শমসের মবিন চৌধুরী, জাঁদরেল কূটনীতিক পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া যখন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে তখন তিনি বিএনপির অন্যতম থিংক ট্যাংক হিসাবে পরিচিতি পান। বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল সর্বজন বিদিত। কিন্তু তারেক জিয়া যখন বিএনপির কর্তৃত্ব নিতে শুরু করেন, তখন আস্তে আস্তে শমসের মবিন চৌধুরী নিজেকে বিএনপি থেকে গুটিয়ে নেওয়া শুরু করেন।
এর
কারণ হলো তারেক জিয়ার
দুর্ব্যবহার, শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ এবং কোন
কিছু না জেনেই পণ্ডিতি
করা। একজন সিজন ডিপ্লোম্যাট এই ধরনের অর্বাচীন
বালকের অর্ধ শিক্ষিত ও
কথাবার্তা পছন্দ করতে পারেননি। আর
এই কারণেই শেষ পর্যন্ত তিনি
বিএনপি ছেড়ে চলে যান।
এখন তিনি তৃণমূল বিএনপির
চেয়ারপারসন হিসেবে
দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
বিএনপির
আরেক পোড় খাওয়া ত্যাগী নেতা তৈমুল আলম
খন্দকার। তিনি ছিলেন মাঠের
রাজনীতিবিদ। রাজনীতির মাধ্যমেই তিনি বেড়ে উঠেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি নির্যাতিত
হন, কারাবরণ করেন দীর্ঘদিন। খালেদা
জিয়ার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ
সম্পর্ক ছিল। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে
তিনি একটি বড় ফ্যাক্টর। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে
তিনি স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি
বলেছিলেন যে এটির সাথে
দলের কোনো সম্পর্ক নেই।
রাজনীতির প্রয়োজনে তাকে নির্বাচন করতে
হচ্ছে। কিন্তু লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া তার কোন কথাই
শোনেননি। বরং নির্বাচন করার
অপরাধে তাকে দল থেকে
বহিষ্কার করেন। সেই সময় তারেক
জিয়া তার সঙ্গে খুবই
নিম্নমানের আচরণ করেছেন। আজেবাজে কথা
বলেছেন। একজন প্রবীণ পোড়
খাওয়া রাজনীতিবিদ
একজন বালকের এই সমস্ত কথাবার্তায়
আহত হয়েছেন, মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। একারণেই তিনি এখন বিএনপি ছেড়ে
নতুন ঠিকানা খুঁজে নিলেন।
বিএনপিতে
এরকম বহু নেতা আছে
যারা তারেকের দুর্ব্যবহার, অত্যাচার গালাগালের কারণে বিএনপি ত্যাগ করেছেন। খুলনার বিএনপি নেতা এবং সাবেক স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী তাদের মধ্যে অন্যতম। এখনো বিএনপিতে অনেক
নেতা আছেন যারা নিষ্ক্রিয়
শুধুমাত্র তারেক জিয়ার বেয়াদবি এবং অধঃত্বপূর্ণ কথাবার্তার
জন্য।
খুলনার
নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু, চট্টগ্রামের নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান কিংবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর
অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনরা তারেক জিয়ার
অপমানের গ্লানি সইতে না পেরে
নিজেরাই একা একা নীরবে
নিভৃতে আর্তনাদ করেন। এরকম নেতার সংখ্যা
বিএনপিতে কম নয়।
বিএনপির
একজন নেতা নাম প্রকাশ
না করার শর্তে বলছিলেন
যে, তারেক জিয়া যে ভাষায় কথা
বলেন তা চাকর বাকরদের
সাথেও আমরা বলি না।
তার মুখের ভাষা এত গর্হিত
এবং অরুচিকর যে তা প্রকাশ্যে
বলা যায় না। সবচেয়ে
বড় সমস্যা হলো যে, তিনি
রাজনীতি না বুঝেই পাণ্ডিত্ব
করেন, সব বুঝে ফেলার
ভান করেন। এটি একজন রাজনীতিবিদের
জন্য ভয়ংকর প্রবণতা বলেও মনে করেন
বিএনপির ওই নেতা। আর
এ সমস্ত কারণেই বিএনপি থেকে বেরিয়ে গেছেন অনেক নেতা।
অধ্যাপক
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর
কথায় ধরা যাক। এই
অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন
নেতা, প্রথম মহাসচিব। জিয়াউর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার সাথে
