আওয়ামী লীগের মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। যখন বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে সরকার যে কোনও মূল্যে সংবিধান সমুন্নত রাখা এবং সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী নির্বাচনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান রেখেছে। ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী লীগের ভিতর থেকে একটি চক্র আবার ষড়যন্ত্র করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ষড়যন্ত্রের আকার, প্রকৃতি, অবয়ব সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
কিছু
কিছু আওয়ামি লীগের নেতাদের গোপন তৎপরতা নিয়ে
দলের মধ্যে ক্ষোভ এবং অস্বস্তি তৈরি
হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের
উপদেষ্টামণ্ডলীর দুজন প্রভাবশালী, আওয়ামী
লীগের অন্তত তিন জন সংসদ
সদস্যের নাম এসেছে। এই
সমস্ত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আওয়ামী
লীগের একজন এমপি মার্কিন
রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গেও
সাক্ষাৎ করেছেন। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে এক
এগারোতে যারা সংস্কারপন্থি হিসেবে
পরিচিত ছিলেন, তাদেরই একটি অংশ এই
ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত।
এই ষড়যন্ত্র থেকে তারা কী
লক্ষ্য অর্জন করতে চান তা
এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে বিভিন্ন
সূত্র বলছে যে, পশ্চিমা
দেশগুলো আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা সংবেদনশীল, সহনীয়
এবং যুক্তিবাদী তাদের সাথে একটি সুসম্পর্ক
তৈরি করতে চাইছে। যে
সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা একটি
রাজনৈতিক সমঝোতার পথে দেশকে নিয়ে
যেতে চায়। এ কারণে
আওয়ামী লীগের ওই সমস্ত নেতাদের
সঙ্গে বিভিন্ন মহল এখন যোগাযোগ
করছে। তবে আওয়ামী লীগের
যারা এই ধরনের গোপন
শলা পরামর্শে যুক্ত তারা কেউই দলে
প্রভাবশালী নন। কিন্তু এটি
নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের চাপা
ক্ষোভ এবং অসন্তোষ দেখা
দিয়েছে।
উল্লেখ্য
যে, ২০০৬ সালে নির্বাচন
নিয়ে যখন এক অচলাবস্থা
তৈরি হয়েছিল তখনও আওয়ামী লীগের
এই নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন
মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং বিভিন্ন মহলের
পরামর্শে এবং প্ররোচনায় আওয়ামী
লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ছিল এবং
তাদের কারণেই সেই সময় এক-এগারো এসেছিল বলে অনেকে মনে
করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, ২০০৭ সালে এক-এগারো আসার পেছনে তৎকালীন
ক্ষমতাসীন বিএনপির কিছু নেতা যেমন
জড়িত ছিল, তেমনই আওয়ামী
লীগের কিছু নেতাও জড়িত
ছিল। তারা মনে করেছিল
যে, নির্বাচনের চেয়ে বরং একটি
অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা নিরাপদ।
সেই সময় আওয়ামী লীগ
একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগ
সভাপতি সুস্পষ্টভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সীমারেখা ৯০ দিনের মধ্যে
সীমিত রাখার পক্ষে ছিলেন এবং যখন তত্ত্বাবধায়ক
সরকার ৯০ দিনের মধ্যে
নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানায়,
তখন শেখ হাসিনাই প্রথম
তার প্রতিবাদ করেছিলেন।
এবার
উল্টোচিত্র হয়েছে। বিএনপি একটি দীর্ঘমেয়াদি তত্ত্বাবধায়ক
সরকার চায় এবং তারা
ক্ষমতায় আসতে চায় না।
বরং তারা মনে করে
যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটানোই তাদের
প্রাথমিক বিজয়। এ লক্ষ্যে তারা
এক দফা আন্দোলন করছে।
তাদেরকে যে দায়িত্ব দেওয়া
হয়েছে তা হল রাজপথ
উত্যক্ত করা, একটি বিশৃঙ্খলা
পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি
আকর্ষণ করা। কিন্তু সেই
দৃষ্টি আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে বিএনপির
আন্দোলন যতটা জোরালো হওয়া
উচিত ছিল ঠিক ততটা
জোরালো হয়নি। বরং এই আন্দোলন
মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। আর
এ কারণে একটি মহল এখন
আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভেদ এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টির
চেষ্টা করছে।
তবে
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী
লীগের যে সমস্ত নেতারা
বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করছেন তাদের প্রধান লক্ষ্য হল একটি সংলাপের
পথ প্রশস্ত করা। আওয়ামী লীগের
মধ্যে যারা বিভিন্ন দায়িত্বে
আছেন, তারা যেন সংলাপের
জন্য দলকে এগিয়ে নিয়ে
যায় এবং দলের কেন্দ্রীয়
নেতৃত্ব এ ব্যাপারে পরামর্শ
দেয়। সে লক্ষ্যেই তারা
কথা বলছেন। তবে এই কথা
বলা দলের হাইকমান্ডের সম্মতিতে
নয় বলেই জানাচ্ছেন আওয়ামী
লীগের একটি বড় অংশ।
আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ নেতা ষড়যন্ত্র
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।