বিএনপি এখন একদফা আন্দোলন করছে। তাদের একদফা আন্দোলনের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর সহানুভূতি রয়েছে এটি আর কোন গোপন বিষয় নয়। বিএনপি নেতারাও পরিষ্কার বলছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের পক্ষে। অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য সরকারকে চাপে ফেলার জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে তারা দাবি করছেন।
কিন্তু
তারপরেও সরকার নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেবে
এমনটি আশা করছেন না
বিএনপির নেতারা। বরং বিএনপির নেতারা
মনে করছেন যতক্ষণ পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষে
আছে এবং বিএনপির ব্যাপারে
নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে, ততক্ষণ
পর্যন্ত এই আন্দোলনের বিজয়
অসম্ভব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
যদি ভিসা নিষেধাজ্ঞার পর
আরো কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করে, এমনকি অর্থনৈতিক অবরোধও ঘোষণা করে তারপরও এই
নির্বাচন সরকার করে ফেলবে। কারণ
সরকার একটি বিকল্প বলয়
তৈরি করেছে।
ভারত,
চীন, রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো
সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার আগামী নির্বাচন করে ফেলবে এবং
সেই নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহন
না করে তাহলে বিএনপির
জন্য আরেকটি বড় ধরনের ধাক্কা
অপেক্ষা করছে বলেও বিএনপির
নেতারা মনে করে।
এখান
থেকে বের হওয়ার একটা
মাত্র উপায় তারা খুঁজে পাচ্ছে।
তা হল ভারতের মন
জয় করা। ভারতকে যদি
তারা নিরপেক্ষ করতে পারে তাহলে
সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ
করা অনেক সহজ হবে।
আর এই কারণেই বিএনপি
তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছে।
অক্টোবরে
বিএনপির যে বড় ধরনের
কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল
সেই কর্মসূচি ঘোষণা থেকে তারা সরে
এসেছে। বরং আগের ধারায়
তারা সভা-সমাবেশ, রোডমার্চ,
পদযাত্রার মতো কর্মসূচির মধ্যেই
তাদের আন্দোলন সীমিত রেখেছে।
বিএনপির
একাধিক নেতা বলছেন যে,
সামনে শারদীয় দুর্গা উৎসব। দুর্গা পূজার সময় যদি কোনো
রাজনৈতিক কর্মসূচি হয় কিংবা খুব
বড় ধরনের গোলযোগ হয় তাহলে ভারত
ক্ষুব্ধ হতে পারে। এমনিতেই
বিএনপির উপর ভারতের কোন
আস্থা এবং বিশ্বাস নেই।
তারপর এ ধরনের কোন ঘটনা
ঘটলে তার সমস্ত দায়
দায়িত্ব সরকার বিএনপির উপর বর্তাবে, এমন
আশঙ্কা থেকেই বিএনপি এখন ধীরে চলো
নীতি গ্রহণ করছে।
এছাড়াও
ভারতের মন জয় করার
জন্য আওয়ামী লীগই সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন
করে এমন বক্তব্য এখন
বিএনপির নেতারা জোরালো করেছেন। বিএনপির বিভিন্ন নেতারাই সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু নিপীড়ন
করে এবং সংখ্যালঘুদের ব্যবহার
করে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন।
বিএনপি প্রথমবারের মতো জন্মাষ্টমী উৎসব
পালন করেছে এবং জন্মাষ্টমীর উৎসবে
বিএনপি মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বক্তব্য রেখেছেন।
কিন্তু
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে,
ভারতের সাথে বিশ্বস্ততার সম্পর্ক
করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট
নয়। বরং ভারত বিএনপিকে
যে ৩ দফা পরামর্শ দিয়েছিল
তার একটিও বিএনপি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন
করেনি। যদিও বিএনপির পক্ষ
থেকে বলা হচ্ছে তিন
দিন পরামর্শের মধ্যে জামাতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের বিষয়টি তারা চূড়ান্ত ফয়সালা
করে ফেলেছে। জামাতের সাথে বিএনপির কোনো
আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই।
কিন্তু
বিভিন্ন সূত্র বলছে, জামাতের সঙ্গে বিএনপির এখনো যোগাযোগ রয়েছে
এবং জামাত বিএনপির সঙ্গে মিলিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করছে। কোথাও কোথাও জামাত বিএনপির স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তাছাড়া তারেক জিয়ার নেতৃত্ব এবং দলের ভিতর
শুদ্ধি অভিযান করে যারা পাকিস্তান
পন্থী এবং ভারত বিরোধী
তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
আর এই সমস্ত কারণেই ভারত বিএনপিকে আস্থা
এবং বিশ্বাসের মধ্যে আনতে পারছে না।
ইতিমধ্যে
ভারতের থিংক ট্যাঙ্কগুলো বাংলাদেশের
নির্বাচনের ব্যাপারে বিভিন্ন রকম কথাবার্তার মধ্যে
শুরু করেছে। তাতে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা
এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশের কথাই বেশি করে
বলা হচ্ছে। ভারত এখন পর্যন্ত
মনে করে যে বাংলাদেশে
যদি ক্ষমতাকেন্দ্রের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে
ভারত ক্ষতিগ্রস্ত
হবে এবং বর্তমান সরকার
ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে এবং জঙ্গিবাদের
উত্থান ঘটবে।
তাই
ভারতের মন জয় করার
জন্য বিএনপি আর কতটুকু ছাড়
দেবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ভারত বিএনপি রাজনীতি বাংলাদেশ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।