো নির্মাণের খরচ উঠিয়ে আনতে এই বিশ্বকাপে নানা নতুন পদক্ষেপ নেয়া হয়। আগের দুই আসরের শুরু থেকে যে নকআউট ব্যবস্থা ছিলো, এই বিশ্বকাপে তা উঠিয়ে নেয়া হয়। ফলে বেড়ে যায় ম্যাচসংখ্যা। বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলগুলোকে ভাগ করা হয় চারটি গ্রুপে। আগের আসরে অংশ নেয়া দলগুলোর অনেকেই এক ম্যাচ করে খেলে বিদায় নিলেও, এটিই প্রথম বিশ্বকাপ যেখানে দলগুলো খেলে অন্তত ৩টি করে ম্যাচ।
সেই সাথে ফিফা সভাপতি হিসেবে জুলে রিমের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই আসর থেকে ফুটবল বিশ্বকাপের নামকরণ করা হয় ‘জুলে রিমে বিশ্বকাপ।’ আর ১৯৭০ পর্যন্ত এই নামেই আয়োজিত হত ফুটবলের সবচেয়ে বড় এই বৈশ্বিক আসর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধকল সামলাতে না পারায় এই বিশ্বকাপে অংশ নেয়নি আর্জেন্টিনা, চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরির মত বড় দলগুলি। বিশ্বকাপ খেলতে দেয়া হয়নি জার্মানিকে।
ইউরোপের ৮টি, লাতিন আমেরিকার ৫টি, উত্তর আমেরিকার ২টি ও এশিয়া থেকে ১টি দল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিলে ১৬ দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয় বিশ্বকাপে। তবে পরবর্তীতে ইউরোপ থেকে স্কটল্যান্ড ও তুরস্ক, এশিয়ার থেকে ভারত নাম প্রত্যাহার করে নিলে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা দাড়ায় ১৩'তে। ১৯৫০ বিশ্বকাপের ফরম্যাটেও আসে পরিবর্তন। এই বিশ্বকাপে ছিলো না কোন নকআউট। চারটি গ্রুপের মধ্যে চলে প্রথম রাউন্ডের খেলা। আর এই চার গ্রুপের গ্রুপ সেরাদের নিয়ে হয় দ্বিতীয় রাউন্ড। সেই রাউন্ডে পয়েন্ট ও গোল বিবেচনায় এগিয়ে থাকবে যে দল শিরোপা জিতবে তারাই।
ব্রাজিল, যুগোস্লাভিয়া, মেক্সিকো, সুইজারল্যান্ড নিয়ে গড়া হয় 'গ্রুপ-১'। স্পেন, ইংল্যান্ড, চিলি, যুক্তরাষ্ট্র খেলে 'গ্রুপ-২' এ। আর 'গ্রুপ-৩' এ পড়ে সুইডেন, ইতালি, প্যারাগুয়ে। লাতিন আমেরিকার দুই দল উরুগুয়ে ও বলিভিয়া ছিলো 'গ্রুপ-৪' এ। প্রথম রাউন্ডে ৩ ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ-১ থেকে পরের রাউন্ডে চলে যায় স্বাগতিক ব্রাজিল। এই গ্রুপে দ্বিতীয় হয় যুগোস্লাভিয়া। সুইজারল্যান্ড তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে ছিলো মেক্সিকো। আর গ্রুপ-২ থেকে তিন ম্যাচের সবগুলো জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পরের রাউন্ডে চলে যায় স্পেন। আর গ্রুপ-৩ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল রাউন্ডের টিকিট পায় সুইডেন। হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসে এই গ্রুপ থেকে শুরুতেই বিদায় নেয় ইতালি। যা ছিল এই আসরের বড় অঘটনগুলোর একটি। গ্রুপ-৪-এর একমাত্র ম্যাচে বলিভিয়াকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেয় উরুগুয়ে। সে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন দেন অস্কার মিগেল।