যে আচরণ তারেক জিয়া
করেছে, সেই কারণেই নিজের
হাতে গড়া সংগঠন ছেড়ে
তিনি চলে যেতে বাধ্য
হয়েছিলেন।
একই
রকম অবস্থা কর্নেল অলি আহমেদের। জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ এই
ব্যক্তি তারেকের অত্যাচারেই (এলডিপি) নামে নতুন রাজনৈতিক
দল গঠন করেন। আর
এখন তৃণমূল বিএনপি গঠিত হওয়ার পর যারা তারেক
জিয়ার অসদাচরণ এবং বাজে ব্যবহারের
কারণে ক্ষুব্ধ তারা যেন নতুন ঠিকানা
পাচ্ছেন।
এখনো
তারেক জিয়ার স্বৈরতান্ত্রিক দল পরিচালনায় কোনঠাসা
হয়ে আছেন অনেকেই। অনেকেই
বিকল্পের সন্ধানে। তাদের জন্য বিকল্প ঠিকানা
হল তৃণমূল বিএনপি।
ধারণা
করা হচ্ছে যে শুধুমাত্র বিএনপিতেই
কোণঠাসা বা তারেকের উপর
বিরক্ত ব্যক্তিরা নন, অনেক নেতারাই
যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে আছেন যেমন।
এডিপি, বিকল্প ধারাসহ একাধিক রাজনৈতিক দল, বিএনপি থেকে
লোকজন যেয়ে যে রাজনৈতিক
দলগুলো গঠিত হয়েছিল সেই
রাজনৈতিক দলগুলো তৃণমূল বিএনপিতে আসতে পারে। বিএনপির
আসল প্ল্যাটফর্ম হতে পারে এই
রাজনৈতিক দলটি।
তারেক জিয়া রাজনীতি তৃণমূল বিএনপি
মন্তব্য করুন
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত
চেয়ারম্যানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ
করবে বিএনপি।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয়
কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি
নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন দলের স্থায়ী
কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
দিদার বলেন, সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সমাবেশ সফল করতে ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ বিএনপি কয়েক দফায় যৌথ সভাও করেছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ও দ্বাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা। গ্রেপ্তার এড়াতে
কেন্দ্রীয় অসংখ্য নেতা ছিলেন আত্মগোপনে। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে
অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী কারাবন্দি হয়েছেন। গ্রেপ্তার
ও আটক থেমে নেই। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে উপজেলা নির্বাচন; কিন্তু বিএনপি এই উপজেলা নির্বাচনও
বর্জন করেছে। পাশাপাশি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকতে সারা দেশে লিফলেট বিতরণসহ কর্মিসভা
করছে।
বিএনপির নেতাদের দাবি, তাদের আন্দোলন শেষ হয়নি; বিরতি চলছে। হামলা-মামলায়
ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে নানামুখী তৎপরতা চলছে। যে কোনো সময় আন্দোলনের
বড় কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তার আগে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের আরও
ঐক্যবদ্ধ এবং সক্রিয় করা হবে।
এদিকে নতুনভাবে গ্রেপ্তার বন্ধ এবং কারাবন্দিদের মুক্তির দাবিতে
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি প্রদানের চিন্তা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। গত বুধবার
রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়সহ একাধিক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। তা ছাড়া আজ এবং
আগামীকালের সমাবেশের পর ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে
জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো। এর
আগে গত ১ মে শ্রমিক দিবসে বড় ধরনের শোডাউন করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ১৯টি শর্তে নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করার
অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশন্স) মো.
