নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০১৮
কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকারের জন্য বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণার পরও এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দফায় আন্দোলন শুরু করেছে। দ্বিতীয় দফায় দ্বিতীয় দিনে আন্দোলনে আবার রাস্তা, রেলপথ এবং সড়কপথ বন্ধের ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে এই আন্দোলন আবার দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে সবাই। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় দফায় কোটা আন্দোলন শিবির নিয়ন্ত্রিত। শিবিরের নেতৃত্বে এবং নিয়ন্ত্রণে এই আন্দোলন চলছে, এই অভিমত আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও অনেক মন্ত্রী ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আন্দোলনের নাটাই শিবিরের হাতে থাকলেও এর সঙ্গে বিপুল সাধারণ শিক্ষার্থী জড়িত রয়েছে। তাঁদের কাছে এই দাবি যৌক্তিক। কোটা বাতিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির বিলম্বের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। শিবির এই অসন্তোষকে আন্দোলনের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে।
প্রধানমন্ত্রী গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা গত ৭ মে তে আবার অল্টিমেটাম দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে কতদিন লাগে? আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একজন নেতা বলেছেন, ‘আমারা ডেকে ডেকে সমস্যা ঘাড়ে তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই যদি প্রজ্ঞাপন জারি করা হতো, তাহলে নতুন করে আন্দোলন গড়ে ওঠার সুযোগ থাকতো না।’ ঐ নেতা বলেন, ‘কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হলে, নিশ্চিত ভাবেই তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতো। তখন সরকারের দায়দায়িত্ব থাকতো না। সরকারের একাধিক মন্ত্রী মনে করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতায় বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের আগে সরকারের সামনে একটি সংগঠিত শক্তিকে দাঁড় করানো হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১২ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রথম দফায় শেষ হয়। এরপর জামাত-শিবির সারাদেশে এই আন্দোলনকে সংগঠিত করেছে। এই আন্দোলনের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে লন্ডন থেকে তারেক জিয়া। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সারাদেশে দেড়শরও বেশি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটিগুলো ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগের দিন ঢাকায় শাহবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। জামাত-শিবিরের পরিকল্পনা স্পষ্ট, খুলনার নির্বাচনে বিএনপি হেরে যাওয়ার পর সারাদেশে একটা আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া।
একই সঙ্গে তারেক এই আন্দোলনে বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের যুক্ত হবার নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই স্পর্শকাতর স্থান, তাই এখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ভেবেচিন্তে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।
এরমধ্যেই বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও নতুন করে আন্দোলন শুরুর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের গোপন কার্যক্রম রয়েছে, সেখানে গতকাল রোববার এবং আজ সোমবার বৈঠক হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলন অব্যাহত থাকলে, আবারও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামবে।
প্রথম যখন কোটা আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তখনও সরকার প্রথম এই আন্দোলনকে উপেক্ষা করেছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, আন্দোলনের গভীরতা বুঝতে পারেনি। উপাচার্যের বাড়ি ভাঙচুরের পর, সরকারের টনক নড়ে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার এক মাস পরও প্রজ্ঞাপন জারি না করাও একটা অমার্জনীয় ব্যর্থতা বলেই বিশিষ্টজনরা মনে করছে। প্রজ্ঞাপন জারিতে যত বিলম্ব হবে, তত সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। সরকারের মধ্যে কেউ কেউ এরকম পরামর্শ দিচ্ছে, যেহেতু তাঁরা আন্দোলন করছে, তাই এখনই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে আন্দোলনকারীদের কাছে নতি স্বীকার করা। কিন্তু আওয়ামী লীগ এবং সরকারের অনেকেই বলছে, এখন জেদাজেদির সময় না। এই আন্দোলনের নেপথ্যের কারিগরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রথমে আন্দোলন বন্ধ করা প্রয়োজন। আর সেটা করতে হলে, প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে প্রজ্ঞাপন জারি করা দরকার।
Read In English: https://bit.ly/2wBmbWV
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
এবার উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজন এবং নিজস্ব
পছন্দের ব্যক্তিদেরকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন এবং তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার
করে তাদের মাই ম্যানদেরকে জয়ী করার জন্য চেষ্টাও চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়
নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি প্রসঙ্গটি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে
এ ব্যাপারে একাধিকবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব সতর্কবার্তা সত্ত্বেও মন্ত্রী-এমপিরা
এলাকায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখা এবং নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য মাই ম্যানদের
প্রার্থী করেছেন। কেউ আত্মীয় স্বজনকে, কেউ নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী
করেছেন। আর এই প্রার্থী করার ফলে এলাকার মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের অসন্তোষ, ক্ষোভ
এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
আর আওয়ামী লীগ দলগতভাবে যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা দলীয় প্রতীক
ব্যবহার করবে না এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশনা দিয়েছেন যে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা
প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানদের বিরুদ্ধে একটি গণ প্রতিরোধ
গড়ে উঠেছে উপজেলার নির্বাচনগুলোতে।
একাধিক উপজেলায় দেখা গেছে, মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর
বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ একাট্টা হয়েছে এবং স্থানীয় তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীর
পক্ষে তারা কাজ শুরু করেছেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় তাদের নিজেদের প্রার্থী
দিয়েছেন তারা এখন নিজস্ব বলয়ের বাইরে মূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাচ্ছেন না।
অবশ্য কোন কোন উপজেলায় আগেই প্রভাব বিস্তার শেষ করে ফেলেছেন মন্ত্রী-এমপিদের
প্রার্থীরা। তারা কোথাও কোথাও একক প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। কোথাও কোথাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু যে সমস্ত
এলাকায় এটা সম্ভব হয়নি, যে সমস্ত এলাকায় তৃণমূল শক্তিশালী সেই সমস্ত এলাকাগুলোতে আওয়ামী
লীগের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে পড়ছেন উপজেলার প্রার্থীরা। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি উপজেলা
নির্বাচনে প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ থাকে তাহলে বেশিরভাগ
উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিদের মাই ম্যানদের ভরাডুবি ঘটবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন উপজেলায় যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন,
যেহেতু আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে নির্বাচনে না দাঁড়ানোর জন্য
নির্দেশনা দিয়েছেন, কাজেই মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াটা হল একেবারেই
দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন এবং এই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ
করাটা নেতাকর্মীদের দায়িত্ব।
আর এ কারণেই নেতাকর্মীরা এখন মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর
বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন এবং তারা তাদের বিকল্প প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। এর ফলে
উপজেলা নির্বাচন একটি নতুন মাত্রা এবং প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্টি করেছে।
উপজেলা নির্বাচন গণ প্রতিরোধ মন্ত্রী-এমপি মাই ম্যান
মন্তব্য করুন
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবার বেকায়দায়
পড়েছেন। ডিবিসি চ্যানেলের রাজকাহন অনুষ্ঠানে একটি বক্তব্য দিয়ে বিএনপির নেতাদের তোপের
মুখে পড়েছেন তিনি। আর তোপের মুখে পড়ে যথারীতি ইউটার্ন নিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি এটি
বলেননি।
কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ভুলে গেছেন যে, ডিবিসির রাজকাহনে
প্রচারিত তার বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে। সেখানে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যা বলেছেন
সেটি প্রচারিত হচ্ছে। সেটি বিকৃত করার কোন সুযোগ নেই। তিনি কোন সাক্ষাৎকার দেননি বা
তিনি কোন পত্রিকার সাংবাদিকের কাছে মৌখিকভাবে এ বক্তব্য দেননি। তিনি দিয়েছেন সরাসরি
টেলিভিশনে এবং এটি লাইভ প্রচারিত হয়েছে। শুধুমাত্র লাইভ প্রচারিতই নয়, বরং এই বক্তব্য
এখন ইউটিউবে ভাসছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল রাজকাহনে কী বলেছেন তা একটু দেখে নেওয়া যাক।
তিনি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি
কি না সে বিকল্প চিন্তা আমাদের মধ্যে আছে। তিনি জানান, প্রয়োজনে বেগম জিয়া এবং তারেক
রহমানের পক্ষ থেকে কমিটি বা বডি বাছাই করা হবে। যারা তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেবে।
আলালের এই বক্তব্য বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
বিএনপির লন্ডনে পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই বক্তব্য সম্পর্কে আলালের
কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন বলেও জানা যায়। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও
জানতে চান যে, কেন আলাল এই ধরনের কথা বললেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, বিএনপিতে
বেগম খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়ার বিকল্পের কোন ভাবনা নেই এবং এ ধরনের কোন আলোচনাও হয়নি।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে
তারেক জিয়া যথেষ্ট যোগ্যতা এবং পরিপক্কতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের বাইরে বিএনপিতে
সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
এই বক্তব্য যখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং গণমাধ্যমে
প্রকাশিত হয়েছে তখন আলাল তোপের মুখে পড়েছেন। আলালকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে
কিনা সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলেও দলের ভিতর তিনি ব্যাপক তিরস্কার
এবং ভর্ৎসনার মুখোমুখি পড়ছেন।
এরকম পরিস্থিতিতে অন্যান্য রাজনীতিবিদরা যা করেন, আলাল সেই একই
কাণ্ড করেছেন। তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে এরকম বক্তব্য
তিনি দেননি। তার বক্তব্য, মিথ্যা এবং ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও মোয়াজ্জেম হোসেন
আলাল তার এক প্রতিবাদ বার্তায় বলেছেন। অথচ বক্তব্যটি এখনও ডিবিসিতে রাজকাহন অনুষ্ঠানে
পাওয়া যাচ্ছে।
তাছাড়া বিএনপির নেতারাও এই বক্তব্যগুলো দেখেছেন। যে কারণে আলালের
এই প্রতিবাদ বা তিনি এ ধরনের কথা বলেননি বলে যে মন্তব্য করছেন তা তারেক জিয়া বা অন্য
নেতাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। এই বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ার কারণে বেকায়দায় পড়েছেন
বিএনপির নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সামনের দিনগুলোতে এখন বিএনপি আলালের ব্যাপারে কী
সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার বিষয়।
উল্লেখ্য, এর আগে বিতর্কিত বক্তব্য রেখে বিএনপির অনেক গুরুত্বপূর্ণ
নেতাই দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। যাদের মধ্যে শওকত মাহমুদ অন্যতম। আলালকেও সেই পরিণতি
বরণ করতে হবে কী না সে নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর দলের তৃণমূলের
নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে কেন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির
(জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে তিনি বলেছেনে, ‘বিএনপির
আন্দোলন সফল হবে না তা আগেই বুঝেছিলাম। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে
অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।’
শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
গত বছরের ১২ নভেম্বর বর্ধিত সভায় জাপার নেতারা নির্বাচন বর্জনের
পক্ষে মতামত দেন। তবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ২৬ আসনে ছাড় পেয়ে নির্বাচনে অংশ
নেন জি এম কাদের।
নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় কমিটির
সভায় বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিদেশি বন্ধুদের
সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে
এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয়, আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি
আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত ছিল।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রশ্নে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি
সৃষ্টি হয়েছিল জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার
পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে
বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে
জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কি না সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। আপনারা আমার
ওপর আস্থা রেখেছেন। ভোটের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন সুষ্ঠুভাবে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ
করেছি।
মনে হয়েছে, বিভিন্ন বিদেশি শক্তি বিভিন্নভাবে নানা দিকে নিচ্ছিলেন।
আর বিএনপির আন্দোলন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল, তারা সফল হবে না। আন্দোলন চলাকালে তৃতীয়
শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলাদেশে নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০
লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝতে পেরেছিলাম’।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বিএনপি ও জামায়াত আন্দোলনে পরাস্ত হয়ে
জাতীয় পার্টিকে দোষ দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক নির্বাচন ভালো হয়নি। সরকার জাতীয় পার্টিকে
গৃহপালিত দল হিসেবে দেখতে চায়, যা কখনও সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি কখনোই অনুগত বিরোধী
দল ছিল না। এবং জাতীয় পার্টি গৃহপালিত বিরোধী দল হতে রাজি না।
জাতীয় পার্টি জাপা জি এম কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (মে দিবস) উপলক্ষ্যে রাজধানীতে শ্রমিক
সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী ১ মে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী
শ্রমিকদলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান
এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী ১ মে শ্রমিক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া দলের অন্যান্য নেতারাও এই
সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, গতকাল খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
সমাবেশ ঘোষণা করেছিল বিএনপি। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে পরে সেই সমাবেশে স্থগিত করা
হয়।
মে দিবস নয়াপল্টন সমাবেশ বিএনপি
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ করার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ
করবেন। এ ব্যপারে তিনি প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল
সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই মন্ত্রী পরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন
সচিব এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে কথা বলবেন। উপজেলা
নির্বাচন নিয়ে যেন কোন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা না হয়, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেন কোনরকম পক্ষপাতের
অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট অনুশাসন জারি করবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী
কার্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য,
আগামী ৮ মে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের উপজেলা
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। উপজেলা নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত
থাকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে প্রার্থী না করার
নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও নির্বাচনের মাঠে মন্ত্রী-এমপিরা প্রভাব বিস্তার
করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ বৈঠকে আশঙ্কা
করা হয়েছে যে, উপজেলা নির্বাচনকে মন্ত্রী-এমপিরা প্রশাসনকে ব্যবহার করতে পারেন, তাদের
পক্ষের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য। আর এটি যেন না হয়, সেজন্যই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা কিছু কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একদিকে
তিনি যেমন দলের নেতা-কর্মীদের বলেছেন যে, দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করতে
পারবে না। দলীয় প্রতীক দেয়া হচ্ছে না উপজেলা নির্বাচনে। মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনদেরকে
না দাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবং মন্ত্রী এমপিরা যেন নির্বাচনে প্রত্যক্ষ
পরোক্ষভাবে কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে সেজন্য সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু
তারপরও আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী-এমপি তাদের নিজস্ব ব্যক্তিদের নির্বাচনে প্রার্থী
করানোর জন্য মাঠে নেমেছেন এবং নির্বাচনে তারা যেন জয়ী হয় এজন্য নানা রকমের প্রভাব বিস্তারের
চেষ্টা করছে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতির নজরে এসেছে বলেই জানা গেছে। আর একারনেই তিনি
প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পৃথক পৃথকভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা
দিবেন।
বিভিন্ন
সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী যেসমস্ত নির্দেশনা মাঠ প্রশাসনের জন্য দিতে যাচ্ছেন
তার মধ্যে রয়েছে..
