নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২০ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বিশ্ব যেন ভাইরাসে আক্রান্তের এক রেকর্ড নিয়ে বসেছে। করোনা ভাইরাস নিয়ে পুরো বিশ্ব চরম এক আতঙ্কাবস্থা পার করছে। এর মাঝে খবর এলো চীনেই বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরপর আবার আতঙ্ক শুরু হয়েছে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে। এবার তাইওয়ানে হানা দিয়েছে সোয়াইন ফ্লু। তাই আরেকবার সাবধান হওয়ার পালা আমাদের। জেনে নেবো সোয়াইন ফ্লুয়ের আদ্যপান্ত-
২০০৯ সালের এপ্রিলে মেক্সিকোতে প্রথম সোয়াইন ফ্লুতে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল। সেখান থেকে এই ভাইরাস ৭৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। সে বছর জুন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ৩০ হাজার জনের রক্তে H1N1-এর ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল।
মার্কিন সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিস কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে সোয়াইন ফ্লুতে অন্তত ২ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান। এই পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
ভারতে প্রথম সোয়াইন ফ্লুর ঘটনা সামনে আসে ২০০৯ সালের ১৬ মে। দক্ষিণের শহর হায়দরাবাদে প্রথম সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তা ছড়িয়ে পড়ে। সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে ২০০৯ সালে ভারতে মারা গিয়েছিলেন মোট ৯৮১ জন। পরের বছর অর্থাৎ ২০১০ সালে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৬৩ জন।
২০১৬ সালে ভারতে সোয়াইন ফ্লু মহামারির আকার নেয়। সে বছর এ দেশে ৪২ হাজার ৫৯২টি সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্তের ঘটনা নথিভুক্ত হয়। প্রাণ হারিয়েছিলেন ২ হাজার ৯৯২ জন। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে H1N1-এ আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১,৩৭,৩২৩ জন। এর মধ্যে ১০ হাজার ৬১৪ জনের মৃত্যু হয়।
২০২০ সালে তাইওয়ানে মাত্র এক সপ্তাহে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত আরও অনেকে।
কীভাবে সোয়াইন ফ্লু ছড়ায়
মানুষ, শূকর ও পাখির সংমিশ্রনে সৃষ্ট ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এই রূপটি শূকরের মাধ্যমে মানুষকে আক্রান্ত করেছে। এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার সঙ্গে সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জার মূল পার্থক্য হচ্ছে এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে যা এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। মনে রাখতে হবে, খাদ্য বা রক্তের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়ায় না।
শ্বাসনালীর মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস মানবশরীরে প্রবেশ করে, তাই সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসও শ্বাসনালীর মাধ্যমেই ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি প্রভৃতির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। শুধু তাই নয়, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত বস্তু যেমন রূমাল, দরজার হাতল ইত্যাদির সাহায্যেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ স্পষ্ট হওয়ার ১ দিন আগে আক্রান্ত হওয়ার ৭ বা তারচেয়ে বেশিদিন পর্যন্ত এ ভাইরাস অন্যকে আক্রান্ত করতে পারে।
সোয়াইন ফ্লু সংক্রমণের লক্ষণসমূহ
সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গসমূহ অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মতই। সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মধ্যে কাশি, হঠাৎ জ্বর, মাথাব্যাথা, পেশির খিঁচুনি, গলা ও শরীর ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ক্ষুধামন্দা ও আলস্য, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি অন্যতম। জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর চেয়ে কিছুটা বেশি হতে পারে। আবার শ্বাসকষ্ট, র্যাশ, কাঁপুনি, বমিভাব অথবা বমি ও পাতলা পায়খানাও হতে পারে। সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এসব লক্ষণ স্থায়ী হতে পারে। শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিসহ যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো দীর্ঘসময় পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সোয়াইন ফ্লু মারাত্মক আকার ধারণ করলে নিউমোনিয়া, একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যাওয়া এমনকি মৃত্যু হতে পারে। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে এ রোগটিকে আলাদা করা সম্ভব।
কাদের জন্য বিপদজনক
যেসব মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষের, যাদের হাঁপানী আছে, এইডসে আক্রান্ত রোগী এবং যারা হৃদরোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য সোয়াইন ফ্লু বিপদজনক। অসুস্থ, দুর্বল এবং যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে করণীয়
সোয়াইন ফ্লু থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আবার নিজের ফ্লু হলে তা যেন অন্যকে আক্রান্ত না করে সেই ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে করনীয় কিছু কাজ যা আপনাকে সোয়াইন ফ্লু মুক্ত রাখতে সাহায্য করতে পারে। যেমন-
হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় পরিষ্কার রুমাল, গামছা, কাপড় অথবা টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন।
কফ ও শ্লেষ পরিষ্কার করার জন্য টিস্যু, রুমাল ব্যবহার করুন এবং ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যত্রতত্র না ফেলে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। সবসময় সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখা বিশেষ কফ ও শ্লেষ পরিষ্কার করার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন।
ব্যবহৃত রুমাল, গামছা, কাপড় ইত্যাদি ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
দরজার নব, কম্পিউটারের কী বোর্ড, মাউস প্রভৃতি নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
মাস্ক ব্যবহার করবেন সবসময়। রোগাক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকুন। আক্রান্ত হলে স্কুল, কলেজ অথবা কর্মস্থলে না গিয়ে বাড়ীতে, অন্যদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকুন।
নিয়মিতভাবে সাবান-পানি দিয়ে দুই হাত ভালভাবে ধুয়ে নিন। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় অবশ্যই অন্তত ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। তারপর ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
মন্তব্য করুন
গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ
নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন
বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা
বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত
৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ।
সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ,
যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।
এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ
করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর
করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা
অভিযোগ দুটি।
অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের
সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ।
ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের
মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা
সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে
কমিশন।
এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের
করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।
আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার
জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন
আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি।
চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী
হতে হবে।’
এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন
অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের
অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার
হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে
তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’
চিকিৎসাসেবা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, আমরা চিকিৎসক সুরক্ষা
আইন পাস করাবো। আমাদের দায়িত্ব চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেওয়া। তেমনি চিকিৎসকদেরও দায়িত্ব
রোগীকে সুরক্ষা দেওয়া। তাই চিকিৎসকদের কোনো অবহেলাও আমি সহ্য করবো না।
বুধবার (০১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো
সায়েন্সের ১২তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার
কারো নেই এমনকি আমারও। এটা বলার অধিকার আছে শুধু বিএমডিসির। এই ভুল চিকিৎসার অজুহাতে
চিকিৎসকদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়, এটা খুবই ন্যক্কারজনক। ভুল চিকিৎসার নামে চিকিৎসককে
মারধর, এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না’।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি, আপনারা সেবা দেন,
আমি আপনাদের জন্য সব কিছু করবো। চিকিৎসকদের সুরক্ষায় আইন পাস করানো হবে’।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক শফিউল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসক বিএমডিসি
মন্তব্য করুন
গরমে আনারস খেয়েই আপনি পেতে পারেন কয়েক রকম পুষ্টিগুণ। প্রতিদিন যদি ১ কাপ আনারস খান তাহলেই দূরে করা যাবে গরম-ঠান্ডার জ্বর, জ্বর-জ্বর ভাবসহ নানা সমস্যা। প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর ও ত্বকের জন্য আনারস উপকারি। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই সমস্যা দূর করতে আনারসের জুড়ি মেলা ভার। এই সুস্বাদু রসাল ফলটি শরীরে নানান পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিশ্চিত করে ত্বকের সুরক্ষাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র গরমে দেহের পুষ্টিসাধন এবং দেহকে সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত রাখার জন্য আনারস একটি কার্যকরী ফল। তাই গরমের এই সময়টাতে আনারস খাওয়া শরীরে জন্য অত্যন্ত জরুরি।
পুষ্টিগুণে ভরপুর আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস, যা দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে, ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি কমাতে সাহায্য করে।
ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে জ্বর ও জন্ডিসের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময়টাতে আনারস বেশ উপকারে আসে। এ ছাড়া নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের বিকল্প ওষুধ হিসেবে আনারসের রস কাজ করে।
গবেষকরা বলছেন, , আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এই রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
দেহের কোষের ওপর ফ্রি রেডিকেলের বিরূপ প্রভাবে ক্যানসার এবং হৃদ্রোগের মতো মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে, যা প্রতিরোধ করে আনারস।
ওজন নিয়ন্ত্রণ, দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়, মজবুত হাঁড়ের গঠনে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে, ব্রনের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত আনারস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আনারসের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড বা এএইচএ ত্বকে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে পারে। তাই ত্বকের জেল্লা বাড়াতেও রসাল ও পুষ্টিকর এই ফলটি রাখতে পারেন গরমের ডায়েটে।
পুষ্টির অভাব দূর করে: আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এ সব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আনারস খেলে দেহে এ সব পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকবে না।
হজমশক্তি বাড়ায়: আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
হাড়ের সুস্থতায়: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাংগানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ওজন কমায়: শুনতে বেশ অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমানোয় বেশ সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এবং অনেক কম ফ্যাট। সকালের যে সময়ে ফলমূল খাওয়া হয় সে সময় আনারস এবং সালাদে আনারস ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আনারস খান।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
মন্তব্য করুন
নারী পুরুষের তুলনায় বেশি বছর বাঁচলেও অসুস্থতায় বেশি ভোগেন। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পেশির সমস্যা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মাথাব্যথার মতো রোগগুলোতে বেশি ভোগেন। যদিও এসব রোগ প্রাণঘাতী না হলেও তা অসুস্থতা ও শারীরিক অক্ষমতা তৈরি করে।
করোনা অতিমারি পর্বে মৃত্যুমিছিল দেখেছিল বিশ্ব। প্রিয়জনকে হারানোর ঘা এখনও দগদগে। সেই পর্বে জীবনদায়ী করোনা টিকা কোভিশিল্ড বহু মানুষকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। সেই টিকা নিয়ে এবার বড়সড় তথ্য ফাঁস। জানা গেল কোভিশিল্ডের যথেষ্ঠ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর কেউ নয়, এ কথা খোদ স্বীকার করে নিল টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
গরমে আনারস খেয়েই আপনি পেতে পারেন কয়েক রকম পুষ্টিগুণ। প্রতিদিন যদি ১ কাপ আনারস খান তাহলেই দূরে করা যাবে গরম-ঠান্ডার জ্বর, জ্বর-জ্বর ভাবসহ নানা সমস্যা। প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর ও ত্বকের জন্য আনারস উপকারি। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই সমস্যা দূর করতে আনারসের জুড়ি মেলা ভার। এই সুস্বাদু রসাল ফলটি শরীরে নানান পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিশ্চিত করে ত্বকের সুরক্ষাও।