গতকাল ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ডয়চে ভেলেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ভারতের বার্তার কথা প্রকাশিত হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার বার্তা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। শুধু তাই নয়, ভারতের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, শেখ হাসিনাকে দুর্বল করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সকলেই। আর এই বার্তার পর আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। গত কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের নার্ভাসনেস কাজ করছিল। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি, একের পর এক বিভিন্ন শর্ত আরোপের ফলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন।
তারা মনে করছিলেন, শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে প্রভাব বিস্তার করছে, তাতে আগামী নির্বাচন করা তাদের পক্ষে সম্ভব হবে কিনা; তারপরও নির্বাচনে যদি বিএনপি না আসে, সে নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা- সর্বোপরি এই ধরনের নির্বাচনের পর কী প্রতিক্রিয়া হবে?
সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব দৃশ্যমান ছিল। নাইজেরিয়ায় নির্বাচনের পর সে দেশের ৬শ’র বেশি কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদদের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। একইভাবে কম্বোডিয়ার নির্বাচনের পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছিল। এ রকম বাস্তবতায় বাংলাদেশে কি হবে?- এ নিয়ে আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের বাইরেও প্রশাসনের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি চোখে পড়ার মতো ছিল। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসন অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। এরকম একটি পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কি ভাবছে? -এটি নিয়ে অনেকের মধ্যে নানামুখী আলোচনা হয়েছিল। অনেকেই মনে করছিল, ভারত শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতমুখী অবস্থান নেবে না। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিলেমিশেই কাজ করবে। অনেকেই মনে করেছেন, ভারত নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবে। পুরো বিষয়টা দর্শকের মত দেখবে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারত তার অবস্থান পরিষ্কার করলো। আর ভারতের এই অবস্থান পরিষ্কার সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষেই যায়। আর এতেই আওয়ামী লীগের নেতারা উল্লসিত। ভারতের এরকম প্রকাশ্য অবস্থানের ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সঙ্কট, তা অনেকটাই কেটে গেল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বিশেষ করে এর ফলে নির্বাচন বানচালের যে প্রচেষ্টা, সেটা ব্যহত হবে। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও বা আগামী নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দাবি করলেও সেটি হালে পানি পাবে না। আর অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই মনে করছেন, ভারতের এই প্রকাশ্য অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত কিছুটা হলেও নমনীয় হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বাংলাদেশের উপর থেকে কমবে।
বিভিন্ন মহল মনে করছেন, ভারত বাংলাদেশে যেমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, তেমনি বাংলাদেশে এখনো অসম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসে, সেটাও নিশ্চিত করতে চায়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, একটি জাতীয় নির্বাচনে যে কোনো দল অংশগ্রহণ করতে পারে, যে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন থেকে দূরেও থাকতে পারে- এটি ওই দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই বার্তাটি আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে উজ্জীবনী বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করছেন, এর ফলে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়বে এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে সংশয় কেটে কেটে যাবে।
এর ফলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। বাস্তবেও হয়েছে তাই। গত কালকের আনন্দবাজার এবং ডয়চে ভেলেতে ভারতের অবস্থানের বার্তাটি প্রকাশিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ শিবিরের চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের এই চাঞ্চল্য শেষ পর্যন্ত নির্বাচন পর্যন্ত অটুট থাকে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
ফুরফুরা আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।