নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২৪ জুন, ২০২১
আজ বৃহস্পতিবার করোনা মোকাবেলা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটি ১৪ দিনের সর্বাত্মক ‘শাট ডাউনের’ প্রস্তাব দিয়েছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে। এর ফলে করোনা মোকাবেলায় নতুন করে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। করোনা মোকাবেলার সর্বময় ক্ষমতা কার? জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নাকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের -এই প্রশ্ন আবার উঠেছে। আর এর ফলে বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে পথ হারিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কোন কৌশল নেই, কেবলমাত্র আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা গণনা এবং মৃত্যুর সংখ্যা গণনা ছাড়া করোনা নিয়ে কোন কার্যক্রম নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ঢাকাকে সুরক্ষিত রাখার যে কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে সেই কৌশলও কার্যত ভেস্তে যেতে বসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এরকম অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে কি হবে সেটি এখন বড় প্রশ্ন। বাংলাদেশ করোনাতে যেন কোন কৌশলহীন। আর করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের যে সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে:
১. করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই: বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিন্তু এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কৌশলগত দক্ষতা দরকার সেই কৌশলগত দক্ষতার ক্ষেত্রে ব্যাপক ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে যখন ভারতীয় বেরিয়ে এলো তখনই সীমান্ত এলাকাগুলোতে লকডাউন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই কথায় কেউ কর্ণপাত করেননি। বরং এখন যখন করোনা পরিস্থিতি সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তখন লকডাউন দেওয়া হচ্ছে। এই লকডাউনের আগেই সামাজিক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন এই লকডাউনগুলো কতটুকু কার্যকর করা হবে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউনের নামে বিভিন্ন বিধিনিষেধ চলছে অথচ সবকিছুই স্বাভাবিক। এ রকম পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবেলা করা যাবে না করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে এই কৌশলগত ত্রুটি একটি বড় সমস্যা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২. সমন্বয়হীনতা: করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ যে পথ হারিয়েছে তার প্রধান কারণ হলো সমন্বয়হীনতা। কোন কাজ কে করবেন সেই ব্যাপারে কোন সমন্বয় নেই, পরস্পর বিরোধী কথাবার্তা বলা হচ্ছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী লকডাউন সম্পর্কে ঘোষণা দিচ্ছেন, প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দর্শকের আসনে বসে আছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেক মন্ত্রণালয়ের যে সমন্বয় সেই সমন্বয়ের অভাব প্রকটভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
৩. টিকা সংকট: বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলার জন্য গণটিকা কর্মসূচি চালু করেছিল। গণটিকা কর্মসূচি হলো করোনা মোকাবিলায় একমাত্র উপায় যেটি বিশ্বব্যাপী এখন স্বীকৃত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ একপাক্ষিক টিকা নীতির ফলে এখন টিকা সংকটে ভুগছে। কবে টিকা পাবে সে নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট আশার বাণী কেউ শোনাতে পাচ্ছেন না।
৪. হাসপাতাল এবং চিকিৎসা সংকট: করোনা সংক্রমণ যতই বাড়ছে ততই হাসপাতাল এবং চিকিৎসা সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক হাসপাতাল এবং চিকিৎসার উপকরণ নেই। সেখানকার পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। যখন প্রথম ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঢুকে গেল তখনই যদি বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার দিকে মনোযোগ দিত তাহলে পরিস্থিতি এরকম হত না। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী গত বছরে করোনা মোকাবেলার জন্য প্রতিটি জেলায় আইসিইউ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশনা কার্যকর হয়নি। যার ফলে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকলে সামনে কি হবে সে নিয়ে এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
৫. চিকিৎসা উপকরণের সংকট: বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ার পর এখন চিকিৎসা উপকরণের সংকট দেখা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রিত রাজধানীর কেন্দ্রীয় ঔষধাগার সিএমএইচডি’তে অধিকাংশ জরুরী চিকিৎসা উপকরণেরই মজুদ শেষ বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা যায় যে, করোনা টেস্টিং কিটের সংকট দেখা দিয়েছে, রেমিডেসিনের ইনজেকশনের সংকট রয়েছে, সংকট রয়েছে ভেন্টিলেটরের।
আর এরকম পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলোতে কি অবস্থা হবে সেটি নিয়ে শঙ্কিত। করোনা মোকাবিলার জন্য দরকার একটি মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নেতৃত্ব হওয়া উচিৎ যেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আর তার তত্ত্বাবধানে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা এবং যে কর্মপরিকল্পনা করোনা মোকাবেলার একটি সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দেবে। কিন্তু তেমন কিছু বাংলাদেশ প্রায় গত দেড় বছরে করতে পারেনি। যার ফলে করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ যেন এখন পথ হারিয়েছে।
মন্তব্য করুন
গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ
নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন
বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা
বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত
৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ।
সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ,
যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।
এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ
করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর
করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা
অভিযোগ দুটি।
অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের
সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ।
ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের
মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা
সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে
কমিশন।
এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের
করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।
আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার
জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন
আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি।
চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী
হতে হবে।’
এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন
অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের
অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার
হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে
তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’
চিকিৎসাসেবা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, আমরা চিকিৎসক সুরক্ষা
আইন পাস করাবো। আমাদের দায়িত্ব চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেওয়া। তেমনি চিকিৎসকদেরও দায়িত্ব
রোগীকে সুরক্ষা দেওয়া। তাই চিকিৎসকদের কোনো অবহেলাও আমি সহ্য করবো না।
বুধবার (০১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো
সায়েন্সের ১২তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার
কারো নেই এমনকি আমারও। এটা বলার অধিকার আছে শুধু বিএমডিসির। এই ভুল চিকিৎসার অজুহাতে
চিকিৎসকদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়, এটা খুবই ন্যক্কারজনক। ভুল চিকিৎসার নামে চিকিৎসককে
মারধর, এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না’।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি, আপনারা সেবা দেন,
আমি আপনাদের জন্য সব কিছু করবো। চিকিৎসকদের সুরক্ষায় আইন পাস করানো হবে’।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক শফিউল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসক বিএমডিসি
মন্তব্য করুন
গরমে আনারস খেয়েই আপনি পেতে পারেন কয়েক রকম পুষ্টিগুণ। প্রতিদিন যদি ১ কাপ আনারস খান তাহলেই দূরে করা যাবে গরম-ঠান্ডার জ্বর, জ্বর-জ্বর ভাবসহ নানা সমস্যা। প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর ও ত্বকের জন্য আনারস উপকারি। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই সমস্যা দূর করতে আনারসের জুড়ি মেলা ভার। এই সুস্বাদু রসাল ফলটি শরীরে নানান পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিশ্চিত করে ত্বকের সুরক্ষাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র গরমে দেহের পুষ্টিসাধন এবং দেহকে সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত রাখার জন্য আনারস একটি কার্যকরী ফল। তাই গরমের এই সময়টাতে আনারস খাওয়া শরীরে জন্য অত্যন্ত জরুরি।
পুষ্টিগুণে ভরপুর আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস, যা দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে, ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি কমাতে সাহায্য করে।
ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে জ্বর ও জন্ডিসের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময়টাতে আনারস বেশ উপকারে আসে। এ ছাড়া নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের বিকল্প ওষুধ হিসেবে আনারসের রস কাজ করে।
গবেষকরা বলছেন, , আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এই রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
দেহের কোষের ওপর ফ্রি রেডিকেলের বিরূপ প্রভাবে ক্যানসার এবং হৃদ্রোগের মতো মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে, যা প্রতিরোধ করে আনারস।
ওজন নিয়ন্ত্রণ, দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়, মজবুত হাঁড়ের গঠনে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে, ব্রনের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত আনারস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আনারসের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড বা এএইচএ ত্বকে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে পারে। তাই ত্বকের জেল্লা বাড়াতেও রসাল ও পুষ্টিকর এই ফলটি রাখতে পারেন গরমের ডায়েটে।
পুষ্টির অভাব দূর করে: আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এ সব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আনারস খেলে দেহে এ সব পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকবে না।
হজমশক্তি বাড়ায়: আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
হাড়ের সুস্থতায়: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাংগানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ওজন কমায়: শুনতে বেশ অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমানোয় বেশ সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এবং অনেক কম ফ্যাট। সকালের যে সময়ে ফলমূল খাওয়া হয় সে সময় আনারস এবং সালাদে আনারস ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আনারস খান।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
মন্তব্য করুন
নারী পুরুষের তুলনায় বেশি বছর বাঁচলেও অসুস্থতায় বেশি ভোগেন। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পেশির সমস্যা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মাথাব্যথার মতো রোগগুলোতে বেশি ভোগেন। যদিও এসব রোগ প্রাণঘাতী না হলেও তা অসুস্থতা ও শারীরিক অক্ষমতা তৈরি করে।
করোনা অতিমারি পর্বে মৃত্যুমিছিল দেখেছিল বিশ্ব। প্রিয়জনকে হারানোর ঘা এখনও দগদগে। সেই পর্বে জীবনদায়ী করোনা টিকা কোভিশিল্ড বহু মানুষকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। সেই টিকা নিয়ে এবার বড়সড় তথ্য ফাঁস। জানা গেল কোভিশিল্ডের যথেষ্ঠ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর কেউ নয়, এ কথা খোদ স্বীকার করে নিল টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
গরমে আনারস খেয়েই আপনি পেতে পারেন কয়েক রকম পুষ্টিগুণ। প্রতিদিন যদি ১ কাপ আনারস খান তাহলেই দূরে করা যাবে গরম-ঠান্ডার জ্বর, জ্বর-জ্বর ভাবসহ নানা সমস্যা। প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর ও ত্বকের জন্য আনারস উপকারি। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই সমস্যা দূর করতে আনারসের জুড়ি মেলা ভার। এই সুস্বাদু রসাল ফলটি শরীরে নানান পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিশ্চিত করে ত্বকের সুরক্ষাও।