গ্রেফতার হওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ফখরুল বলেছেন, আমি পুতুল। আমি আসলে বিএনপির কোনো কিছুই জানি না। কোনও সিদ্ধান্তই নেই না। সব সিদ্ধান্ত আসছে লন্ডন থেকে। আমি শুধু প্রতিপালন করি মাত্র। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এটাও স্বীকার করেছেন যে, ২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মীরা যে নাশকতা ও তাণ্ডব করেছে সেটি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না এবং তিনি এই সম্পর্কে জানতেনও না। কর্মীদের দিয়ে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক দিয়ে এসব করিয়েছেন। গোয়েন্দাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে মির্জা ফখরুল এরকম তথ্য দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিএনপির আরও
দুই নেতাকে মুখোমুখি দাড় করানো হয়েছিল।
মুখোমুখি অবস্থায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে, আমার ক্ষমতা
আমীর খসরু মাহমুদের চেয়েও
কম। তিনি মহাসচিব হিসাবে
আছেন এটুকুই যথেষ্ট। এই বয়সে অন্য
কোন দলে যাওয়া বা
নিজেকে গুটিয়ে নেয়া তার পক্ষে
সম্ভব নয়। আর এ
কারণেই অনেক কিছুই তাকে
হজম করতে হয়।
মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন যে, ২৮ অক্টোবরে
আমাদের মূল কর্মসূচি ছিল
একটি সুন্দর সমাবেশ করা এবং এই
সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে একটি ৪৮ ঘণ্টা
বা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
দেয়া। এই আল্টিমেটামের মধ্যে
যদি তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের
দাবি মেনে না নেয়,
তাহলে ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা
কর্মসূচি করার পরিকল্পনা ছিল
তাদের। কিন্তু কীভাবে কী হলো সে
সম্পর্কে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছুই জানেন না।
তবে
ফখরুল স্বীকার করেছেন যে তারেকের নিজস্ব
বাহিনী রয়েছে। তারেক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের
চেয়েও তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে বেশি সময় ব্যয়
করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। শুধু
তাই নয়, তাদের তিনি
বিশ্বাসও করেন।
মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বিএনপির কোন নেতা কী
করেন, কোথায় যায় ইত্যাদির ব্যাপারে
তারেকের এজেন্টরা সব সময় খোঁজ
খবর রাখে। তারেক সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পিছনে গুপ্তচর লাগিয়ে রেখেছে। যে গুপ্তচরদের কাজ
হলো নেতারা কী করছেন না
করছেন সে সম্পর্কে নিয়মিত
খোঁজখবর তারেক জিয়াকে দেয়া।
বিভিন্ন
সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বীকার করেছেন যে ২৮ অক্টোবর
যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে তারেক জিয়ার লোকজন ছিল এবং তারাই
প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা এবং পুলিশের উপর
আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি
কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিলো না। তারেক
জিয়া সরাসরি এই সহিংসতা এবং
হামলা পরিচালনা করেছে বলেও জানা গেছে।
মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে এই ক্যাডার
বাহিনী তার নিয়ন্ত্রণে নেই।
তারেক জিয়াই এটি নিয়ন্ত্রণ করেন
এবং পরিচালিত করে। তারেক জিয়া
যখন যে নির্দেশনা দেয়
সেই নির্দেশনাই তারা পালন করে।
মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনীতি সম্পর্কে নিজের হতাশার কথা বলেছেন। বার্ধক্যের
কারণে তিনি রাজনীতি থেকে
অবসররে যেতে চান এমন
বক্তব্যও রেখেছেন। তবে তিনি স্বীকার
করেছেন যে
বিএনপির
মহাসচিব হিসেবে তিনি নিয়মিতভাবে তারেক
জিয়ার তাদের সাথে কথা বলেন
এবং তারেক জিয়ার মতামতের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। কারণ
তারেক জিয়ার মতামতের বাইরে গেলে নিশ্চিতভাবে তিনি
বিএনপির কোন পদে থাকতে
পারবেন না। তারেক জিয়া
সঠিক না ভুল করছে।
এই প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সময়ই বলে দেবে।
তবে
বিএনপির অন্য দুই নেতা
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সব বক্তব্যের সঙ্গে
একমত পোষণ করেননি। বরং
ওই জিজ্ঞাসাবাদেই বিএনপির আরেক নেতার সঙ্গে
মির্জা ফখরুলের ঝগড়া শুরু হয় এবং
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও এর দায় বহন
করতে হবে বলেও ওই
নেতা সাফ জানিয়ে দেন।
মির্জা ফখরুল বিএনপি মহাসচিব রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদ
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।