মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব
পালন করছেন। শুধু মহাসচিব বললে ভুল বলা হবে, তিনি আসলে গত এক দশকে বিএনপির মূল নেতা
হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। বিএনপির নীতি নির্ধারণীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা না থাকলেও
বিএনপির মাঠের প্রধান নেতা হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে
তাকে নিয়ে রহস্যের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর তিনি গ্রেপ্তার হন এবং এ গ্রেপ্তার থেকে মুক্ত হওয়ার
পর রাজনীতিতে অরুচি এসেছে বিএনপির এই নেতার।
ইতিমধ্যে তিনি জানিয়েছেন, দলের মহাসচিব থাকতে চান না। কিন্তু তার
মহাসচিব থাকা না থাকার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত বিএনপি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।
তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিবের কর্মকান্ড থেকে নিজেকে
গুটিয়ে ফেলেছেন। বিভিন্ন জেলার নেতারা এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার কাছে গেলে তিনি
অন্য নেতাকে ধরিয়ে দিচ্ছেন। গতকাল ঢাকার এক নেতা গিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কিছু
সমস্যা বিষয়ে কথা বলার জন্য। তিনি মির্জা আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পরামর্শ দেন।
অন্য একজন নেতা গিয়েছিলেন, অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠনের
জন্য, তিনি এ ব্যাপারে রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন। এভাবেই
দায়িত্ব এড়িয়ে চলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আগে যাকে দিন-রাত ২৪ ঘন্টা দলীয় কর্মকান্ডে নিবেদিত প্রাণ দেখা
যেত সেই মির্জা ফখরুল এখন নিজেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছেন।
কোন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যাওয়া ছাড়া এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে বক্তব্য দেওয়া,
দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করা ছাড়া দলীয় কর্মকান্ডে তাকে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।
একজন মহাসচিবের প্রধান এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো দলকে
ঠিক রাখা, সংগঠনকে গুছানো, সংগঠনের বিভিন্ন সমস্যা বিষয়ে দেখভাল করা। কিন্তু মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন সেসমস্ত বিষয়গুলো মোটেই দেখছেন না। বরং ধরনের এ সমস্যা আসলে
তিনি বিরক্তবোধ করছেন এবং এসমস্ত বিষয়গুরো অন্য কাউকে বলার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।
কেন নিজেকে তিনি এভাবে গুটিয়ে নিয়েছেন বা রাজনীতিতে তিনি নিজেকে
কেন আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় করছেন এর উত্তরে অনেকেই মনে করছেন যে নির্বাচন পরবর্তী বিএনপির
যে রাজনীতির হাল এবং নেতা-কর্মীদের জন্য হতাশা সেটার কারণেই মির্জা ফখরুল নিজেকে আস্তে
আস্তে স্বেচ্ছা অবসরে নিয়ে যাচ্ছেন।
তবে, বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, আসলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের
রাজনৈতিক অনীহার প্রধান কারণ হলো তার পারিবারিক সমস্যা। তিনি নিজে অসুস্থ এবং হৃদরোগ
ছাড়াও একাধিক জটিল অসুখে ভুগছেন।
অন্যদিকে তার স্ত্রীকে নিয়েই মির্জা ফখরুল বেশি বিপর্যস্ত। তার স্ত্রীর ক্যান্সার ধরা পড়েছে এবং একারণেই তিনি অনেকটাই হতাশাগ্রস্থ। তাই আস্তে আস্তে তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাগজে কলমে বিএনপির মহাসচিব থাকলেও এখন তিনি অনেকটাই স্বেচ্ছা অবসরে গেছেন।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবসর
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।