ফাইনাল রাউন্ডে জায়গা করে নেয়া চারটি দল ছিলো ব্রাজিল, স্পেন, সুইডেন ও উরুগুয়ে। মিনি লীগ পদ্ধতিতে চলে এই রাউন্ডের খেলা। প্রথম ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করে উরুগুয়ে ও স্পেন। সুইডেনকে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ব্রাজিল। পোল্যান্ডের উইলোভস্কির পর এই ম্যাচে চার গোলের কৃতিত্ব দেখান আদেমির দে মেনেজেস। পরের ম্যাচে স্পেনকে ৬-১ গোলে হারায় ব্রাজিল। আগের ম্যাচে ড্র করলেও সুইডেনের বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয়ে আশা বেঁচে থাকে উরুগুয়ে। শেষ রাউন্ডে স্পেনকে ৩-১ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে আসে স্পেন। আর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দলের লড়াই পরিণত হয় অলিখিত ফাইনালে। যেখানে স্বাগতিক দলের সামনে সমীকরণ দাড়ায়, উরুগুয়ের সাথে ড্র করলেই শিরোপা জিতবে তারা।
অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মারাকানা স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই প্রতিবেশী ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। আর এই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের জন্য ব্রাজিলিয়ানরা বানিয়েছিল তৎকালীন সময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই স্টেডিয়াম। এই আসরেই ফাইনালে দর্শক উপস্থিতি ছিলো সবচেয়ে বেশি। প্রায় দুই লাখ সমর্থকের সামনে শুরু হয় শিরোপার লড়াই। গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ্ব। তবে বিরতির পর ৪৭ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন ব্রাজিলের ফ্রিয়াকা। গোল শোধে মরিয়া উরুগুয়েকে ৬৬ মিনিটে সমতায় ফেরান হুয়ান শিয়াফিনো। আর ৭৯ মিনিটে আলসিদেস ঘিগিয়ার গোলে ম্যাচে লিড নেয় উরুগুয়ে।
ব্রাজিলের প্রথম শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে ২-১ গোলের জয়ে নিজেদের ইতিহাসের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতে উরুগুয়ে। কবরের নিস্তব্ধতা নেমে আসে মারাকানায়। প্রায় ২ লাখ মানুষের কলরবের মারাকানা রূপ নেয় মৃত্যুপুরীতে। যেন সুনসান নিরবতা নেমে এসেছে সেখানে। মাটি হয়ে যায় সেলেকাওদের উৎসবের প্রস্তুতি। আর এই ট্রাজেডি "মারাকানার কান্না" নামে স্থান পায় ব্রাজিল ফুটবল ইতিহাসে।
৯ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন ব্রাজিলের আদেমির দে মেনেজেস। টুর্নামেন্ট সেরা হন ব্রাজিলের আরেক ফুটবলার জর্জিনিয়ো
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট
মন্তব্য করুন
লিওনেল মেসি। বয়স ৩৬ হলেও যত দিন গড়াচ্ছে ততই যেন তরুণ হয়ে মাঠে ধরা
দিচ্ছেন এই ফুটবল জাদুকর। ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসেও ২০-২৫ বছর বয়সের যেকোন
তরুণকে টপকে গড়ে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড। তেমনই আজ এক রেকর্ডের স্বাক্ষী
হয়েছে ফুটবল ভক্তরা।
ঘরের মাঠ ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলের চেজ স্টেডিয়ামে নিউইয়র্ক রেড বুলসের বিপক্ষে মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মায়ামিকে এনে দিয়েছেন ৬-২ গোলের বিশাল জয়। রোববার (৫ মে) ভোর সাড়ে ৫টায় এমএলএসের ম্যাচে মায়ামির প্রতিশোধের এই জয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন লুইস সুয়ারেজ। অন্যদিকে, মেসি এক গোলের পাশাপাশি পাঁচটি অ্যাসিস্ট করেছেন। মায়ামির অন্য দুটি গোল করেছেন প্যারাগুইয়ান মিডফিল্ডার মাতিয়াস রোহাস।