আবু ইউসুফের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে এই অনুমতি দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিম
পারভীনের মরদেহ তার নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ মে) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনের
নিকটস্থ শহর ওয়েষ্ট রক্সবুরির নিজ বাড়ির দরজা ভেঙ্গে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি
সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বোস্টনের আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান গণি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নাসিম পারভীন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
একে আব্দুল মোমেনের সাবেক স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই বাড়িতে একাই বসবাস করতেন।
তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে ম্যাসাচুসেটস
অঙ্গরাজ্যের (বোস্টনের নিকটস্থ) ওয়েষ্ট রক্সবুরির বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করতেন।
পরে ছেলেমেয়েরা চাকুরির জন্য অন্যান্য শহরে বসবাস শুরু করলে তিনি ওই বাড়িতে একাই থাকতেন।
ছেলে-মেয়েদের ব্যস্ততার কারণে মাঝে মধ্যে মায়ের সঙ্গে দেখা হতো।
সর্বশেষ মায়ের সঙ্গে তাদের ফোনে কথা হয় ২রা মে বৃহস্পতিবার। এরপর অনেক চেষ্টা করেও
তারা আর মাকে ফোনে পাননি। এতে তাদের সন্দেহ হলে মঙ্গলবার বিকেলে ওয়েষ্ট রক্সবুরির বাসায়
গিয়ে কলিং বেল টিপে এবং দরজায় ধাক্কা দিয়ে সাড়া না দিলে পুলিশে খবর দেন তার ছেলে। পুলিশ
এসে দরজা ভেঙ্গে নাসিম পারভীনের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তবে তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
নাসিম পারভীনের দেশের বাড়ি পাবনা জেলায়। পুলিশের কাছ থেকে মরদেহ হস্তান্তরের পর তার নামাজে জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হবে বলে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির নেতারা জানিয়েছেন।
নিউ ইংল্যান্ড মহিলা আওয়ামী লীগ লাশ
মন্তব্য করুন
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেড় দশকের মধ্যে এবারের ভোটের হার সর্বনিম্ন।
বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মুখে দলীয় প্রতীক না দিয়ে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছিল আওয়ামী
লীগ। তবুও ভোটারদের উপস্থিতির হার বেশি ছিল না।
বিগত তিনটি উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তবে
এবার ভোটের হার সবচেয়ে নিচে নেমেছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ১৩৯টি উপজেলার মধ্যে ৮১টিতেই
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের ২০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে।
১৫ বছর আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯
সালে তৃতীয় উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। এরপর ২০১৪ সালে
অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬১ শতাংশের মতো। আর ২০১৯ সালে
প্রথমবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। এবার
প্রথম ধাপে ভোটের হার ৩৬ শতাংশে নেমে এসেছে। পরপর চারটি উপজেলা নির্বাচনে ভোট কমেছে
ধারবাহিকভাবে। এবার ভোটের হার সর্বনিম্ন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার কম হওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা
চলছিল। এমন পটভূমিতে উপজেলায় ভোটের হার আরও কম পড়েছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের অনীহার
বিষয়টি নতুন করে উঠে আসলো।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হিসাবে, বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উপজেলা
পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে
ইভিএমে ভোটের হার ৩১ দশমিক ৩১ শতাংশ আর ব্যালটে ৩৭ দশমিক ২২ শতাংশ। প্রসঙ্গত, ইসির
হিসাবেই গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ।
বেশির ভাগ উপজেলায় খুব কম ভোট পেয়েও চেয়ারম্যান পদে বসতে যাচ্ছেন
নির্বাচিত ব্যক্তিরা। প্রথম ধাপের ১৩৯টি উপজেলার মধ্যে ৮১টিতে ২০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে
যাঁরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন মোট ভোটারের ১০ শতাংশের কম
ভোট পেয়েছেন। অবশ্য প্রদত্ত ভোটের হিসাবে তাঁদের ভোট পাওয়ার হার আরও বেশি। এর বাইরে
দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন।
‘নৌকা প্রতীক’ না দেওয়ার পেছনে উপজেলা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক
করাও অন্যতম লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগের। কিন্তু সেই লক্ষ্যও পূরণ করা যায়নি। প্রথম ধাপের
৬৩টি উপজেলায় তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এসব উপজেলায় বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান ১০ হাজারের বেশি।
মাত্র ১৩টি উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে বেশি। এই উপজেলাগুলোতে
