২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের সংঘর্ষের পর এক মাসের বেশি সময় পার হয়েছে। অথচ এখনো তালাবদ্ধ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। লাগাতার কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপি অফিসে নেই নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি। অফিস ফাঁকার প্রধান কারণ গ্রেপ্তার আতঙ্ক।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সরেজমিন নয়াপল্টনে গিয়ে দেখা যায়, দলটির সদর দরজায় তালা ঝুলছে। বন্ধ কলাপসিবল গেটের ওপারে রিসিপশন টেবিলে ধুলা আর ময়লা। আশপাশে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। একই চিত্র পাশের নিচতলার সেমিনার হলের। অফিস ভবনের সামনের ফুটপাতে সতর্ক প্রহরায় পুলিশ সদস্যরা। পাশের গলিতেও পুলিশের অবস্থান। এক মাস ধরে বন্ধ অফিসের সামনে অবস্থান করছে পুলিশ ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ অবস্থার সূত্রপাত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে সহিংসতাকে ঘিরে। কাকরাইল মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মহাসমাবেশ পন্ড হয়ে যায়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ। এ অবস্থায় হরতাল ঘোষণা দিয়ে দ্রুত মঞ্চ ত্যাগ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর থেকেই বিএনপি অফিসের সামনের সড়ক নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২৮ অক্টোবর বিএনপি কার্যালয়ে একাধিক নেতাকর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।
তবে ২ নভেম্বর ভোরেও বিএনপি কার্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতারা বর্তমানে কারাগারে। এদিকে বিএনপির কার্যালয় থেকে ফকিরাপুলের দিকে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেডের কার্যালয়ের নিচে পুলিশের অন্তত ১০ সদস্যকে দেখা যায়। আবার কার্যালয় থেকে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে হোটেল ভিক্টরির সামনের সড়কে ছিলেন পুলিশের আরও প্রায় ২০ জন সদস্য। তাদের কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, কেউবা আবার বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, সকাল থেকে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে কার্যালয়ে আসতে দেখেননি তিনি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।