১) মাঠ প্রশাসন উপজেলা নির্বাচনে নির্মোহ এবং
নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে
২) কোন প্রার্থীর পক্ষে মাঠ প্রশাসন কাজ করবে
না এবং কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না
৩) কোন মন্ত্রী-এমপিরা তাদের অন্যায় অনুরোধ করলে
তারা শুনবে না এবং সে ব্যাপারে তারা শুনবে না। এজন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে তারা তাৎক্ষণিকভাবে
অবহিত করবেন
৪) আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন সুষ্টু
করার জন্য কাজ করবেন এবং কোন ভাবেই যেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা না হয়, সেজন্য
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।
৫) যাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠবে তাদের
ব্যাপারে আইনগত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নির্দেশনায় দেওয়া হবে।
আওয়ামী
লীগ সভাপতি চাচ্ছেন উপজেলা নির্বাচনকে একটি অবাধ সুষ্টু নিরপেক্ষ করতে। একটি ভোটের
পরিবেশ সৃষ্টি করাতে। যেন সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায় এবং উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট
হয়।
উপজেলা নির্বাচন প্রশাসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
এবার উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজন এবং নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন এবং তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে তাদের মাই ম্যানদেরকে জয়ী করার জন্য চেষ্টাও চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজর এড়ায়নি প্রসঙ্গটি। আর এ কারণে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকে এ ব্যাপারে একাধিকবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব সতর্কবার্তা সত্ত্বেও মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখা এবং নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য মাই ম্যানদের প্রার্থী করেছেন। কেউ আত্মীয় স্বজনকে, কেউ নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। আর এই প্রার্থী করার ফলে এলাকার মধ্যে বিরাজ করছে এক ধরনের অসন্তোষ, ক্ষোভ এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবার বেকায়দায় পড়েছেন। ডিবিসি চ্যানেলের রাজকাহন অনুষ্ঠানে একটি বক্তব্য দিয়ে বিএনপির নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। আর তোপের মুখে পড়ে যথারীতি ইউটার্ন নিয়েছেন এবং বলেছেন যে তিনি এটি বলেননি। কিন্তু সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ভুলে গেছেন যে, ডিবিসির রাজকাহনে প্রচারিত তার বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে। সেখানে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যা বলেছেন সেটি প্রচারিত হচ্ছে। সেটি বিকৃত করার কোন সুযোগ নেই। তিনি কোন সাক্ষাৎকার দেননি বা তিনি কোন পত্রিকার সাংবাদিকের কাছে মৌখিকভাবে এ বক্তব্য দেননি। তিনি দিয়েছেন সরাসরি টেলিভিশনে এবং এটি লাইভ প্রচারিত হয়েছে। শুধুমাত্র লাইভ প্রচারিতই নয়, বরং এই বক্তব্য এখন ইউটিউবে ভাসছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর দলের তৃণমূলের নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে কেন নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে তিনি বলেছেনে, ‘বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না তা আগেই বুঝেছিলাম। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোট ভালো হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্টু ও নিরপেক্ষ করার জন্য কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন। এ ব্যপারে তিনি প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই মন্ত্রী পরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে কথা বলবেন। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে যেন কোন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা না হয়, প্রশাসনের বিরুদ্ধে যেন কোনরকম পক্ষপাতের অভিযোগ না আসে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট অনুশাসন জারি করবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।