ব্যবধান ১ হাজার ভোটের কম। ৩১টি উপজেলায় ভোটের ব্যবধান হয়েছে ৩ হাজারের কম।
সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধান হয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায়। সেখানে
মোট ভোটার ছিলেন ৬ লাখ ১১ হাজার ৬১০ জন। ভোট পড়েছে ৩৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। বিজয়ী প্রার্থী
আওয়ামী লীগের নেতা শাহিন আহমেদ পেয়েছেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৬ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী
আলতাব হোসেন পেয়েছেন ৬০ হাজার ২৯৩ ভোট। ভোটের ব্যবধান হয়েছে ১ লাখের বেশি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জাতীয় সংসদ বা স্থানীয় সরকারব্যবস্থার
নির্বাচন—সব ধরনের ভোটেই মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এর প্রতিফলন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের পর উপজেলায়ও দেখা যাচ্ছে। ভোটারের অনীহার বিষয়টি এখন আওয়ামী লীগের নেতাদেরও
অনেকে স্বীকার করেন। এর কারণ কী এবং দায় কার—এ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক
রয়েছে। তবে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হচ্ছে না এবং উপজেলা নির্বাচনও হয়নি—সেটিই
ভোটারদের নির্বাচনবিমুখ করার অন্যতম একটি কারণ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দুই দলই তা মনে
করছে।
অন্যদিকে বিএনপি দায় দিচ্ছে ক্ষমতাসীনদের ওপর। দলটি নির্দলীয় সরকারের
দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করছে। এই দাবিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনও
বর্জন করেছে। যদিও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে দলটির কিছু নেতা অংশ
নিয়েছেন। বিএনপির নেতারা বলছেন, ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার পেছনে নির্বাচন নিয়ে মানুষের
অনাস্থার বিষয়টি কাজ করেছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির অভিযোগ মানতে রাজি নন। তারা বলছেন, এবার
মোট চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরের ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি
বাড়ানোর চেষ্টা তারা করবেন।
যদিও ভোটের এই হার নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বুধবার (৮ মে) সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা
ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে—এ বিষয়টিকেই তাঁরা গুরুত্ব দিতে চাইছেন।
তবে নির্বাচনব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের অনাস্থাকেই
মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, ‘মানুষ শঙ্কায় থাকেন ভোট দিতে
যেতে পারবেন কি না; গেলেও পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিতে পারবেন কি না; ভোট দিলেও সেটা গণনা
হবে কি না। এ অনাস্থার কারণে মানুষ এখন ভোটবিমুখ’।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার গণমাধ্যমকে
বলেন, নির্বাচনের প্রতি মানুষের অনাস্থার প্রতিফলন এই ভোটের ফলাফল। আর এই অনাস্থার
কারণে মানুষ এখন ভোটবিমুখ।
উপজেলা নির্বাচন ভোটের হার আওয়ামী লীগ বিএনপি নির্বাচন কমিশন
মন্তব্য করুন
বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি
সম্মান জানিয়ে তার ছবি সম্বলিত একটি বড় ব্যানার টানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের উদ্যোগে এ ব্যানার টানানো হয়।
মায়েদের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার
বিশ্ব মা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ বছর রোববার (১২ মে) পালিত হবে বিশ্ব মা দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত পোস্টার
উন্মোচন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয়
কার্যালয়ের সামনে থেকে আশপাশের এলাকায় পোস্টার লাগিয়ে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, যুবদলের
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইমতিয়াজ বকুল প্রমুখ।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দেয়ালে খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত পোস্টার টানান যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করবে বিএনপি। শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেড় দশকের মধ্যে এবারের ভোটের হার সর্বনিম্ন। বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মুখে দলীয় প্রতীক না দিয়ে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছিল আওয়ামী লীগ। তবুও ভোটারদের উপস্থিতির হার বেশি ছিল না। বিগত তিনটি উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তবে এবার ভোটের হার সবচেয়ে নিচে নেমেছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ১৩৯টি উপজেলার মধ্যে ৮১টিতেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের ২০ শতাংশের কম ভোট পেয়ে।
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।