আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ওই দিনই আন্দোলনের মহাযাত্রা শুরু হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি ঘরে ফিরবে না। বিএনপির এই মহাযাত্রা কি, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম আলাপ আলোচনা চলছে।
বিএনপি
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটি আংশিক কর্মসূচি।
আরো বিস্তারিত কর্মসূচি পরে ঘোষণা করা
হবে। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো
বলছে, বিএনপি ২৮ অক্টোবর থেকে
ঢাকায় অবস্থান গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছে। ওই
মহাসমাবেশের পর তারা সরকারকে
একটি আল্টিমেটাম দেবে। সেই আল্টিমেটামের মধ্যে
যদি সরকার তাদের দাবি মেনে না
নেয়, তাহলে তারা সবকিছু বন্ধ
করে দেবে।
২৮ অক্টোবর থেকে পল্টনে বিএনপির
কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের স্টাইলে জনতার মঞ্চ করার পরিকল্পনা
গ্রহণ করেছে। গতকালের জনসভার পর থেকেই বিএনপি
বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। বিএনপির
কৌশল হল ১৯৯৬ সালে
নিদ্রলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ জাতীয় প্রেস
ক্লাবের সামনে যেভাবে জনতার মঞ্চ করেছিল এবং
ওই জনতার মঞ্চের মাধ্যমে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে গিয়েছিল,
ঠিক তেমনিভাবে বিএনপিও নয়া পল্টনে একটি
মঞ্চ করতে চায়। যে
মঞ্চে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যোগ দিবেন এবং
তারা আন্দোলনের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করবেন।
জনতার
মঞ্চ কর্মসূচির ধরন হবে এরকম
যে তারা সরকারের উপর
অনাস্থা জ্ঞাপন করবেন এবং সরকার বিরোধী
চূড়ান্ত আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম হবে জনতার মঞ্চ।
জনতার মঞ্চের মাধ্যমে সরকারকে চূড়ান্ত বার্তা দেয়া হবে। একবার
জনতার মঞ্চ যদি গঠন
করা যায় সেক্ষেত্রে নির্বাচনে
তফসিল ঘোষণা করা কিংবা না
করা ইত্যাদি বিষয়গুলো গৌন হয়ে যাবে।
বিএনপির
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এই জনতার মঞ্চে
চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, পেশাজীবী কর্মকর্তা প্রমুখ যোগদান করবে, এমনকি সরকারি কর্মকর্তারাও সেখানে যেন যোগদান করে,
সে ব্যাপারে যোগাযোগ করা হচ্ছে। একাধিক
সরকারি কর্মকর্তা জনতার মঞ্চকে নিয়ে কাজ করছেন বলেও
বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে।
বিএনপির বিভিন্ন মহল বলছে যে
এই জনতার মন্ত্রই হবে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম।
পরবর্তীতে জনতার মঞ্চকে লক্ষ্য করে সারা দেশ
থেকে পদযাত্রা হবে এবং সকলে
এসে পল্টনে জমায়েত হবেন। আস্তে আস্তে এমন একটি পরিস্থিতি
তৈরি করা হবে যেখানে
সরকারের পদত্যাগ ছাড়া আর কোন উপায়
থাকবে না। এইরকম পরিস্থিতিতে
সরকার নির্বাচনও করতে পারবে না।
অর্থাৎ
বিএনপি এখন সম্পূর্ণভাবে ১৯৯৬
সালের জানুয়ারিতে গঠিত জনতার মঞ্চের
মডেলটি অনুসরণ করতে চাইছে। ওই
জনতার মঞ্চের কারণেই ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন
হয়নি এবং নির্বাচনের পর
গঠিত সংসদও টিকতে পারেনি। বিএনপিও বলছে সরকার যদি
নির্বাচনও করে ফেলে তাহলে
তাদের কোনো ক্ষতি নেই।
কারণ নির্বাচনের পর ওই পার্লামেন্ট
টিকবে না এবং ওই
সরকারও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে
না। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মহল
এই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না। এর
ফলে সরকারের পতন ত্বরান্বিত হবে।
এখন
দেখার বিষয় যে আওয়ামী লীগকে
অনুসরণ করে বিএনপি আন্দোলনে
সফল হতে পারে কিনা।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।