ইনসাইড পলিটিক্স

পর্দার আড়ালে চলছে নির্বাচনী সমঝোতা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail ফাইল ছবি

প্রকাশ্যে রাজনৈতিক আন্দোলন হচ্ছে, বিএনপির বিভিন্ন রকম কর্মসূচি পালন করছে। তার পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছে। কিন্তু পর্দার আড়ালে চলছে নির্বাচনী সমঝোতা। আর এই নির্বাচনী সমঝোতার একটি প্রকাশ্য রূপ পাওয়া গেল ইভিএমের প্রকল্প বাতিলের মধ্য দিয়ে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ইভিএম সংক্রান্ত প্রকল্পটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে, আসলে অর্থনৈতিক সংকট নয়, বরং ইভিএম নিয়ে নির্বাচন করার পরিকল্পনা থেকেই সরকার সরে এসেছে। এর একটি অন্যতম কারণ হলো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচন নিয়ে আসা। উল্লেখ্য যে, বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত দাবি-দাওয়া উচ্চারণ করেছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো; ইভিএমে ভোট বাতিল করা। 


বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন দূতাবাস সহ কয়েকটি দূতাবাস সরকারের কাছে এরকম অনুরোধ করেছে যে ইভিএমে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান না করা। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছিল, অর্ধেক আসনে অর্থাৎ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। সে লক্ষ্যে তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। আর এটি ভোট কারচুপির একটি প্রধান হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করেছিল বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। তারা বলেছিল, ইভিএমে ভোটগ্রহণ তারা মেনে নেবে না। এর ফলে  নির্বাচন একটি নতুন ধরনের সংশয় এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। এ রকম বাস্তবতাতেই সরকারের পক্ষ থেকে ইভিএমে  ভোট গ্রহণ করা থেকে সরে আসা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। এদের মধ্য দিয়ে বিরোধীদলের একটি দাবী মানা হলো।

বিরোধী দলের পক্ষ থেকে আরেকটি দাবি ছিলো যে, নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি। যদিও বিভিন্ন মহল বলছে, এটি বিরোধী দলের দাবী ছিল না। বিরোধী দল নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশনের কথা বলেছিলো। আর অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন দাবি করেছিল, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তাদেরকে সর্বময় ক্ষমতা প্রদান করা। সেই দাবি মেনে নিয়েই নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্ন বিষয়ে একক ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশন এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। 


রাজনৈতিক সমঝোতার আরেকটি বিষয় ছিল যে বিতর্কমূলক খসড়া ভোটার তালিকা। যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর দাবির মধ্যে অন্যতম ছিলো। সেই দাবিও পূরণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে না গিয়ে বর্তমান কাঠামোর মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ফর্মুলা বের করার জন্য কূটনৈতিক মহল কাজ করছে। সেই কাজ করতে গিয়ে তারা বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থার বেশ কিছু ত্রুটি এবং ক্ষত চিহ্নিত করেছে। যে ক্ষতগুলো সারলেই আগামী নির্বাচনকে অর্থবহ এবং বিতর্ক মুক্ত হতে পারে বলে তারা মনে করছেন। আর এই প্রেক্ষিতে তারা সরকারের কাছে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এবং পরামর্শ দিয়েছিলো। সরকার এখন পরামর্শগুলো মানতে শুরু করেছে। 

বিভিন্ন মহল মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মাধ্যমে সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে একটি সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এই সমঝোতার শর্তগুলো সরকার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ভাবে পালন করছেন। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, একজন মোটামুটি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব ছিল কূটনৈতিক মহল থেকে। আর সেই প্রস্তাবের অংশ হিসেবে ড. মসিউর রহমানের মতো কোনো ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করার কথা ভাবা হচ্ছে। সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি করার চিন্তাভাবনা থেকে সরকার সরে এসেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন নির্বাচন করার জন্য প্রশাসনের একটি নিরপেক্ষ অবয়ব দেওয়ার কথা ছিলো। এজন্যই মাহবুব হোসেনকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে। প্রকাশ্যে আন্দোলন হলেও পর্দার আড়ালে চলছে নির্বাচনী সমঝোতা। একাধিক সূত্র বলছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নির্বাচনী সমঝোতার একটি দৃশ্যমান রূপ দেখা যাবে। 

