ইনসাইড পলিটিক্স

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ক্ষমতার মসনদ যাচ্ছে কার দখলে?


Thumbnail দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ক্ষমতার মসনদ যাচ্ছে কার দখলে?

আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর পাঁচ মাস বাকি। সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই মাস। এর পরই গঠিত হবে নির্বাচনকালীন সরকার। ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। 

নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, এই নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলাপ-আলোচনা। কেউ বলছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতার মসনদে বসতে চলেছে। আবার কেউ বলছে, বাংলাদেশের মানুষের এখন আর বর্তমান সরকারের প্রতি আস্থা নেই, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসছে। আবার কেউ বলছে, আওয়ামী লীগ-বিএনপি কেউই ক্ষমতায় আসছে না। এক-এগারো’র মতো একটি অনির্বাচিত তৃতীয় শক্তির সরকার আসছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার এমনই এক ত্রিমুখী আলাপ-আলোচনায় মুখর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে মুদি দোকান বা চা দোকান পর্যন্ত। বস্তুত, এই প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে ওঠেছে যে, বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদ যাচ্ছে কার দখলে? 

গত ১৪ জুন (বুধবার)  জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ‘রেজিম চেইঞ্জ’র (ক্ষমতা বদল) কৌশলের অংশ। তারা সেন্ট মার্টিন চায়, কোয়াডে (যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের জোট) বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে মেনন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন নেই। বেশ কিছু সময় আগে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তার বাগে রাখতে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিয়েছে। এখন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এটা কেবল দুরভিসন্ধিমূলকই নয়, তাদের ‘রেজিম চেইঞ্জ’র কৌশলের অংশ। তারা সেন্ট মার্টিন চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দলের সভাপতি সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন করে আমি বলতে চাই, বাইডেন সাহেব, ট্রাম্পকে সামলান। আমাদের ঘর আমরা সামলাব। নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে রেখেই হবে। বিএনপির উচিত হবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া।’ মেনন আরও বলেন, তারেক রহমান নির্বাচন না করে ২০২৯-এর জন্য অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু বিএনপি এর মধ্যে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। তার সেই স্বপ্নও পূরণ হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, এগিয়ে যাবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতা, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত নতুন ভিসা নীতি এবং অতি সম্প্রতি সেন্ট মার্টিন নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকাশ্যে বক্তব্যের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রশ্নটি বার বার আলোচনায় ওঠে আসছে। বেশ কিছু দিন থেকেই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জনগণ আমাদের ভোট দিলে আমরা আছি, না দিলে নাই।’ তিনি বলেছেন, ‘সেন্ট মার্টিন লিজ দিলে আমার ক্ষমতায় থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমি দিয়েও আমি ক্ষমতায় যেতে চাই না। বিএনপি কি সেন্ট মার্টিন বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চায়?’ তিনি এ-ও স্পষ্ট করেছেন যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই হবে। বর্তমান জাতীয় সংসদে যারা প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাদের মধ্য থেকেই কিছু ব্যক্তিদেরকে নিয়ে ছোট পরিসরে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে এবং এই নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই প্রস্তাবে বিএনপি নারাজ। বিএনপি দাবি করছে, ক্ষমতাসীন এই সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। যে কারণেই একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করছে তারা এবং সেই লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন জমাতে না পেরে মানবাধিকার ইস্যুকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ধরনা ধরেছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে কোণঠাসা করার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৫ বছরেও যেহেতু বিএনপি সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলন জমাতে পারেনি, সেহেতু বিএনপি সরকার গঠনে অক্ষম। বিএনপির সে জনবল এবং সাংগঠনিক শক্তি নেই যে, নির্বাচনে জয়লাভ করে রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য সরকার গঠন করে। সে কারণেই প্রশ্ন ওঠেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব হচ্ছে? কিন্তু এই তৃতীয় শক্তিকে আনছে কারা?   

অবশ্য উদ্ভূত এই পরিস্থিতির জন্য বিএনপিকেই দুষছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের জন্য বিএনপিই দায়ী। তারা এখন আন্দোলনের চেয়ে নালিশ দেওয়ায় বেশি ব্যস্ত। মূলত বিএনপি পশ্চিমা দেশগুলোর মদদে নির্বাচন বানচালের একটি ষড়যন্ত্র করছে এবং বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টায় মত্ত রয়েছে। আর সে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, বিদেশি শক্তি বা ষড়যন্ত্রের মদদে এবং সেটিকে মোকাবিলা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটা অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু করা আওয়ামী লীগের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, নির্বাচন বন্ধ করার জন্য একটা চক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য তিনি বিরোধী দল বিএনপিকেই দায়ী করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ইতোমধ্যে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ইস্যুতে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল এ মাসে ঢাকা সফর করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও এ মাসে ঢাকায় আসবেন। যুক্তরাষ্ট্রের টিম গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রশ্নে কোনো ছাড় দিতে নারাজ। নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হলে পরবর্তী সময়ে তারা কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তাও অনেকটা স্পষ্ট করেছে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা চিঠি দিয়ে তাদের প্রেসিডেন্টকে চাপ প্রয়োগ করেছেন। এদিকে র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে আরও কিছু সেক্টরে। বিশেষ করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশকে বাইরে রাখার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।                      