এদিন সবাইকে ছাড়িয়ে আলোচনায় বিশ্বজয়ী মেসি। মায়ামি যে ৬টি গোল পেয়েছে, সেখানে ১টি গোল সরাসরি মেসি করেছেন। আর বাকি ৫ গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। এ নিয়ে এমএলএসের ১৪ ম্যাচে ২৫টি অ্যাসিস্ট করলেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকা। চলতি মৌসুমের ৮ ম্যাচে করেছেন ১০ গোল ও ১২ অ্যাসিস্ট।
গোল ও অ্যাসিস্টে এক মৌসুমেই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছে মেসি মায়ামির হয়ে রেকর্ড গড়েছেন। ম্যাচটিতে দ্বিতীয়ার্ধেই পাঁচটি অ্যাসিস্ট করেন রোজারিও’র এই মহাতারকা। যা এক অর্ধে সর্বোচ্চ গোলে সহায়তা করার রেকর্ড। এমনকি লিগের ইতিহাসে প্রথম কোনো খেলোয়াড় হিসেবে মেসি ৬ গোলে অবদান রাখলেন।
অথচ ম্যাচের শুরুটা ছিল অন্য রকম। ৩০ মিনিটে দান্তে ভানজেইরের গোলে এগিয়ে যায় রেড বুলস। প্রথমার্ধে সে গোল শোধ দিতে ব্যর্থ মায়ামি। তাই মায়ামি সমর্থকদের মনে শঙ্কা জাগছিল হেরেই কি মাঠ ছাড়তে হবে। কিন্তু বিরতির পর ফিরে ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেন মায়ামির খেলোয়াড়েরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মাঠে নামেন প্যারাগুয়ের মিডফিল্ডার রোজাস। মাঠে নামার ৩ মিনিটের মধ্যেই দুর্দান্ত এক গোলে মায়ামিকে সমতায় ফেরান রোজাস। মেসির পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া শটে গোলটি করেন তিনি।
২ মিনিট পর স্কোরশিটে নাম লেখান মেসি। সুয়ারেজের পাস থেকে মেসির করা গোলে লিড পায় মায়ামি। ২ মিনিটে মেসির পাস থেকে আবার গোল করেন রোজাস। এরপর ম্যাচটি যেন হয়ে পড়ে শুধুই মেসি-সুয়ারেজময়। পরবর্তী ১৩ মিনিটে মেসি-সুয়ারেজের বার্সেলোনার পুরোনো বোঝাপড়া চোখে পড়ে।
এর মধ্যে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন সুয়ারেজ। তার প্রতিটি গোলই হয়েছে মেসির বাড়ানো পাসে। যথাক্রমে ৬৮, ৭৫ ও ৮১ মিনিটে গোল করে আমেরিকান ফুটবলে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। আর তাতেই মায়ামির বড় জয়ও নিশ্চিত হয়ে যায়। যোগ করা সময়ে ফসবার্গ পেনাল্টিতে গোল করে রেডবুলসের হয়ে হারের ব্যবধান কমান।
এই জয়ে ১২ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে মায়ামি। দুই কনফারেন্স মিলিয়েই শীর্ষে আছেন মেসিরা। এই ম্যাচের গোলটি নিয়ে এবারের মেজর লিগ সকারে মেসির গোলসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০টিতে।
হ্যাটট্রিক করে সুয়ারেজও গোলসংখ্যায় ছুঁয়ে ফেলেছেন মেসিকে। ১০টি করে গোল নিয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা যৌথভাবে তারা দুজনই। একদিক থেকে মেসি অবশ্য অনেক এগিয়ে। আর্জেন্টাইন তারকা যে সতীর্থদের করা ৯টি গোলে রেখেছেন অবদান।
লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনা ইন্টার মায়ামি লুইস সুয়ারেজ
মন্তব্য করুন
স্প্যানিশ
লা লিগায় আলাদা আলাদা ম্যাচে একই রাতে মাঠে নামে দুই জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সোলোনা।
প্রথম ম্যাচে কাদিজকে হারিয়ে মাত্র শিরোপা জয়ের জন্য মাত্র ১ পয়েন্টের আশায় ছিলো রিয়াল।
পরের ম্যাচে নিজেদের ঘরের মাঠে জিরোনার কাছে ৪-২ গোলে হারে কাতালানরা। এতে এক মৌসুম
পর আবার শিরোপা পুনরুদ্ধার করে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। ৪ ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগার
৩৬তম শিরোপা ঘরে তুলে দলটি।
৩৪ ম্যাচে ২৭ জয় ও ৬ ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৮৭। জিরোনা সমান ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উঠেছে, গতবারের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে তিনে।
আরও পড়ুন: ইতিহাদে আরো একবার ‘দ্য হলান্ড শো’
এর আগে সর্বশেষ ২০২১-২২ মৌসুমে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল লস ব্লাঙ্কোসরা। এক মৌসুম বিরতি দিয়ে তারা সেই শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে। এ জয়ে লা লিগায় নিজেদের সবচেয়ে শিরোপা জয়ের রেকর্ডও সমৃদ্ধ করল রিয়াল। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনার শিরোপা ২৭টি।
রিয়াল মাদ্রিদ ৩:০ কাদিজ
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ম্যাচের ঘণ্টা দুয়েক আগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কাদিজকে আতিথ্য দেয় রিয়াল। এই ম্যাচ দিয়ে চোট সেরে দীর্ঘদিন পর রিয়ালের একাদশে ফেরেন থিবো কোর্তোয়া।
রিয়াল বড় জয় পেলেও এ ম্যাচে গোলের দেখা পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫১ মিনিট পর্যন্ত। লুকা মদ্রিচের বাড়ানো পাস থেকে অসাধারণ এক গোল করেন ব্রাহিম দিয়াজ।
এরপর ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন জ্যুড বেলিংহ্যাম। এর ঠিক মিনিট দুই পরে দিয়াজের বাড়ানো বল থেকে থেকে ট্যাপ ইনে বল জালে জড়ান এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। রিয়ালের শেষ গোলটি আসে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে। ভিনি আর নাচো হয়ে জোসেলু বল পান, এরপর রিয়ালকে ভাসান তৃতীয় গোল ও বড় জয়ের আনন্দে।
বার্সেলোনা ২ : ৪ জিরোনা
কাদিজকে হারিয়ে বার্সা জিরোনার ম্যাচের দিকে তাকিয়ে ছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাদের সেই অপেক্ষাকে দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি কাতালানরা। জিরোনার কাছে নিজেদের ঘরের মাঠে ৪-২ গোলে হেরে গেছে তারা। যদিও ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে যায় বার্সা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই লিড ধরে রাখতে পারেনি জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা। এতে শিরোপার স্বপ্ন আগেই শেষ হয়ে যাওয়া দলটি এখন কেবল রানার্স-আপের জন্য লড়তে পারে।
আরও পড়ুন: প্রিমিয়ার লিগের বর্ষসেরা খেলোয়াড় ফোডেন ও খাদিজা
এদিন ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টিনসেনের গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। সেই উল্লাস এক মিনিটও স্থায়ী হয়নি। চতুর্থ মিনিটেই যে আর্তেম দোভবিকের গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। তবে বার্সা প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে ফের লিড নেয়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোল করেন লেভান্ডডস্কি। পেনাল্টিতে সফল স্পট কিকে বার্সাকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন এই
