প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই বিএনপি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। ব্যতিক্রম হয়নি জেনেভাতেও। জেনেভাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাড়াবাড়ি রকমের বিক্ষোভ করেছে এবং অশ্লীল, কুৎসিত স্লোগানও দিয়েছে। এই সময় ইউরোপ আওয়ামী লীগের উপস্থিতি ছিল লজ্জাজনক। বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সেখানে উপস্থিতি কম নিয়ে প্রবাসী আওয়ামী লীগে এখন তোলপাড় চলছে। ইউরোপে আওয়ামী লীগ এখন দুইজন নিয়ে চলছে- এমন কথাও আলোচনা হচ্ছে সর্বত্র। আওয়ামী লীগের প্রবাসী শাখাগুলো এখন ব্যস্ত ঢাকায় মনোনয়ন বাণিজ্য, বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য পাওয়া এবং কোন্দলে।
একটা সময় ছিল- আওয়ামী লীগে প্রবাসী শাখাগুলো ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। বিশেষ করে ৭৫’র পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার প্রতিবাদ করার ক্ষেত্রে প্রবাসে আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি লন্ডনে গিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার যে বিচার দাবি করেছিলেন, সেখানে প্রবাসী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একটা বিরাট অবদান ছিল। কিন্তু সেই অবস্থা এখন আর নেই!
বিভিন্ন সঙ্কটে প্রবাসী শাখাগুলোই আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল- বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মতামত তৈরি করা, বিশ্বকে গণতন্ত্র এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো। এক-এগারোর কথাই ধরা যাক। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী আওয়ামী লীগের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদ লন্ডনে গেলে তাকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
একইভাবে মঈন ইউ আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গেলেও প্রতিবাদের মুখে পড়েছিলেন। কিন্তু টানা ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের প্রবাস শাখাগুলো এখন লোভাতুর এবং নানা রকম সুবিধাভোগীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রবাসী আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী শাখা ছিল এক সময় লন্ডনে। কিন্তু লন্ডন আওয়ামী লীগের নেতারা এখন বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগ করতেন- এমন একাধিক ব্যক্তি এখন সংসদ সদস্য হয়েছেন। এখন এবার একজন মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একটি অন্যতম খুঁটি ছিলেন। তিনি একজন ভালো সংগঠকও। তিনি এখন সিলেটের মেয়র হয়ে গেলে, সংগঠন আরও দুর্বল হবে। আর অন্যরা যারা আছেন, তারাও এখন ঢাকায় এবং বাংলাদেশে ব্যবসা, ব্যাংক ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য ব্যস্ত। প্রবাসে সংগঠনের প্রতি তাদের কোনো মনোযোগ নেই। আওয়ামী লীগের কর্মসূচি যুক্তরাজ্যে এখন শুধু দিবসভিত্তিক। তারপর কোন্দলতো আছেই।
একই অবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা বর্তমান সরকারের আমলে নান রকম সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। কেউ ব্যাংকের মালিকানা পেয়েছেন, কেউ পেয়েছেন ব্যবসা। ফলে সংগঠনের দিকে এখন তাদের মনোযোগ নেই। সংগঠনগুলো শতচ্ছিন্ন এবং নতুন নতুন ব্যক্তিদেরকে সংগঠনে আনার ক্ষেত্রেও তেমন কোনো মনোযোগ নেই।
ইউরোপের আওয়ামী লীগ নিয়েও দীর্ঘ দিন ধরে নানা রকম কর্থাবার্তা শোনা যাচ্ছিল। এখন সেই আওয়ামী লীগের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। আর তার প্রমাণ দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেনেভা সফরের সময়। প্রবাসী সংগঠনগুলো দুর্বল থাকার কারণেই সাইবার সন্ত্রাসীরা ইচ্ছেমতো অপপ্রচারে লিপ্ত আছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো টু শব্দ করতে পারছে না প্রবাসী আওয়ামী লীগের শক্তিশালী শাখাগুলো। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে লবিং চলছে, যে অপপ্রচার চলছে, সেগুলো রুখে দেওয়ার মতোও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না প্রবাসী আওয়ামী লীগের শাখাগুলো। আর তাই প্রশ্ন ওঠেছে, প্রবাসী আওয়ামী লীগ এখন কি শুধুমাত্র নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত, নাকি সংগঠনের জন্য তারা কিছু করছে।
কোন্দল আওয়ামী লীগ প্রবাস যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।