নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১২ জুন, ২০১৮
পরিকল্পনাটা আগে থেকেই করা ছিল। গ্রেপ্তার হয়ে তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হবেন। এই হাসপাতালে ‘ড্যাব’ এর সক্রিয় কয়েকজন চিকিৎসক আছেন। তাঁরা হাসপাতালকে ম্যানেজ করে ফেলবেন। নিরাপত্তার ফাঁক গলে তাঁর কাছে মোবাইলও দেওয়া যাবে। দলীয় নেতা কর্মীরা সহজেই দেখা করতে পারবেন। এ কারণেই বিএনপি এবং বেগম জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে যাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অন্তত দুটি গোয়েন্দা সংস্থা তাঁদের প্রতিবেদনে বেগম জিয়ার ইউনাইটেড হাসপাতালে যাবার উৎসাহের কারণ হিসেবে এসব তথ্য উল্লেখ করেছে।
গুলশানের শেষ প্রান্তে ঢাকার সবচেয়ে আধুনিকতম স্থানে বিশাল এলাকা জুড়ে এই হাসপাতাল। পাঁচ তারকা হোটেল তুল্য এই হাসপাতালটি বিলাসবহুল হলেও এর চিকিৎসার মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে। মূলত এই হাসপাতালটি বিখ্যাত তার কার্ডিওলজি এবং নেফ্রোলজি বিভাগের জন্য। এই হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ড. জাহাঙ্গীর আলমকে দেশসেরা হৃদরোগ সার্জন বলা হয়। এখানকার নেফ্রোলজি (কিডনি) বিভাগও এক সময় ভালো ছিল। কিন্তু অধ্যাপক নূরুল ইসলাম এই হাসপাতাল থেকে আজগর আলীতে যাওয়ায়, আগের অবস্থান হাসপাতালটি ধরে রাখতে পারেনি। এই দুটি বিভাগ ছাড়া বাকি বিষয়গুলোতে ইউনাইটেড হাসপাতাল অনেক পিছিয়ে। বেগম খালেদা জিয়ার না আছে হৃদরোগ জনিত সমস্যা, না আছে কিডনি সমস্যা। তাই তার ইউনাইটেড হাসপাতাল যাবার কারণ স্বাস্থ্যগত যে নয় তা পরিষ্কার।
বেগম জিয়ার পছন্দের যে চারজন চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করেছেন, তাদের নেতা ডা. এফ. এম. সিদ্দিকী। সরকারি চিকিৎসক হলেও ডা. সিদ্দিকী ল্যাব এইডে বসেন। কিন্তু বেগম জিয়া তাঁর পছন্দের চিকিৎসকের হাসপাতালেও চিকিৎসা নিতে আগ্রহী নন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের যে দুটি অসুখের কথা বলা হচ্ছে তাঁর একটি হলো নিউরো সমস্যা। অন্যটি হলো আর্থ্রাইটিস (হাড়জনিত সমস্যা)। এই দুটি রোগের জন্য ইউনাইটেড হাসপাতাল মোটেও উপযুক্ত নয়। হাড় ব্যথা, হাড় ক্ষয়ের আধুনিকতম চিকিৎসা বাংলাদেশে এখন দুটি হাসপাতালে হয়, একটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, অন্যটি অ্যাপোলো হাসপাতালে। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগম জিয়ার অনীহা কিন্তু অ্যাপোলেতে তাঁর আগ্রহ নেই কেন?
আর নিউরোর সবচেয়ে ভালো চিকিৎসক নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট এর পরিচালক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। অথচ, বিএনপি বা বেগম জিয়ার এই চিকিৎসককেও দেখানোর আগ্রহ নেই। অনেকের ধারণা, সত্যি যদি তিনি গুরুতর অসুস্থ হতেন, তাহলে তো সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা প্রাপ্তির চেষ্টা করতেন। কিন্তু তা না করে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আগ্রহ নিয়ে তাই সন্দেহ ওঠা স্বাভাবিক। নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্যই কি বেগম জিয়া ইউনাইটেড এ যেতে চান?
বাংলা ইনসাইডার/ জেডএ
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।