পোলিশ তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে শুরুতেই লন্ডভন্ড কাতালান শিবির। বদলি হিসেবে মাঠে নামার কয়েক সেকেন্ড পরেই জিরোনাকে ৬৫ মিনিটে সমতায় ফেরান পোর্তু। এই পর্তুগিজ উইঙ্গার এর পরের গোলেও অবদান রেখেছেন। তার বাড়ানো পাস পেয়ে জিরোনাকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ লেফটব্যাক মিগুয়েল গুতিয়েরেজ। বার্সার কফিনে শেষ পেরেক হিসেবে আসা চতুর্থ গোলটিও করেন পোর্তু। দারুণ এক ভলিতে ম্যাচটি ৪-২ ব্যবধানে পরিণত করেন ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার। এই জয়ে আগামী মৌসুমে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাও নিশ্চিত করেছে জিরোনা।
লা লিগা বার্সা রিয়াল চ্যাম্পিয়ন
মন্তব্য করুন
দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুরো নব্বই মিনিটেও হল্যান্ডকে খুঁজে পাওয়া যায় না, এমন আলোচনা ফুটবল প্রেমীদের মুখে শোনা যায় হরহামেশাই। কিন্তু নিজের দিনে যে তিনি কতটা ভয়ংকর তার প্রমাণ তিনি দিলেন আরেকবার। প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ৩৫ ম্যাচে উলভসের বিপক্ষে একাই তিনি গোল করেছেন ৪ টি।
হলান্ডের এ গোলমেশিন হয়ে ওঠার দিনে ৫-১ গোলে সিটি হারিয়েছে উলভার
হ্যম্পটনকে। দলের হয়ে হলান্ডের ৪ গোলের পাশাপাশি হুলিয়ান আলভারেজ করেন ১ গোল। সব
মিলিয়ে সিটির জার্সিতে দুই মৌসুমে এটি ছিলো হলান্ডের ৯ম হ্যাট্রিক। আর চলতি মৌসুমে
৩য়।
সিটির এ জয়ে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপার লড়াই জমে উঠেছে বেশ। ৩৫
ম্যাচে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান দুইয়ে। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের পয়েন্ট ৩৬ ম্যাচে
৮৩।
ইতিহাদ
স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে হলান্ডের করা প্রথম তিন গোলের দুটিই পেনাল্টি থেকে। ১২
মিনিটে ইয়োস্কো গাভারদিওল ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে দেন
হলান্ড। ৩৫তম মিনিটে করা দ্বিতীয় গোলটি আসে হেড থেকে। রদ্রির ক্রস থেকে আসা বল দীর্ঘ
উচ্চতা কাজে লাগিয়ে লাফিয়ে চমৎকার হেড নেন হলান্ড।
এরপর ম্যাচের ৪৫ তম মিনিটে
ভিএআর চেকের মাধ্যমে পেনাল্টি পায় সিটি। যা দারুনভাবে কাজে লাগাই হলান্ড। এতে ম্যাচের
স্কোরলাইন তখন দাড়াই ৩-০ তে।
হলান্ড তার চতুর্থ গোলটি
করেন বিরতির পর, ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে। ফোডেন নিজেদের অর্ধ থেকে চমৎকার এক শটে উঁচু
করে বল হলান্ডের দিকে বাড়ান। সেটি দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে
জড়ান হলান্ড।
এরপর ম্যাচের ৮২ তম মিনিটে
সিটি কোচ হলান্ডকে মাঠ থেকে তুলে নেন। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে সিটির স্কোরলাইন ৫-১ করে দেন
হুলিয়ান আলভারেজ।
ম্যাচে উলভসের একমাত্র
সান্ত্বনা হয়ে থাকে ৫৩ মিনিটে হি-চাং হোয়াংয়ের গোলটিই।
প্রিমিয়ার লিগ হলান্ড ম্যান সিটি
মন্তব্য করুন
আইসিসির টেস্ট খেলার বার্ষিক হালনাগাদ শেষে র্যাংকিংয়ে এসেছে বড়
পরিবর্তন। কারণ গত বছর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হারা ভারতকে সরিয়ে পুনরায় টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের
শীর্ষস্থান দখল করেছে অস্ট্রেলিয়া। আইসিসির বাৎসরিক র্যাঙ্কিং হালনাগাদে এ সুখবর পায়
প্যাট কামিন্সের দল।
এই হালনাগাদ করা হয়েছে ২০২১ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত
। এই সময়ে ৩০ ম্যাচ খেলে ১২৪ রেটিং পয়েন্ট করেছে অজিরা। আর তা দুইয়ে থাকা ভারতের চেয়ে
৪ পয়েন্ট বেশি।
তবে ভারত টেস্টের শ্রেষ্ঠত্ব হারালেও ধরে রেখেছে বাৎসরিক র্যাঙ্কিংয়ে
ওয়ানডে ও টি-২০র শীর্ষস্থান। তাই শীর্ষের এ দুটি স্থান ছাড়া টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে আর
কোনো পরিবর্তন নেই।
শীর্ষস্থানে জায়গা পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার রেটিং এখন ১২৪। অপরদিকে ভারতের
রেটিং ১২০। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে ১০৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে ইংল্যান্ড। এছাড়া ৪ থেকে
৯-এর মধ্যে থাকা দলগুলো হলো- দক্ষিণ আফ্রিকা (১০৩), নিউজিল্যান্ড (৯৬), পাকিস্তান
(৮৯), শ্রীলংকা (৮৩), ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৮২) ও বাংলাদেশ (৫৩)।
এদিকে ওয়ানডের বছর শেষের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দশে নেই কোনো পরিবর্তন
। ১২২ রেটিং নিয়ে শীর্ষস্থান ভারতের, দুই ও তিনে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া (১১৬) ও দক্ষিণ
আফ্রিকা (১১২)।
৮৬ রেটিং নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান আটে। সাতে থাকা শ্রীলংকার রেটিং
৯৩, আর নয়ে থাকা আফগানিস্তানের ৮০। টি-২০তে ২৬৪ রেটিং নিয়ে সবার ওপরে ভারত, দ্বিতীয়
স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়া তাদের চেয়ে ৬ রেটিং পয়েন্ট পেছনে।
দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ধাপ এগিয়ে চারে অবস্থান করছে (২৫২), যা তিন
নম্বরে থাকা ইংল্যান্ডের চেয়ে ২ রেটিং পয়েন্ট কম। অন্যদিকে ২৩১ রেটিং নিয়ে ৯ নম্বরে
বাংলাদেশ।
বার্ষিক র্যাঙ্কিং করার আগে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে গত তিন বছরের
পারফরম্যান্স। এর মধ্যে ২০২১ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত পারফরম্যান্সকে ৫০
শতাংশ ও সবশেষ এক বছরকে শতভাগ হারে বিবেচনায় নিয়েছে আইসিসি।
সম্প্রতি ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রাচীনতম সংস্করণ টেস্টের এই র্যাঙ্কিংয়ে
শীর্ষস্থান দখল নিয়ে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার লড়াই যেন বেশ জমে উঠেছে।
কখনও এক নম্বরে ভারত থাকছে
তো কখনো রোহিতের দলকে হটিয়ে শীর্ষস্থান দখল করছে প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া।
মন্তব্য করুন
স্প্যানিশ লা লিগায় আলাদা আলাদা ম্যাচে একই রাতে মাঠে নামে দুই জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সোলোনা। প্রথম ম্যাচে কাদিজকে হারিয়ে মাত্র শিরোপা জয়ের জন্য মাত্র ১ পয়েন্টের আশায় ছিলো রিয়াল। পরের ম্যাচে নিজেদের ঘরের মাঠে জিরোনার কাছে ৪-২ গোলে হারে কাতালানরা। এতে এক মৌসুম পর আবার শিরোপা পুনরুদ্ধার করে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। ৪ ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগার ৩৬তম শিরোপা ঘরে তুলে দলটি।