বাংলাদেশের রাজনীতিতে উদ্ভূত এই পরিস্থিতি পশ্চিমা দেশুগুলোর কাছে বিএনপির অনবরত নালিশের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ বিএনপি প্রথম থেকেই মনে করছে, তাদের বিভিন্ন আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই সবচেয়ে বড় বাধা। যে কারণেই বিএনপি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশন করাতে টাকা খরচ করে লবিষ্ট নিয়োগ করেছিল। বর্তমান সময়েও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে একাধিক লবিষ্ট নিয়োগ করেছে বিএনপি। যে কারণেই  বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রেজিম চেইঞ্জ’ বলে একটা শব্দ প্রায়ই শোনা যাচ্ছে।   

তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, এবার যত বাধাই আসুক না কেন, রাজপথের আন্দোলন থেকে পিছু হটবে না বিএনপির নেতা-কর্মীরা। দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দলটি। এর মধ্যে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করাই তাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ। আর তা বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশ প্রশাসনকেই মূল বাধা হিসাবে দেখছেন তারা। সেই বাধা মোকাবিলা করে কীভাবে একটি সফল আন্দোলন করা যায়, সে রকম পরিকল্পনা আঁটছেন দলটির হাইকমান্ড। নেতা-কর্মীদেরও সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। 

বিএনপি নেতারা আরও জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় আচরণ থেকে সরে আসতে নানাভাবে কাজ করা হচ্ছে। যারা নগ্নভাবে সরকারের পক্ষে কাজ করছেন তাদের তালিকা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দূতাবাসে পাঠানো হচ্ছে। এতে তাদের মধ্যে কিছুটা হলেও ভয়ের সৃষ্টি হবে। তবে এটা যাতে হিতে বিপরীত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে না এমন নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে। তবে যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা হয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে গণতন্ত্র হরণ করেছে তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের আইন অনুযায়ী সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।  

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জটাই হচ্ছে নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা। সেই লক্ষ্যে আমরা রাজপথে আন্দোলন করছি। কিন্তু সেই আন্দোলন মোকাবিলায় অতীতের মতো এবারও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বড় বাধা হিসাবে দাঁড়াতে পারে। সেই বাধা উপেক্ষা করে কীভাবে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে আমরা পরিকল্পনা তৈরি করছি। রাজপথের আন্দোলনে যে কোনো বাধা মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের করণীয় নিয়ে নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এবার যত বাধাই আসুক রাজপথের আন্দোলন থেকে নেতা-কর্মীরা পিছু হটবে না। কারণ আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই জয়ের বিকল্প ভাবছি না। আশা করি অতীতের মতো প্রশাসন নগ্নভাবে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেবে না। এবার বাধা দিলেই আমরা রাজপথ ছেড়ে দেব সেটা ভাবার কারণ নেই। বাধা মোকাবিলা করে কীভাবে রাজপথ দখলে রাখা যায় সেই পরিকল্পনাও আমাদের আছে। এবারের আন্দোলনে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও রাজপথে নেমে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাদের উপস্থিতি বাড়ছে। 

দেশকে একটি অকার্যকর এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করছে বিএনপি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দেশে একটি অস্থীতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি। তাই পশ্চিমা বিশ্বের মদদে নির্বাচন বর্জনসহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। বাংলাদেশে যদি কোনো অরাজনৈতিক তৃতীয় শক্তি ক্ষমতায় আসে, তবে তার জন্য দায়ী থাকবে বিএনপি। বিএনপির নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার সক্ষমতা নেই বলেই বিএনপি এখন হীন ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে। তবে এসব বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিষয়গুলোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই গ্রহণ করেছে দলটি। সেই লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, নির্বাচনের পথেই এগিয়ে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। সময় এলেই প্রমাণিত হবে, দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে টানা চতুর্থবার ক্ষমতার মসনদ দখলে যেতে পারে কি না আওয়ামী লীগ?


দ্বাদশ   জাতীয় সংসদ   নির্বাচন   ক্ষমতা   মসনদ   দখল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরাও তারেকের ওপর বিরক্ত

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের জন্য বিএনপি কমবেশি অন্তত ৫০ টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় বৈঠক করেছিল। এই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। 

২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিএনপি তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলন ভালোই জমিয়ে তুলেছিল। এই সময় এই দলগুলোকে নিয়ে একটি জোটবদ্ধ আন্দোলন করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত জোটবদ্ধ আন্দোলন হয়নি। বরং সবাই তাদের নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপির হঠকারিতা এবং ভুল রাজনীতির কারণে আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। 

নির্বাচনের পর শরিকদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে নির্বাচনের পরও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছিলেন শরিকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আন্দোলনের সঙ্গীদের বিশ্বাস করতে পারেননি। আর এই অবিশ্বাসের কারণে এখন শরিক দলগুলো মোটামুটি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। বিএনপির সাথে তাদের যোগাযোগ আলগা হয়ে গেছে। আর সে কারণেই এখন বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে তাদের উৎসাহ নেই। অনেকেই এখন ঘরে উঠেছেন এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্বে তারা বিরক্ত হয়েছেন। এবং বিএনপির সঙ্গে নতুন করে যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেই আন্দোলনের অন্যতম অংশী ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি অত্যন্ত সরব ছিলেন এবং এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তিনি বিএনপির অন্যতম পরামর্শক হিসেবে বিবেচিত হতেন। কিন্তু এখন তিনি লাপাত্তা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, মাহমুদুর রহমান মান্না তারেক জিয়ার ওপর অত্যন্ত বিরক্ত এবং বিএনপির কৌশল নিয়েও তিনি হতাশ। আর এ কারণেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। একই অবস্থা জেএসডির নেতা আ স ম আবদুর রবের। আবদুর রব মনে করছেন যে, বিএনপির রাজনীতির কৌশলই ভুল ছিল এবং এখন এই কৌশলের মাসুল দিতে হচ্ছে গোটা দেশকে। বিএনপি একদিকে যেমন সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না, অন্যদিকে শরিকদেরকেও বিশ্বাস করছে না। আর এ কারণে বিএনপির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন এই নেতা।

শরিকদের মধ্যে অন্যতম ছিল ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ। তারাও এখন নিজের আলাদা অবস্থান থেকে রাজনীতি করছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তারা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে নুর বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। 

শরিকদের যারা বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছিল তাদের মধ্যে একমাত্র জোনায়েদ সাকি ছাড়া কেউই বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছেন না। বরং বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। 

অন্যদিকে বিএনপির আদর্শিক জোট জামায়াত মাঝখানে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। কিন্তু আবার ঘনিষ্ঠতায় ছেদ ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান অভিযোগ হলো তারেকের উদ্ভদ বিভ্রান্তিমূলক এবং অরাজনৈতিক সূলভ সিদ্ধান্ত। শরিকদের মধ্য থেকে একাধিক নেতা বলেছেন, তারেক জিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক পরিপক্কতার অভাব রয়েছে। হুটহাট তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিণতি এবং সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নেন। একজন রাজনৈতিক নেতার যে গুণাবলি থাকা উচিত তা কিছুই তার মধ্যে নেই। আর এ কারণেই শরিকরা এখন বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। একদিকে যেমন বিএনপির দলের মধ্যে হতাশা অন্যদিকে শরিকরাও এখন বিএনপির প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছে না।


বিএনপি   তারেক জিয়া   মাহমুদুর রহমান মান্না  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির সরব নেতারাও এখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির আন্দোলন এখন হতাশার চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা। আর এই হতাশা এখন সংক্রমিত হয়েছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা স্থায়ী কমিটিতে। স্থায়ী কমিটির নেতারা এখন নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন এবং হতাশায় তারা আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন;

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে যাচ্ছেন ওমরাহ পালন করতেন। তিনি দুদিন আগেই পয়লা মে জনসভায় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মে দিবসের জনসভায়। আর সেই ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি সৌদি আরবে চলে গেলেন। দলের মূল চালিকাশক্তি যখন বিদেশে চলে যান তখন দলে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং হতাশা তৈরি হয় এটাই স্বাভাবিক। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা স্বীকার করেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন মানসিক ভাবে দলের নেতৃত্ব এগিয়ে নিতে প্রস্তুত নন। তিনি বারবার নেতাকর্মীদের কাছে বলছেন, আমি থাকতে চাচ্ছি না। আমাকে জোর করে রাখা হচ্ছে। অনীহা সত্ত্বেও বিকল্প কোন মহাসচিব না করার কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এখনও রাখা হয়েছে। আর তিনি দলে যতটা না সময় দিচ্ছেন তার চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ে।

