বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা এখন সিঙ্গাপুরে। এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করে দলের তিন শীর্ষ নেতার সিঙ্গাপুর যাওয়া নিয়ে বিএনপির কর্মীদের মধ্যে এখন তোলপাড় চলছে। এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করেই বিএনপি ক্ষান্ত হয়নি, যেকোনো মুহূর্তে সরকারকে ফেলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। আর সেই রকম একটি উচ্চারণ এবং কর্মসূচির পর বিএনপির নেতারা যখন একে একে সিঙ্গাপুর পালাচ্ছেন, তখন কর্মীদের মধ্যে হতাশা, ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে। বিএনপি নেতারা কেন সিঙ্গাপুর পালাচ্ছেন, তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে বিএনপি নেতাদের মধ্যে।
উল্লেখ্য যে, প্রথমে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সিঙ্গাপুরে যান তার চিকিৎসার জন্য। তার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি সিঙ্গাপুরে আছেন। বিএনপির প্রধান প্রধান নেতা বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক। সেই হিসেবে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে জ্যেষ্ঠ নেতা মনে করা হতো এই দুই শীর্ষ নেতার পরেই। তার অনুপস্থিতিতেই স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা দলের হাল ধরবেন, এটাই ছিল প্রত্যাশিত এবং গত কয়েক বছর ধরেই দল পরিচালিত হচ্ছিল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্যান্যবারের মতোই আন্দোলনের মাঝপথে সবাইকে রেখে সিঙ্গাপুরে যান সস্ত্রীক।
তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন। প্রশ্ন উঠেছে যে, আন্দোলনের এই সমযয়ে তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যেতে হলো কেন? দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া যখন দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছেন, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কি সমস্যা হলো দেশে চিকিৎসা নেওয়ার? দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও আজ সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর চলে গেছেন। মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আবার বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাও বটে! কাজেই বিএনপি’র এখন চার জন নেতার সিঙ্গাপুরে অবস্থান নিয়ে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে দলটির ভেতরে। তারা কি আন্দোলন ব্যর্থ হবে, এটা জেনে আগাম পালিয়েছেন? নাকি অন্য কোন কৌশলের জন্য তারা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন? না কি ব্যাপারটি স্রেফ কাকতলীয়, চিকিৎসার জন্যই তারা সিঙ্গাপুর গেছেন? ফিরে আসবেন।
বিএনপি নেতারা বিষয়টি কি ঠিকঠাকভাবে নিতে পারছেন না। এই মেনে নিতে না পারার প্রধান কারণ হলো, বেগম খালেদা জিয়া যখন দেশেই চিকিৎসা গ্রহণ করছেন, তখন নেতারা একের পর এক সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন, সরকার তাদেরকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে। কিসের ভিত্তিতে? তার মানে কি সরকারের সঙ্গে তাদের গোপন সমঝোতা হয়েছে?
এর আগে মির্জা আব্বাসকে একাধিকবার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার বাধা দিয়েছিল। তার পাসপোর্টও আটক করা হয়েছিল। কিন্তু এবার তিনি সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর যাওয়ার অনুমতি পেলেন কিসের ভিত্তিতে? - এই প্রশ্নটি বিএনপির কর্মীদের মধ্যে বেশ বড় আকারেই দেখা দিচ্ছে। কোনো কোনো নেতা অবশ্য মনে করছেন, সিঙ্গাপুরে তারা যাচ্ছেন গোপন শলা-পরামর্শ করার জন্য। তারেক জিয়ার দু’জন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি নিয়মিত সিঙ্গাপুরে যান। এর আগেও ২০১৮’র নির্বাচনের আগে তারেকের প্রতিনিধিরা সিঙ্গাপুরে এসেছিলেন এবং সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল আওয়াল মিন্টু, আমীর খসরু মাহমুদ একসাথে বসে নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। এবারও কি সে রকম কিছু ঘটতে যাচ্ছে?
কোনো কোনো বিএনপির নেতারা মনে করেন, সিঙ্গাপুরে তারেক জিয়ার সাথে তাদের সরাসরি কোন একটা পরামর্শ গ্রহণের বিষয় রয়েছে। কারণ বাংলাদেশে এদের প্রত্যেকের ফোন ইন্টাসেপ্ট হয়। এ কারণে তারা সিঙ্গাপুর গিয়ে নির্বিঘ্নে আন্দোলন এবং নির্বাচনের ব্যাপারে পরামর্শ করার জন্য গেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে, সামনে আন্দোলনের ব্যাপারে তারেক জিয়ার খোলামেলা অবস্থান জানার জন্যই তারা সিঙ্গাপুর সফর করছেন। তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন অধিকাংশ বিএনপি নেতা। তারা মনে করেন, এই যুগে তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া তারেক জিয়ার এখন কোন বৈধ পাসপোর্ট নেই। তিনি সিঙ্গাপুরে আসতে পারেন না। যদি তারা তারেক জিয়ার সাথে কথা বলতে যেতেন, তাহলে তাদেরকে লন্ডনে যেতে হতো, সিঙ্গাপুরে নয়। কাজেই গোপন পরামর্শের জন্য এই তিনি নেতা সিঙ্গাপুরে গেছেন, এটি ঠিক নয়।
তবে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান গ্রহণের জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং মির্জা আব্বাস সিঙ্গাপুরে গেছেন কিনা, তা নিয়ে বিএনপিতে আলাপ-আলোচনা ভালোই আছে। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন, আসলে এক দফা আন্দোলন শেষ পর্যন্ত হবে না, বিএনপি নির্বাচনে যাবে এবং নির্বাচনের আগে শরীরটা ঝালাই করে নেওয়ার জন্যই তারা সিঙ্গাপুরে গেছেন। খুব কমসংখ্যক বিএনপি নেতা মনে করছেন, এটা কাকতালীয় ব্যাপার, তারা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়েছেন, অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য যেতেই পারেন, এটির মধ্যে দোষের কিছু নেই।
কিন্তু এক দফা আন্দোলন ঘোষণার পর দলের গুরুত্বপূর্ণ সব নেতা দেশের বাইরে চলে যাওয়া বিএনপি’র জন্য একটা বড় ধরনের আঘাত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে আরও অন্তত তিনজন রয়েছেন, যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ, একজন রয়েছেন দেশের বাইরে। এ অবস্থায় বিএনপির এক দফা আন্দোলনও যে রোগাক্রান্ত হয়েছে, সে ব্যাপারে বিএনপি’র কোনো কর্মীরই কোনো সন্দেহ নেই।
কর্মী এতিম বিএনপি শীর্ষ নেতা সিঙ্গাপুর পালাচ্ছেন
মন্তব্য করুন
পঞ্চগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে পৌনে চার লাখ টাকার সম্পদের মালিক ছিলেন। সদর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে তিনি সাত কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। শুধু আমিরুল ইসলাম নন, দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বাচিত অনেক চেয়ারম্যানই গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁদের সম্পদ বেড়েছে শতগুণেরও বেশি।
চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রদর্শিত সম্পদের চেয়ে প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ আরো অনেক বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে। এই চেয়ারম্যানরা আবারও এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই নির্বাচন প্রভাবিত করতে অর্থ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যানদের অনেকে বলছেন, তাঁরা বৈধভাবে ব্যবসা করে এ সম্পদের মালিক হয়েছেন। চেয়ারম্যান থাকাকালে তাঁরা কোনো অন্যায় কাজে যুক্ত হননি।
জানতে চাইলে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, নির্বাচিত হলেই ধনী হওয়ার একটা সোপানে পা দেওয়া যায়। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান জনপ্রতিনিধিরা।
উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো এর প্রমাণ।
আতার অর্থ বেড়েছে ১৭৬ গুণ, রয়েছে দুদকের মামলা
কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এবারও তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। গত পাঁচ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিপুল হারে বেড়েছে।
হলফনামার তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে আতার নগদ টাকা ছিল পাঁচ লাখ এবং ব্যবসার জামানত ছিল ৭২ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
বর্তমানে তাঁর ব্যাংকে জমা ও নগদ অর্থের পরিমাণ সাত কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া এফডিআর রয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে আতার অর্থ বেড়েছে ১৭৬ গুণ। এ ছাড়া পাঁচ বছর আগে তিনি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেট কারের মালিক ছিলেন। বর্তমানে তাঁর রয়েছে ৯০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাডো গাড়ি।
আতার অস্থাবর সম্পদের পাশাপাশি স্থাবর সম্পদও বেড়েছে। ২০১৯ সালে তাঁর স্থাবর সম্পদ ছিল ৬৯ লাখ ৮২ হাজার টাকার। বর্তমানে তিনি সাত কোটি ১৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক। গত ১১ মার্চ আতাউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সাম্মিয়া পারভীনের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে মামলা করেছে দুদক। ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা ওই মামলায় তাঁরা এখন জামিনে আছেন।
এ বিষয়ে আতাউর রহমানের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চেয়ারম্যান হয়ে কোটিপতি আমিরুল
২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো পঞ্চগড় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন আমিরুল ইসলাম। ওই সময় দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে তাঁর স্থাবর সম্পদ ছিল তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকার। এর মধ্যে ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ২.৫ একর কৃষিজমি এবং একটি হাসকিং মিল ও সংলগ্ন বাড়ির মূল্য তিন লাখ টাকা। তিনি আবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুসারে বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পদের পরিমান সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গত পাঁচ বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১৯১.২০ গুণ।
হলফনামা অনুসারে বর্তমানে আমিরুল ইসলামের পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের পঞ্চগড় পৌরসভার তেলিপাড়া ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় বিসিক শিল্পনগরীতে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা, ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের ৫৭ শতক বসতভিটা, এক কোটি ২৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ডুপ্লেক্স ভবন, চার লাখ টাকা মূল্যের একটি টিনশেড ভবন এবং পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১.৩১ একর জমি রয়েছে।
স্থাবর সম্পদের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে আমিরুল ইসলামের। ২০১৯ সালের হলফনামা অনুসারে তিনি ২০ লাখ ২০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক ছিলেন। বর্তমানে তিনি এক কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক।
হলফনামা অনুসারে, ২০১৯ সালে আমিরুল ইসলামের বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক থেকে আমার একটি বড় ঋণ নেওয়া আছে। এ ছাড়া গরুর খামার, অটো ব্রিকস ফ্যাক্টরি, রাইস মিল ইত্যাদির মাধ্যমে আমি এসব সম্পদ গড়েছি। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।’
মুকুল ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুল এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে মুকুলের নিজের ও স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ। ২০১৯ সালে মুকুলের নগদ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা থাকা টাকার পরিমাণ ছিল এক লাখের কিছু বেশি। বর্তমানে তা কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
হলফনামার তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে জিয়াউল হাসান মুকুলের নগদ অর্থ ছিল ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ছয় হাজার ৬৮৫ টাকা। ২০১৯ সালে তাঁর স্ত্রী রেখা আক্তার বানুর হাতে নগদ কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে চার লাখ ২৬ হাজার ৩৪৪ টাকা। ২০১৯ সালে মুকুলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৮৫ হাজার ৭৫৩ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। সে হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১০৫ গুণ।
জানতে চাইলে জিয়াউল হাসান মুকুল বলেন, ‘আইনজীবীর ভুলে ২০১৯ সালের সঙ্গে ২০২৪ সালের হলফনামার তথ্যে গরমিল দেখা দিয়েছে। আসলে আমার এত সম্পদ নেই।
সম্পদ বেড়েছে আরো যেসব উপজেলা চেয়ারম্যানের
হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অর্থ-সম্পদের পরিমাণ বিপুল বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামশুদ্দোহা চৌধুরী, সিরাজগঞ্জের একাধিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ময়মনসিংহ ফুলপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল, বগুড়া সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান, বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর এবং সিরাজগঞ্জের একাধিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
হলফনামা তথ্যা চেয়ারম্যান সম্পদ
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা আজ সোমবার বিকেল
৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক
কার্যালয়ে এ সভা ডাকা হয়েছে।
রবিবার (৫ মে) আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত
এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সৃভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদের।
সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে
অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিনের পতাকা ছাত্রলীগ
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান
পদে প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুর ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্র
বাতিল করেন।
জানা যায়, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সদর
ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে সেতুমন্ত্রীর
ভাইসহ চারজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন-
১। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন
২। উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ
গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল
৩। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান
সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল
৪। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি তিনজনের মনোনয়ন
বৈধ হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর
তথ্য গোপন করায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সংশোধন
পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর আপিলের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন বলেন, ‘আমার নামে যে মামলা
ছিল তা আমার জানা ছিল না। এ ছাড়া আয় বিবরণীর হিসাব দেওয়া হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা
তা খেয়াল করেননি। আপিল করার সুযোগ আছে। আমি আপিল করবো। আশা করি আমার মনোনয়ন বৈধ হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই মন্ত্রী। স্বজন বলতে সন্তান-স্ত্রীকে
বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটা ক্লিয়ার করেছেন। আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবও সেটা
ক্লিয়ার করেছেন। আশা করি স্বজনের ভুল ব্যাখ্যা থেকে সবাই সরে আসবে’।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তফসিল
অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ হবে
আগামী ২৯ মে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান
পদে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি সবার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের শাহদাত হোসেন
মন্তব্য করুন
পঞ্চগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে পৌনে চার লাখ টাকার সম্পদের মালিক ছিলেন। সদর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে তিনি সাত কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। শুধু আমিরুল ইসলাম নন, দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বাচিত অনেক চেয়ারম্যানই গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁদের সম্পদ বেড়েছে শতগুণেরও বেশি।