তৃণমূলের বিভক্তি দূরীকরণ এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা উদ্যোগ নিয়েছে দলটি, তৃণমূলে সংগঠনও ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দলটি। নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্যসূত্রগুলো
বলছে, দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র
করে জেলা-উপজেলা শাখার
সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি
ঘোষণা বন্ধ রাখে ক্ষমতাসীন
দলটি। তবে বিজয় অর্জনের পর
আবারও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ফিরিয়ে আনতে চায় আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দলীয় সভাপতি মেয়াদোত্তীর্ণ
কমিটি নতুন করে গঠন
এবং অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটাতে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশ দিয়েছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন শাখার সম্মেলন, সহযোগী সংগঠনের প্রতিটির অসমাপ্ত সম্মেলন, কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বিলম্বসহ
সাংগঠনিক সমস্যার সমাধান করা জরুরি। সমস্যা
ও বিরোধ থাকলে তা সমাধানে অনতিবিলম্বে
কাজ শুরু করতে নির্দেশ
দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
খোঁজ
নিয়ে জানা গেছে, দলের
বিভিন্ন পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, দলের কাছে
জমা বিভিন্ন শাখা কমিটির অনুমোদন
দেওয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন শাখার সম্মেলন, সহযোগী সংগঠনের নতুন সম্মেলনের প্রস্তুতি,
তৃণমূলে বিভিন্ন সাংগঠনিক সমস্যা ও বিরোধ সমাধানে
নির্দেশ দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। কারণ
হিসেবে নেতারা জানান, সম্মেলন হলেও অনেক জেলা,
মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌর
শাখা চলছে মূলত দুই
নেতার কাঁধে ভর করে। পূর্ণাঙ্গ
কমিটি গঠনে দীর্ঘসূত্রতা দূর
করতে ২২তম জাতীয় সম্মেলনে
৪৫ দিনের নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে গঠনতন্ত্র সংশোধন
করা হলেও বেশিরভাগ শাখার
দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা মানছে না।
সংশ্লিষ্টরা
জানান, দেশের আট বিভাগে আওয়ামী
লীগের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা
রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা, থানা ও পৌর
কমিটির সংখ্যা সাড়ে ৬০০-র
মতো। তিন বছর পরপর
সম্মেলনের মাধ্যমে এসব শাখায় কমিটি
গঠন করার কথা। তবে
বেশিরভাগ শাখাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্মেলন করে না।
জানা
গেছে, ২০২২ সালের রংপুর
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফার ভরাডুবির
চার দিন পর রংপুর
জেলা ও মহানগর আওয়ামী
লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দুই সদস্যবিশিষ্ট
জেলা ও মহানগরের নতুন
আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এখন পর্যন্ত রংপুর দুই শাখার সম্মেলন
করতে পারেনি আহ্বায়ক কমিটি।
অন্যদিকে
নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি
ও সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের কারণে কেন্দ্রে পাল্টাপাল্টি কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে।
যার সুরাহা এখন পর্যন্ত হয়নি।
বরং দলীয় কার্যালয় দখল
নিয়ে চলছে উত্তেজনা।
আওয়ামী
লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যমকে
বলেন, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা দলকে ঢেলে সাজাতে
সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি করতে বলেছেন। এই
লক্ষ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন, শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদনসহ জেলা-উপজেলার দ্বন্দ্ব
নিরসনের কাজ করতে নির্দেশনা
দিয়েছেন। সে অনুযায়ী দলীয়
কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা
আরও বেগবান হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।