বিএনপি   সমঝোতা   নির্বাচন   সরকার   মির্জা ফখরুল ইসলাম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম: জিএম কাদের

প্রকাশ: ০২:৩১ পিএম, ২৫ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

দেশবাসীকে স্বাধীনতা দিবসের অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সেইসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের প্রতি শুভেচ্ছা ও ভালোবাসাও জানান তিনি। শনিবার (২৫ মার্চ) জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ  অভিনন্দন জানান তিনি।        

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। গৌরবোজ্জল ও তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনে আমি দেশবাসীকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছি। একইসাথে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের প্রতি শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞচিত্তে সেই দেশের অবদান স্বীকার করছি, যারা আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন ও সহায়তা জুগিয়েছে।  

জিএম কাদের বলেন, মহান স্বাধীনতা দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করছি ৩০ লাখ বীর শহীদদের। মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করে যারা আমাদের লাল-সবুজের পতাকা উপহার দিয়েছেন। সশ্রদ্ধ সালাম সেই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যারা জীবনবাজী রেখে লড়াই করেছেন আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের আধুনিকায়নে যার অপরিসীম অবদান অক্ষয় হয়ে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি।

তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম বাংলাদেশীদের জীবনে এক অবিনশ্বর চেতনা। মহান স্বাধীনতা জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের সামনে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। প্রতিটি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে একাত্তরের গৌরবোজ্জল উত্তাল দিনগুলো আজীবন পথ দেখাবে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম বিশ্ববাসীর সামনে সাহস আর বিজয়ের প্রতিক হয়ে থাকবে। মহান মুক্তিযুদ্ধ আজীবন সুখী ও সমৃদ্ধশালী নতুন বাংলাদেশ গড়তে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

এই শুভক্ষণে আগামী প্রজন্মের সুখময় ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে ক্ষুধা, দারিদ্র এবং দুর্নীতিমুক্ত পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবার প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

সবার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল, সমৃদ্ধি এবং সুস্থতা কামনা করছি।


জাতীয় পার্টি   চেয়ারম্যান   উপনেতা   গোলাম মোহাম্মদ কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থী নোমান

প্রকাশ: ০১:৩৯ পিএম, ২৫ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রাথী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি নোমান আল মাহমুদ।

শনিবার (২৫ মার্চ) আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড সভা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সভার সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদ। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। 

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ মার্চ, বাছাই ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র আবেদন প্রত্যাহারের শেষ দিন ৫ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ৬ এপ্রিল।

চট্টগ্রাম-৮   উপ নির্বাচন   নোমান আল মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জনগণকে চূড়ান্তভাবে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে: ফখরুল

প্রকাশ: ০১:০৪ পিএম, ২৫ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

১৯৭১ সালে যে আশা-আকাঙ্খা নিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল- তা আজও পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য আজও দেশি-বিদেশী চক্রান্তকারীরা নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেবলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার (২৫ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন,  সুষ্ঠু নির্বাচনকে চিরদিনের জন্য নির্বাসিত করার মাধ্যমে জনগণকে চূড়ান্তভাবে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে।  গুম, হত্যা, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন-নিপীড়ণের মধ্য দিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষকে অমানবিক হয়রানী করা হচ্ছে। রাষ্ট্রকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। নজীরবিহীন দুর্নীতি, সীমাহীন নির্যাতন ও দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। তাই আজকের এই মহান দিনে বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক মানুষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি দলমত নির্বিশেষে ইস্পাতদৃঢ় ঐক্যের মাধ্যমে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলে এই দেশবিরোধী গণআবিরোধী শক্তিকে অপসারিত করে একটি জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য। সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিশাল রক্তস্রোত আর ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে মহিমান্বিত আমাদের স্বাধীনতা। অথচ আজও বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার এক গভীর চক্রান্ত চলছে। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার অপতৎপরতা এখনও বিদ্যমান। সকল ষড়যন্ত্র চক্রান্ত প্রতিহত করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণতন্ত্রের নুয়ে পড়া পতাকাকে সমুন্নত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এজন্য গড়ে তুলতে হবে সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য।  