বিএনপির বিভিন্ন নেতা মনে করেন যে, আন্দোলনের ব্যর্থতা এবং ভুল নেতৃত্ব, তারেক জিয়ার বাড়াবাড়ি ইত্যাদি কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম হতাশ এবং এ কারণেই তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। নির্বাচনের আগেও ২৮ অক্টোবর আগ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে যেভাবে সরব এবং সক্রিয় দেখা গিয়েছিল এখন তার ছিঁটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না এবং এটি বিএনপির মধ্যে একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: কারাগার থেকে বের হওয়ার পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। বিভিন্ন দূতাবাসের অনুষ্ঠানে যোগদান ছাড়া আনুষ্ঠানিক বিভিন্ন কর্মসূচি ছাড়া তাকে খুব একটা দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে চলে গেছেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, তিনি দলের কার্যক্রমে বিরক্ত হতাশ। এ কারণে তিনি তার সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। তিনি কারাগার থেকে বেরোনোর পর খুব একটা সক্রিয় ছিলেন না। 

নজরুল ইসলাম খান: নজরুল ইসলাম খান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই সময় নজরুল ইসলাম খানকেও খুব একটা পাদপ্রদীপে দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তিনি থাকছেন না। নজরুল ইসলাম খান অবশ্য বলছেন, শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ। যতটুকু তার পক্ষে সম্ভব ততটুকু চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিএনপির নেতারাই বলছেন, নজরুল ইসলাম খানকে তারা যে অবস্থায় দেখেছেন অতীতে তার ধারেকাছেও এখন তিনি নেই। 

মির্জা আব্বাস: মির্জা আব্বাস বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা এবং ঢাকা মহানগরীর অন্যতম চালিকাশক্তি মনে করা হয় মির্জা আব্বাসকে। কিন্তু মির্জা আব্বাসও এখন নিষ্ক্রিয়। কারাগার থেকে বেরোনোর পর তার কর্মসূচি তিনি সীমিত করেছেন। এখন দলের কার্যক্রমে তাকে উদ্যোগী দেখা যায় না। উদ্যোগ নিয়ে তিনি কোন কিছু করেনও না। দলের যে সমস্ত কর্মসূচি গুলো ঘোষিত হয় সেখানে রুটিন উপস্থিতির মাধ্যমে তিনি তার দায়িত্ব সম্পন্ন করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক জন সদস্য। কিছু দিন আগ পর্যন্ত তাকে অত্যন্ত সরব দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন তিনি আস্তে আস্তে যেন পর্দার আড়ালে চলে যাচ্ছেন। তাকে কোন আগ বাড়িয়ে কর্মসূচি পালনের জন্য দেখা যাচ্ছে না। কোন বিবৃতি দিতেও তিনি আগ্রহী নন। এক ধরনের হতাশা থেকে তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।

স্থায়ী কমিটির পাঁচ জন সদস্য অনুপস্থিতি। আর পাঁচ জনের অবস্থা এ রকম। কয়েকজন একেবারেই অসুস্থ। এই অবস্থায় বিএনপি এখন স্থায়ী কমিটি শূন্য হয়ে পড়ছে। 

বিএনপি   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বেপরোয়া মন্ত্রী-এমপিরা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

আগামী ৮ মে যে ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে সেখানে প্রায় ৭০ টিতেই মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তি রয়েছেন। সেই পছন্দের ব্যক্তিদেরকে জেতাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশনও এদের নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং নির্বাচন কমিশন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব ঠেকানোর জন্য করণীয় নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছে। 

একাধিক উপজেলার খবর নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে জেতানোর জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। যেমন, তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নানা রকম পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে নির্বাচনে যারা প্রতিপক্ষ রয়েছে তাদেরকে নানা রকম হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও ভোটারদের ভীতি দেখানোর জন্য সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সমস্ত প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্র-এমপিদের স্বজন এবং তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে জেতানোর জন্য নির্বাচনের উৎসবমুখর আমেজ ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। 

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে একটি নমনীয় এবং সহনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের বহু মন্ত্রী-এমপির আত্মীয় স্বজনরা আগে থেকেই রাজনৈতিক দল করে এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন কমিটিতে আছে। তাদেরকে আমরা কীভাবে নির্বাচন করতে বাধা দেব। তার এই বক্তব্যের পর চাপে থাকা মন্ত্রী-এমপিরা এখন যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। 

তারা মনে করছেন যে, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী উপজেলা নির্বাচনে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আপাতত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, সেহেতু এখন তাদেরকে জিতিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা যেতে পারে। আর এই কারণেই তারা একের পর এক উপজেলাগুলোতে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। নিজস্ব প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা এলাকায় নানারকম কৌশল গ্রহণ করছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে তাদের পক্ষে আনার জন্য প্রলুদ্ধ করছেন। যা তাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে উপজেলা নির্বাচন এখন কার্যত আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। 

তবে আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা বলছেন, এটা আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ নেতার লড়াই না। উপজেলা নির্বাচন এখন আসলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপির পছন্দের প্রার্থীর সাথে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীর লড়াইয়ের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যেখানে তৃণমূল শক্তিশালী সেখানে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে তারা প্রতিবোধ করতে পারছেন। যেখানে তারা শক্তিশালী নন সেখানে মন্ত্রী-এমপিদের কাছে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন।

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদার বিদেশে চিকিৎসা: পর্দার আড়ালে কী হচ্ছে?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।

এর আগে বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি থেকে কয়েকজন চিকিৎসককে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল এবং তারা একটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাকে স্থিতিশীল করেছিলেন। এবার অবশ্য বিএনপির নেতারা সে পথে হাঁটছে না। বরং তারা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়াই উত্তম এবং বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুরোধ বা দাবিটি আবার সামনে চলে আসছে। 

তবে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে বিএনপি এবং বেগম জিয়ার ভাই বোনের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনে করছেন যে, সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে অনুমতি দেওয়াই আসল কৌশল। সরকারের ওপর যদি চাপ সৃষ্টি করা যায় তাহলে সরকার শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেবে।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এই চাপের মধ্যে শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, কূটনৈতিক অঙ্গনে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সঠিক ভাবে জানানো এবং আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলার জন্য তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করেন। তিনি মনে করেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে যদি বিদেশ না নেওয়া যায় তাহলে তার অবস্থা সংকটাপন্ন। আর এ কারণেই তার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারটাকে রাজনীতির বাইরে রাখা উচিত। আর এ ক্ষেত্রে যে কোন শর্তে বেগম জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার পক্ষে তিনি অবস্থান নিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

শামীম ইস্কান্দার নিজে এবং কয়েকদফা সরকারের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং যে কোনো শর্তে তিনি তার বোনকে বিদেশ নিয়ে যেতে চান চান বলেও আশ্বস্ত করেছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য যদি সরকারকে অনুমতি দেওয়া হয় তা হলে সেখানে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে হবে। এ নিয়ে শামীম ইস্কান্দার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গেও দেখা করেছেন বলে জানা গেছে। আজ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বেগম খালেদা জিয়াকে কোনো এক সময় দেখা করতে যেতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছেন। 

বেগম খালেদা জিয়া এখন আগের অবস্থানে নেই। তিনি যে কোন প্রকারে বিদেশ যেতে চান। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, রাজনীতিতে তার এখন কোন আগ্রহ নেই এবং তিনি নিজেও মনে করেন যে, তার চিকিত্সাটাই উত্তম। তবে এটি আসলে কোন রাজনৈতিক কৌশল নাকি সত্যি সত্যি বেগম জিয়া অসুস্থ সেটি নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। 

চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে অস্ত্রোপচার হয়েছে তাতে তার এক থেকে দেড় বছর স্থিতিশীল থাকার কথা। আর বেগম খালেদা জিয়ার যে বয়স এবং তার যে অন্যান্য শারীরিক অবস্থা তাতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার মতো পরিস্থিতি তার নাই। লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার একটা বয়স লাগে। অন্যান্য রোগ শোক থেকেও মুক্ত থাকতে হয়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া একাধিক রোগে আক্রান্ত। তার কিডনির অবস্থা ভালো না। তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে। তার উচ্চ রক্তচাপ আছে। এছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত। এ রকম পরিস্থিতিকে একজন রোগীর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এটি একটি রাজনৈতিক বাহানা কি না সেটি নিয়েও কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করেছেন। তবে শামীম ইস্কান্দার সরকারের কাছে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে শারীরিক অবস্থা তাতে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। সেটার জন্য তারা সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা সৌদি আরবে যেতে চান।

খালেদা জিয়া   এভারকেয়ার হাসপাতাল   বিএনপি   শামীম ইস্কান্দার   ডা. জাহিদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড সভা শনিবার

প্রকাশ: ০৪:৪০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।

সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।


আওয়ামী লীগ   মনোনয়ন বোর্ড   সভাপতি   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন