আর কিছুদিনের মধ্যেই সারা দেশে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। যে কোনো সময় তফশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের আগে তৃণমূলে দলীয় কোন্দল নিয়ে বেশ চিন্তিত আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত রাখা যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলের জন্য। অনেক এলাকায়ই চরম বিভক্ত হয়ে পড়েছে সংগঠন। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি বেড়েই চলেছে। কোথাও কোথাও হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পাল্টাপাল্টি মামলা। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ঘিরে এই দ্বন্দ্ব ও সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কেন্দ্রীয় নেতাদের।
পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কোন্দল নিরসনে শিগগির
জেলা-উপজেলায় বর্ধিত সভা এবং কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সফরের মাধ্যমে সংকট সমাধানের
চিন্তা-ভাবনা করছে দলটি। তার পরও কাজ না হলে নেতাদের পদ থেকে অব্যাহতি, কমিটি ভেঙে
দেওয়া এমনকি বহিষ্কারের মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও নিতে পারে আওয়ামী লীগ। কোন্দলে লিপ্তদের
এভাবে চাপে রাখার কৌশল নিতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘাত এড়াতে
জাতীয় নির্বাচনের মতো বিএনপি অংশ না নিলে উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী না দেওয়ার
সিদ্ধান্ত নিতে পারে আওয়ামী লীগ।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন জমজমাট করতে দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে অংশ নেন কয়েকশ স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্য দলের বর্তমান এমপি, মন্ত্রিসভার সদস্যসহ দলের হেভিওয়েট প্রার্থীদের হারিয়ে ৬২ জন নির্বাচিত হন। এর মধ্যে বেশিরভাগ নির্বাচনী এলাকায়ই দলের মধ্যে চরম বিভক্তি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন, এমন অনেক এলাকায়ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ঘিরে দলে বিবদমান দুটি ধারা তৈরি হয়েছে। এই বিভক্তি উপজেলা নির্বাচনে আরও প্রকট হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা নীতিনির্ধারকদের।
নেতাকর্মীদের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব ও বিভেদ আঁচ
করতে পেরেই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সবাইকে মনোমালিন্য, দুঃখ-বেদনা,
যা-ই থাকুক না কেন তা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে হার-জিত,
কষ্ট ভুলে এক হতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে, জনগণের সঙ্গে, জনগণের কল্যাণে,
মানুষের জন্য। দলীয় প্রধানের এই আহ্বানে দলের ঐক্য ফিরিয়ে আনতে কতটা কার্যকর হবে, তা
নিয়ে ভাবছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। তবুও দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিগগির কর্মসূচি ঘোষণা
করবে দলটি। প্রাথমিকভাবে নিজেদের মধ্যে কোন্দল-সংঘাত বন্ধে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা-উপজেলার
নেতাদের দিচ্ছেন বিভিন্ন নির্দেশনা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন
সদস্য কালবেলাকে বলেন, দ্বন্দ্ব কোন্দলের প্রভাব যেন উপজেলা নির্বাচনে না পড়ে সেজন্য
চেষ্টা করছি। উপজেলা নির্বাচনের আগেই এসব বিভেদ দূর করা হবে। দলীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে,
আরও বিশদ আকারে কর্মসূচি নেওয়া হবে।
জানা গেছে, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে দলীয় কোন্দল
আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দশ দিন পেরিয়ে গেলেও সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র
প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হুমকি, এর জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মুন্সীগঞ্জ
নাটোর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঝিনাইদহ, রংপুর,
বরগুনা, বরিশাল, চাঁপাইনবাগঞ্জ, নওগাঁ, পঞ্চগড়সহ অন্তত দুই ডজন জেলায় নির্বাচন-পরবর্তী
হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক এসব দ্বন্দ্ব সংঘাতে চারজন নিহত ও আহত
হয় কয়েকশ মানুষ। যাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থক।
গতকাল মঙ্গলবার, বরিশাল-৪ আসনের হিজলায় নির্বাচনী
বিরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের
অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। একই দিন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে রূপগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচন-পরবর্তী
সহিংসতায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়। আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত
গোলাম দস্তগীর গাজী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান
ভূঁইয়ার কর্মী-সমর্থকরা এই সংঘাতে জড়ায়। এ ছাড়া, গত এক সপ্তাহে নোয়াখালী, ঝিনাইদহ,
নেত্রকোনা ও মাদারীপুরে চারজন নিহত হন।
জানা গেছে, নির্বাচনে কমিশনের তালিকা অনুযায়ী
৪৮৫টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনযোগ্য রয়েছে, যেগুলো নির্বাচনের পর মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা
মেয়াদ পূর্ণ হতে চলেছে। গত উপজেলা নির্বাচনের মতো এবারও কয়েকধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হবে। মার্চ মাসের ১০ তারিখে রোজার পূর্বেই শুরু হবে উপজেলা নির্বাচন।
এ উপলক্ষে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা
প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে জাতীয় নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী
ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন এসব প্রার্থীরা। সারা দেশের বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে
এরই মধ্য পোস্টার সাঁটানো, নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, ভোটারদের সঙ্গে বিভিন্ন
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বৃদ্ধির কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এক নেতা কালবেলাকে বলেন, জাতীয়
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণের অনুমতির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে দলের কোন্দলকে
উসকে দেওয়া হয়েছে। এর প্রভাব উপজেলা নির্বাচনসহ সব স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে পড়বে।
এজন্য দলকে ভুগতে হতে পারে।
নেতারা বলেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের
ঐক্যবদ্ধ হতে নির্দেশ দিয়েছেন, হার-জিত মেনে নিয়ে কাজ শুরু করতে বলেছেন। সভাপতির এমন
ঘোষণার পরও দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত ও দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে। মার্চে অনুষ্ঠিত
হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচন সামনে রেখে দ্বন্দ্ব-সংঘাত মিটিয়ে ফেলা
জরুরি। সেটি করতে না পারলে দলের তৃণমূল পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এমনকি প্রাণহানির
ঘটনাও ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন কালবেলাকে বলেন, দলের মধ্য কিছু দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, তবে সেটা যেন প্রতিহিংসায় রূপান্তরিত না হয়। এরকম ঘটলে কঠোর হস্তে দমন করবে। নেতাকর্মীরা যদি সংঘাতের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দেয়, তাহলেও আওয়ামী লীগ দলীয় শৃঙ্খলা ফেরাতে যা করার দরকার তাই করবে।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ দলের এসব কোন্দল
ও দ্বন্দ্ব মেটাতে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য এক যৌথ সভার
মাধ্যমে দলের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোকে দলীয় কর্মকাণ্ড, সম্মেলন ও কমিটির কার্যক্রম
শুরু করতে নির্দেশনা দেয় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া নেতাকর্মীদের চাপে
রাখাতে নতুন কৌশল নিতে যাচ্ছে দলটি। এজন্য শিগগির জেলা-উপজেলায় বর্ধিত সভা করবে দলটি।
দ্বন্দ্বে জর্জরিত স্থানে সফর শুরু করবে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। তাতেও কাজ না হলে সংশ্লিষ্ট
কমিটি ভেঙে দেওয়া, নেতাদের পদ থেকে অব্যাহতির পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। গতকাল
বুধবার দলের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভা শেষে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য
ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
এরই মধ্য আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্র
প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্য নির্বাচনী দ্বন্দ্ব বন্ধ করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ
দিয়েছে। তবে বিবদমান এসব আসনে দলীয় সফরের মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের জন্য প্রতিনিধিদল পাঠানোসহ
বিশদ কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়। এ মাসেই অনুষ্ঠিত
হবে দলের নীতিনির্ধারণী কমিটির বৈঠক।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালবেলাকে বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বতন্ত্ররা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এজন্য কিছু জায়গায় কোন্দল তৈরি হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের আগেই এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। এসব নিরসনে শিগগির জেলা সফর, বর্ধিত সভার মতো কর্মসূচি হাতে নেওয়া হতে পারে।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।