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকারের বলয়ে ভিপি নুর?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail কাতারে নুরুল হক নুর। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ৫৪ দল ও সংগঠনের অনেকেই সরকারের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিচ্ছে বলে জানুয়ারিতে এক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ওরফে ভিপি নুর। তিনি বলেন, বিরোধী জোটের শরিকদের কেউ কেউ সরকারের সঙ্গেও লিয়াজোঁ করছেন এবং আসন ভাগাভাগি করে ঐকমত্যে পৌঁছে যাচ্ছেন। অথচ সেই একই অভিযোগ এবার নুরের বিরুদ্ধে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে নুরুল হক নুর এখন সরকারের বলয়ে। গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র নেতাদের মুখেই এখন এই কথার চর্চা হচ্ছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার কাতার সফরে গেছেন নুরুল হক নুর। এর আগে রোববার রাতে তিনি দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে এসএমএস পাঠান। এসএমএসে তিনি লিখেন, ‘আগামীকাল (সোমবার) সকাল নয়টায় আমার ফ্লাইট। সকাল ৭টায় এয়ারপোর্টে থাকব, ইনশাল্লাহ্। আমার ঘনিষ্ট একজনের পারিবাবিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কাতার যাচ্ছি। টিকেটসহ খরচ তারাই দিয়েছে। পাশাপাশি কাতারের নেতাকর্মীদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করব আর সুযোগ হলে কাতার থেকে আর দুই/তিন দেশে যাব। সকলের দোয়া প্রত্যাশী। ধন্যবাদ। 


পারস্য উপসাগরের তীরে নুরুল হক নুর। ছবি: নুরের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

হঠাৎ নুরুল হক নুর এর কাছ থেকে এমন এসএমএস পেয়ে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা এ কারণেই বিস্ময় করেছেন যে, এসএমএস পাওয়ার আগে অর্থাৎ শনিবার নুর ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৪ সালে গণঅধিকার পরিষদ সরকার গঠন করবে। এর আগে তিনি বিভিন্ন সময় সরকারকে ফেলে দেওয়ার হুমকি উচ্চারণ করেছিলেন। কিন্তু এমন অবস্থায় তিনি কাতার যাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীদের একেবারে অন্ধকারে রেখে। তার সফর সম্পর্কে কেউ অবগত নন বলে দাবি করছেন দলের সিনিয়র নেতারা। নুর কাতার যাচ্ছেন কিন্তু কি ধরনের প্রোগ্রামে যাচ্ছেন আর কবেই বা তিনি ফিরে আসবেন এব্যাপারে দলের কারো কাছে কোনো তথ্য নেই। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে এখন তার অবস্থান নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তিনি আড়ালে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে চলছেন কিনা সেটা নিয়ে কারো কারো কৌতুহল রয়েছে। চলমান আন্দোলনেরই মধ্যে একাধিক বার বিদেশ যাত্রা গণঅধিকারে পরিষদে বেশ রহস্য তৈরি করেছে। এর আগে সৌদি আরবে তার ওমরা যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি প্রথমে কাতার গিয়েছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণঅধিকার পরিষদের একাধিক নেতা জানান, নুরের বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তার বিদেশ যাওয়া-আসার ব্যাপারে তিনি কখনো আমাদেরকে পরিষ্কার করেননি। এর আগে সৌদ আরবের সঙ্গে তার একটি চুক্তি হয়েছে বলে আলোচনা রয়েছে। কিন্তু সেই চুক্তি কি? এ ব্যাপারে গণঅধিকার পরিষদের কেউ কিছু জানে না। সৌদ আরব, কাতার, দুবাইসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে তিনি অনুদান পেয়েছেন বলেও জানা গেছে। কিন্তু সে ব্যাপারে দলের সিনিয়র নেতাদের কেউই অবগত নন। ফলে দলের মধ্যে নুরকে নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। সরকারের সঙ্গে সমঝোতা অংশ হিসেবেই তিনি এ ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কিনা সেটিই এখন গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের কোটির টাকার প্রশ্ন।

ভিপি নুর   গণঅধিকার পরিষদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফের রওশন-জিএম কাদেরের সম্পর্কের ফাঁটল!

প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

বলা হয়ে থাকে, জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল যখনই বাড়বে বা রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে, বুঝতে হবে তখনই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অনেক। কিন্তু বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে দশম সংসদে জাতীয় পার্টি দেখিয়েছে, কী করে 'বিরোধী দল' হতে হয়। একাদশ জাতীয় সংসদেও জাতীয় পার্টি কাগজে-কলমে বিরোধী দলের অবস্থানে রয়েছে। সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

এদিকে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরেও ফের আলোচনায় আসছে জাতীয় পার্টি। এখন প্রশ্ন ওঠেছে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ফের কি বিরোধী দল হচ্ছে জাতীয় পার্টি? কেননা জাতীয় পার্টির এই দুই শীর্ষ নেতা রওশন এরশাদ এবং জি এম কাদের এবার তাঁদের দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উদযাপন করেছেন পৃথক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। রমজানেও তাঁরা ইফতার অনুষ্ঠান আলাদাভাবে আয়োজন করছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।     

সূত্র বলছে, এই পৃথক অনুষ্ঠান ইঙ্গিত দিচ্ছে যে জ্যেষ্ঠ নেতা রওশন এরশাদ ও দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে ঘিরে জাপায় বিভাজনটা রয়েই গেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিভাজন আরও দানা বাঁধতে পারে। তবে রাজনীতিতে সরব রয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। 

সূত্র জানায়, এর আগে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়েছিল সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ইস্যুকে কেন্দ্র করে। সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। কিন্তু এই চেয়ারে বসতে চান তার দেবর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সংক্ষেপে জিএম কাদের। এই নিয়েই অভ্যন্তরীণ কোন্দল দিন দিন ঘণীভূত হচ্ছে। ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর জাপা থেকে বহিষ্কৃত জিয়াউল হক মৃধা জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে এক মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের যাবতীয় দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন। 

পরে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা কেটে যায় গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের। নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত করে হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ  নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পথ প্রসস্থ করেন। সেই সঙ্গে নিম্ন আদালতের এই রায় কেন চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হবেনা, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর থেকেই জাতয়ি পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দরীয় বিভিন্ন কার্যক্রমে সরব রয়েছেন জিএম কাদের। অন্যদিকে রওশন এরশাদকে কোনো দলীয় মিছিল-মিটিংয়ের সরব ভুমিকায় দেখা যায় যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, এবার প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে চারটি অনুষ্ঠান করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এর একটিতেও রওশন এরশাদ ছিলেন না। তিনি আলাদা অনুষ্ঠান করেন তাঁর গুলশানের বাসায়। জাপার দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, রওশন ও ছেলে সাদ এরশাদকে পৃথক অনুষ্ঠান না করে জন্মদিনের দলীয় আয়োজনে অংশ নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা যাননি।  যদিও এ মুহূর্তে দুজনের সম্পর্ক এতটা খারাপ নয়। আবার খুব যে ভালো, তা–ও নয়। রওশন চুপচাপ আছেন। জি এম কাদেরও খড়্গ কাটিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রওশন এরশাদ দীর্ঘ সময় বিদেশে চিকিৎসা শেষ গত বছরের নভেম্বরে দেশে ফেরেন। এরপর তাঁর সঙ্গে জি এম কাদেরের কয়েকবার দেখা হয়। তাঁদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। এখন আবার দলের প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিন পালন এবং ইফতার অনুষ্ঠান তাঁরা আলাদাভাবে আয়োজন করছেন। এটি তাঁদের ঐক্যে ফাটল ধরার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে দলটির নেতাদের অনেকে মনে করেন। 

এসব বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতার ভাগ-দখল নিয়েই সাধারণত রাজনৈতিক দলগুলোতে বিভাজন, কলহ-কোন্দল দেখা দেয়। যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে আসবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে, সেহেতু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচেনের আগে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। এখন বিষয়টি এই পর্যায়ে গিয়েছে যে, দেবর-ভাবীর ক্ষমতা ভাগ-ভাটোয়ারার বিষয়। এই সম্পর্কের ফাঁটল এটা নতুন কিছু নয়, ভাগ-ভাটোয়ারা ঠিক-ঠাক হলেই এ সমস্যা মিটে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে কোন কোন দাবি-দাওয়া পূরণ করা হলে রওশন-কাদের সম্পর্ক আবারও মধুর হবে।

রওশন এরশাদ   জিএম কাদের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন